মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
৭. হজ্ব - উমরার অধ্যায়
হাদীস নং: ২৪৬
আরাফায় মাগরীব ও ঈশা একত্রে আদায় প্রসঙ্গে
হাদীস নং-২৪৬
হযরত হানী ইবনে ইয়াযীদ (রাহঃ) বলেনঃ আমরা হযরত ইবন উমর (রাযিঃ)-এর সাথী হয়ে আরাফাত থেকে ফিরে মুযদালিফায় আগমণ করি। এরপর তিনি ইকামত বলেন এবং তাঁর সাথে মাগরিব আদায় করি। অতঃপর তিনি সামনে অগ্রসর হন এবং (ইশার) দু'রাকাত নামায আদায় করেন। এরপর পানি চেয়ে গোসল করেন এবং বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়েন। আমরা নামাযের জন্য দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকি। অবশেষে আমরা বললাম, হে আবু আব্দুর রহমান। নামায (অর্থাৎ নামাযের জন্য আগমণ করুন)। তিনি বলেনঃ কোন্ নামায ? আমরা বললাম, ইশার নামায। তিনি বললেনঃ যেভাবে নবী করীম (ﷺ) নামায পড়েছেন, আমি ও সেভাবে নামায পড়েছি, (অর্থাৎ দু'নামাযকে একত্রে করে)।
অন্য এক রিওয়ায়েতে হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে, নবী করীম (ﷺ) মাগরিব ও ইশা একত্রে আদায় করেছেন।
হযরত হানী ইবনে ইয়াযীদ (রাহঃ) বলেনঃ আমরা হযরত ইবন উমর (রাযিঃ)-এর সাথী হয়ে আরাফাত থেকে ফিরে মুযদালিফায় আগমণ করি। এরপর তিনি ইকামত বলেন এবং তাঁর সাথে মাগরিব আদায় করি। অতঃপর তিনি সামনে অগ্রসর হন এবং (ইশার) দু'রাকাত নামায আদায় করেন। এরপর পানি চেয়ে গোসল করেন এবং বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়েন। আমরা নামাযের জন্য দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকি। অবশেষে আমরা বললাম, হে আবু আব্দুর রহমান। নামায (অর্থাৎ নামাযের জন্য আগমণ করুন)। তিনি বলেনঃ কোন্ নামায ? আমরা বললাম, ইশার নামায। তিনি বললেনঃ যেভাবে নবী করীম (ﷺ) নামায পড়েছেন, আমি ও সেভাবে নামায পড়েছি, (অর্থাৎ দু'নামাযকে একত্রে করে)।
অন্য এক রিওয়ায়েতে হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে, নবী করীম (ﷺ) মাগরিব ও ইশা একত্রে আদায় করেছেন।
الجمع بين المغرب والعشاء
عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي حَيَّةَ أَبِي جُنَابٍ، عَنْ هَانِئِ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: " أَفَضْنَا مَعَهُ مِنْ عَرَفَاتٍ، فَلَمَّا نَزَلْنَا جَمْعًا أَقَامَ، فَصَلَّيْنَا الْمَغْرِبَ مَعَهُ، ثُمَّ تَقَدَّمَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ دَعَا بِمَاءٍ، فَصُبَّ عَلَيْهِ، ثُمَّ أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ، فَقَعَدْنَا نَنْتَظِرُ الصَّلَاةَ طَوِيلًا، ثُمَّ قُلْنَا: يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ، الصَّلَاةَ، فَقَالَ: أَيُّ صَلَاةٍ؟ فَقُلْنَا: الْعِشَاءُ الْآخِرَةُ، فَقَالَ: أَمَّا كَمَا صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَدْ صَلَّيْتُ "، وَفِي رِوَايَةٍ: عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «جَمَعَ بَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এখানে হানাফী ও শাফিঈ মাযহাবের মধ্যে এই বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে যে, উভয় নামায কি এক আযান ও ইকামতে আদায় করা যাবে, না প্রত্যেক নামাযের জন্য পৃথক পৃথক আযান ও ইকামত বলতে হবে। হানাফী মাযহাব অনুযায়ী উভয় নামাযের জন্য এক আযান ও ইকামত যথেষ্ঠ। শাফিঈ মাযহাব অনুযায়ী আযান একবার দিতে হবে কিন্তু ইকামত পৃথক পৃথক দিতে হবে। সিহাহ সিত্তাহ গ্রন্থে হযরত ইবনে উমর (রা) বর্ণিত অধিকাংশ হাদীস হানাফী মাযহাবের দলীল হিসেবে উল্লেখ করা যায়। কোন রিওয়ায়েতে হযরত জাবির (রা), হযরত ইবনে আব্বাস (রা) এবং হযরত আবূ আইউব (রা) বর্ণিত হাদীসও এই মাযহাবের দলীল হিসেবে পেশ করা যায়। যেমনঃ আবূ শায়খ ইসফাহানী হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন : صلى المغرب والعشاء باقامة واحدة “নবী করীম (সা) মাগরিব ও ইশা একই ইকামতে আদায় করেছেন।” এমনিভাবে মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বায় হযরত আবূ আইউব (রা) বর্ণিত হাদীস উপরোক্ত বিষয়ে দলীল হিসেবে পেশ করা যায়।
শাফিঈ মাযহাবের দলীল হিসেবে বুখারী ও মুসলিম শরীফে হযরত উসামা ইবনে যায়দ (রা) বর্ণিত হাদীস রয়েছে। এতে স্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে : فصلى المغرب والعشاء باذان واحدة واقامتين “হুযূর (সা) মুযদালিফায় মাগরিব ও ইশা এক আযান এবং দু’ ইকামতে আদায় করেছেন।” মোট কথা, উভয় রিওয়ায়েতে কঠোর অনৈক্য রয়েছে। যার ফলে আলোচ্য বিষয়ে মারাত্নক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং নীতি অনুযায়ী অপেক্ষাকৃত কম আমল অর্থাৎ এক ইকামতে নামায আদায় করা কিয়াসের দৃষ্টিতে যুক্তিযুক্ত।
শাফিঈ মাযহাবের দলীল হিসেবে বুখারী ও মুসলিম শরীফে হযরত উসামা ইবনে যায়দ (রা) বর্ণিত হাদীস রয়েছে। এতে স্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে : فصلى المغرب والعشاء باذان واحدة واقامتين “হুযূর (সা) মুযদালিফায় মাগরিব ও ইশা এক আযান এবং দু’ ইকামতে আদায় করেছেন।” মোট কথা, উভয় রিওয়ায়েতে কঠোর অনৈক্য রয়েছে। যার ফলে আলোচ্য বিষয়ে মারাত্নক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং নীতি অনুযায়ী অপেক্ষাকৃত কম আমল অর্থাৎ এক ইকামতে নামায আদায় করা কিয়াসের দৃষ্টিতে যুক্তিযুক্ত।
