মুসনাদে ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ
১. ঈমান-আকাঈদ অধ্যায়
হাদীস নং: ২
ঈমান, ইসলাম, তাকদীর এবং শাফাআত
২। হযরত ইয়াহহিয়া ইবন ইয়ামার (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদিন আমার সঙ্গীর সাথে পবিত্র মদীনায় উপবিষ্ট ছিলাম। হঠাৎ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) দৃষ্টিগোচর হলেন। আমি সাথীকে বললাম, তুমি কি মনে কর আমরা তাঁর নিকট গিয়ে তাকদীরের মাসআলা জিজ্ঞাসা করব? সাথী বলল, হ্যাঁ। তখন আমি বললাম, আচ্ছা, আমাকেই প্রশ্ন করতে দাও। কেননা আমি তাঁকে তোমার চেয়ে অধিক জানি। হযরত ইয়াহিয়া (রাহঃ) বলেন, অতঃপর আমি হযরত আব্দুল্লাহ (রাযিঃ)-এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করলাম, হে আবু আব্দুর রহমান (হযরত আব্দুল্লাহর উপনাম)! আমরা বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতে থাকি এবং কখনো এমন শহর অতিক্রম করে থাকি যার বাসিন্দাগণ বলে যে, তাকদীর বলতে কিছুই নেই। এ ধরনের লোকদেরকে আমি কি জওয়াব দেব ? হযরত আব্দুল্লাহ্ (রাযিঃ) বলেন, আমার পক্ষ থেকে তাদেরকে এ সংবাদ পৌঁছিয়ে দিন যে, আমি তাদের উপর অসন্তুষ্ট। যদি আমি সাহায্যকারী পাই, তাহলে তাদের সাথে জিহাদ করব।
অতঃপর তিনি এই হাদীস বর্ণনা করে বলেন, আমরা কতিপয় সাহাবী একবার রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। হঠাৎ শুভ্র বস্ত্র পরিহিত একজন সুদর্শন ব্যক্তি সেখানে আগমণ করেন, যার মাথার চুল কাঁধ পর্যন্ত ঝুলন্ত এবং দেহ থেকে সুগন্ধি ছড়াচ্ছিল। নিকট এসে বললেন, আস্সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ্, আস্সালামু আলাইকুম। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সালামের জবাব দিলেন, আমরাও তাঁর অনুকরণ করলাম। অতঃপর আগন্তুক কাছে আসার অনুমতি চাইলেন। তিনি বললেন, আস। তখন আগন্তুক দু-এক পা অগ্রসর হলেন। এরপর দাঁড়িয়ে অত্যন্ত আদবের সাথে আগন্তুক আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি নিকটে আসতে পারি ? তিনি বললেন, আস।
তখন তিনি হযরত (ﷺ)-এর হাঁটুর সাথে হাঁটু মিলিয়ে বসে পড়লেন এবং বললেন, আপনি আমাকে ঈমানের হাকীকত সম্পর্কে বলুন। হুযূর (ﷺ) বললেন, ঈমান হল এই যে, তুমি আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করবে, তাঁর ফিরিশতাগণের উপর, কিতাবসমূহের উপর, রাসূলগণের উপর, কিয়ামতের দিনের উপর এবং তাকদীরের ভাল-মন্দ আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করবে। আগন্তুক বললেন, আপনি সত্য বলেছেন। হযরত আব্দুল্লাহ্ (রাযিঃ) বলেন, তার এ কথায় আমরা আশ্চর্য হয়ে গেলাম। কেননা প্রশ্নও করেন আবার হুযূর (ﷺ)-এর জওয়াবের সত্যতা প্রমাণও করেন । এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তিনি পূর্ব থেকেই এ বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত আছেন।
এরপর তিনি জিজ্ঞাসা করেন, ইসলামের আহকাম কি, আমাকে বলুন। হযরত (ﷺ) বললেন, ইসলামের আহ্কাম হল নামায পড়া, যাকাত আদায় করা, সক্ষম ব্যক্তির জন্য বায়তুল্লাহ শরীফের হজ্জ করা, রমযানের রোযা রাখা, পবিত্রতা অর্জনের জন্য গোসল করা। আগন্তুক ব্যক্তি পুনরায় বললেন, আপনি সত্য বলেছেন, তাঁর এ কথায় আমরা পুনরায় হতবাক হয়ে গেলাম। অতঃপর ঐ ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বললেন, ইহসান কি এ সম্পর্কে আমাকে একটু বলুন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, ইহসান হল এই যে, তুমি প্রত্যেকটি আমল এভাবে করবে যেন তুমি আল্লাহ্ তাআলাকে দর্শন করছ। যদি সত্যিকারভাবে দেখতে না পাও, তবে কমপক্ষে এটা ধারণা করবে যে, আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। তখন আগন্তুক বললেন, যদি আমি এসব পালন করি, তাহলে কি আমি মুহসিন (নেককার) হতে পারব ? রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ। এবারও ঐ ব্যক্তি বললেন, “আপনি সত্য বলেছেন।"
অতঃপর আগন্তুক বললেন, কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে, এ সম্পর্কে আপনি আমাকে একটু বলুন। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, যাকে প্রশ্ন করা হয়েছে তিনি প্রশ্নকারীর চেয়ে এ ব্যাপারে অধিক কিছু অবগত নন। তবে এর কিছু প্রমাণ বা চিহ্ন রয়েছে। এরপর তিনি বলেন, নিশ্চয়ই একমাত্র আল্লাহ্ জানেন কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে, বৃষ্টি কখন বর্ষিত হবে, মায়ের গর্ভে কি সন্তান রয়েছে এবং মানুষ কোথায় মৃত্যুবরণ করবে (এগুলো মানুষ কিছুই জানে না)। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সবকিছুই জানেন ও খবর রাখেন। তখন ঐ ব্যক্তি বললেন, আপনি সত্য বলেছেন।
অতঃপর আগন্তুক ব্যক্তি চলে যেতে লাগলেন এবং আমরাও তা দেখছিলাম। নবী করীম (ﷺ) বললেন, ঐ লোকটিকে একটু ডেকে আন। আমরা তাঁর পেছনে দৌড়াতে লাগলাম। কিন্তু আমরা তাকে খুঁজে পেলাম না এবং কোনদিকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন তা বুঝতে পারলাম না। আমরা এই ঘটনা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট বর্ণনা করলাম। হুযুর (ﷺ) বললেন, ইনি ছিলেন জিবরাঈল (আ)। তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীনের আহকাম শিক্ষা দেওয়ার জন্য এসেছিলেন। আল্লাহর শপথ! আজকের এই ঘটনা ব্যতীত যখনই তিনি যে কোন আকৃতি নিয়ে আমার নিকট আগমণ করেছেন, আমি তাঁকে চিনতে পেরেছি।
অতঃপর তিনি এই হাদীস বর্ণনা করে বলেন, আমরা কতিপয় সাহাবী একবার রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। হঠাৎ শুভ্র বস্ত্র পরিহিত একজন সুদর্শন ব্যক্তি সেখানে আগমণ করেন, যার মাথার চুল কাঁধ পর্যন্ত ঝুলন্ত এবং দেহ থেকে সুগন্ধি ছড়াচ্ছিল। নিকট এসে বললেন, আস্সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ্, আস্সালামু আলাইকুম। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সালামের জবাব দিলেন, আমরাও তাঁর অনুকরণ করলাম। অতঃপর আগন্তুক কাছে আসার অনুমতি চাইলেন। তিনি বললেন, আস। তখন আগন্তুক দু-এক পা অগ্রসর হলেন। এরপর দাঁড়িয়ে অত্যন্ত আদবের সাথে আগন্তুক আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি নিকটে আসতে পারি ? তিনি বললেন, আস।
তখন তিনি হযরত (ﷺ)-এর হাঁটুর সাথে হাঁটু মিলিয়ে বসে পড়লেন এবং বললেন, আপনি আমাকে ঈমানের হাকীকত সম্পর্কে বলুন। হুযূর (ﷺ) বললেন, ঈমান হল এই যে, তুমি আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করবে, তাঁর ফিরিশতাগণের উপর, কিতাবসমূহের উপর, রাসূলগণের উপর, কিয়ামতের দিনের উপর এবং তাকদীরের ভাল-মন্দ আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করবে। আগন্তুক বললেন, আপনি সত্য বলেছেন। হযরত আব্দুল্লাহ্ (রাযিঃ) বলেন, তার এ কথায় আমরা আশ্চর্য হয়ে গেলাম। কেননা প্রশ্নও করেন আবার হুযূর (ﷺ)-এর জওয়াবের সত্যতা প্রমাণও করেন । এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তিনি পূর্ব থেকেই এ বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত আছেন।
এরপর তিনি জিজ্ঞাসা করেন, ইসলামের আহকাম কি, আমাকে বলুন। হযরত (ﷺ) বললেন, ইসলামের আহ্কাম হল নামায পড়া, যাকাত আদায় করা, সক্ষম ব্যক্তির জন্য বায়তুল্লাহ শরীফের হজ্জ করা, রমযানের রোযা রাখা, পবিত্রতা অর্জনের জন্য গোসল করা। আগন্তুক ব্যক্তি পুনরায় বললেন, আপনি সত্য বলেছেন, তাঁর এ কথায় আমরা পুনরায় হতবাক হয়ে গেলাম। অতঃপর ঐ ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বললেন, ইহসান কি এ সম্পর্কে আমাকে একটু বলুন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, ইহসান হল এই যে, তুমি প্রত্যেকটি আমল এভাবে করবে যেন তুমি আল্লাহ্ তাআলাকে দর্শন করছ। যদি সত্যিকারভাবে দেখতে না পাও, তবে কমপক্ষে এটা ধারণা করবে যে, আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। তখন আগন্তুক বললেন, যদি আমি এসব পালন করি, তাহলে কি আমি মুহসিন (নেককার) হতে পারব ? রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ। এবারও ঐ ব্যক্তি বললেন, “আপনি সত্য বলেছেন।"
অতঃপর আগন্তুক বললেন, কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে, এ সম্পর্কে আপনি আমাকে একটু বলুন। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, যাকে প্রশ্ন করা হয়েছে তিনি প্রশ্নকারীর চেয়ে এ ব্যাপারে অধিক কিছু অবগত নন। তবে এর কিছু প্রমাণ বা চিহ্ন রয়েছে। এরপর তিনি বলেন, নিশ্চয়ই একমাত্র আল্লাহ্ জানেন কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে, বৃষ্টি কখন বর্ষিত হবে, মায়ের গর্ভে কি সন্তান রয়েছে এবং মানুষ কোথায় মৃত্যুবরণ করবে (এগুলো মানুষ কিছুই জানে না)। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সবকিছুই জানেন ও খবর রাখেন। তখন ঐ ব্যক্তি বললেন, আপনি সত্য বলেছেন।
অতঃপর আগন্তুক ব্যক্তি চলে যেতে লাগলেন এবং আমরাও তা দেখছিলাম। নবী করীম (ﷺ) বললেন, ঐ লোকটিকে একটু ডেকে আন। আমরা তাঁর পেছনে দৌড়াতে লাগলাম। কিন্তু আমরা তাকে খুঁজে পেলাম না এবং কোনদিকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন তা বুঝতে পারলাম না। আমরা এই ঘটনা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট বর্ণনা করলাম। হুযুর (ﷺ) বললেন, ইনি ছিলেন জিবরাঈল (আ)। তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীনের আহকাম শিক্ষা দেওয়ার জন্য এসেছিলেন। আল্লাহর শপথ! আজকের এই ঘটনা ব্যতীত যখনই তিনি যে কোন আকৃতি নিয়ে আমার নিকট আগমণ করেছেন, আমি তাঁকে চিনতে পেরেছি।
عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمُرَ، قَالَ: بَيْنَمَا أَنَا مَعَ صَاحِبٍ لِي بِمَدِينَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَ بَصُرْنَا بِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَقُلْتُ لِصَاحِبِي: هَلْ لَكَ أَنْ نَأْتِيَهُ، فَنَسْأَلَهُ عَنِ الْقَدَرِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قُلْتُ: دَعْنِي حَتَّى أَكُونَ أَنَا الَّذِي أَسْأَلُهُ، فَإِنِّي أَعْرَفُ بِهِ مِنْكَ.
قَالَ: فَانْتَهَيْنَا إِلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، فَسَلَّمْنَا عَلَيْهِ، وَقَعَدْنَا إِلَيْهِ، فَقُلْتُ لَهُ: يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ، إِنَّا نَتَقَلَّبُ فِي هَذِهِ الْأَرْضِ، فَرُبَّمَا قَدِمْنَا الْبَلْدَةَ بِهَا قَوْمٌ يَقُولُونَ: لَا قَدَرَ، فَبِمَا نَرُدُّ عَلَيْهِمْ؟ فَقَالَ: أَبْلِغْهُمْ أَنِّي مِنْهُمْ بَرِيءٌ، وَلَوْ أَنِّي وَجَدْتُ أَعْوَانًا لَجَاهَدْتُهُمْ، ثُمَّ أَنْشَأَ يُحَدِّثُنَا، قَالَ: " بَيْنَمَا نَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمَعَهُ رَهْطٌ مِنْ أَصْحَابِهِ، إِذْ أَقْبَلَ شَابٌّ جَمِيلٌ، أَبْيَضُ، حَسَنُ اللَّمَّةِ، طَيِّبُ الرِّيحِ، عَلَيْهِ ثِيَابٌ بِيضٌ، فَقَالَ: السَّلَامُ عَلَيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، السَّلَامُ عَلَيْكُمْ، قَالَ: فَرَدَّ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَرَدَدْنَا مَعَهُ، فَقَالَ: أَدْنُو يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: ادْنُ، فَدَنَا دَنْوَةً، أَوْ دَنْوَتَيْنِ، ثُمَّ قَامَ مُوَقِّرًا لَهُ، ثُمَّ قَالَ: أَدْنُو يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ فَقَالَ: ادْنُهْ، فَدَنَا حَتَّى أَلْصَقَ رُكْبَتَيْهِ بِرُكْبَتَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: أَخْبِرْنِي عَنِ الْإِيمَانِ، فَقَالَ: الْإِيمَانُ أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ، وَمَلَائِكَتِهِ، وَكُتُبِهِ، وَرُسُلِهِ، وَلِقَائِهِ، وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، وَالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ مِنَ اللَّهِ.
قَالَ: صَدَقْتَ، قَالَ: فَعَجِبْنَا مِنْ تَصْدِيقِهِ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَوْلِهِ: صَدَقْتَ، كَأَنَّهُ يَعْلَمُ.
قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنْ شَرَائِعِ الْإِسْلَامِ مَا هِيَ؟ قَالَ: إِقَامُ الصَّلَاةِ، وَإِيتَاءُ الزَّكَاةِ، وَحَجُّ الْبَيْتِ، وَصَوْمُ رَمَضَانَ، وَالِاغْتِسَالُ مِنَ الْجَنَابَةِ، قَالَ: صَدَقَتَ، فَعَجِبْنَا لِقَوْلِهِ: صَدَقْتَ، قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنِ الْإِحْسَانِ مَا هُوَ؟ قَالَ: الْإِحْسَانُ أَنْ تَعْمَلَ لِلَّهِ كَأَنَّكَ تَرَاهُ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ، فَإِنَّهُ يَرَاكَ، قَالَ: فَإِذَا فَعَلْتُ ذَلِكَ، فَأَنَا مُحْسِنٌ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: صَدَقْتَ، قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنِ السَّاعَةِ، مَتَى هِيَ؟ ، قَالَ: مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ، وَلَكِنْ لَهَا أَشْرَاطٌ، فَقَالَ: {إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الأَرْحَامِ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَاذَا تَكْسِبُ غَدًا وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ} [لقمان: 34] .
قَالَ: صَدَقْتَ، وَانْصَرَفَ وَنَحْنُ نَرَاهُ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عَلَيَّ بِالرَّجُلِ، فَقُمْنَا عَلَى أَثَرِهِ فَمَا نَدْرِي أَيْنَ تَوَجَّهَ، وَلَا رَأَيْنَا شَيْئًا، فَذَكَرْنَا ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: هَذَا جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ، أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ مَعَالِمَ دِينِكُمْ، وَاللَّهِ مَا أَتَانِي فِي صُورَةٍ إِلَّا وَأَنَا أَعْرِفُهُ فِيهَا، إِلَّا هَذِهِ الصُّورَةَ "
قَالَ: فَانْتَهَيْنَا إِلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، فَسَلَّمْنَا عَلَيْهِ، وَقَعَدْنَا إِلَيْهِ، فَقُلْتُ لَهُ: يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ، إِنَّا نَتَقَلَّبُ فِي هَذِهِ الْأَرْضِ، فَرُبَّمَا قَدِمْنَا الْبَلْدَةَ بِهَا قَوْمٌ يَقُولُونَ: لَا قَدَرَ، فَبِمَا نَرُدُّ عَلَيْهِمْ؟ فَقَالَ: أَبْلِغْهُمْ أَنِّي مِنْهُمْ بَرِيءٌ، وَلَوْ أَنِّي وَجَدْتُ أَعْوَانًا لَجَاهَدْتُهُمْ، ثُمَّ أَنْشَأَ يُحَدِّثُنَا، قَالَ: " بَيْنَمَا نَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمَعَهُ رَهْطٌ مِنْ أَصْحَابِهِ، إِذْ أَقْبَلَ شَابٌّ جَمِيلٌ، أَبْيَضُ، حَسَنُ اللَّمَّةِ، طَيِّبُ الرِّيحِ، عَلَيْهِ ثِيَابٌ بِيضٌ، فَقَالَ: السَّلَامُ عَلَيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، السَّلَامُ عَلَيْكُمْ، قَالَ: فَرَدَّ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَرَدَدْنَا مَعَهُ، فَقَالَ: أَدْنُو يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: ادْنُ، فَدَنَا دَنْوَةً، أَوْ دَنْوَتَيْنِ، ثُمَّ قَامَ مُوَقِّرًا لَهُ، ثُمَّ قَالَ: أَدْنُو يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ فَقَالَ: ادْنُهْ، فَدَنَا حَتَّى أَلْصَقَ رُكْبَتَيْهِ بِرُكْبَتَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: أَخْبِرْنِي عَنِ الْإِيمَانِ، فَقَالَ: الْإِيمَانُ أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ، وَمَلَائِكَتِهِ، وَكُتُبِهِ، وَرُسُلِهِ، وَلِقَائِهِ، وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، وَالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ مِنَ اللَّهِ.
قَالَ: صَدَقْتَ، قَالَ: فَعَجِبْنَا مِنْ تَصْدِيقِهِ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَقَوْلِهِ: صَدَقْتَ، كَأَنَّهُ يَعْلَمُ.
قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنْ شَرَائِعِ الْإِسْلَامِ مَا هِيَ؟ قَالَ: إِقَامُ الصَّلَاةِ، وَإِيتَاءُ الزَّكَاةِ، وَحَجُّ الْبَيْتِ، وَصَوْمُ رَمَضَانَ، وَالِاغْتِسَالُ مِنَ الْجَنَابَةِ، قَالَ: صَدَقَتَ، فَعَجِبْنَا لِقَوْلِهِ: صَدَقْتَ، قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنِ الْإِحْسَانِ مَا هُوَ؟ قَالَ: الْإِحْسَانُ أَنْ تَعْمَلَ لِلَّهِ كَأَنَّكَ تَرَاهُ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ، فَإِنَّهُ يَرَاكَ، قَالَ: فَإِذَا فَعَلْتُ ذَلِكَ، فَأَنَا مُحْسِنٌ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: صَدَقْتَ، قَالَ: فَأَخْبِرْنِي عَنِ السَّاعَةِ، مَتَى هِيَ؟ ، قَالَ: مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ، وَلَكِنْ لَهَا أَشْرَاطٌ، فَقَالَ: {إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الأَرْحَامِ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَاذَا تَكْسِبُ غَدًا وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ} [لقمان: 34] .
قَالَ: صَدَقْتَ، وَانْصَرَفَ وَنَحْنُ نَرَاهُ، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عَلَيَّ بِالرَّجُلِ، فَقُمْنَا عَلَى أَثَرِهِ فَمَا نَدْرِي أَيْنَ تَوَجَّهَ، وَلَا رَأَيْنَا شَيْئًا، فَذَكَرْنَا ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: هَذَا جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ، أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ مَعَالِمَ دِينِكُمْ، وَاللَّهِ مَا أَتَانِي فِي صُورَةٍ إِلَّا وَأَنَا أَعْرِفُهُ فِيهَا، إِلَّا هَذِهِ الصُّورَةَ "
হাদীসের ব্যাখ্যা:
ঈমান ও ইসলামের অভিধানিক অর্থের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু শরীয়তের প্রচলিত দৃষ্টিকোণ থেকে ঈমান ও ইসলামের অর্থ প্রায় একই। একই অর্থ কখনো ইসলামের দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়ে থাকে, কখনো ঈমান-এর দ্বারা। কেননা দু'টি শব্দই পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। ঈমান ব্যতীত ইসলাম বিশুদ্ধ হয় না এবং ইসলাম ব্যতীত ঈমান পূর্ণাঙ্গ হয় না। তবে কোন কোন সময় শরীয়তে ঈমান ও ইসলামের মধ্যে পার্থক্য করা হয়ে থাকে। যেমন গোপন বিশ্বাসকে ঈমান ও বাহ্যিক আমলকে ইসলাম বলা হয়ে থাকে। এ হাদীসে ঈমান ও ইসলাম পৃথক পৃথক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন পবিত্র কুরআনের আয়াতে বলা হয়েছেঃ
* قالت الأعراب أمنا قل لم تؤمنوا ولكن قولوا أسلمنا
বেদুঈনরা বলে, আমরা ঈমান আনলাম। বল, ঈমান আন নি, বরং তোমরা বল, আমরা ইসলাম গ্রহণ করেছি। (৪৯:১৪ ) এই হাদীসটি ইসলামের ভিত্তি ও সারমর্ম। তাই এ হাদীসের নাম উম্মুল আহাদীস, উম্মুস
-সুন্নাহ্ অথবা উম্মুল-জাওয়ামি' বলা হয়ে থাকে। কোন কোন উলামায়ে কিরাম এর সামগ্রিকতা এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে, তিনটি বিষয়ের উপর ইসলামের ভিত্তিঃ (১) ফিকহ, যা বাহ্যিক আমলসমূহকে বলা হয়; (২) কালাম, যা গোপন বিষয় ও বিশ্বাসকে বলা হয় এবং (৩) তাসাউফ, যা ইখলাস ও ইহসানের নামে আখ্যায়িত করা হয়।
হযরত (সা) ইহসানের দু'টি স্তর বর্ণনা করেছেন। একটি হল উঁচু স্তর, যাতে ইবাদতকারীর আল্লাহর সাথে এরূপ সম্পর্ক সৃষ্টি হয় যেন তিনি আল্লাহকে দেখছেন। এটাকেই মুশাহাদা বলা হয়। দ্বিতীয় হল, নীচু স্তর যাতে ইবাদতকারীর এ ধারণা হয়ে থাকে যে, আল্লাহ্ যেন তাকে দেখছেন। এটাকে মুরাকাবা বলা হয়।
* قالت الأعراب أمنا قل لم تؤمنوا ولكن قولوا أسلمنا
বেদুঈনরা বলে, আমরা ঈমান আনলাম। বল, ঈমান আন নি, বরং তোমরা বল, আমরা ইসলাম গ্রহণ করেছি। (৪৯:১৪ ) এই হাদীসটি ইসলামের ভিত্তি ও সারমর্ম। তাই এ হাদীসের নাম উম্মুল আহাদীস, উম্মুস
-সুন্নাহ্ অথবা উম্মুল-জাওয়ামি' বলা হয়ে থাকে। কোন কোন উলামায়ে কিরাম এর সামগ্রিকতা এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে, তিনটি বিষয়ের উপর ইসলামের ভিত্তিঃ (১) ফিকহ, যা বাহ্যিক আমলসমূহকে বলা হয়; (২) কালাম, যা গোপন বিষয় ও বিশ্বাসকে বলা হয় এবং (৩) তাসাউফ, যা ইখলাস ও ইহসানের নামে আখ্যায়িত করা হয়।
হযরত (সা) ইহসানের দু'টি স্তর বর্ণনা করেছেন। একটি হল উঁচু স্তর, যাতে ইবাদতকারীর আল্লাহর সাথে এরূপ সম্পর্ক সৃষ্টি হয় যেন তিনি আল্লাহকে দেখছেন। এটাকেই মুশাহাদা বলা হয়। দ্বিতীয় হল, নীচু স্তর যাতে ইবাদতকারীর এ ধারণা হয়ে থাকে যে, আল্লাহ্ যেন তাকে দেখছেন। এটাকে মুরাকাবা বলা হয়।
