ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার

৪২. ইহসান-আত্মশুদ্ধির অধ্যায়

হাদীস নং: ২৫৫১
ইহসান-আত্মশুদ্ধির অধ্যায়
রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়তা নষ্ট করার পাপ
(২৫৫১) জুবাইর ইবন মুতয়িম রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কোনো কর্তনকারী-ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
كتاب الإحسان
عن جبير بن مطعم رضي الله عنه مرفوعا: لا يدخل الجنة قاطع (قال سفيان : يعني قاطع رحم).

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছটি আমাদের জন্য এক কঠোর সতর্কবাণী। আমরা যারা নিজেদেরকে মুমিন বলে বিশ্বাস করি এবং বিশ্বাস করি কিআমত আছে, হাশরের হিসাব নিকাশ আছে তারপর আছে জান্নাত ও জাহান্নাম, তাদের কোনও অবস্থায়ই আত্মীয়তা ছিন্ন করা উচিত নয়। কেননা এ হাদীছে জানানো হয়েছে, আত্মীয়তা ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না। যে ব্যক্তি আত্মীয়তা ছিন্ন করতে অভ্যস্ত হয়ে যায় তার দ্বারা নানাভাবে বান্দার হক নষ্ট হতে থাকে। বান্দার হক নষ্ট করা কঠিন পাপ। এক পাপ আরেক পাপে লিপ্ত হতে উৎসাহ যোগায়। আত্মীয়তা ছিন্ন করার পাপ যাকে পেয়ে বসে আর সে যথাশীঘ্র তা থেকে তওবা না করে, তার পাপপ্রবণতা উত্তরোত্তর বাড়তেই থাকে। এরূপ ব্যক্তির তো অশুভ মৃত্যুর আশঙ্কা থাকেই, অর্থাৎ ঈমানবিহীন মৃত্যু। আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাজত করুন। ঈমান ছাড়া যার মৃত্যু হয় তার পরিণাম স্থায়ী জাহান্নাম।

আত্মীয়তা ছিন্নকারীর মৃত্যু যদি ঈমানের সঙ্গে হয়ও, তারপরও আত্মীয়তার হক খর্ব করার কারণে তার জাহান্নামের শাস্তিভোগের আশঙ্কা রয়েছে। যদি আল্লাহ তাআলা তার ক্ষমার কোনও ব্যবস্থা না করেন, তবে প্রথমে তাকে জাহান্নামে যেতেই হবে। নির্দিষ্ট পরিমাণ শাস্তিভোগের পর সে মুক্তি পাবে এবং ঈমানের বদৌলতে জান্নাত লাভ করবে। কিন্তু যতদিন তাকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে, ততদিনের দুর্ভোগ কিছু সহজ বিষয় তো নয়। সে দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে চাইলে আমাদেরকে অবশ্যই আত্মীয়তা ছিন্ন করা হতে বিরত থাকতে হবে, অবস্থাবিশেষে তা যতই কঠিন হোক না কেন।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

যত কঠিন অবস্থাই হোক না কেন, কোনওক্রমেই আত্মীয়তা ছিন্ন করতে নেই। জাহান্নাম থেকে সম্পূর্ণরূপে আত্মরক্ষার লক্ষ্যে আমাদেরকে আমৃত্যু আত্মীয়তা রক্ষা করে যেতেই হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)