মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

১৮. ফযীলত ও সম্মানের বর্ণনা

হাদীস নং: ৩৬৮
হযরত আলী (রাযিঃ)-এর ফযীলত
হাদীস নং- ৩৬৮

হযরত আলী (রাযিঃ)-এর একজন ছাত্র বলেন, আমি হযরত আলী (রাযিঃ)-কে এটা বলতে শুনেছি যে, আমি হলাম ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি।
عَنْ سَلَمَةَ، عَنْ حَبَّةَ الْعُرَنِيِّ وَهُوَ الْهَمْدَانِيُّ مِنْ أَصْحَابِ عَلِيٍّ كَرَّمَ اللَّهُ وَجْهَهُ، قَالَ: سَمِعْتُ عَلِيًّا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: «أَنَا أَوَّلُ مَنْ أَسْلَمَ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

সর্বপ্রথম কে ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তা নিয়ে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ বলেছেন, হযরত আবু বকর (রা) সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন। কেউ বলেছেন, হযরত আলী (রা), কেউ বলেছেন যে, হযরত খাদীজা (রা), কেউ বলেছেন হযরত বিলাল (রা), আবার কেউ বলেছেন, হযরত যায়দ ইব্ন হারিসা (রা)। কেউ কেউ এ সমস্ত বিভিন্ন মতামতের মধ্যে এভাবে সমন্বয় করে বলেছেন, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে হযরত আবূ বকর সিদ্দিক (রা) সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন। মহিলাদের মধ্যে হযরত খাদীজা (রা), কিশোরদের মধ্যে হযরত আলী (রা), আযাদকৃত গোলামের মধ্যে হযরত যায়দ (রা) এবং গোলামদের মধ্যে হযরত বিলাল (রা) সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন।
এটাও প্রকাশ থাকে যে, ইসলাম গ্রহণের মধ্যে অগ্রগামী হওয়ার সৌভাগ্য যাঁরই হোক না কেন, এ ক্ষেত্রে মর্যাদার দিক দিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সবার শিরোমণি হলেন হযরত আবূ বকর (রা)। কেননা মর্যাদা ও ফযীলত শুধু ইসলাম গ্রহণে অগ্রগামী হওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং আরো অনেক কারণ রয়েছে। যেমন ইসলামের জন্য আত্মত্যাগ, রাসূলুল্লাহ (সা)-এর যে কোন বিপদ-আপদে তাঁর সঙ্গে থাকা, ইসলাম প্রচারে মুসলমানের পথ প্রদর্শন এবং কাফিরদের শাস্তি প্রদান, ইসলামের পতাকা উড্ডীন করা এবং কুফরীর ঝান্ডা ভূপাতিত ও অবনমিত করার ক্ষেত্রে হযরত আবূ বকর (রা) হলেন অগ্রগামী। এ গৌরব অর্জন করা অন্যদের ভাগ্যে পূর্ণাঙ্গভাবে হয়নি। কেননা এ সমস্ত কাজে না মহিলা, না কিশোর এবং না কোন গোলাম তাঁর সমকক্ষ হতে পারে।
এ বর্ণনার দ্বারা হযরত খাদীজা (রা)-এর ফযীলত ও প্রকাশ পেয়ে যায়। কেননা মহিলাদের মধ্যে তাঁর মর্যাদা আযওয়াজে মুতাহহারাত ও উম্মুল মুমিনীনদের থেকে অনেক উর্ধ্বে। তিনিও ইসলামের প্রসার ও প্রচার এবং আঁ হযরত (সা)-এর সাহায্য-সহযোগিতা ও সমর্থনের ব্যাপারে যে কোন কঠিন অবস্থায়ও অবহেলা, উপেক্ষা বা ত্রুটি করেননি। ধন-সম্পদ ত্যাগ করার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেননি, আত্মত্যাগের ব্যাপারেও অনিচ্ছা বা অসম্মতি প্রকাশ করেননি। তাই তাঁর ফযীলত ও মর্যাদা সম্পর্কে নবী করীম (সা) বলেছেন: হযরত খাদীজা (রা) ঐ সময় আমার উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছেন, যখন সবাই আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং তিনি ঐ সময় আমাকে মালদ্বারা সাহায্য করেছেন, যখন সবাই আমাকে বঞ্চিত করেছে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মুসনাদে আবু হানীফা রহঃ - হাদীস নং ৩৬৮ | মুসলিম বাংলা