মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
৩. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়
হাদীস নং: ৭৯
চামড়া পাকা করার দ্বারা পবিত্র হয়ে যায়
৭৯। হযরত ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : যে চামড়া পাকা করা হয়, তা পবিত্র হয়ে যায়।
عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «أيُّمَا إِهَابٍ دُبِغَ فَقَدْ طَهُرَ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
মুসলিম শরীফে এই মরফূ' হাদীস হযরতে ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত আছে। এতে বলা হয়েছে إِذَا دُبِغَ الْإِهَابُ، فَقَدْ طَهُرَ অর্থাৎ "যখন চামড়া পাকা করা হয়, তখন এটা পবিত্র হয়ে যায়।” তিরমিযী এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। ইবনে মাজাহ ও দারে কুতনী হযরত ইবনে উমর (রা) থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন, শূকর মূলত অপবিত্র হওয়ার কারণে এবং মানুষ সম্মান ও মর্যাদার কারণে এ বিধানের বহির্ভূত। ইমাম শাফিঈ (রা) কুকুরের চামড়া এ বিধানের বহির্ভূত বলে মতে প্রকাশ করেছেন। ইমাম আবূ হানীফা (র)-এর মতে এটা অপবিত্র নয়। কেননা কুকুর শুকরের মত মৌলিকভাবে অপবিত্র নয়। তাই এর দ্বারা উপকারিতা লাভ করা জায়েয এবং এর শিকার করা বস্তু হালাল। অধিকন্তু হাদীসের বাক্যে সাধারণভাবে সবগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ব্যতিক্রম হওয়ার জন্য বিশেষ কোন কারণ থাকে না। এ হাদীস ইমাম মালিক (র) ও ইমাম আহমদ (র)-এর বিরুদ্ধে দলীল হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। কেননা তাঁদের মতে মুর্দার চামড়া থেকে উপকারিতা লাভ করা জায়েয নয়। কেননা তাঁরা নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হাকীম (র) হতে আবূ দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ এবং তিরমিযী শরীফে বর্ণিত হাদীস পেশ করে থাকেন। হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে হাকীম (র) বলেন, আমাদের নিকট এ মর্মে হুযুর (সা)-এর একটি পত্র আসে যে, মুর্দারের চামড়া কোন কাজে ব্যবহার করো না। কেননা হযরত (সা) পাকা করাবিহীন চামড়া দ্বারা কোন উপকারিতামূলক কাজ করতে নিষেধ করেছেন। এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, চামড়া যতক্ষণ পর্যন্ত পাকা না করা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তা পবিত্র হয় না। এর ব্যবহারও নিষিদ্ধ থাকে। এবার দু' হাদীসে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। যদি নিষিদ্ধের হাদীস মান্য করা হয়, তাহলে পরবর্তী হাদীসকে অস্বীকার করা জরুরী হয়ে পড়ে এবং মৃতের চামড়া দ্বারা কোন ফায়দা লাভ করা শীর্ষক উক্তির ব্যাপারে আপত্তি উঠবে।
