ফিকহুস সুনান ওয়াল আসার

৩. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ৬৫২
কাতারের পিছে একা সালাত আদায় করা
(৬৫২) আবু বাকরাহ রা. বলেন, তিনি একদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট আগমন করে দেখেন যে তিনি রুকুরত রয়েছেন। তখন তিনি কাতারের পেছনেই রুকুতে চলে যান (আবু দাউদের বর্ণনায়: রুকুরত অবস্থায় হেঁটে তিনি কাতারে যোগ দেন)। তিনি বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলেন। তখন তিনি বলেন, আল্লাহ তোমার আগ্রহ বৃদ্ধি করুন! এরূপ আর করবে না।
عن أبي بكرة رضي الله عنه أنه انتهى إلى النبي صلى الله عليه وسلم وهو راكع فركع قبل أن يصل إلى الصف (في رواية أبي داود: ثم مشى إلى الصف) فذكر ذلك للنبي صلى الله عليه وسلم فقال: زادك الله حرصا ولا تعد

হাদীসের ব্যাখ্যা:

গ্রন্থকার রাহ. বলেন, এই হাদীসে দেখা যায়, আবু বাকরাহ রা. সালাতের কিছু অংশ একাকী কাতারের পেছনে আদায় করেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁকে পুনরায় সালাত আদায় করতে নির্দেশ দেন নি। কিন্তু তিনি তাঁকে পুনরায় এরূপ করতে নিষেধ করেন। মনে হয় তিনি তাঁকে উত্তম পদ্ধতি শিখিয়ে দেন। আল্লাহই ভালো জানেন ।

কোন মুক্তাদী ইমামের সাথে রুকুতে শরিক হতে পারলে সে রাকাত পেয়ে যাবে। আর রুকু না পেলে রাকাত পাবে না। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (আল-বিনায়াহ: ২/১৭৬, অধ্যায়: সুনানুস সলাত) এ ব্যাপারে আলস্নামা ইবনু আব্দিল বার রহ. বলেন, قَالَ جُمْهُورُ الْعُلَمَاءِ مَنْ أَدْرَكَ الْإِمَامَ راكعا فكبر وَرَكَعَ وَأَمْكَنَ يَدَيْهِ مِنْ رُكْبَتَيْهِ قَبْلَ أَنْ يَرْفَعَ الْإِمَامُ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ فَقَدْ أَدْرَكَ الرَّكْعَةَ وَمَنْ لَمْ يُدْرِكْ ذَلِكَ فَقَدْ فَاتَتْهُ الرَّكْعَةُ ‘ অধিকাংশ উলামায়ে কিরাম বলেন, যে ব্যক্তি ইমামকে রুকু অবস্থায় পেলো অতঃপর তাকবীর বলে রুকু করলো এবং ইমাম রুকু থেকে মাথা উঠানোর পূর্বে উভয় হাত দ্বারা হাটুদ্বয় ধরতে পারলো সে রাকাত পেয়ে গেলো। আর যে ব্যক্তি এ অবস্থায় রুকু পেলো না তার রাকাত ছুটে গেলো। (আত-তামহীদ- ৭/৭৩) অতঃপর এ মতামতকে তিনি চার ইমামসহ আরো অনেক গবেষক ইমামদের মত বলে উলেস্নখ করে এর সপক্ষে এক দল সাহাবায়ে কিরামের আছার বর্ণনা করেন। তিনি যাদের আছার তুলে ধরেছেন তম্মধ্যে হযরত ইবনে মাসউদ রা.-এর আছার সহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে ইবনে আবী শাইবা-২৬৩৭ এবং আস-সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী-২৫৮৭ নাম্বার হাদীসে। আলস্নামা ইবনু আব্দিল বার রহ. এ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (আল-ইসিত্মজকার: ২/৩১৪) আলস্নামা বদরম্নদ্দীন আইনী রহ.ও হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (উমদাতুল কারী: ৬/৫৫) আরো বর্ণিত হয়েছে হযরত ইবনে উমার রা. থেকে ইবনে আবী শাইবা: ২৫৩৪ নাম্বার হাদীসে। হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (আল-মাতালিবুল আলিয়া: ৪/৮৩) আরো বর্ণিত হয়েছে হযরত যায়েদ বিন সাবেত রা. থেকে ত্বহাবী: খ--১, পৃষ্ঠা-২৬৮, ২৩২৬ নাম্বার হাদীসে। আলস্নামা বদরম্নদ্দীন আইনী রহ. এটাকে সহীহ বলেছেন। (নুখাবুল আফকার- ৬/২১৩) এ বিষয়ে আরো বর্ণিত হয়েছে হযরত আব্দুলস্নাহ বিন যুবায়ের রা. থেকে ইবনে আবী শাইবা-২৬৪৬ নাম্বার হাদীসে। এ হাদীসটির সনদ গ্রহণযোগ্য।
মোটকথা এ বিষয়টি এত ব্যাপক বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত যে, নিরপেড়্গ দৃষ্টিতে কেউ গভীরভাবে পর্যবেড়্গণ করলে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন