মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

২৬. পবিত্র কুরআনের তাফসীর অধ্যায়

হাদীস নং: ৫১১
পবিত্র কুরআনের তাফসীর
হাদীস নং- ৫১১

হযরত ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: আমার শাফাআতে ঈমানদারগণ দোযখ থেকে বের হয়ে যাবে। এমন কি বিশ্বাসীদের মধ্যে কেউ দোযখে বাকী থাকবে না, শুধু ঐ ব্যক্তিগণ বাকী থাকবে যাদেরকে এ আয়াতে সম্বোধন করা হয়েছে:
مَا سَلَكَكُمْ فِي سَقَرَ قَالُوا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّينَ وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ الْمِسْكِينَ وَكُنَّا نَخُوضُ مَعَ الْخَائِضِينَ وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ الدِّينِ حَتَّى أَتَانَا الْيَقِينُ فَمَا تَنْفَعُهُمْ شَفَاعَةُ الشَّافِعِينَ
“কোন বস্তু তোমাদেরকে দোযখে টেনে নিয়ে এসেছে? (দোযখবাসী) বলবে, আমরা নামাযী ছিলাম না, মিসকীনদের আহার করাইনি, বিতর্ককারীদের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছি, আমরা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছি কিয়ামতের দিনকে, এভাবে আমাদের নিকট মৃত্যু এসে উপস্থিত হয়েছে। সুতরাং কোন শাফাআতকারীর শাফাআত তাদের উপকারে আসবে না।"
অপর এক রিওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন: ঈমানদারগণের মধ্যে অনেক কওমকে আল্লাহ তা'আলা কিয়ামতের দিন শাস্তি প্রদান করবেন। অতঃপর হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর সুপারিশে তাদেরকে দোযখ থেকে বের করা হবে। এমনকি দোযখে একটি লোকও (ঈমানদার) বাকী থাকবে না, তবে (ঐ সমস্ত লোক বাকী থাকবে) যাদেরকে আল্লাহ্ তা'আলা এ আয়াতে সম্বোধন করেছেন :
مَا سَلَكَكُمْ فِي سَقَرَ قَالُوا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّينَ وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ الْمِسْكِينَ وَكُنَّا نَخُوضُ مَعَ الْخَائِضِينَ وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ الدِّينِ حَتَّى أَتَانَا الْيَقِينُ فَمَا تَنْفَعُهُمْ شَفَاعَةُ الشَّافِعِينَ
“কি সে তোমাদেরকে দোযখে নিয়ে এসেছে, তারা বলবে আমরা নামাযী ছিলাম না, মিসকীনদেরকে আহার করাইনি, বিতর্ককারীদের সাথে বিতর্কে লিপ্ত ছিলাম, কিয়ামতের দিনকে মিথ্যা বলেছি, এভাবে আমাদের নিকট মৃত্যু এসেছে। সুতরাং কোন সুপারিশকারীর সুপারিশ তাদের কোন উপকারে আসবে না।"
عَنْ سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي الزَّعْرَاءِ مِنْ أَصْحَابِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيَخْرُجَنَّ بِشَفَاعَتِيْ مِنْ أَهْلِ الْإِيْمَانِ مِنَ النَّارِ، حَتَّى لَا يَبْقَى فِيْهَا أَحَدٌ إِلَّا أَهْلُ هَذِهِ الْآيَةِ: {مَا سَلَكَكُمْ فِيْ سَقَرَ، قَالُوْا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّيْنَ، وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ الْمِسْكِيْنَ، وَكُنَّا نَخُوْضُ مَعَ الْخَائِضِيْنَ، وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ الدِّيْنِ، حَتَّى أَتَانَا الْيَقِيْنُ، فَمَا تَنْفَعُهُمْ شَفَاعَةُ الشَّافِعِيْنَ} (1)».
وَفِيْ رِوَايَةٍ: عَنِ ابْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ: يُعَذِّبُ اللهُ تَعَالَى أَقْوَامًا مِنْ أَهْلِ الْإِيْمَانِ، ثُمَّ يُخْرِجُهُمْ بِشَفَاعَةِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى لَا يَبْقَى إِلَّا مَنْ ذَكَرَ اللهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى: {مَا سَلَكَكُمْ فِيْ سَقَرَ، قَالُوْا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّيْنَ، وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ الْمِسْكِيْنَ، وَكُنَّا نَخُوْضُ مَعَ الْخَائِضِيْنَ، وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ الدِّيْنِ، حَتَّى أَتَانَا الْيَقِيْنُ، فَمَا تَنْفَعُهُمْ شَفَاعَةُ الشَّافِعِيْنَ}

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীসে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের আকীদা ও বিশ্বাসের ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এ হাদীস মু'তাযিলা ও মুরজিয়া উভয় দলের বাতিল আকাইদের মূলোৎপটন করে দিয়েছে। মু'তাযিলা এ ধারণা পোষণ করে যে, কবীরা গুনাহকারী অনন্তকালের জন্য দোযখে থাকবে, বেহেশতের বাতাসও তারা পাবে না। মুরজিয়াগণ এর বিপরীতে এ ধারণা পোষণ করে যে, যারা শুধু কালেমা পাঠ করেছে, তারা যেন দোযখ থেকে মুক্তির সনদ লিখে নিয়েছে। এরা শুধু বেহেশতী। কিন্তু এ হাদীসদ্বারা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এ উম্মতে মুসলিমার ফাসিক ও ফাজির দোযখের আযাব ভোগ করবে। অতঃপর আঁ হযরত (সা)-এর সুপারিশে তারা পর্যায়ক্রমে দোযখ থেকে বের হবে। ফলে শুধু কাফির ও মুশরিকই এতে বাকী থাকবে। আয়াতে করীমায় যার উল্লেখ করা হয়েছে।
মুসনাদে আবু হানীফা রহঃ - হাদীস নং ৫১১ | মুসলিম বাংলা