মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

৪. নামায অধ্যায়

হাদীস নং: ১২৯
অসুস্থ ও রোগীর নামায
১২৯। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে, নবী করীম (ﷺ) যখন ঐ রোগে আক্রান্ত হন, যাতে তিনি ইন্তিকাল করেন, রোগের ব্যথা ও তীব্রতার কারণে তিনি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েন। যখন নামাযের সময় হয়ে এল, তখন তিনি হযরত আয়েশা (রাযিঃ)-কে বলেনঃ আবু বকরকে বল, তিনি যেন লোকদেরকে নামায পড়ান । অতঃপর হযরত আয়েশা (রাযিঃ) হযরত আবু বকর (রাযিঃ)-এর নিকট লোক পাঠিয়ে বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) লোকদেরকে নামায পড়ানোর জন্য আপনাকে নির্দেশ দিয়েছেন। হযরত আবু বকর (রাযিঃ) হযরত আয়েশাকে এই বলে সংবাদ প্রেরণ করেন যে, আমি বৃদ্ধ ও দুর্বল চিত্তের লোক। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে তাঁর জায়গায় দেখতে না পেলে আমি ধৈর্যধারণ করতে পারব না। সুতরাং তুমি এবং হাফসা উভয়ে মিলে রাসুলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট বল, তিনি যেন লোক পাঠিয়ে হযরত উমর (রাযিঃ)-কে নামায পড়ানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। হযরত আয়েশা (রাযিঃ) বলেনঃ আমি সে ব্যবস্থা করলাম। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেনঃ তোমরা হলে ইউসুফের সঙ্গিণীদের মত। আবু বকরকে বল তিনি যেন নামায পড়ান। অতঃপর নামাযের জন্য যখন আযান দেওয়া হয় এবং নবী করীম (ﷺ) মুয়াযযিনের কন্ঠে حى على الصلوة -এর আওয়ায শুনতে পেলেন, তখন তিনি বলেনঃ আমাকে উঠাও। হযরত আয়েশা (রাযিঃ) আরয করেন, আমি হযরত আবু বকর (রাযিঃ)-কে নামায পড়ানোর জন্য বলে দিয়েছি, আপনি অসুস্থ (এরপর আপনি কেন কষ্ট করবেন)। হুযূর (ﷺ) বলেনঃ আমাকে উঠাও, আমার চোখের শাস্তি হলো নামায। হযরত আয়েশা (রাযিঃ) বলেনঃ এরপর আমি তাঁকে উঠালাম এবং দু'জন মানুষের উপর ভর করে তিনি এভাবে চললেন যে, তাঁর উভয় পা জমির উপর হেঁচড়িয়ে যাচ্ছিল । যখন হযরত আবু বকর (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর পবিত্র পা-এর আওয়ায পেলেন তখন পিছনে আসতে চাইলেন। কিন্তু হুযূর (ﷺ) ইশারায় তাঁকে পিছনে আসতে নিষেধ করেন। অতঃপর তিনি হযরত আবু বকর (রাযিঃ)-এর বামদিকে এসে বসে পড়েন (যাতে তিনি ইমামতি করতে পারেন)। নবী (ﷺ) তাঁর বরাবর তাকবীর বলতেন এবং হযরত আবু বকর (রাযিঃ) নবী (ﷺ)-এর তকবীরের অনুসরণ করতেন। লোকজন হযরত আবু বকর (রাযিঃ) অনুসরণ করতেন, এভাবেই নামায সমাপ্ত করা হয়। অতঃপর ইনতিকাল পর্যন্ত এই নামায ব্যতীত নবী (ﷺ) অন্য কোন নামায পড়ান নি। এরপর থেকে হযরত আবু বকর (রাযিঃ) নামাযে ইমামতি করতে থাকেন এবং নবী করীম (ﷺ) অসুস্থ ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ইনতিকাল করেন।
عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الْأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا مَرِضَ الْمَرَضَ الَّذِي قُبِضَ فِيهِ خَفَّ مِنَ الْوَجَعِ، فَلَمَّا حَضَرَتِ الصَّلَاةُ، قَالَ لِعَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: " مُرِي أَبَا بَكْرٍ، فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ، فَأَرْسَلَتْ إِلَى أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْمُرُكَ أَنْ تُصَلِّيَ بِالنَّاسِ، فَأَرْسَلَ إِلَيْهَا: يَا بِنْتَاهُ، إِنِّي شَيْخٌ كَبِيرٌ رَفِيقٌ، وَإِنِّي مَتَى لَا أَرَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَقَامِهِ أَرِقُّ لِذَلِكَ، فَاجْتَمِعِي أَنْتِ وَحَفْصَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَيُرْسِلَ إِلَى عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَلْيُصَلِّ بِهِمْ، فَفَعَلَتْ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنْتُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرِي أَبَا بَكْرٍ، فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ، فَلَمَّا نُودِيَ بِالصَّلَاةِ، يَسْمَعُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُؤَذِّنَ، وَهُوَ يَقُولُ: حَيَّ عَلَى الصّلَاةِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ارْفَعُونِي، فَقَالَتْ عَائِشَةُ: قَدْ أَمَرْتُ أَبَا بَكْرٍ أنَ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ، وَأَنْتَ عَذِرٌ، قَالَ: ارْفَعُونِي، فَإِنَّهُ جُعِلَتْ قُرَّةَ عَيْنِي فِي الصَّلَاةِ.
قَالَتْ عَائِشَةُ: فَرُفِعَ بَيْنَ اثْنَيْنِ، وَقَدَمَاهُ تَخُدَّانِ الْأَرْضَ، فَلَمَّا سَمِعَ أَبُو بَكْرٍ بِحِسِّ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَأَخَّرَ، فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَلَسَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ يَسَارِ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، وَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِذَاءَهُ يُكَبِّرُ، وَيُكَبِّرُ أَبُو بَكْرٍ بِتَكْبِيرِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَيُكَبِّرُ النَّاسُ بِتَكْبِيرِ أَبِي بَكْرٍ حَتَّى فَرَغَ، ثُمَّ لَمْ يُصَلِّ بِالنَّاسِ غَيْرَ تِلْكَ الصَّلَاةِ حَتَّى قُبِضَ، وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ الْإِمَامُ، وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجِعٌ حَتَّى قُبِضَ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এই হাদীসও পূর্ববর্তী হাদীসের মত। তবে এতে ঘটনা বিস্তারিতভাবে বলা
হয়েছে।