মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ

১. ঈমান-আকাঈদ অধ্যায়

হাদীস নং: ১৫
তাকদীরের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা ওয়াজিব
১৫। হযরত সুরাকা (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদেরকে দ্বীনের মূল তত্ত্ব এবং আমাদের সৃষ্টির উদ্দেশ্য বর্ণনা করুন। আমরা কি সে কাজ করছি যা আমাদের তাকদীরে লেখা হয়েছে এবং যা লিখে কলম শুকিয়ে গিয়েছে, নাকি বিষয়ের উপর আমল করতে থাকি এবং পরে তা লিপিবদ্ধ হবে? হযরত (ﷺ) বলেনঃ তোমাদের কাজ ও আমল ঐ সমস্ত বিষয়, যা তাকদীরে লেখা হয়েছে এবং কলম লিখে শুকিয়ে গেছে, তারই অন্তর্ভুক্ত।

হযরত সুরাকা (রাযিঃ) বলেন, তাহলে এরপর আমল কিসের জন্য? হুযুর (ﷺ) বললেনঃ (না) আমল কর। কেননা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ঐ কাজ করা সহজ হবে, যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। (অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেন)" অতঃপর যে দান করে, তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যা উত্তম তা সত্য বলে গ্রহণ করে, তাহলে তার জন্য আমি সুগম করে দিব সহজ পথ। যে কৃপণতা করে এবং নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করে, আর যা উত্তম তা অস্বীকার করে, তাহলে তার জন্য আমি সুগম করে দিব কঠোর পথ।"
عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ سُرَاقَةَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، حَدِّثْنَا عَنْ دِينِنَا كَأَنَّنَا وُلِدْنَا لَهُ، أَنَعْمَلُ الشَّيْءَ قَدْ جَرَتْ بِهِ الْمَقَادِيرُ، وَجَفَّتْ بِهِ الْأَقْلَامُ، أَمْ فِي شَيْءٍ نَسْتَقْبِلُ فِيهِ الْعَمَلَ؟ قَالَ: «بَلْ فِي شَيْءٍ قَدْ جَرَتْ بِهِ الْمَقَادِيرُ، وَجَفَّتْ بِهِ الْأَقْلَامُ» ، قَالَ: فَفِيمَ الْعَمَلُ؟ قَالَ: «اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ» ، {فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى {5} وَصَدَّقَ بِالْحُسْنَى {6} فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْيُسْرَى {7} وَأَمَّا مَنْ بَخِلَ وَاسْتَغْنَى {8} وَكَذَّبَ بِالْحُسْنَى {9} فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْعُسْرَى} [الليل: 5-10]

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীস প্রায়ই একই বাক্যের মাধ্যমে আহমদ, মুসলিম, ইবনে হাব্বান, তিবরানী এবং ইবনে মারদুবীয়া হযরত সুরাকা (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন। হাদীসে হুযুর (সা)-এর মূল বক্তব্য হলো এই যে, পৃথিবীতে আমাদের সমস্ত আমল তাকদীরের লিখনী অনুযায়ী হয়ে থাকে। কিন্তু তাকদীরের অর্থ এ নয় যে, মানুষ অক্ষম হয়ে কোন আমল না করে বাধ্যতামূলকভাবে বসে থাকবে। যদি এরূপ হয়, তবে সবকিছুই বেকার হয়ে যাবে। কিন্তু ঘটনা এরূপ নয়। তাকদীরের যা কিছু লিখন রয়েছে, তা ভবিষ্যতের জন্য শুধু উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবেই গণ্য হবে। মানুষের কর্মক্ষমতার উপর এর কোন প্রভাব নেই। মানুষের কর্মক্ষমতা যথারীতি বহাল থাকবে। এ কর্মক্ষমতার কারণেই মানুষ মুক্তি বা শান্তি পাবে। অবশ্য যে কোন কাজ আল্লাহর কুদরতী শক্তির উপরই নির্ভরশীল। অর্থাৎ মানুষ অর্জনকারী এবং আল্লাহ্ সৃষ্টিকারী।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মুসনাদে আবু হানীফা রহঃ - হাদীস নং ১৫ | মুসলিম বাংলা