আশ-শামাঈলুল মুহাম্মাদিয়্যাহ- ইমাম তিরমিযী রহঃ

শামাইলে নববীর পরিচ্ছেদসমূহ

হাদীস নং: ৫৫
রাসূলূল্লাহ এর পোশাক-পরিচ্ছদ
৫৫।আলী ইবন হুজুর (রাহঃ)... উম্মে সালামা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর সবচেয়ে প্রিয় পোশাক ছিল ’কামীস’।
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ ، قَالَ : حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى ، عَنْ عَبْدِ الْمُؤْمِنِ بْنِ خَالِدٍ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ ، قَالَتْ : كَانَ أَحَبَّ الثِّيَابِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْقَمِيصُ.

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সর্বাপেক্ষা প্রিয় পোশাক বলা হয়েছে কামীস। কামীস মানে জামা। সেকালে সাধারণত কামীস হত সুতার। সুতার পোশাক বেশি আরামদায়ক হয় এবং তা ঘাম শুষে নেয়। তাই এ পোশাক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বেশি পসন্দ ছিল। তাছাড়া চাদর অপেক্ষা জামায় শরীরও ভালো ঢাকে। চাদর বার বার শরীর থেকে খসে পড়ে। কিন্তু জামা শরীরে লেগে থাকে। এভাবে লক্ষ করলে দেখা যায় চাদরের তুলনায় জামায় সুবিধা অনেক বেশি। সব ক্ষেত্রেই যা আসান ও সহজ, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা বেশি পসন্দ করতেন।

বোঝা গেল আরামদায়ক ও সুবিধাজনক পোশাক পরা দূষণীয় নয়। দূষণীয় হল বিলাসিতা করা। যে পোশাকে আরাম পাওয়া যায়, তা পরিধান করা বিলাসিতার মধ্যে পড়ে না। বরং ইসলাম নিজ সামর্থ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ পোশাক পরতে উৎসাহ দিয়েছে।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
إن الله يُحِبُّ أَنْ يَرَى أَثَر نِعْمَتِهِ عَلَى عَبْدِهِ
আল্লাহ নিজ বান্দার প্রতি তাঁর অনুগ্রহের প্রকাশ দেখতে পসন্দ করেন।
(জামে' তিরমিযী: ২৮১৯; মুসনাদে আহমাদ: ৮০৯২; মুসনাদে আবূ দাউদ তয়ালিসী: ২৩৭৫; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৪৬৬৮; হাকিম, আল মুস্তাদরাক: ৭১৮৮; বায়হাকী,শু'আবুল ঈমান: ৪২৫১)

أحب (বেশি পসন্দ, বেশি প্রিয়) শব্দটির উৎপত্তি حب থেকে। যার অর্থ ভালোবাসা, প্রিয় হওয়া, পসন্দনীয় হওয়া। এরই থেকে استحباب (ইস্তিহবাব) শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। এর অর্থ পসন্দ করা, পসন্দনীয় মনে করা, অগ্রাধিকার দেওয়া। এরই থেকে গঠিত হয়েছে মুস্তাহাব। বলা হয়, এ কাজটি মুস্তাহাব। তার মানে শরী'আতে এটা পসন্দনীয়।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. জামা পরা মুস্তাহাব।

খ. আরামদায়ক ও সুবিধাজনক পোশাক পরিধানে কোনও দোষ নেই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
শামাঈলে তিরমিযী - হাদীস নং ৫৫ | মুসলিম বাংলা