আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৬৩- পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
হাদীস নং: ৫৪২৫
আন্তর্জাতিক নং: ৫৮৪৩
৩০৯০. নবী (ﷺ) কী ধরনের পোশাক ও বিছানা গ্রহণ করতেন।
৫৪২৫। সুলাইমান ইবনে হারব (রাহঃ) ......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একবছর যাবত অপেক্ষায় ছিলাম যে, উমর (রাযিঃ) এর কাছে সে দু’টি মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করব, যারা নবী (ﷺ) এর বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছিলো। কিন্তু আমি তাকে খুব ভয় করে চলতাম। একদিন তিনি কোন এক স্থানে নামলেন এবং (প্রাকৃতিক প্রয়োজনে) আরাক গাছের কাছে গেলেন। যখন তিনি বেরিয়ে এলেন, আমি তাকে (সে সম্পর্কে) জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ (তারা হলেন) আয়েশা (রাযিঃ) ও হাফসা (রাযিঃ)। এরপর তিনি বললেনঃ জাহিলীযুগে আমরা নারীদের কোনকিছু বলে গণ্যই করতাম না। যখন ইসলাম আবির্ভূত হলো এবং (কুরআনে) আল্লাহ নারীদের (মর্যাদা ও অধিকারের কথা) উল্লেখ করলেন। তাতে আমরা দেখলাম যে, আমাদের উপর তাদের অনেক হক আছে। তথাপি/যদিও/তবে আমরা তাদের পুরুষদের সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিতে অন্তর্ভুক্ত করতাম না।
একদা আমার স্ত্রী ও আমার মধ্যে কিছু কথাবার্তা হাচ্ছিল। সে আমার উপর রুঢ় ভাষা ব্যবহার করলো। আমি তাকে বললামঃ তুমি তো সীমা অতিক্রম করছ। স্ত্রী তখন বললেনঃ তুমি আমাকে এরূপ বলছ, অথচ তোমার কন্যা নবী (ﷺ) কে কষ্ট দিচ্ছে। এরপর আমি হাফসার কাছে এলাম এবং বললামঃ আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের অসন্তোষজনক আচরণ করা থেকে আমি তোমাকে সতর্ক করে দিচ্ছি। নবী (ﷺ) কে কষ্ট দেওয়ায় আমি হাফসার কাছেই প্রথমে আসি। এরপর আমি উম্মে সালামা (রাযিঃ)* এর কাছে এলাম এবং তাকেও অনুরূপ বললাম। তিনি বললেনঃ তোমার প্রতি আমার বিস্ময় হে উমর! তুমি আমার সকল ব্যাপারেই দখল দিচ্ছ, কিছুই বাকী রাখনি, এমনকি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও তার সহধর্মিণীগণের ব্যাপারেও হস্তক্ষেপ করছ। এ কথা বলে তিনি (আমাকে) প্রত্যাখ্যান করলেন।
একজন আনসারী লোক ছিলেন। তিনি যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মজলিস থেকে অনুপস্থিত থাকতেন এবং আমি উপস্থিত থাকতাম, তখন যা কিছু হতো, সেসব আমি তাকে গিয়ে জানাতাম। আর আমি যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মজলিসে অনুপস্থিত থাকতাম এবং তিনি উপস্থিত থাকতেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর এখানে যা কিছু ঘটতো, তিনি যাবতীয় খবর এসে আমাকে জানাতেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর চারপাশে যারা (রাজা-বাদশাহ) ছিল, তাদের উপর রাসূলের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল। কেবল বাকী ছিল শামের (সিরিয়ার) গাসসান শাসক। তার আক্রমণের আমরা আশঙ্কা করতাম।
হঠাৎ একদা আনসারী ব্যক্তিটি যখন বললঃ এক বিরাট ঘটনা ঘটে গেছে! আমি তাকে বললামঃ কি ঘটনা ঘটে গেছে! গাসসানী শাসক কি এসে পড়েছে? তিনি বললেনঃ এর চাইতেও ভয়াবহ ব্যাপার (ঘটে গেছে)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার সকল সহধর্মিণীকে তালাক দিয়েছেন। আমি সেখানে গেলাম। দেখলাম, সকল কক্ষ থেকে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার কক্ষের চিলেকুঠুরিতে অবস্থান করছিলেন। প্রবেশপথে অল্পবয়স্ক একজন খাদিম বসে আছে। আমি তার কাছে গেলাম এবং বললামঃ আমার জন্য অনুমতি চাও। অনুমতি পেয়ে আমি ভিতরে প্রবেশ করলাম। দেখলাম, নবী (ﷺ) একটি চাটাইয়ের উপর শুয়ে আছেন, যা তার পার্শ্বদেশে দাগ বসিয়ে দিয়েছে। তার মাথার নীচে ছিল চামড়ার একটি বালিশ; তার ভেতরে রয়েছে খেজুর গাছের ছাল। কয়েকটি চামড়া ঝুলানো রয়েছে এবং বিশেষ গাছের পাতা। এরপর হাফসা ও উম্মে সালামাকে আমি যা বলেছিলাম এবং উম্মে সালামা আমাকে যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, সেসব আমি তাঁর কাছে ব্যক্ত করলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হাসলেন। তিনি ঊনত্রিশ রাত সেখানে (চিলেকুঠুরিতে) অবস্থান করার পর অবতরণ করেন।
* উম্মে সালামা (রাযিঃ) উমর রাঃ এর আত্নীয়া ছিলেন।
একদা আমার স্ত্রী ও আমার মধ্যে কিছু কথাবার্তা হাচ্ছিল। সে আমার উপর রুঢ় ভাষা ব্যবহার করলো। আমি তাকে বললামঃ তুমি তো সীমা অতিক্রম করছ। স্ত্রী তখন বললেনঃ তুমি আমাকে এরূপ বলছ, অথচ তোমার কন্যা নবী (ﷺ) কে কষ্ট দিচ্ছে। এরপর আমি হাফসার কাছে এলাম এবং বললামঃ আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের অসন্তোষজনক আচরণ করা থেকে আমি তোমাকে সতর্ক করে দিচ্ছি। নবী (ﷺ) কে কষ্ট দেওয়ায় আমি হাফসার কাছেই প্রথমে আসি। এরপর আমি উম্মে সালামা (রাযিঃ)* এর কাছে এলাম এবং তাকেও অনুরূপ বললাম। তিনি বললেনঃ তোমার প্রতি আমার বিস্ময় হে উমর! তুমি আমার সকল ব্যাপারেই দখল দিচ্ছ, কিছুই বাকী রাখনি, এমনকি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও তার সহধর্মিণীগণের ব্যাপারেও হস্তক্ষেপ করছ। এ কথা বলে তিনি (আমাকে) প্রত্যাখ্যান করলেন।
একজন আনসারী লোক ছিলেন। তিনি যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মজলিস থেকে অনুপস্থিত থাকতেন এবং আমি উপস্থিত থাকতাম, তখন যা কিছু হতো, সেসব আমি তাকে গিয়ে জানাতাম। আর আমি যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মজলিসে অনুপস্থিত থাকতাম এবং তিনি উপস্থিত থাকতেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর এখানে যা কিছু ঘটতো, তিনি যাবতীয় খবর এসে আমাকে জানাতেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর চারপাশে যারা (রাজা-বাদশাহ) ছিল, তাদের উপর রাসূলের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল। কেবল বাকী ছিল শামের (সিরিয়ার) গাসসান শাসক। তার আক্রমণের আমরা আশঙ্কা করতাম।
হঠাৎ একদা আনসারী ব্যক্তিটি যখন বললঃ এক বিরাট ঘটনা ঘটে গেছে! আমি তাকে বললামঃ কি ঘটনা ঘটে গেছে! গাসসানী শাসক কি এসে পড়েছে? তিনি বললেনঃ এর চাইতেও ভয়াবহ ব্যাপার (ঘটে গেছে)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার সকল সহধর্মিণীকে তালাক দিয়েছেন। আমি সেখানে গেলাম। দেখলাম, সকল কক্ষ থেকে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার কক্ষের চিলেকুঠুরিতে অবস্থান করছিলেন। প্রবেশপথে অল্পবয়স্ক একজন খাদিম বসে আছে। আমি তার কাছে গেলাম এবং বললামঃ আমার জন্য অনুমতি চাও। অনুমতি পেয়ে আমি ভিতরে প্রবেশ করলাম। দেখলাম, নবী (ﷺ) একটি চাটাইয়ের উপর শুয়ে আছেন, যা তার পার্শ্বদেশে দাগ বসিয়ে দিয়েছে। তার মাথার নীচে ছিল চামড়ার একটি বালিশ; তার ভেতরে রয়েছে খেজুর গাছের ছাল। কয়েকটি চামড়া ঝুলানো রয়েছে এবং বিশেষ গাছের পাতা। এরপর হাফসা ও উম্মে সালামাকে আমি যা বলেছিলাম এবং উম্মে সালামা আমাকে যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, সেসব আমি তাঁর কাছে ব্যক্ত করলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হাসলেন। তিনি ঊনত্রিশ রাত সেখানে (চিলেকুঠুরিতে) অবস্থান করার পর অবতরণ করেন।
* উম্মে সালামা (রাযিঃ) উমর রাঃ এর আত্নীয়া ছিলেন।
باب مَا كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَتَجَوَّزُ مِنَ اللِّبَاسِ وَالْبُسْطِ
5843 - حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ حُنَيْنٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: لَبِثْتُ سَنَةً وَأَنَا أُرِيدُ أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ، عَنِ المَرْأَتَيْنِ اللَّتَيْنِ تَظَاهَرَتَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَعَلْتُ أَهَابُهُ، فَنَزَلَ يَوْمًا مَنْزِلًا فَدَخَلَ الأَرَاكَ، فَلَمَّا خَرَجَ سَأَلْتُهُ فَقَالَ: عَائِشَةُ وَحَفْصَةُ، ثُمَّ قَالَ: كُنَّا فِي الجَاهِلِيَّةِ لاَ نَعُدُّ النِّسَاءَ شَيْئًا، فَلَمَّا جَاءَ الإِسْلاَمُ وَذَكَرَهُنَّ اللَّهُ، رَأَيْنَا لَهُنَّ بِذَلِكَ عَلَيْنَا حَقًّا، مِنْ غَيْرِ أَنْ نُدْخِلَهُنَّ فِي شَيْءٍ مِنْ أُمُورِنَا، وَكَانَ بَيْنِي وَبَيْنَ امْرَأَتِي كَلاَمٌ، فَأَغْلَظَتْ لِي، فَقُلْتُ لَهَا: وَإِنَّكِ لَهُنَاكِ؟ قَالَتْ: تَقُولُ هَذَا لِي وَابْنَتُكَ تُؤْذِي النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَتَيْتُ حَفْصَةَ فَقُلْتُ لَهَا: إِنِّي أُحَذِّرُكِ أَنْ تَعْصِي اللَّهَ وَرَسُولَهُ، وَتَقَدَّمْتُ إِلَيْهَا فِي أَذَاهُ، فَأَتَيْتُ أُمَّ سَلَمَةَ فَقُلْتُ لَهَا، فَقَالَتْ: أَعْجَبُ مِنْكَ يَا عُمَرُ، قَدْ دَخَلْتَ فِي أُمُورِنَا، فَلَمْ يَبْقَ إِلَّا أَنْ تَدْخُلَ بَيْنَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَزْوَاجِهِ؟ فَرَدَّدَتْ، وَكَانَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ إِذَا غَابَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَشَهِدْتُهُ أَتَيْتُهُ بِمَا يَكُونُ، وَإِذَا غِبْتُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَشَهِدَ أَتَانِي بِمَا يَكُونُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكَانَ مَنْ حَوْلَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدِ اسْتَقَامَ لَهُ، فَلَمْ يَبْقَ إِلَّا مَلِكُ غَسَّانَ بِالشَّأْمِ، كُنَّا نَخَافُ أَنْ يَأْتِيَنَا، فَمَا شَعَرْتُ إِلَّا بِالأَنْصَارِيِّ وَهُوَ يَقُولُ: إِنَّهُ قَدْ حَدَثَ أَمْرٌ، قُلْتُ لَهُ: وَمَا هُوَ، أَجَاءَ الغَسَّانِيُّ؟ قَالَ: أَعْظَمُ مِنْ ذَاكَ، طَلَّقَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نِسَاءَهُ، فَجِئْتُ فَإِذَا البُكَاءُ مِنْ حُجَرِهِنَّ كُلِّهَا، وَإِذَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ صَعِدَ فِي مَشْرُبَةٍ لَهُ، وَعَلَى بَابِ المَشْرُبَةِ وَصِيفٌ، فَأَتَيْتُهُ فَقُلْتُ: اسْتَأْذِنْ لِي، فَأَذِنَ لِي، فَدَخَلْتُ، «فَإِذَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى حَصِيرٍ قَدْ أَثَّرَ فِي جَنْبِهِ، وَتَحْتَ رَأْسِهِ مِرْفَقَةٌ مِنْ أَدَمٍ حَشْوُهَا لِيفٌ، وَإِذَا أُهُبٌ مُعَلَّقَةٌ وَقَرَظٌ» فَذَكَرْتُ الَّذِي قُلْتُ لِحَفْصَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ، وَالَّذِي رَدَّتْ عَلَيَّ أُمُّ سَلَمَةَ، «فَضَحِكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَبِثَ تِسْعًا وَعِشْرِينَ لَيْلَةً ثُمَّ نَزَلَ»
