আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৬৪- আদব - শিষ্টাচারের অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৬৪৬
আন্তর্জাতিক নং: ৬০৭৩ - ৬০৭৫
৩২২৪. সম্পর্ক ত্যাগ এবং এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর বাণীঃ কোন লোকের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিনদিনের বেশী কথাবার্তা পরিত্যাগ করা জায়েয নয়।
৫৬৪৬। আবুল ইয়ামান (রাহঃ) ......... আওফ ইবনে মালিক ইবনে তুফায়ল (রাহঃ) আয়েশা (রাযিঃ) এর বৈপিত্রেয় ভ্রাতুষ্পূত্র থেকে বর্ণিত, আয়েশা (রাযিঃ) কে অবহিত করা হল যে, তাঁর কোন বিক্রির কিংবা দান করার ব্যাপারে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাযিঃ বলেছেনঃ আল্লাহর কসম! আয়েশা (রাযিঃ) অবশ্যই বিরত থাকবেন, নতুবা আমি নিশ্চয়ই তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করব। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ সত্যই কি সে এ কথা বলেছে? তারা বললেন, হ্যাঁ। তখন আয়েশা (রাযিঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি আমার উপর মান্নত (শপথ) করে নিলাম যে, আমি ইবনে যুবাইরের সাথে আর কখনও কথা বলব না। যখন এ বর্জনকাল দীর্ঘ হল, তখন ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) আয়েশা (রাযিঃ) এর নিকট সুপারিশ পাঠালেন। তখন তিনি বললেনঃ না, আল্লাহর কসম! এ ব্যাপারে আমি কখনো কোন সুপারিশ গ্রহণ করব না। আর আমার মান্নতও ভঙ্গ করব না। এভাবে যখন ব্যপারটা ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) এর জন্য দীর্ঘতর হতে লাগল, তখন তিনি যোহরা গোত্রের দু’ব্যক্তি মিসওয়ার ইবনে মাখরামা ও আব্দুর রহমান ইবনে আসওয়াদ ইবনে আবদে ইয়াগুসের সাথে আলোচনা করলেন।
তিনি তাদের দু’জনকে বললেনঃ আমি তোমাদের আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি যে, তোমরা দু’জন (যে প্রকারে হোক) আমাকে আয়েশা (রাযিঃ) এর কাছে নিয়ে যাও। কারণ, আমার সাথে তার বিচ্ছিন্ন থাকার মান্নত জায়েয নয়। তখন মিসওয়ার (রাযিঃ) ও আব্দুর রহমান উভয়ে চাদর দিয়ে ইবনে যুবাইরকে জড়িয়ে নিয়ে এলেন এবং উভয়ে আয়েশা (রাযিঃ) এর কাছে অনুমতি চেয়ে বললেনঃ আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু, আমরা কি ভেতরে আসতে পারি? আয়েশা (রাযিঃ) বললেনঃ আপনারা ভেতরে আসুন। তারা বললেনঃ আমরা সবাই? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তোমরা সবাই প্রবেশ কর। তিনি জানতেন না যে, তাদের সঙ্গে ইবনে যুবাইর রয়েছেন। তাই যখন তাঁরা ভেতরে প্রবেশ করলেন, তখন ইবনে যুবাইর পর্দার ভেতরে ঢুকে গেলেন এবং আয়েশা (রাযিঃ) কে জড়িয়ে ধরে, তাকে আল্লাহর কসম দিতে লাগলেন এবং কাঁদতে আরম্ভ করলেন। তখন মিসওয়ার ও আব্দুর রহমানও তাকে আল্লাহর কসম দিতে আরম্ভ করলেন। তখন আয়োশা (রাযিঃ) ইবনে যুবায়ের (রাযিঃ) এর সাথে কথা বলেন এবং তার ওযর কবুল করে নেন। আর তাঁরা বলতে লাগলেনঃ আপনি তো নিশ্চয়ই জানেন যে, নবী (ﷺ) সম্পর্ক বর্জন করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেনঃ কোন মুসলমানের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সম্পর্ক ছিন্ন রাখা হারাম। যখন তারা আয়েশা (রাযিঃ) কে বেশী বেশী বুঝাতে চাপ দিতে লাগলেন, তখন তিনিও তাদের বুঝাতে ও কাঁদতে লাগলেন এবং বললেনঃ আমি ‘মান্নত’ করে ফেলেছি। আর মান্নত তো শক্ত ব্যাপার। কিন্তু তারা একাধারে চাপ দিতেই থাকলেন, অবশেষে তিনি ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) এর সাথে কথা বলে ফেললেন এবং তার মানতের জন্য (কাফফারা স্বরূপ) চল্লিশজন গোলাম আযাদ করে দিলেন। এর পরে, যখনই তিনি তার মানতের কথা স্মরণ করতেন, তখন তিনি এত বেশী কাঁদতেন যে, তার চোখের পানিতে তার ওড়না ভিজে যেত।
باب الْهِجْرَةِ وَقَوْلِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ‘لاَ يَحِلُّ لِرَجُلٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثٍ
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ حَدَّثَنِي عَوْفُ بْنُ مَالِكِ بْنِ الطُّفَيْلِ ـ هُوَ ابْنُ الْحَارِثِ وَهْوَ ابْنُ أَخِي عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لأُمِّهَا ـ أَنَّ عَائِشَةَ حُدِّثَتْ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الزُّبَيْرِ قَالَ فِي بَيْعٍ أَوْ عَطَاءٍ أَعْطَتْهُ عَائِشَةُ وَاللَّهِ لَتَنْتَهِيَنَّ عَائِشَةُ، أَوْ لأَحْجُرَنَّ عَلَيْهَا. فَقَالَتْ أَهُوَ قَالَ هَذَا قَالُوا نَعَمْ. قَالَتْ هُوَ لِلَّهِ عَلَىَّ نَذْرٌ، أَنْ لاَ أُكَلِّمَ ابْنَ الزُّبَيْرِ أَبَدًا. فَاسْتَشْفَعَ ابْنُ الزُّبَيْرِ إِلَيْهَا، حِينَ طَالَتِ الْهِجْرَةُ فَقَالَتْ لاَ وَاللَّهِ لاَ أُشَفِّعُ فِيهِ أَبَدًا، وَلاَ أَتَحَنَّثُ إِلَى نَذْرِي. فَلَمَّا طَالَ ذَلِكَ عَلَى ابْنِ الزُّبَيْرِ كَلَّمَ الْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الأَسْوَدِ بْنِ عَبْدِ يَغُوثَ، وَهُمَا مِنْ بَنِي زُهْرَةَ، وَقَالَ لَهُمَا أَنْشُدُكُمَا بِاللَّهِ لَمَّا أَدْخَلْتُمَانِي عَلَى عَائِشَةَ، فَإِنَّهَا لاَ يَحِلُّ لَهَا أَنْ تَنْذُرَ قَطِيعَتِي. فَأَقْبَلَ بِهِ الْمِسْوَرُ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ مُشْتَمِلَيْنِ بِأَرْدِيَتِهِمَا حَتَّى اسْتَأْذَنَا عَلَى عَائِشَةَ فَقَالاَ السَّلاَمُ عَلَيْكِ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، أَنَدْخُلُ قَالَتْ عَائِشَةُ ادْخُلُوا. قَالُوا كُلُّنَا قَالَتْ نَعَمِ ادْخُلُوا كُلُّكُمْ. وَلاَ تَعْلَمُ أَنَّ مَعَهُمَا ابْنَ الزُّبَيْرِ، فَلَمَّا دَخَلُوا دَخَلَ ابْنُ الزُّبَيْرِ الْحِجَابَ، فَاعْتَنَقَ عَائِشَةَ وَطَفِقَ يُنَاشِدُهَا وَيَبْكِي، وَطَفِقَ الْمِسْوَرُ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ يُنَاشِدَانِهَا إِلاَّ مَا كَلَّمَتْهُ وَقَبِلَتْ مِنْهُ، وَيَقُولاَنِ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَمَّا قَدْ عَلِمْتِ مِنَ الْهِجْرَةِ، فَإِنَّهُ لاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثِ لَيَالٍ. فَلَمَّا أَكْثَرُوا عَلَى عَائِشَةَ مِنَ التَّذْكِرَةِ وَالتَّحْرِيجِ طَفِقَتْ تُذَكِّرُهُمَا نَذْرَهَا وَتَبْكِي وَتَقُولُ إِنِّي نَذَرْتُ، وَالنَّذْرُ شَدِيدٌ. فَلَمْ يَزَالاَ بِهَا حَتَّى كَلَّمَتِ ابْنَ الزُّبَيْرِ، وَأَعْتَقَتْ فِي نَذْرِهَا ذَلِكَ أَرْبَعِينَ رَقَبَةً. وَكَانَتْ تَذْكُرُ نَذْرَهَا بَعْدَ ذَلِكَ فَتَبْكِي، حَتَّى تَبُلَّ دُمُوعُهَا خِمَارَهَا.
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
সহীহ বুখারী - হাদীস নং ৫৬৪৬ | মুসলিম বাংলা