মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
৩. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৫
দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করার বর্ণনা
৪৫। হযরত হুযায়ফা (রাযিঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে কোন এক কওমের ময়লা আবর্জনা ফেলার স্থানে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে দেখেছি।
عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ عن حذيفة (رض)، قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «يَبُولُ عَلَى سُبَاطَةَ قَوْمٍ قَائِمًا»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা সম্পর্কে দু'প্রকার হাদীস বর্ণিত আছে। প্রথমতঃ অক্ষমতা ও ওজরের কারণে শরীয়ত এর অনুমতি প্রদান করেছে। দ্বিতীয়তঃ নাজায়েয বলে ঘোষণা। অনুমতি প্রদানের হাদীস হযরত হুযায়ফা (রা) থেকে বর্ণিত। এই হাদীস সংক্ষিপ্ত বাক্যের মাধ্যমে ইমাম আযম থেকে বর্ণনা করা হয়েছে এবং কিছু অতিরিক্ত বাক্যের মাধ্যমে তা মুসলিম, তিরমিয়ী, ইবনে মাজাহ ও অন্যান্য কিতাবে বর্ণনা করা হয়েছে। অনুমতি প্রদান করা বা নাজায়েয সম্পর্কিত হাদীস হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত আছে।
ইমাম তিরমিযী, আহমদ ও নাসাঈ এই হাদীস বর্ণনা করেছেন। হযরত আয়েশা (রা) বলেছেনঃ مَنْ حَدَّثكَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَبُولُ قَائِمًا فلَا تُصَدِّقُوهُ مَا كَانَ يَبُولُ إِلَّا قَاعِدًا তোমাদের নিকট এ কথা বলে যে, নবী (সা) দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করেছেন, তাকে তোমরা বিশ্বাস কর না। তিনি বসে ছাড়া প্রস্রাব করতেন না।" এ দু'টি হাদীস পরস্পর বিরোধী। সুতরাং দু’হাদীসের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান এইভাবে করা যায় যে, হযরত আয়েশা (রা) হযরত (সা)-এর অতি নিকটবর্তী ছিলেন এবং তাঁর যাবতীয় অভ্যাস ও কার্যাবলী সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন আর হযরত হুযায়ফা (রা) একটি বিশেষ ঘটনা বর্ণনা করেছেন যা কোন ওজর বা অক্ষমতার কারণে ঘটে থাকতে পারে। কারণ এটা ছিল ঘরের বাইরের ঘটনা। তাই এ সম্পর্কে হযরত আয়েশা (রা) অবগত ছিলেন না।
সুতরাং উভয় হাদীস স্বীয় অবস্থানে সঠিক বলে গণ্য হবে। তবে সর্বদা পালনীয় নীতি পরিত্যাগ করে ওজর বা অক্ষমতার কারণে পালনীয় কোন বিশেষ ঘটনা দীনের স্থায়ী নীতি বা কোন মাসয়ালার ভিত্তি হতে পারে না। অবশ্য এ অক্ষমতা ও ওজর উক্ত বিষয়ে অনুমতি প্রদানের জন্য একটি কারণ হতে পারে। তাই উলামায়ে কিরামের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত এই যে, দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা মাকরূহ তাহরীমী বা তানযিহী। কেননা এতে সতর বা লজ্জাস্থান অধিক খুলে যায় এবং দেহে অপবিত্র বস্তু লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অধিকন্তু ভদ্রতা, নম্রতা ও মানবতা বিরোধী।
এবার হযরত (সা) যে জন্য দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করেছেন এ সম্পর্কে কয়েকটি কারণ বর্ণনা করা হয়েছেঃ (১) হযরত (সা)-এর পিঠ ও কোমরে সে সময়ে ব্যথা ছিল, তাই তিনি বসতে অক্ষম ছিলেন। (২) স্থানটি উঁচু ছিল, এবং তিনি নীচে ছিলেন। যদি তিনি বসতেন, তাহলে প্রস্রাব তাঁর দিকেই প্রবাহিত হয়ে আসত। যদি তিনি উঁচুতে বসতেন, তা হলে পথ অতিক্রমকারীদের সামনে লজ্জাস্থান খুলে যেত, ফলে তিনি পর্দাহীন হয়ে যেতেন, যা তিনি অপছন্দ করতেন। (৩) মুসতাদরাকে হাকেম নামক গ্রন্থে ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত আছে যে, হযরত (সা)-এর হাঁটুতে ব্যথা ছিল, তাই তিনি বসতে অক্ষম ছিলেন। (৪) কোন কোন ফিকহবিদ বলেছেনঃ এ ঘটনার দ্বারা এটা প্রকাশ করা উদ্দেশ্য যে, অক্ষমতা বা ওজরের কারণে এ অবস্থা ক্ষমা ও অনুমোদনযোগ্য।
ইমাম তিরমিযী, আহমদ ও নাসাঈ এই হাদীস বর্ণনা করেছেন। হযরত আয়েশা (রা) বলেছেনঃ مَنْ حَدَّثكَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَبُولُ قَائِمًا فلَا تُصَدِّقُوهُ مَا كَانَ يَبُولُ إِلَّا قَاعِدًا তোমাদের নিকট এ কথা বলে যে, নবী (সা) দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করেছেন, তাকে তোমরা বিশ্বাস কর না। তিনি বসে ছাড়া প্রস্রাব করতেন না।" এ দু'টি হাদীস পরস্পর বিরোধী। সুতরাং দু’হাদীসের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান এইভাবে করা যায় যে, হযরত আয়েশা (রা) হযরত (সা)-এর অতি নিকটবর্তী ছিলেন এবং তাঁর যাবতীয় অভ্যাস ও কার্যাবলী সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন আর হযরত হুযায়ফা (রা) একটি বিশেষ ঘটনা বর্ণনা করেছেন যা কোন ওজর বা অক্ষমতার কারণে ঘটে থাকতে পারে। কারণ এটা ছিল ঘরের বাইরের ঘটনা। তাই এ সম্পর্কে হযরত আয়েশা (রা) অবগত ছিলেন না।
সুতরাং উভয় হাদীস স্বীয় অবস্থানে সঠিক বলে গণ্য হবে। তবে সর্বদা পালনীয় নীতি পরিত্যাগ করে ওজর বা অক্ষমতার কারণে পালনীয় কোন বিশেষ ঘটনা দীনের স্থায়ী নীতি বা কোন মাসয়ালার ভিত্তি হতে পারে না। অবশ্য এ অক্ষমতা ও ওজর উক্ত বিষয়ে অনুমতি প্রদানের জন্য একটি কারণ হতে পারে। তাই উলামায়ে কিরামের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত এই যে, দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা মাকরূহ তাহরীমী বা তানযিহী। কেননা এতে সতর বা লজ্জাস্থান অধিক খুলে যায় এবং দেহে অপবিত্র বস্তু লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অধিকন্তু ভদ্রতা, নম্রতা ও মানবতা বিরোধী।
এবার হযরত (সা) যে জন্য দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করেছেন এ সম্পর্কে কয়েকটি কারণ বর্ণনা করা হয়েছেঃ (১) হযরত (সা)-এর পিঠ ও কোমরে সে সময়ে ব্যথা ছিল, তাই তিনি বসতে অক্ষম ছিলেন। (২) স্থানটি উঁচু ছিল, এবং তিনি নীচে ছিলেন। যদি তিনি বসতেন, তাহলে প্রস্রাব তাঁর দিকেই প্রবাহিত হয়ে আসত। যদি তিনি উঁচুতে বসতেন, তা হলে পথ অতিক্রমকারীদের সামনে লজ্জাস্থান খুলে যেত, ফলে তিনি পর্দাহীন হয়ে যেতেন, যা তিনি অপছন্দ করতেন। (৩) মুসতাদরাকে হাকেম নামক গ্রন্থে ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত আছে যে, হযরত (সা)-এর হাঁটুতে ব্যথা ছিল, তাই তিনি বসতে অক্ষম ছিলেন। (৪) কোন কোন ফিকহবিদ বলেছেনঃ এ ঘটনার দ্বারা এটা প্রকাশ করা উদ্দেশ্য যে, অক্ষমতা বা ওজরের কারণে এ অবস্থা ক্ষমা ও অনুমোদনযোগ্য।


বর্ণনাকারী: