ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার

৩. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ১১১১
জানাযার সালাতের মর্যাদা
(১১১১) মালিক ইবন হুবাইরা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যদি কোনো মুসলিম মৃত্যুবরণ করে, অতঃপর তিন সারি মুসলিম তার জন্য সালাত আদায় করে তাহলে তার প্রাপ্য হয়ে যাবে (জান্নাত ও পুরস্কার)।
عن مالك بن هبيرة رضي الله عنه مرفوعا: ما من مسلم يموت فيصلي عليه ثلاثة صفوف من المسلمين إلا أوجب

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছটির দৃষ্টিতে উলামায়ে কেরাম বলেন, জানাযার নামায সর্বনিম্ন তিন কাতারে হওয়া মুস্তাহাব। লোকসংখ্যা যদি কম হয়, তবে একেক কাতারে অন্ততপক্ষে দু'জন করে হলেও তিন কাতার বানিয়ে নেওয়া ভালো। যদিও এক বা দুই কাতারে করলেও জানাযা জায়েয হয়ে যায়।

তিন কাতারের ফযীলত সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এর দ্বারা মায়্যিতের জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। এটা একটা ওয়াদা, যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে শুনিয়েছেন। আল্লাহ তা'আলার ওয়াদায় কোনও ব্যতিক্রম হয় না। তবে অন্যান্য হাদীছের দৃষ্টিতে এটা স্পষ্ট হয়ে আছে যে, এর দ্বারা বান্দার হক মাফ হয় না। কাজেই মায়্যিতের উপর যদি বান্দার কোনও হক থেকে যায়, তবে তা পরিশোধের ব্যবস্থা করা উচিত। অন্যথায় আখিরাতে এর জন্য সে আটকা পড়ে যাবে।

সাহাবায়ে কেরাম নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ করতে সর্বদা বদ্ধপরিকর থাকতেন। আলোচ্য হাদীছটিতেও তার প্রমাণ পাওয়া যায়। হযরত মালিক ইবন হুবায়রা রাযি. সম্পর্কে এতে বলা হয়েছে যে, জানাযায় উপস্থিত লোকের সংখ্যা কম দেখলে তিনি তাদেরকে তিন কাতারে বিভক্ত করে নিতেন। তিনি এর সপক্ষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন। এর দ্বারা বোঝা যায় লোকসংখ্যা যদি বেশি হয় এবং কাতারের সংখ্যা তিনের বেশি হয়ে যায়, তাতে অসুবিধার কিছু নেই। বরং লোক যত বেশি হবে আর তাতে কাতার যত বেশি বাড়বে ততোই ভালো।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. জানাযার নামাযে তিন কাতার করা মুস্তাহাব।

খ. প্রতিটি কাজে সুন্নতের অনুসরণ করার উৎসাহ রাখা উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ফিকহুস সুনান - হাদীস নং ১১১১ | মুসলিম বাংলা