ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার

৪২. ইহসান-আত্মশুদ্ধির অধ্যায়

হাদীস নং: ২৫৬১
ইহসান-আত্মশুদ্ধির অধ্যায়
কোনো কল্যাণকর্মকেই ছোট মনে করতে নেই এবং সকল কল্যাণকর্মই দান
(২৫৬১) জাবির রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, প্রত্যেক কল্যাণময় কর্মই দান।
كتاب الإحسان
عن جابر رضي الله عنه مرفوعا : كل معروف صدقة

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছ দ্বারা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে নেক আমলের প্রতি উৎসাহিত করতে চেয়েছেন। তিনি জানাচ্ছেন নেক আমল মাত্রই সদাকা। অর্থাৎ সদাকা করলে যে ছাওয়াব পাওয়া যায়, যে-কোনও নেক আমল করেও তা পাওয়া যেতে পারে। গরীবগণ আক্ষেপ করে থাকে যে, টাকাপয়সা না থাকায় তারা দান-সদাকা করতে পারে না। এ হাদীছ সে আক্ষেপ দূর করে দিয়েছে। কেননা সদাকার ছাওয়াব যে কেবল আল্লাহর পথে টাকাপয়সা খরচ করলেই পাওয়া যাবে তা নয়; যে-কোনও নেক আমল দ্বারাই তা পাওয়া সম্ভব। সুতরাং সদাকার ছাওয়াব পাওয়া যেতে পারে কুরআন তিলাওয়াত করে, তাসবীহ পাঠ করে, অন্য কোনও যিকর করে, কাউকে সুপরামর্শ দিয়ে, কারও জন্য সুপারিশ করে, কারও সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলে, কাউকে পথ দেখিয়ে দিয়ে ইত্যাদি।

মোটকথা, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নত মোতাবেক আল্লাহ তা'আলাকে খুশি করার জন্য যে-কোনও কাজ করা, যে-কোনও কথা বলা ও যে-কোনও আচরণ দ্বারাই সদাকার ছাওয়াব হাসিল করা যাবে। সুতরাং কোনও নেক আমলকেই তুচ্ছ মনে করার সুযোগ নেই, যেমন পূর্বে এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছে যে, তুমি কোনও নেক আমলকেই তুচ্ছ মনে করো না, তা যদি তোমার ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করাও হয়। অর্থাৎ হাসিমুখে সাক্ষাৎ করাটাও একটা সৎকর্ম। একেও অবহেলা করা যাবে না, যেহেতু এর মাধ্যমেও সদাকার ছাওয়াব অর্জিত হয়।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. এ হাদীছ দ্বারা নেক আমলের গুরুত্ব বোঝা গেল যে, প্রতিটি নেক আমল দ্বারা তার নির্ধারিত ছাওয়াবের পাশাপাশি সদাকার ছাওয়াবও পাওয়া যায়।

খ. এ হাদীছ শিক্ষা দেয়- কোনও নেক আমলকেই তুচ্ছ মনে করতে নেই, যেহেতু একটি সাধারণ নেক আমলও সদাকারূপে গণ্য।

গ. এ হাদীছ দ্বারা আরও জানা গেল, সদাকার ছাওয়াব কেবল ধনীর জন্যই সংরক্ষিত নয়; গরীবদেরও তা পাওয়ার সুযোগ আছে এবং যে-কোনও নেক আমল দ্বারাই তারা তা পেতে পারে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)