মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
১. ঈমান-আকাঈদ অধ্যায়
হাদীস নং: ১০
মুমিন অনন্তকালের জন্য জাহান্নামী হবে না
১০। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবন হাবীবাহ্ (রাহঃ) বর্ণনা করেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাহাবী হযরত আবুদ দারদা (রাযিঃ)-কে বর্ণনা করতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি একবার হুযূর (ﷺ)-এর সাথে একই সাওয়ারীর উপর উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তিনি আমাকে বললেনঃ হে আবুদ দারদা (রাযিঃ)! যে ব্যক্তি এ সাক্ষ্য প্রদান করে যে, এক আল্লাহ্ ছাড়া কোন মাবূদ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল, তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হবে। হযরত আবুদ দারদা (রাযিঃ) বলেন, আমি বললাম, যদি সে ব্যভিচার করে, যদি সে চুরি করে? হযরত আবুদ দারদা (রাযিঃ) বলেন, এরপর হুযূর (ﷺ) কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন।
অতঃপর কিছুক্ষণ চলার পর পুনরায় বললেনঃ যে ব্যক্তি এ সাক্ষ্য প্রদান করে যে, এক আল্লাহ্ ছাড়া কোন মাবূদ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল, তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হবে। হযরত আবুদ দারদা (রাযিঃ) বলেন, আমি বললাম, যদি সে ব্যভিচার করে, যদি সে চুরি করে? হযরত আবুদ দারদা (রাযিঃ) বলেন, এরপর হুযূর (ﷺ) কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। অতঃপর কিছুক্ষণ চলার পর পুনরায় বললেনঃ যে ব্যক্তি এ সাক্ষ্য প্রদান করে যে, এক আল্লাহ ছাড়া কোন মাবূদ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল, তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হবে। হযরত আবুদ দারদা (রাযিঃ) বলেন, আমি বললাম, যদি সে ব্যভিচার করে, যদি সে চুরি করে?
হযরত আবুদ দারদা (রাযিঃ) বলেন, এবার হযরত (ﷺ) বলেনঃ যদিও সে ব্যভিচার করে, চুরি করে। আবুদ দারদার নাক মাটি মিশ্রিত হোক। আবুদ দারদা (রাযিঃ)-এর ছাত্র হযরত আব্দুল্লাহ বলেন, আমার ঐ দৃশ্যটা এমনি মনে পড়ে যেন, আমি এখনো দেখছি যে, হযরত আবুদ দারদা (রাযিঃ) তাঁর শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা স্বীয় নাকের বাঁশীর দিকে ইঙ্গিত করছেন।
অতঃপর কিছুক্ষণ চলার পর পুনরায় বললেনঃ যে ব্যক্তি এ সাক্ষ্য প্রদান করে যে, এক আল্লাহ্ ছাড়া কোন মাবূদ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল, তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হবে। হযরত আবুদ দারদা (রাযিঃ) বলেন, আমি বললাম, যদি সে ব্যভিচার করে, যদি সে চুরি করে? হযরত আবুদ দারদা (রাযিঃ) বলেন, এরপর হুযূর (ﷺ) কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। অতঃপর কিছুক্ষণ চলার পর পুনরায় বললেনঃ যে ব্যক্তি এ সাক্ষ্য প্রদান করে যে, এক আল্লাহ ছাড়া কোন মাবূদ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল, তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হবে। হযরত আবুদ দারদা (রাযিঃ) বলেন, আমি বললাম, যদি সে ব্যভিচার করে, যদি সে চুরি করে?
হযরত আবুদ দারদা (রাযিঃ) বলেন, এবার হযরত (ﷺ) বলেনঃ যদিও সে ব্যভিচার করে, চুরি করে। আবুদ দারদার নাক মাটি মিশ্রিত হোক। আবুদ দারদা (রাযিঃ)-এর ছাত্র হযরত আব্দুল্লাহ বলেন, আমার ঐ দৃশ্যটা এমনি মনে পড়ে যেন, আমি এখনো দেখছি যে, হযরত আবুদ দারদা (রাযিঃ) তাঁর শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা স্বীয় নাকের বাঁশীর দিকে ইঙ্গিত করছেন।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي حَبِيبَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا الدَّرْدَاءِ صَاحِبَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: بَيْنَا أَنَا رَدِيفُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: " يَا أَبَا الدَّرْدَاءِ، مَنْ شَهِدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ.
قُلْتُ: وَإِنْ زَنَى، وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ: فَسَكَتَ عَنِّي سَاعَةً، ثُمَّ سَارَ سَاعَةً، فَقَالَ: مَنْ شَهِدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ وَجَبَتْ لَهُ الْجِنَّةُ.
قُلْتُ: وَإِنْ زَنَى، وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ: فَكَسَتَ عَنِّي سَاعَةً، ثُمَّ سَارَ سَاعَةً، ثُمَّ قَالَ: مَنْ شَهِدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ، قَالَ: قُلْتُ: وَإِنْ زَنَى، وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ: وَإِنْ زَنَى، وَإِنْ سَرَقَ، وَإِنْ رَغِمَ أَنْفُ أَبِي الدَّرْدَاءِ "، قَالَ: فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى أُصْبُعِ أَبِي الدَّرْدَاءِ السَّبَّابَةِ يُومِئُ إِلَى أَرْنَبَتِهِ
قُلْتُ: وَإِنْ زَنَى، وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ: فَسَكَتَ عَنِّي سَاعَةً، ثُمَّ سَارَ سَاعَةً، فَقَالَ: مَنْ شَهِدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ وَجَبَتْ لَهُ الْجِنَّةُ.
قُلْتُ: وَإِنْ زَنَى، وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ: فَكَسَتَ عَنِّي سَاعَةً، ثُمَّ سَارَ سَاعَةً، ثُمَّ قَالَ: مَنْ شَهِدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ، قَالَ: قُلْتُ: وَإِنْ زَنَى، وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ: وَإِنْ زَنَى، وَإِنْ سَرَقَ، وَإِنْ رَغِمَ أَنْفُ أَبِي الدَّرْدَاءِ "، قَالَ: فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى أُصْبُعِ أَبِي الدَّرْدَاءِ السَّبَّابَةِ يُومِئُ إِلَى أَرْنَبَتِهِ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীসের দ্বারা খারিজী ও মু'তাযিলা দলের বাতিল ধারণা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ভিত্তিহীন ও বাতিল বলে প্রমাণিত হয়। তিবরানী এ হাদীস হযরত আবুদ দারদা (রা) থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে বর্ণনা করেছেন। আহমদ ও ইবনে হিব্বান তাঁর থেকে সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করেছেন। আহমদ, ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হযরত আবূ যর (রা) থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ হযরত আবূ যর (রা) থেকে এবং তিনি হুযূর (সা) থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। মোটকথা এ হাদীস অর্থের দিক থেকে মুতাওয়াতির হাদীসের অন্তর্ভুক্ত এবং বিভিন্নভাবে এ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
নবী করীম (সা)-এর এ হাদীসের বাহ্যিক অর্থ হলো এই যে, শুধু তাওহীদ ও রিসালতের সাক্ষ্য দানকারী যদি গুনাহ থেকে পবিত্র থাকে, তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হবে। যদি সে গুনাহগার হয়, তবে শাস্তি ভোগের পর অবশেষে জান্নাতে প্রবেশ করবে। বস্তুত তাওহীদ ও রিসালতের সাক্ষ্য দানকারী কবীরা গুনাহ করলেও চিরকালের জন্য জাহান্নামবাসী হবে না। অতঃপর গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যায় যে, তাওহীদ ও রিসালতের সাক্ষ্য দানকারী সবার জন্য এ হাদীসে হুযুর (সা) প্রথমবারে জান্নাতে প্রবেশের বিষয়টি ওয়াজিব বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কেননা এখানে তাওহীদ ও রিসালতের দ্বারা এমন শাহাদাত ও ইকরারের কথা বলা হয়েছে, যা অন্তরের অন্তঃস্থলে পৌঁছে সমস্ত দেহ ও দৈহিক আমলের উপর এর প্রভাব পড়ে এবং অন্তরে আল্লাহর্ভীতি এমনিভাবে স্থায়ী হয়ে যায় যে, নাফরমানী ও পাপ করার সাহস অবশিষ্ট থাকে না।
সুতরাং কালেমায়ে শাহাদতের প্রভাবে যখন কোন গুনাহ্ প্রকাশ না হবে তখন প্রথমবারে জান্নাতে প্রবেশ তার জন্য ওয়াজিব হবে, শাস্তি ভোগ করার আশংকা বাকী থাকবে না। এ দৃষ্টিকোণ থেকে নামায সম্পর্কে আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে বলেছেন: إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ ঐ নামায যা অন্তরে বিপ্লব সৃষ্টি করে, ঐ নামায যা মনের চিন্তাধারাকে পরিবর্তন করে দেয়, ঐ নামায যা মুখমন্ডলকে শুধু কিবলার দিকে না ফিরিয়ে অন্তরকে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে দেয়, ঐ নামায যা قرة عيني في الصلاة (নামায আমার চোখের প্রশান্তি)-এর বাস্তবায়ন করে, ঐ নামায যা أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ (এভাবে আল্লাহর ইবাদত কর যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছ)-এর ধারণা অন্তরে ফুটে উঠে। এমনি ধরনের নামাযই মানুষকে অন্যায়, অশ্লীল ও অপকর্ম থেকে বিরত রাখতে পারে। তাই বলা হয়ে থাকে, আমল ঈমানকে সঠিক পথে ও শক্তিশালী রাখার ব্যাপারে খুবই দায়িত্ব বহন করে।
নবী করীম (সা)-এর এ হাদীসের বাহ্যিক অর্থ হলো এই যে, শুধু তাওহীদ ও রিসালতের সাক্ষ্য দানকারী যদি গুনাহ থেকে পবিত্র থাকে, তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হবে। যদি সে গুনাহগার হয়, তবে শাস্তি ভোগের পর অবশেষে জান্নাতে প্রবেশ করবে। বস্তুত তাওহীদ ও রিসালতের সাক্ষ্য দানকারী কবীরা গুনাহ করলেও চিরকালের জন্য জাহান্নামবাসী হবে না। অতঃপর গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যায় যে, তাওহীদ ও রিসালতের সাক্ষ্য দানকারী সবার জন্য এ হাদীসে হুযুর (সা) প্রথমবারে জান্নাতে প্রবেশের বিষয়টি ওয়াজিব বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কেননা এখানে তাওহীদ ও রিসালতের দ্বারা এমন শাহাদাত ও ইকরারের কথা বলা হয়েছে, যা অন্তরের অন্তঃস্থলে পৌঁছে সমস্ত দেহ ও দৈহিক আমলের উপর এর প্রভাব পড়ে এবং অন্তরে আল্লাহর্ভীতি এমনিভাবে স্থায়ী হয়ে যায় যে, নাফরমানী ও পাপ করার সাহস অবশিষ্ট থাকে না।
সুতরাং কালেমায়ে শাহাদতের প্রভাবে যখন কোন গুনাহ্ প্রকাশ না হবে তখন প্রথমবারে জান্নাতে প্রবেশ তার জন্য ওয়াজিব হবে, শাস্তি ভোগ করার আশংকা বাকী থাকবে না। এ দৃষ্টিকোণ থেকে নামায সম্পর্কে আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে বলেছেন: إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ ঐ নামায যা অন্তরে বিপ্লব সৃষ্টি করে, ঐ নামায যা মনের চিন্তাধারাকে পরিবর্তন করে দেয়, ঐ নামায যা মুখমন্ডলকে শুধু কিবলার দিকে না ফিরিয়ে অন্তরকে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে দেয়, ঐ নামায যা قرة عيني في الصلاة (নামায আমার চোখের প্রশান্তি)-এর বাস্তবায়ন করে, ঐ নামায যা أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ (এভাবে আল্লাহর ইবাদত কর যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছ)-এর ধারণা অন্তরে ফুটে উঠে। এমনি ধরনের নামাযই মানুষকে অন্যায়, অশ্লীল ও অপকর্ম থেকে বিরত রাখতে পারে। তাই বলা হয়ে থাকে, আমল ঈমানকে সঠিক পথে ও শক্তিশালী রাখার ব্যাপারে খুবই দায়িত্ব বহন করে।


বর্ণনাকারী: