ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার

৪. যাকাতের অধ্যায়

হাদীস নং: ১২৫৯
সচ্ছল থাকা ও ভিক্ষা থেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করার গুরুত্ব, পরিবার ও আত্মীয়দেরকে প্রদানের মাধ্যমে দান শুরু করা এবং শ্রেষ্ঠ দানের বিবরণ
(১২৫৯) সালমান ইবন আমির রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, দরিদ্র ব্যক্তিকে দান করা একটি মাত্র দান। আর রক্তসম্পর্কের আত্মীয়কে দান করা দুইটি নেক কর্ম: দান এবং আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করা।
عن سلمان بن عامر رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: إن الصدقة على المسكين صدقة وإنها على ذي الرحم اثنتان: صدقة وصلة

হাদীসের ব্যাখ্যা:

দান-খয়রাত সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে যে, এটা গরীব-মিসকীনকে দিলে কেবল সদাকার ছাওয়াব পাওয়া যায়। আর আত্মীয়-স্বজনকে দিলে দ্বিগুণ ছাওয়াব হয়- এক তো দান-খয়রাতের ছাওয়াব, দ্বিতীয়ত আত্মীয়সেবার ছাওয়াব। এর দ্বারা আত্মীয়- স্বজনকে দান-খয়রাত করতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে এবং অন্যান্য গরীব-মিসকীনের উপর তাদের অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে।

এর দ্বারা বোঝা যায় আত্মীয়দের মধ্যে যে যতবেশি নিকটবর্তী, তাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করাও ততবেশি গুরুত্বপূর্ণ ও ততবেশি উৎকৃষ্ট।

অবশ্য উলামায়ে কেরাম বলেন, অনাত্মীয় গরীব অপেক্ষা আত্মীয় গরীবকে দান করা সর্বাবস্থায়ই যে উত্তম তা নয়; অবস্থাবিশেষে এর ব্যতিক্রমও হতে পারে। যেমন আত্মীয় গরীব অপেক্ষা অনাত্মীয় গরীবের অর্থকষ্ট যদি বেশি হয়, সে ক্ষেত্রে অনাত্মীয় গরীবের কষ্ট দূর করাই বেশি জরুরি হবে। এমনিভাবে যদি অনাত্মীয় গরীবকে দান করার দ্বারা তার উপকার হওয়ার পাশাপাশি অন্যদেরও উপকারলাভের সম্ভাবনা থাকে, সে ক্ষেত্রেও তাকে দান করা বেশি উত্তম হবে। যেমন অনাত্মীয় গরীব ইলমে দীনের খেদমতে নিয়োজিত আছে। সে আয়-রোযগারে লেগে গেলে মানুষ তার দ্বারা দীনী উপকারলাভ থেকে বঞ্চিত হবে। এ ক্ষেত্রে সম্মানজনকভাবে অর্থসাহায্য করার দ্বারা তাকে আয়- রোযগারের ফিকির থেকে মুক্ত রাখা এবং একান্তভাবে ইলমে দীনের খেদমতে নিয়োজিত থাকার সুযোগ করে দেওয়া অধিকতর ছাওয়াবের কাজ বৈকি; বরং এটা সদাকায়ে জারিয়ারূপে গণ্য হবে।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. আত্মীয়ের সেবা করা অতি গুরুত্বপূর্ণ আমল। দান-খয়রাতেও অন্যান্য গরীব-মিসকীন অপেক্ষা আত্মীয়দের অগ্রাধিকার দেওয়া চাই। এতে দ্বিগুণ ছাওয়াব।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ফিকহুস সুনান - হাদীস নং ১২৫৯ | মুসলিম বাংলা