আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৬২- চিকিৎসা - তদবীরের অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৩৫১
আন্তর্জাতিক নং: ৫৭৬৩
৩০৪৮. যাদু সম্পর্কে।
মহান আল্লাহর বাণীঃ কিন্তু শয়তানরা কুফুরী করেছিল। তারা মানুষকে যাদু শিক্ষা দিত এবং যা বাবিল শহরে হারুত ও মারুত ফিরিশতাদ্বয়ের উপর অবতীর্ণ হয়েছিল।....... পরকালে তার কোন অংশ নেই পর্যন্ত (বাকারাঃ ১০২)
মহান আল্লাহর বাণীঃ “যাদুকর যেথায়ই আসুক, সফল হবে না- (ত্বহাঃ৬-৯)।
মহান আল্লাহর বাণীঃ “তবুও কি তোমরা দেখে শুনে যাদুর কবলে পড়বে? (আম্বিয়াঃ ৩)।
মহান আল্লাহর বাণীঃ তাদের যাদুর প্রভাবে অকস্মাৎ মুসার মনে হলো, ওদের দড়ি ও কাঠিগুলো ছুটাছুটি করছে (ত্বহাঃ ৬৬)।
মহান আল্লাহর বাণীঃ এবং সে সব নারীর অনিষ্ট থেকে যারা গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দেয় (ফালাকঃ ৪) النَّفَّاثَاتُ অর্থ যাদুকর নারী, যারা যাদু করে চোখে ধাঁধা লাগিয়ে দেয়।
৫৩৫১। ইবরাহীম ইবনে মুসা (রাহঃ) ......... ‘আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যুরায়ক গোত্রের লাবীদ ইবনে আসাম নামক এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -কে যাদু করে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর খেয়াল হতো যেন তিনি একটি কাজ করছেন, অথচ তা তিনি করেননি। এক দিন বা এক রাত্রি তিনি আমার কাছে ছিলেন। তিনি বার বার দু‘আ করতে থাকেন। তারপর তিনি বলেনঃ হে ‘আয়েশা! তুমি কি উপলব্ধি করতে পেরেছ যে, আমি আল্লাহর কাছে যা জানতে চেয়েছিলাম, তিনি আমাকে তা জানিয়ে দিয়েছেন।
(স্বপ্নে দেখি) আমার নিকট দু’জন লোক আসেন। তাদের একজন আমার মাথার কাছে এবং অপরজন দু’পায়ের কাছে বসেন। একজন তাঁর সঙ্গীকে বলেনঃ এ লোকটির কি ব্যথা? তিনি বলেনঃ যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন বলেনঃ কে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বলেন লাবীদ ইবনে আসাম। প্রথম জন জিজ্ঞাসা করেনঃ কিসের মধ্যে? দ্বিতীয় জন উত্তর দেন: চিরুণি, মাথা আচড়ানোর সময় উঠা চুল এবং এক পুং খেজুর গাছের ‘জুব’ এর মধ্যে। প্রথম জন বলেনঃ তা কোথায়? দ্বিতীয় জন বলেনঃ ‘যারওয়ান’ নামক কূপের মধ্যে।
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কয়েকজন সাহাবী সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। পরে ফিরে এসে বলেনঃ হে ‘আয়েশা! সে কূপের পানি মেহদীর পানির মত (লাল) এবং তার পাড়ের খেজুর গাছের মাথাগুলো শয়তানের মাথার মত। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি এ কথা প্রকাশ করে দিবেন না? তিনি বললেনঃ আল্লাহ আমাকে আরোগ্য দান করেছেন, আমি মানুষকে এমন ব্যাপারে প্ররোচিত করতে পছন্দ কবি না, যাতে অকল্যাণ রয়েছে। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নির্দেশ দিলে সেগুলো মাটিতে পুতে ফেলা হয়।

আবু উসামা আবু দামরা ও ইবনে আবু যিনাদ (রাহঃ) হিশাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। লাইস ও ইবনে ‘উয়াইনা (রাহঃ) হিশাম থেকে বর্ণনা করেছেন, চিরুণি ও কাতানের টুকরায়। আবু ‘আব্দুল্লাহ (রাহঃ) বলেনঃ مُشَاطَةُ হল চিরুণি করার পর যে চুল বের হয়। المُشَاقَةُ হল কাত্তান।
باب السِّحْرِ وَقَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَلَكِنَّ الشَّيَاطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنْزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّى يَقُولاَ إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلاَ تَكْفُرْ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ وَمَا هُمْ بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ بِإِذْنِ اللَّهِ وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلاَ يَنْفَعُهُمْ وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الآخِرَةِ مِنْ خَلاَقٍ}. وَقَوْلِهِ تَعَالَى: {وَلاَ يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَى}. وَقَوْلِهِ: {أَفَتَأْتُونَ السِّحْرَ وَأَنْتُمْ تُبْصِرُونَ}. وَقَوْلِهِ: {يُخَيَّلُ إِلَيْهِ مِنْ سِحْرِهِمْ أَنَّهَا تَسْعَى}. وَقَوْلِهِ: {وَمِنْ شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ} وَالنَّفَّاثَاتُ السَّوَاحِرُ. {تُسْحَرُونَ} تُعَمَّوْنَ
5763 - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: سَحَرَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي زُرَيْقٍ، يُقَالُ لَهُ لَبِيدُ بْنُ الأَعْصَمِ، حَتَّى كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُخَيَّلُ إِلَيْهِ أَنَّهُ كَانَ يَفْعَلُ الشَّيْءَ وَمَا فَعَلَهُ، حَتَّى إِذَا كَانَ ذَاتَ يَوْمٍ أَوْ ذَاتَ لَيْلَةٍ وَهُوَ عِنْدِي، لَكِنَّهُ دَعَا وَدَعَا، ثُمَّ قَالَ: " يَا عَائِشَةُ، أَشَعَرْتِ أَنَّ اللَّهَ أَفْتَانِي فِيمَا اسْتَفْتَيْتُهُ فِيهِ، أَتَانِي رَجُلاَنِ، فَقَعَدَ أَحَدُهُمَا عِنْدَ رَأْسِي، وَالآخَرُ عِنْدَ رِجْلَيَّ، فَقَالَ أَحَدُهُمَا لِصَاحِبِهِ: مَا وَجَعُ الرَّجُلِ؟ فَقَالَ: مَطْبُوبٌ، قَالَ: مَنْ طَبَّهُ؟ قَالَ: لَبِيدُ بْنُ الأَعْصَمِ، قَالَ: فِي أَيِّ شَيْءٍ؟ قَالَ: فِي مُشْطٍ وَمُشَاطَةٍ، وَجُفِّ طَلْعِ نَخْلَةٍ ذَكَرٍ. قَالَ: وَأَيْنَ هُوَ؟ قَالَ: فِي بِئْرِ ذَرْوَانَ " فَأَتَاهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [ص:137] فِي نَاسٍ مِنْ أَصْحَابِهِ، فَجَاءَ فَقَالَ: «يَا عَائِشَةُ، كَأَنَّ مَاءَهَا نُقَاعَةُ الحِنَّاءِ، أَوْ كَأَنَّ رُءُوسَ نَخْلِهَا رُءُوسُ الشَّيَاطِينِ» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ: أَفَلاَ اسْتَخْرَجْتَهُ؟ قَالَ: «قَدْ عَافَانِي اللَّهُ، فَكَرِهْتُ أَنْ أُثَوِّرَ عَلَى النَّاسِ فِيهِ شَرًّا» فَأَمَرَ بِهَا فَدُفِنَتْ تَابَعَهُ أَبُو أُسَامَةَ، وَأَبُو ضَمْرَةَ، وَابْنُ أَبِي الزِّنَادِ، عَنْ هِشَامٍ، وَقَالَ: اللَّيْثُ، وَابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ هِشَامٍ: «فِي مُشْطٍ وَمُشَاقَةٍ» يُقَالُ: المُشَاطَةُ: مَا يَخْرُجُ مِنَ الشَّعَرِ إِذَا مُشِطَ، وَالمُشَاقَةُ: مِنْ مُشَاقَةِ الكَتَّانِ
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)