মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
৬. রোযার অধ্যায়
হাদীস নং: ২০৪
রোযার ফযীলত
২০৪। হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খেদমতে (রান্না করা) খরগোশ পেশ করা হয়। তিনি তাঁর সাহাবাদেরকে বলেনঃ খাও। তখন তাঁরা খাওয়া শুরু করেন। হুযূর (ﷺ) (এই খাদ্য) নিয়ে আগমণকারী ব্যক্তিকে বললেনঃ তুমি কেন খাও না? তিনি বলেনঃ আমি রোয়া রেখেছি। হুযূর (ﷺ) বললেনঃ এটা কিসের রোয়া তিনি বললেন, নফল রোযা। তখন হুযূর (ﷺ) বললেনঃ আইয়ামে বীর্যের রোয়া কেন রাখ না?
عَنِ الْهَيْثَمِ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنِ ابْنِ الْحَوْتَكِيَّةِ، عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: " أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأَرْنَبٍ، فَأَمَرَ أَصْحَابَهُ، فَأَكَلُوا، وَقَالَ لِلَّذِي جَاءَ بِهَا: مَالِكَ لَا تَأْكُلْ مِنْهَا؟ قَالَ: إِنِّي صَائِمٌ، قَالَ: وَمَا صَوْمُكَ؟ قَالَ: تَطَوُّعٌ، قَالَ: فَهَلَّا الْبِيضَ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এখানে কয়েকটি বিষয়ে ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে। সংক্ষিপ্ত আকারে তা বর্ণনা করা হলো। প্রথমত আইয়ামে বীয়ের ফযীলত উপরোক্ত হাদীসের দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে। প্রতি আরবী মাসের তের, চৌদ্দ ও পনের তারিখ হলো আইয়ামে বীয। দ্বিতীয়ত, খরগোশের গোশত খাওয়া সম্পর্কে মতপার্থক্য রয়েছে। হানাফী মাযহাবে খরগোশের গোশত মুবাহ (مباح)। উপরোক্ত হাদীসই এর প্রমাণ। তৃতীয়ত নফল রোযা সম্পর্কিত। এ বিষয়ে দু'টি হাদীস বর্ণিত আছে। একটি হলো সর্বসম্মতিক্রমে ওযরের কারণে, যেমন মেহমানদারী ইত্যাদি কারণে রোযা ভঙ্গ করে ইফতার করা যাবে। বিভিন্ন হাদীসে এর প্রমাণ রয়েছে। দ্বিতীয় মতপার্থক্য হলো উক্ত রোযার কাযা ওয়াজিব হবে কি না ? হানাফী মাযহাব অনুযায়ী এর কাযা ওয়াজিব হবে। হযরত আয়েশা (রা) বর্ণিত হাদীস দ্বারা এর প্রমাণ পাওয়া যায়। তিনি বলেছেনঃ আমি এবং হযরত হাফসা (রা) রোযা ছিলাম। আমাদের নিকট তখন এ ধরনের কিছু খাদ্য এল যা আমাদের নিকট খুবই প্রিয় ছিল। আমরা তা খেয়ে ফেললাম। হযরত হাফসা (রা) এই ঘটনা হুযূর (সা)-এর নিকট বর্ণনা করেন। তখন তিনি এই রোযার পরিবর্তে অন্যদিন রোযা রাখার নির্দেশ দান করেন। আমর (امر) বাহ্যত ওয়াজিবের জন্য এসে থাকে, তাই এখানেও ওয়াজিব হওয়াকেই প্রমাণ করে। তবে এখানে একটি সন্দেহ সৃষ্টি হয় যে, সম্ভবত এই রোযা কাযা (قضاء) অথবা মান্নতের (نذز) ছিল । যদি তা এরূপ হতো, তাহলে প্রশ্ন করার কি প্রয়োজন ছিল ? এর ওয়াজিব কিভাবে বাতিল হতে পারে? এ অবস্থায় হুযূর (সা) তাদেরকে এই কাজের জন্য ধমক দিতেন। এছাড়া সাহাবায়ে কিরাম নিজেরাই ফরয ও ওয়াজিবসমূহের উপর এমন কঠোরভাবে আমল করতেন যাতে কোন অবস্থাতেই তা ছুটে না যায়। সামান্য খানা বা মজার জন্য তা হতেই পারে না।
