মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

১৯. পানাহারের দ্রব্যাদি, কুরবানী, শিকার এবং যবেহ সম্পর্কে বর্ণনা

হাদীস নং: ৪২৩
নাবীয পান করা
হাদীস নং- ৪২৩

হযরত আলকামা (রাযিঃ) বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ)-কে দেখেছি, তিনি আহার করলেন এবং নাবীয (نبيذ) চেয়ে পান করলেন। আমি বললান, আল্লাহ্ আপনার উপর রহমত করুন। আপনি নাবীয পান করেন এবং (নবীর) উম্মতগণ (শরীয়তের ব্যাপারে) আপনার অনুসরণ করে থাকে। তখন হযরত ইব্ন মাসউদ (রাযিঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে নারীয় পান করতে দেখেছি। যদি আমি তাঁকে পান করতে না দেখতাম, তা হলে আমিও পান করতাম না।
عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، قَالَ: رَأَيْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ، وَهُوَ يَأْكُلُ طَعَامًا، ثُمَّ دَعَا بِنَبِيذٍ فَشَرِبَ، فَقُلْتُ: رَحِمَكَ اللَّهُ، تَشْرَبُ النَّبِيذَ، وَالْأُمَّةُ تَقْتَدِي بِكَ؟ فَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ: «رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَشْرَبُ النَّبِيذَ، وَلَوْلَا أَنِّي رَأَيْتُهُ يَشْرَبُ مَا شَرِبْتُهُ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হাদীসে নাবীযের মাসয়ালা বর্ণনা করা হয়েছে অথবা নাবীযের প্রশংসা করা হয়েছে। নাবীয (نبيذ) হলো শুকনা আঙ্গুর অথবা খেজুর পানির মধ্যে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত রেখে দেয়া, যাতে এর মিষ্টি ঐ পানির সাথে মিশ্রিত হয়ে যায় এবং এতে খুব স্বাদ ও মজাদার শরবত তৈরি হয়। এটা যেরূপ খুব স্বাদযুক্ত হয়, তেমনি স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী হয়। নাকী-ও (نقيع) এ ধরনের একটি শরবতের নাম। কিন্তু এতে আঙ্গুর বা খেজুর পানির মধ্যে অল্প সময়ের জন্য রাখা হয়।
নাবীয হুযূর (সা) পান করেছেন। যেমন এ হাদীসে অথবা শামাইলে তিরমিযীতে হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন, আমি এ পেয়ালা দ্বারা আঁ হযরত (সা)-কে পান করার সমস্ত বস্তু পান করিয়েছি। যেমন, নাবীয, মধু, দুধ। মুসলিম শরীফে হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমরা একটি মশকে হুযূর (সা)-এর জন্য নাবীয তৈরি করেছি। মশকটি উপর দিক থেকে বন্ধ থাকত, এর নিচেও একটি মুখ থাকত। ভোরে এ পাত্রে খেজুর ঢেলে নাবীয তৈরি করেছি। এটা তিনি রাতে পান করতেন অথবা রাতে তৈরি করেছি যা তিনি ভোরে পান করতেন। সুতরাং সমস্ত উলামায়ে কিরামের মতে নাবীয জায়েয এবং হালাল। যদি এটা সামান্য গরম করা হয় এবং নেশার সীমানা পর্যন্ত না পৌঁছে, তা হলে এর ব্যবহার সম্পর্কে আলিমগণের বিভিন্ন মত ও বর্ণনা রয়েছে।
ইমাম আবু হানীফা (র) ও ইমাম আবু ইউসুফ (র) এটা জায়েয বলে মত পোষণ করেছেন। শর্ত হলো এই যে, এটা হজমশক্তি ঠিক করার জন্য ব্যবহার করা হয়, আমোদ-ফুর্তির জন্য নয়। হানাফীদের মধ্যে ইমান মুহাম্মদ, ইমাম শাফিঈ ও ইমাম মালিক (র) এটা নাজায়েয মনে করেন। কিন্তু হানাফী মাযহাবেও ইমাম মুহাম্মদ (র)-এর মতের উপর ফতওয়া রয়েছে। ফকীহ্ আবুল লাইস বলেন, আমাদের আমল এর উপর। নাবীয যেভাবে আঙ্গুর ও খেজুর দ্বারা তৈরি হয়, তেমনি অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য দ্বারাও তৈরি হয়। যেমন গম, বার্লি, ডুমুর, মধু ইত্যাদি।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান