আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৬৪- আদব - শিষ্টাচারের অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৭১৭
আন্তর্জাতিক নং: ৬১৪৮
৩২৫২. কবিতা পাঠ, সঙ্গীত ও উট চালানোর সঙ্গীতের মধ্যে যা জায়েয ও যা নাজায়েয।
৫৭১৭। কুতায়বা (রাহঃ) ......... সালামা ইবনে আকওয়া (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে খায়বর অভিযানে বের হলাম। আমরা রাতের বেলায় চলছিলাম। দলের মধ্য থেকে একজন আমির ইবনে আকওয়া (রাযিঃ) কে বলল যে, আপনি কি আপনার (ছোট) কবিতাগুলো থেকে কিছু আমাদের শোনাবেন না? আমির (রাযিঃ) ছিলেন একজন কবি। সুতরাং তিনি দলের লোকদের হুদী গেয়ে শোনাতে লাগলেন, হে আল্লাহ! তুমি না হলে, আমরা হেদায়েত পেতাম না। আমরা সাদ্‌কা দিতাম না, নামায আদায় করতাম না। আমাদের আগেকার গুনাহ ক্ষমা করুন; যা আমরা করেছি। আমরা আপনার জন্য উৎসর্গিত। যদি আমরা শত্রুর সম্মুখীন হই, তখন আমাদের পদদ্বয় সুদৃঢ় রাখুন। আমাদের উপর শান্তি বর্ষন করুন। শত্রুর ডাকের সময় আমরা যেন বীরের মত ধাবিত হই, যখন তারা হৈ-হুল্লোড় করে আমাদের উপর আক্রমণ চালায়।
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ এ উট চালক লোকটি কে? লোকেরা বললেনঃ তিনি আমির ইবনে আকওয়া। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তার উপর রহম করুন। দলের একজন বললেন, ইয়া নবীয়্যাল্লাহ! তার জন্য তো শাহাদাত নির্দিষ্ট হয়ে গেলো। হায়! যদি আমাদের এ সুযোগ দান করতেন। তারপর আমরা খায়বরে পৌছে শত্রুদের অবরোধ করে ফেললাম। এ সময় আমরা অতিশয় ক্ষুধার্ত হয়ে পড়লাম। অবশেষে আল্লাহ (খায়বর যুদ্ধে) তাদের উপর আমাদের বিজয় দান করলেন। তারপর যেদিন খায়বর বিজিত হল, সেদিন লোকেরা অনেক আগুন জ্বালাল।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা এতসব আগুন কিজন্য জ্বালাচ্ছ? লোকেরা বললঃ গোশত রান্নার জন্য। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ কিসের গোশত? তারা বললঃ গৃহপালিত গাধার গোশত। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এসব গোশত ফেলে দাও এবং হাড়িগুলো ভেঙ্গে ফেল। এক ব্যক্তি বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! বরং গোশতগুলো ফেলে আমরা হাড়িগুলো ধুয়ে নেই? তিনি বললেনঃ তবে তাই কর।
রাবী বলেন, যখন লোকেরা যুদ্ধে সারিবদ্ধ হল, আমির (রাযিঃ) এর তলোয়ারখানা খাঁটো ছিল। তিনি এক ইয়াহুদীকে মারার উদ্দেশ্যে এটি দিয়ে তার উপর আক্রমণ করলেন। কিন্তু তার তলোয়ারের ধারালো অংশ আমির (রাযিঃ) এর হাটুতে এসে আঘাত করল। এতে তিনি মারা গেলেন। তারপর ফিরার সময় সবাই ফিরলেন। সালামা (রাযিঃ) বলেনঃ আমার চেহারার রং পরিবর্তন দেখে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমার কি হয়েছে? আমি বললামঃ আমার আব্বা-আম্মা আপনার উপর কুরবান হউন! লোকেরা বলছে যে, আমিরের আমল সব বরবাদ হয়ে গেছে। তিনি বললেনঃ এ কথাটা কে বলেছে? আমি বললাম, অমুক, অমুক, অমুক এবং উসায়দ ইবনে হুযাইর আনসারী (রাযিঃ)। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ যারা এ কথা বলেছে, তারা মিথ্যা বলেছে। তিনি বললেনঃ তার জন্য দুটি পুরস্কার রয়েছে, সে জাহিদ এবং মুজাহিদ। আরব ভূখণ্ডে তার মত লোক অল্পই জন্ম নিয়েছে।
باب مَا يَجُوزُ مِنَ الشِّعْرِ وَالرَّجَزِ وَالْحُدَاءِ وَمَا يُكْرَهُ مِنْهُ
6148 - حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي عُبَيْدٍ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ، قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى خَيْبَرَ، فَسِرْنَا لَيْلًا، فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ القَوْمِ لِعَامِرِ بْنِ الأَكْوَعِ: أَلاَ تُسْمِعُنَا مِنْ هُنَيْهَاتِكَ؟ قَالَ: وَكَانَ عَامِرٌ رَجُلًا شَاعِرًا، فَنَزَلَ يَحْدُو بِالقَوْمِ يَقُولُ:
[البحر الرجز]
اللَّهُمَّ لَوْلاَ أَنْتَ مَا اهْتَدَيْنَا ... وَلاَ تَصَدَّقْنَا وَلاَ صَلَّيْنَا
فَاغْفِرْ فِدَاءٌ لَكَ مَا اقْتَفَيْنَا ... وَثَبِّتِ الأَقْدَامَ إِنْ لاَقَيْنَا
وَأَلْقِيَنْ سَكِينَةً عَلَيْنَا ... إِنَّا إِذَا صِيحَ بِنَا أَتَيْنَا
وَبِالصِّيَاحِ عَوَّلُوا عَلَيْنَا
فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ هَذَا السَّائِقُ» قَالُوا: عَامِرُ بْنُ الأَكْوَعِ، فَقَالَ: «يَرْحَمُهُ اللَّهُ» فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ القَوْمِ: وَجَبَتْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ، لَوْلاَ أَمْتَعْتَنَا بِهِ، قَالَ: فَأَتَيْنَا خَيْبَرَ فَحَاصَرْنَاهُمْ، حَتَّى أَصَابَتْنَا مَخْمَصَةٌ شَدِيدَةٌ، ثُمَّ إِنَّ اللَّهَ فَتَحَهَا عَلَيْهِمْ، فَلَمَّا أَمْسَى النَّاسُ اليَوْمَ الَّذِي فُتِحَتْ عَلَيْهِمْ، أَوْقَدُوا نِيرَانًا كَثِيرَةً، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا هَذِهِ النِّيرَانُ، عَلَى أَيِّ شَيْءٍ تُوقِدُونَ» قَالُوا: عَلَى لَحْمٍ، قَالَ: «عَلَى أَيِّ لَحْمٍ؟» قَالُوا: عَلَى لَحْمِ حُمُرٍ إِنْسِيَّةٍ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَهْرِقُوهَا وَاكْسِرُوهَا» فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَوْ نُهَرِيقُهَا وَنَغْسِلُهَا؟ قَالَ: «أَوْ ذَاكَ» فَلَمَّا تَصَافَّ القَوْمُ، كَانَ سَيْفُ عَامِرٍ فِيهِ قِصَرٌ، فَتَنَاوَلَ بِهِ يَهُودِيًّا لِيَضْرِبَهُ، وَيَرْجِعُ ذُبَابُ سَيْفِهِ، فَأَصَابَ رُكْبَةَ عَامِرٍ فَمَاتَ مِنْهُ، فَلَمَّا قَفَلُوا قَالَ سَلَمَةُ: رَآنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَاحِبًا، فَقَالَ لِي: «مَا لَكَ» فَقُلْتُ: فِدًى لَكَ أَبِي وَأُمِّي، زَعَمُوا أَنَّ عَامِرًا حَبِطَ عَمَلُهُ، قَالَ: «مَنْ قَالَهُ؟» قُلْتُ: قَالَهُ فُلاَنٌ وَفُلاَنٌ وَفُلاَنٌ وَأُسَيْدُ بْنُ الحُضَيْرِ الأَنْصَارِيُّ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَذَبَ مَنْ قَالَهُ، إِنَّ لَهُ لَأَجْرَيْنِ - وَجَمَعَ بَيْنَ إِصْبَعَيْهِ - إِنَّهُ لَجَاهِدٌ مُجَاهِدٌ، قَلَّ عَرَبِيٌّ نَشَأَ بِهَا مِثْلَهُ»
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ বুখারী - হাদীস নং ৫৭১৭ | মুসলিম বাংলা