আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৬৩- পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা

হাদীস নং: ৫৩৯১
আন্তর্জাতিক নং: ৫৮০৭
৩০৭৫. চাদর বা অন্যকিছু দ্বারা মাথা ও মুখের অধিকাংশ অঙ্গ ঢেকে রাখা।
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, নবী (ﷺ) একদা বাইরে আসলেন, তখন তাঁর (মাথার) উপর রুমাল ছিল ।
আনাস (রাযিঃ) বলেছেনঃ নবী (ﷺ) নিজ মাথা চাদরের এক পাশ দ্বারা বেঁধে রেখেছিলেন ।
৫৩৯১। ইবরাহীম ইবনে মুসা (রাহঃ) ......... আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কিছুসংখ্যক মুসলিম হাবশায় হিজরত করেন। এসময় আবু বকর (রাযিঃ) হিজরত করার উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। নবী (ﷺ) বললেনঃ তুমি একটু অপেক্ষা কর; কেননা, মনে হয় আমাকেও (হিজরতের) আদেশ দেওয়া হবে। আবু বকর (রাযিঃ) বললেনঃ আমার পিতা আপনার উপর কুরবান হোক, আপনিও কি এ আশা পোষণ করেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আবু বকর (রাযিঃ) নবী (ﷺ) এর সঙ্গ লাভের আশায় নিজেকে সংবরন করে রাখেন এবং তার মালিকানাধীন দুটি সওয়ারীকে চারমাস যাবত সামুর বৃক্ষের পাতা ভক্ষণ করান।
উরওয়া (রাহঃ) বর্ণনা করেন, আয়েশা রাঃ বলেছেন যে, একদিন ঠিক দুপুরের সময় আমরা আমাদের ঘরে বসে আছি। এ সময় এক ব্যক্তি আবু বকর (রাযিঃ) কে বলল, এই যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মুখমণ্ডল ঢেকে এগিয়ে আসছেন। এমন সময় তিনি এসেছেন, যেসময় তিনি সাধারণত আমাদের কাছে আসেন না। আবু বকর (রাযিঃ) বললেনঃ আমার মাতা পিতা তার উপর কুরবান হোক, আল্লাহর কসম! এমনসময় তিনি একটি বড় কাজ নিয়েই এসে থাকবেন। নবী (ﷺ) এসে পড়লেন। তিনি অনুমতি চাইলেন, তাকে অনুমতি দেওয়া হলো। তিনি প্রবেশ করলেন। প্রবেশের সময় আবু বকর (রাযিঃ) কে বললেনঃ তোমার কাছে যারা আছে, তাদের সরিয়ে দাও। তিনি বললেনঃ আমার পিতা আপনার উপর কুরবান হোক, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এরা তো আপনারই পরিবারের লোক।
নবী (ﷺ) বললেনঃ আমাকে হিজরতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আবু বকর (রাযিঃ) বললেনঃ তাহলে আমি কি আপনার সঙ্গী হবো ইয়া রাসূলাল্লাহ? আমার পিতা-মাতা আপনার উপর কুরবান হোক। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আবু বকর (রাযিঃ) বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আমার এদুটি সওয়ারীর একটি গ্রহণ করুন। নবী (ﷺ) বললেনঃ মুল্যের বিনিময়ে (নিতে রাযী আছি)। আয়েশা (রাযিঃ) বলেনঃ তাঁদের উভয়ের জন্য আমরা সফরের আসবাবপত্র প্রস্তুত করলাম এবং সফরকালের নাস্তা তৈরী করে একটি চামড়ার থলের মধ্যে রাখলাম। আবু বকর (রাযিঃ)-এর কন্যা আসমা তার ওড়নার এক অংশ ছিড়ে থলের মুখ বেঁধে দিলেন। এ কারণে তাকে যাতুন নিতাক (ওড়না ওয়ালী) নামে ডাকা হতো। এরপর নবী (ﷺ) ও আবু বকর (রাযিঃ) সাওর নামক পর্বতের গুহায় পৌছেন। তথায় তিনরাত অতিবাহিত করেন। আবু বকর (রাযিঃ) এর পুত্র আব্দুল্লাহ তাদের সঙ্গে রাত্রি যাপন করতেন। তিনি ছিলেন সুচতুর বুদ্ধিমান যুবক। তিনি তাদের কাছ থেকে রাতের শেষ ভাগে চলে আসতেন এবং ভোর বেলা কুরাইশদের সাথে মিশে যেতেন, যেন তাদের মধ্যেই তিনি রাত্রি যাপন করেছেন। তিনি কারও থেকে ষড়যন্ত্রমূলক কোনকিছু শুনলে তা মনে রাখতেন এবং রাতের আধার ছড়িয়ে পড়লে দিনের সব খবর তিনি তাদের দু’জনের কাছে পৌছে দিতেন।
আবু বকর (রাযিঃ) এর দাস আমির ইবনে ফুহায়রা তাদের আশপাশে দুধওয়ালা বকরী চরিয়ে বেড়াতেন! রাতের এক ঘণ্টা অতিবাহিত হলে তিনি তাদের নিকট ছাগল নিয়ে যেতেন (দুধ পান করাবার জন্য)। তারা দুজনে (আমির ও আব্দুল্লাহ) সে গুহাতেই রাত কাটাতেন। ভোরে অন্ধকার থাকতেই আমির ইবনে ফুহায়রা ছাগল নিয়ে চলে আসতেন। ঐ তিন রাতের প্রতি রাতেই তিনি এরূপ করেছিলেন।
بَابُ التَّقَنُّعِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: «خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَيْهِ عِصَابَةٌ دَسْمَاءُ» وَقَالَ أَنَسٌ: «عَصَبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى رَأْسِهِ حَاشِيَةَ بُرْدٍ»
5807 - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا هِشَامٌ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: هَاجَرَ نَاسٌ إِلَى الحَبَشَةِ مِنَ المُسْلِمِينَ، وَتَجَهَّزَ أَبُو بَكْرٍ مُهَاجِرًا، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «عَلَى رِسْلِكَ، فَإِنِّي أَرْجُو أَنْ يُؤْذَنَ لِي» فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: أَوَتَرْجُوهُ بِأَبِي أَنْتَ؟ قَالَ: «نَعَمْ» فَحَبَسَ أَبُو بَكْرٍ نَفْسَهُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِصُحْبَتِهِ، وَعَلَفَ رَاحِلَتَيْنِ كَانَتَا عِنْدَهُ وَرَقَ السَّمُرِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ. قَالَ عُرْوَةُ: قَالَتْ عَائِشَةُ: فَبَيْنَا نَحْنُ يَوْمًا جُلُوسٌ فِي بَيْتِنَا فِي نَحْرِ الظَّهِيرَةِ، فَقَالَ قَائِلٌ لِأَبِي بَكْرٍ: هَذَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُقْبِلًا مُتَقَنِّعًا، فِي سَاعَةٍ لَمْ يَكُنْ يَأْتِينَا فِيهَا، قَالَ أَبُو بَكْرٍ: فِدًا لَكَ أَبِي وَأُمِّي، وَاللَّهِ إِنْ جَاءَ بِهِ فِي هَذِهِ السَّاعَةِ إِلَّا لِأَمْرٍ، فَجَاءَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاسْتَأْذَنَ فَأَذِنَ لَهُ فَدَخَلَ، فَقَالَ حِينَ دَخَلَ لِأَبِي بَكْرٍ: «أَخْرِجْ مَنْ عِنْدَكَ» قَالَ: إِنَّمَا هُمْ أَهْلُكَ بِأَبِي أَنْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ. قَالَ: «فَإِنِّي قَدْ أُذِنَ لِي فِي الخُرُوجِ» قَالَ: فَالصُّحْبَةُ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «نَعَمْ» قَالَ: فَخُذْ بِأَبِي أَنْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِحْدَى رَاحِلَتَيَّ هَاتَيْنِ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بِالثَّمَنِ» قَالَتْ: فَجَهَّزْنَاهُمَا أَحَثَّ الجِهَازِ، وَضَعْنَا لَهُمَا سُفْرَةً فِي جِرَابٍ، فَقَطَعَتْ أَسْمَاءُ بِنْتُ أَبِي بَكْرٍ قِطْعَةً مِنْ نِطَاقِهَا، فَأَوْكَأَتْ بِهِ الجِرَابَ، وَلِذَلِكَ كَانَتْ تُسَمَّى ذَاتَ النِّطَاقِ. ثُمَّ لَحِقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبُو بَكْرٍ بِغَارٍ فِي جَبَلٍ يُقَالُ لَهُ ثَوْرٌ، فَمَكُثَ فِيهِ ثَلاَثَ لَيَالٍ، يَبِيتُ عِنْدَهُمَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ، وَهُوَ غُلاَمٌ شَابٌّ لَقِنٌ ثَقِفٌ، فَيَرْحَلُ مِنْ عِنْدِهِمَا سَحَرًا، فَيُصْبِحُ مَعَ قُرَيْشٍ بِمَكَّةَ كَبَائِتٍ، فَلاَ يَسْمَعُ أَمْرًا يُكَادَانِ بِهِ إِلَّا وَعَاهُ، حَتَّى يَأْتِيَهُمَا بِخَبَرِ ذَلِكَ حِينَ [ص:146] يَخْتَلِطُ الظَّلاَمُ، وَيَرْعَى عَلَيْهِمَا عَامِرُ بْنُ فُهَيْرَةَ مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ مِنْحَةً مِنْ غَنَمٍ، فَيُرِيحُهَا عَلَيْهِمَا حِينَ تَذْهَبُ سَاعَةٌ مِنَ العِشَاءِ، فَيَبِيتَانِ فِي رِسْلِهِمَا حَتَّى يَنْعِقَ بِهَا عَامِرُ بْنُ فُهَيْرَةَ بِغَلَسٍ، يَفْعَلُ ذَلِكَ كُلَّ لَيْلَةٍ مِنْ تِلْكَ اللَّيَالِي الثَّلاَثِ
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ বুখারী - হাদীস নং ৫৩৯১ | মুসলিম বাংলা