ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার
১০. শপথ ও মান্নতের অধ্যায়
হাদীস নং: ১৭৬৩
শপথ ভঙ্গের কাফফারা কখন প্রদান করতে হবে
(১৭৬৩) আবু হুরাইরা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কেউ কোনো প্রতিজ্ঞার শপথ করে, এরপর দেখে যে শপথের ব্যতিক্রম বলেছেন, যদি বিষয়টিই শপথকৃত বিষয়ের চেয়ে উত্তম তাহলে সে যেন (শপথ ভঙ্গ করে) উত্তম বিষয়টি পালন করে এবং শপথের জন্য কাফফারা প্রদান করে ।
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من حلف على يمين فرأى غيرها خيرا منها فليأتها وليكفر عن يمينه
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছ দ্বারাও তাকওয়ার গুরুত্ব বোঝা যায়। ইসলামে কসম রক্ষার বিশেষ তাকীদ করা হয়েছে। যেমন কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَاحْفَظُوا أَيْمَانَكُمْ
'তোমরা তোমাদের শপথ রক্ষা কর।
শপথ বা কসম যেহেতু করা হয় আল্লাহর নামে, তাই আল্লাহর নামের মর্যাদা রক্ষার্থে কসম রক্ষা করাও জরুরি। অবশ্য এটা সে ক্ষেত্রে, যখন কসম করা হয় জায়েয কাজ সম্পর্কে এবং তার বিপরীত কাজটি তার চেয়ে উত্তম না হয়। পক্ষান্তরে নাজায়েয কাজের কসম করলে তখন সে কসম রক্ষা না করে ভেঙে ফেলাই জরুরি। এ হাদীছে বলা হয়েছে- কোনও বিষয়ে কসম করার পর যদি দেখা যায় যে কাজ করার কসম করেছে সেটি তাকওয়ার পরিপন্থী ও নাজায়েয কাজ এবং তার বিপরীত কাজই তাকওয়ার অনুকূল, তবে তার কর্তব্য কসম ভেঙে ফেলা এবং তাকওয়ার অনুকূল কাজটিই করা। কেননা তাকওয়ার পরিপন্থী বা নাজায়েয কাজ করা পাপ ও আল্লাহর অবাধ্যতা। কসম রক্ষার চেয়ে আল্লাহর অবাধ্যতা পরিহার করা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। তাই এরূপ ক্ষেত্রে অবাধ্যতা থেকে বাঁচার জন্য কসম ভাঙাই জরুরি। যেমন কেউ কসম করল সে তার ভাই বা বোনের সাথে সম্পর্ক রাখবে না। অথচ ভাইবোনের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করা ফরয এবং সম্পর্ক ছিন্ন করা হারাম। তো এ ক্ষেত্রে কসমের বিপরীত কাজটি অর্থাৎ ভাইবোনের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করা তাকওয়ার অনুকূল। সুতরাং তার কর্তব্য কসম ভেঙে ফেলা ও ভাইবোনের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করা।
যদি এমন কোনও কাজের কসম করে, যে কাজটি করা জায়েয বটে কিন্তু তার বিপরীত কাজ উত্তম ও মুস্তাহাব, সে ক্ষেত্রেও কসম ভেঙে মুস্তাহাব কাজটি করাই শ্রেয়। যেমন এক হাদীছে বর্ণিত আছে-
من خلف على يمين فرأى غيرها خيرا منها قليات الذي هُوَ خَيْرٌ وَلي عَنْ يَمِينِهِ
যে ব্যক্তি কোনও কাজের কসম করে, তারপর তার বিপরীত কাজটি উত্তম দেখতে
পায়, তবে যে কাজটি উত্তম সেটিই যেন করে এবং তার কসমের কাফ্ফারা দিয়ে দেয়। কসম ভাঙার কাফফারা হল দশজন মিসকীনকে দু'বেলা খাবার খাওয়ানো। খাবার খাওয়ানোর সংগতি না থাকলে একাধারে তিনটি রোযা রাখা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. সকল কাজকর্মে অন্তরে তাকওয়া ও আল্লাহভীতি জাগরুক রাখা চাই।
খ. কসম রক্ষা করা বা ভেঙে ফেলার ক্ষেত্রেও তাকওয়াকেই মানদণ্ড বানানো উচিত।
গ. কসম রক্ষার খাতিরে নাজায়েয বা তুলনামূলক অনুত্তম কাজটিই করতে হবে এ ধারণা ঠিক নয়, যেহেতু তা করা তাকওয়ার পরিপন্থী। সে ক্ষেত্রে কসম ভেঙে কাফ্ফারা দেওয়া বাঞ্ছনীয়।
وَاحْفَظُوا أَيْمَانَكُمْ
'তোমরা তোমাদের শপথ রক্ষা কর।
শপথ বা কসম যেহেতু করা হয় আল্লাহর নামে, তাই আল্লাহর নামের মর্যাদা রক্ষার্থে কসম রক্ষা করাও জরুরি। অবশ্য এটা সে ক্ষেত্রে, যখন কসম করা হয় জায়েয কাজ সম্পর্কে এবং তার বিপরীত কাজটি তার চেয়ে উত্তম না হয়। পক্ষান্তরে নাজায়েয কাজের কসম করলে তখন সে কসম রক্ষা না করে ভেঙে ফেলাই জরুরি। এ হাদীছে বলা হয়েছে- কোনও বিষয়ে কসম করার পর যদি দেখা যায় যে কাজ করার কসম করেছে সেটি তাকওয়ার পরিপন্থী ও নাজায়েয কাজ এবং তার বিপরীত কাজই তাকওয়ার অনুকূল, তবে তার কর্তব্য কসম ভেঙে ফেলা এবং তাকওয়ার অনুকূল কাজটিই করা। কেননা তাকওয়ার পরিপন্থী বা নাজায়েয কাজ করা পাপ ও আল্লাহর অবাধ্যতা। কসম রক্ষার চেয়ে আল্লাহর অবাধ্যতা পরিহার করা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। তাই এরূপ ক্ষেত্রে অবাধ্যতা থেকে বাঁচার জন্য কসম ভাঙাই জরুরি। যেমন কেউ কসম করল সে তার ভাই বা বোনের সাথে সম্পর্ক রাখবে না। অথচ ভাইবোনের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করা ফরয এবং সম্পর্ক ছিন্ন করা হারাম। তো এ ক্ষেত্রে কসমের বিপরীত কাজটি অর্থাৎ ভাইবোনের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করা তাকওয়ার অনুকূল। সুতরাং তার কর্তব্য কসম ভেঙে ফেলা ও ভাইবোনের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করা।
যদি এমন কোনও কাজের কসম করে, যে কাজটি করা জায়েয বটে কিন্তু তার বিপরীত কাজ উত্তম ও মুস্তাহাব, সে ক্ষেত্রেও কসম ভেঙে মুস্তাহাব কাজটি করাই শ্রেয়। যেমন এক হাদীছে বর্ণিত আছে-
من خلف على يمين فرأى غيرها خيرا منها قليات الذي هُوَ خَيْرٌ وَلي عَنْ يَمِينِهِ
যে ব্যক্তি কোনও কাজের কসম করে, তারপর তার বিপরীত কাজটি উত্তম দেখতে
পায়, তবে যে কাজটি উত্তম সেটিই যেন করে এবং তার কসমের কাফ্ফারা দিয়ে দেয়। কসম ভাঙার কাফফারা হল দশজন মিসকীনকে দু'বেলা খাবার খাওয়ানো। খাবার খাওয়ানোর সংগতি না থাকলে একাধারে তিনটি রোযা রাখা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. সকল কাজকর্মে অন্তরে তাকওয়া ও আল্লাহভীতি জাগরুক রাখা চাই।
খ. কসম রক্ষা করা বা ভেঙে ফেলার ক্ষেত্রেও তাকওয়াকেই মানদণ্ড বানানো উচিত।
গ. কসম রক্ষার খাতিরে নাজায়েয বা তুলনামূলক অনুত্তম কাজটিই করতে হবে এ ধারণা ঠিক নয়, যেহেতু তা করা তাকওয়ার পরিপন্থী। সে ক্ষেত্রে কসম ভেঙে কাফ্ফারা দেওয়া বাঞ্ছনীয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
