মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
১. ঈমান-আকাঈদ অধ্যায়
হাদীস নং: ৩০
শাফাআতের বর্ণনা
৩০। হযরত কায়েস ইবনে আবী হায়েম (রাযিঃ) বলেন, আমি জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রাযিঃ)-কে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, রাসূল করীম (ﷺ) বলেছেন নিশ্চয়ই তোমরা অচিরে তোমাদের প্রভুকে এমনিভাবে দেখতে পারে যেমন তোমরা চৌদ্দ তারিখের পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে পাও। ভিড়ের কারণে তাকে দেখতে তোমাদের কোন অসুবিধা হয় না। সুতরাং খেয়াল রাখবে (শয়তানের কুমন্ত্রণার কারণে) সূর্যোদয়ের পূর্বের নামায (ফজর) এবং সূর্যাস্তের পূর্বের নামাযসমূহ (যোহর ও আসর) আদায়ের ব্যাপারে কোনরূপ অবহেলা করবে না।
হাম্মাদ বলেন, অর্থাৎ প্রত্যুষ ও সন্ধ্যা।
হাম্মাদ বলেন, অর্থাৎ প্রত্যুষ ও সন্ধ্যা।
عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، وَبَيَانِ بْنِ بِشْرٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، قَالَ: سَمِعْتُ جَرِيرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ رَبَّكُمْ كَمَا تَرَوْنَ هَذَا الْقَمَرَ لَيْلَةَ الْبَدْرِ لَا تُضَامُونَ فِي رُؤْيَتِهِ، فَانْظُرُوا أَنْ لَا تُغْلَبُوا فِي صَلَوَاتٍ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا» ، قَالَ حَمَّادٌ: يَعْنِي: الْغَدَاةَ وَالْعَشِيَّ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীসে দু'টি গুরুত্বপূর্ণ মাসয়ালা বর্ণিত হয়েছে। প্রথম মাসয়ালা হল আল্লাহর দীদার সম্পর্কে। কিয়ামতের দিন মুমিনগণ স্বীয় জড় চক্ষু দ্বারা আল্লাহর দীদার (দর্শন) লাভ করবেন। এটা পবিত্র কুরআন, হাদীস, ইজমায়ে সাহাবা ও তাবেঈন, সালফে সালেহীনের দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে। তাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মতে আল্লাহর দীদার বরহক। এর অকাট্য প্রমাণ হিসেবে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত আছেঃ "আজকের এ দিনে (কিয়ামতের দিন) কিছু লোকের চেহারা সজীব হবে, স্বীয় প্রভুকে দেখতে পাবে।” পবিত্র কুরআন ও নির্ভযোগ্য হাদীসসমূহ দ্বারা যেহেতু বিষয়টি প্রমাণিত, তাই এখানে দীদার বা দর্শন মূল অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে।
হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে সিহাহ সিত্তাহ ও মুসনাদে আহমদে বর্ণিত আছে যে, হুযূর (সা) বলেছেনঃ অচিরেই তোমরা তোমাদের প্রভুকে দেখতে পাবে। যেভাবে তোমরা কোন সন্দেহ ছাড়া চাঁদ দেখতে পাও। সুতরাং তোমাদের শক্তি থাকা সত্ত্বে সূর্যোদয়ের পূর্বের এবং সূর্যাস্তের পূর্বের নামায আদায় থেকে বিরত থাকবে না। অধিকন্তু আল্লাহর দীদার সম্পর্কে ইজমায়ে উম্মত বিদ্যমান রয়েছে। তাই আল্লাহর দীদার সম্পর্কে অস্বীকার অথবা এতে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করার কোন অবকাশ নেই।
কেউ কেউ বলছেন, বেহেশতে মহিলাগণ আল্লাহর দীদার লাভ করতে পারবে না। কেননা পবিত্র কুরআনে আল্লাহর বাণীঃ (তাঁবুর মধ্যে সুলোচনা রমণীগণ অবস্থান করবে)-এর দৃষ্টিকোণ থেকে রমণীগণ পর্দার আড়ালে অবস্থান করবে। এটা একটা অর্থহীন কথা। কেননা বেহেশতে পর্দার কারণে তাঁবু তৈরি হবে না। অধিকন্তু রমণীগণ পুরুষের মত মানবজাতির অন্তর্ভুক্ত এবং সমস্ত কাজে অংশীদারভুক্ত। তাই বলা হয়েছেঃ নিশ্চয়ই মহিলাগণ পুরুষের অনুরূপই ।
আবু দাউদ, তিরমিযী হযরত আয়েশা (রা) থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। বাযযায হযরত আনাস (রা) থেকে, তিনি হুযূর (সা) থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। এ ছাড়া রমণীদের মধ্যে হযরত ফাতিমা যোহরা (রা), হযরত খাদীজা (রা) এবং হযরত আয়েশা (রা)-এর মত নেক ও মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব রমণী হওয়ার কারণে এ বিরাট নিয়ামত থেকে বঞ্চিত থাকবেন অথচ তাঁদের চেয়ে লাখো গুণ কম মর্যাদাসম্পন্ন পুরুষ এ নিয়ামত লাভ করবেন, তা কিভাবে সম্ভব হতে পারে? কোন বিবেকসম্পন্ন লোক এটা গ্রহণ করতে পারে না। অতঃপর পবিত্র কুরআনের আয়াত ও হাদীসে বলা হয়েছে, প্রত্যেক মুমিন বেহেশতে আল্লাহ্কে দেখতে পাবে। এখানে পুরুষদেরকে নির্দিষ্ট করা হয়নি। কেউ কেউ বলেছেনঃ আল্লাহর দীদার ফিরিশতা ও জিন্ন সম্প্রদায় লাভ করতে পারবে না। এ উক্তিও গ্রহণযোগ্য নয়, বরং এর স্বপক্ষে কোন সঠিক প্রমাণ নেই।
দার্শনিক, খারিজী, মু'তাযিলা এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মধ্যে দীদারে ইলাহী
সম্পর্কে মতপার্থক্য রয়েছে। এটা যুক্তিগত ও দার্শনিক সূত্র চিন্তার জটিলতায় পরিপূর্ণ। তারা বলে, দীদারের জন্য স্থান, কাল, দিন ও মুখোমুখি হওয়া ইত্যাদির প্রয়োজন এবং এগুলো হলো দেহের গুণাবলী। কিন্তু আল্লাহ এগুলো থেকে পবিত্র। তাহলে দীদার কিভাবে সম্ভব?
এর জওয়াব হলো এই যে, আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বলেছেনঃ وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَاضِرَةٌ إِلَى رَبِّهَا نَاظِرَةٌ আল্লাহ পাকের এ ঘোষণার পরও এ ব্যাপারে সন্দেহ থাকতে পারে কিভাবে? অধিকন্তু দীদারের জন্য এ সমস্ত শর্ত সাধারণভাবে প্রয়োজন নেই। এটা কোন যুক্তিসঙ্গত শর্তও নয় যে, এগুলো ব্যতীত দীদার সম্ভব নয়। আল্লাহ্ কি এ জড় চোখের মধ্যে দৃষ্টিশক্তি প্রদান করতে অক্ষম (নাউযুবিল্লাহ) হয়ে যাবেন? যে আল্লাহ্ জিহ্বার মধ্যে কথা বলার শক্তি দান করেছেন, তাঁর দীদারের জন্য চোখের মধ্যে শক্তি দান করা কোন কঠিন ব্যাপার নয়।
এ হাদীসের দ্বিতীয় বিষয় হলো, নামাযের দার্শনিক দিক। নামাযের সামগ্রিক সৌন্দর্য হলো এই যে, বিনয় ও নম্রতার সাথে নামাযের মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে হাযির হওয়া। প্রকৃত নামায় হলো এই যে, মুখমন্ডলের দৃষ্টি যদি কিবলার দিকে হয়, তাহলে কালবের দৃষ্টি মহান সত্তা আল্লাহর দিকে হতে হবে। বরং নবী করীম (সা)-এর ঘোষণা অনুযায়ী كَأَنَّكَ تَرَاهُ মুখমন্ডলের চোখ আল্লাহর পরম সত্তার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। অন্তরের পর্যবেক্ষণের সাথে সাথে চোখের পর্যবেক্ষণও হতে হবে। যেমন কোন প্রেমিকার দীদার চোখ শীতল এবং অন্তর আনন্দিত হয়ে থাকে। এমনিভাবে নামাযে এরূপ অবস্থা সৃষ্টি হওয়া প্রয়োজন যাতে বলা যায়ঃ قرة عيني في الصلاة “নামাযে আমার চোখের প্রশান্তি রয়েছে।"
নামাযে জিহ্বা কথোপকথনের স্বাদ গ্রহণ করে, চোখে দীদারের আনন্দ লাভ করে এবং অন্তর ধারণা ও কল্পনা করে থাকে। প্রকৃতপক্ষে এটাকেই মুমিনের মিরাজ দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। মূলতঃ নামাযে দীদার ও মুলাকার্তের সবগুলো দিকই সন্নিবেশিত করা হয়েছে। নামাযের এ হাকীকতের দৃষ্টিকোণ থেকে হুযূর (সা) বলেছেনঃ প্রকৃত দীদার যদিও আখিরাতে সৌভাগ্য হবে, কিন্তু এর যোগ্যতা দুনিয়াতে নামাযের প্রতি কঠোর নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে নিজের মধ্যে সৃষ্টি কর।
অতঃপর তিন ওয়াক্ত নামাযের প্রতি তিনি অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন। কেননা এ তিন ওয়াক্ত নামায আদায় অনেকের জন্য কষ্টকর হয়ে থাকে। ভোরবেলা মিষ্টি মধুর নিদ্রা ছেড়ে আরামের বিছানা ত্যাগ করা দীদারে ইলাহীর সত্যিকার আশিক ছাড়া অন্য কারো দ্বারা সম্ভব নয়। এমনিভাবে ভোর থেকে দ্বিপ্রহর পর্যন্ত বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত থাকায় ক্লান্তির কারণে দেহ একটু আরাম চায়। তখন নামায আদায় করা একটু কষ্টকর হয়ে থাকে। আসর নামাযের সময় আরো অধিক গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সারা দিনের কাজ শেষে লোকজন সওদা ক্রয়ের জন্য বাজারে গমন করে থাকে। ব্যক্তিগত কাজে বিভিন্নস্থানে গমন করে থাকে। তাই সময়মত লোক মসজিদে উপস্থিত হতে পারে না। একমাত্র আল্লাহর প্রকৃত আশিক বান্দাগণই সমস্ত বাধা অতিক্রম করে মসজিদে হাযির হতে পারেন। তাই হুযূর (সা) এ তিন ওয়াক্ত নামাযের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে সঠিকভাবে এ সমস্ত নামায আদায় করার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ প্রদান করেছেন। যাতে অন্যান্য নামায আদায় করা ঐ সমস্ত ব্যক্তির জন্য সহজ হয়ে যায়।
হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে সিহাহ সিত্তাহ ও মুসনাদে আহমদে বর্ণিত আছে যে, হুযূর (সা) বলেছেনঃ অচিরেই তোমরা তোমাদের প্রভুকে দেখতে পাবে। যেভাবে তোমরা কোন সন্দেহ ছাড়া চাঁদ দেখতে পাও। সুতরাং তোমাদের শক্তি থাকা সত্ত্বে সূর্যোদয়ের পূর্বের এবং সূর্যাস্তের পূর্বের নামায আদায় থেকে বিরত থাকবে না। অধিকন্তু আল্লাহর দীদার সম্পর্কে ইজমায়ে উম্মত বিদ্যমান রয়েছে। তাই আল্লাহর দীদার সম্পর্কে অস্বীকার অথবা এতে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করার কোন অবকাশ নেই।
কেউ কেউ বলছেন, বেহেশতে মহিলাগণ আল্লাহর দীদার লাভ করতে পারবে না। কেননা পবিত্র কুরআনে আল্লাহর বাণীঃ (তাঁবুর মধ্যে সুলোচনা রমণীগণ অবস্থান করবে)-এর দৃষ্টিকোণ থেকে রমণীগণ পর্দার আড়ালে অবস্থান করবে। এটা একটা অর্থহীন কথা। কেননা বেহেশতে পর্দার কারণে তাঁবু তৈরি হবে না। অধিকন্তু রমণীগণ পুরুষের মত মানবজাতির অন্তর্ভুক্ত এবং সমস্ত কাজে অংশীদারভুক্ত। তাই বলা হয়েছেঃ নিশ্চয়ই মহিলাগণ পুরুষের অনুরূপই ।
আবু দাউদ, তিরমিযী হযরত আয়েশা (রা) থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। বাযযায হযরত আনাস (রা) থেকে, তিনি হুযূর (সা) থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। এ ছাড়া রমণীদের মধ্যে হযরত ফাতিমা যোহরা (রা), হযরত খাদীজা (রা) এবং হযরত আয়েশা (রা)-এর মত নেক ও মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব রমণী হওয়ার কারণে এ বিরাট নিয়ামত থেকে বঞ্চিত থাকবেন অথচ তাঁদের চেয়ে লাখো গুণ কম মর্যাদাসম্পন্ন পুরুষ এ নিয়ামত লাভ করবেন, তা কিভাবে সম্ভব হতে পারে? কোন বিবেকসম্পন্ন লোক এটা গ্রহণ করতে পারে না। অতঃপর পবিত্র কুরআনের আয়াত ও হাদীসে বলা হয়েছে, প্রত্যেক মুমিন বেহেশতে আল্লাহ্কে দেখতে পাবে। এখানে পুরুষদেরকে নির্দিষ্ট করা হয়নি। কেউ কেউ বলেছেনঃ আল্লাহর দীদার ফিরিশতা ও জিন্ন সম্প্রদায় লাভ করতে পারবে না। এ উক্তিও গ্রহণযোগ্য নয়, বরং এর স্বপক্ষে কোন সঠিক প্রমাণ নেই।
দার্শনিক, খারিজী, মু'তাযিলা এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মধ্যে দীদারে ইলাহী
সম্পর্কে মতপার্থক্য রয়েছে। এটা যুক্তিগত ও দার্শনিক সূত্র চিন্তার জটিলতায় পরিপূর্ণ। তারা বলে, দীদারের জন্য স্থান, কাল, দিন ও মুখোমুখি হওয়া ইত্যাদির প্রয়োজন এবং এগুলো হলো দেহের গুণাবলী। কিন্তু আল্লাহ এগুলো থেকে পবিত্র। তাহলে দীদার কিভাবে সম্ভব?
এর জওয়াব হলো এই যে, আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বলেছেনঃ وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَاضِرَةٌ إِلَى رَبِّهَا نَاظِرَةٌ আল্লাহ পাকের এ ঘোষণার পরও এ ব্যাপারে সন্দেহ থাকতে পারে কিভাবে? অধিকন্তু দীদারের জন্য এ সমস্ত শর্ত সাধারণভাবে প্রয়োজন নেই। এটা কোন যুক্তিসঙ্গত শর্তও নয় যে, এগুলো ব্যতীত দীদার সম্ভব নয়। আল্লাহ্ কি এ জড় চোখের মধ্যে দৃষ্টিশক্তি প্রদান করতে অক্ষম (নাউযুবিল্লাহ) হয়ে যাবেন? যে আল্লাহ্ জিহ্বার মধ্যে কথা বলার শক্তি দান করেছেন, তাঁর দীদারের জন্য চোখের মধ্যে শক্তি দান করা কোন কঠিন ব্যাপার নয়।
এ হাদীসের দ্বিতীয় বিষয় হলো, নামাযের দার্শনিক দিক। নামাযের সামগ্রিক সৌন্দর্য হলো এই যে, বিনয় ও নম্রতার সাথে নামাযের মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে হাযির হওয়া। প্রকৃত নামায় হলো এই যে, মুখমন্ডলের দৃষ্টি যদি কিবলার দিকে হয়, তাহলে কালবের দৃষ্টি মহান সত্তা আল্লাহর দিকে হতে হবে। বরং নবী করীম (সা)-এর ঘোষণা অনুযায়ী كَأَنَّكَ تَرَاهُ মুখমন্ডলের চোখ আল্লাহর পরম সত্তার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। অন্তরের পর্যবেক্ষণের সাথে সাথে চোখের পর্যবেক্ষণও হতে হবে। যেমন কোন প্রেমিকার দীদার চোখ শীতল এবং অন্তর আনন্দিত হয়ে থাকে। এমনিভাবে নামাযে এরূপ অবস্থা সৃষ্টি হওয়া প্রয়োজন যাতে বলা যায়ঃ قرة عيني في الصلاة “নামাযে আমার চোখের প্রশান্তি রয়েছে।"
নামাযে জিহ্বা কথোপকথনের স্বাদ গ্রহণ করে, চোখে দীদারের আনন্দ লাভ করে এবং অন্তর ধারণা ও কল্পনা করে থাকে। প্রকৃতপক্ষে এটাকেই মুমিনের মিরাজ দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। মূলতঃ নামাযে দীদার ও মুলাকার্তের সবগুলো দিকই সন্নিবেশিত করা হয়েছে। নামাযের এ হাকীকতের দৃষ্টিকোণ থেকে হুযূর (সা) বলেছেনঃ প্রকৃত দীদার যদিও আখিরাতে সৌভাগ্য হবে, কিন্তু এর যোগ্যতা দুনিয়াতে নামাযের প্রতি কঠোর নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে নিজের মধ্যে সৃষ্টি কর।
অতঃপর তিন ওয়াক্ত নামাযের প্রতি তিনি অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন। কেননা এ তিন ওয়াক্ত নামায আদায় অনেকের জন্য কষ্টকর হয়ে থাকে। ভোরবেলা মিষ্টি মধুর নিদ্রা ছেড়ে আরামের বিছানা ত্যাগ করা দীদারে ইলাহীর সত্যিকার আশিক ছাড়া অন্য কারো দ্বারা সম্ভব নয়। এমনিভাবে ভোর থেকে দ্বিপ্রহর পর্যন্ত বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত থাকায় ক্লান্তির কারণে দেহ একটু আরাম চায়। তখন নামায আদায় করা একটু কষ্টকর হয়ে থাকে। আসর নামাযের সময় আরো অধিক গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সারা দিনের কাজ শেষে লোকজন সওদা ক্রয়ের জন্য বাজারে গমন করে থাকে। ব্যক্তিগত কাজে বিভিন্নস্থানে গমন করে থাকে। তাই সময়মত লোক মসজিদে উপস্থিত হতে পারে না। একমাত্র আল্লাহর প্রকৃত আশিক বান্দাগণই সমস্ত বাধা অতিক্রম করে মসজিদে হাযির হতে পারেন। তাই হুযূর (সা) এ তিন ওয়াক্ত নামাযের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে সঠিকভাবে এ সমস্ত নামায আদায় করার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ প্রদান করেছেন। যাতে অন্যান্য নামায আদায় করা ঐ সমস্ত ব্যক্তির জন্য সহজ হয়ে যায়।
