আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৬১- রোগীদের বর্ণনা
হাদীস নং: ৫২৪২
আন্তর্জাতিক নং: ৫৬৪৫
রোগের কাফফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহর বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৪২। ‘আব্দুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ আল্লাহ যে ব্যক্তির কল্যাণ কামনা করেন তাকে তিনি মুসীবতে লিপ্ত করেন।
بَابُ مَا جَاءَ فِي كَفَّارَةِ الْمَرَضِ وَقَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {مَنْ يَعْمَلْ سُوءًا يُجْزَ بِهِ}
5645 - حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي صَعْصَعَةَ، أَنَّهُ قَالَ: سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ يَسَارٍ أَبَا الحُبَابِ، يَقُولُ: سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُصِبْ مِنْهُ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে প্রত্যেক মু'মিনের জন্য অনেক বড় সুসংবাদ রয়েছে। কেননা মানুষের সাধারণত কোনও না কোনও দুঃখ-কষ্ট ও বালা-মসিবত থাকেই। থাকে শারীরিক রোগ- ব্যাধি ও মানসিক কষ্ট। দেখা দেয় জান-মালের ক্ষয়-ক্ষতি ও নানারকম পেরেশানি। এ হাদীছ জানাচ্ছে, এসবের ভেতর কোনও না কোনও কল্যাণ নিহিত থাকে। বান্দাকে সেইসব কল্যাণ দেওয়ার জন্যেই আল্লাহ তা'আলা এসব কষ্ট ও পেরেশানী দিয়ে থাকেন। সুতরাং কোন মু'মিনই আল্লাহ তা'আলার দিক থেকে কল্যাণকামনার বাইরে নয়। যে-কেউ সবর করবে, সেই আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণ লাভ করবে। কল্যাণ দুনিয়াবীও হতে পারে, পরকালীনও হতে পারে। দুনিয়াবী কল্যাণ তো এই যে, বিপদ- আপদ হলে মু'মিন আল্লাহ তা'আলার অভিমুখী হয়। ফলে আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে সে সাহায্য লাভ করে। আল্লাহ তা'আলা তার মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করেন, রোগ- ব্যাধি থেকে আরোগ্য দান করেন, তাকে নানামুখী অভিজ্ঞতা দান করেন, তার প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, ফলে মানুষ তার সাহায্যে এগিয়ে আসে, তার প্রতি সহমর্মী হয় কিংবা ফিরিশতা দিয়ে তাকে সাহায্য করেন ও তার প্রতি রহমত বর্ষণ করেন। মোটকথা ইহকালীন কোনও না কোনও লাভ তার হয়ই। আর পরকালীন লাভ তো স্পষ্ট, যেমন পেছনের হাদীছগুলো দ্বারা জানা গেছে যে, এর দ্বারা গুনাহ মাফ হয় ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছে—
«إن العبد إذا سبقت له من الله منزلة، لم يبلغها بعمله ابتلاه الله في جسده، أو في ماله، أو في ولده» قال أبو داود: زاد ابن نفيل: «ثم صبره على ذلك - ثم اتفقا - حتى يبلغه المنزلة التي سبقت له من الله تعالى»
‘আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে বান্দার জন্য যখন কোনও মর্যাদা স্থিরীকৃত থাকে আর বান্দা নিজ আমল দ্বারা সেখানে পৌঁছতে সক্ষম না হয়, তখন আল্লাহ তা'আলা তাকে তার দেহ, তার সন্তান বা তার মালের দ্বারা কোনও মসিবতে ফেলেন। তারপর তাতে তাকে ধৈর্যধারণের শক্তি দেন, যাতে সে সেই মর্যাদায় পৌঁছতে পারে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. বিপদ-আপদকে অমঙ্গলজনক মনে করতে নেই। কেননা তার ভেতর দুনিয়া ও আখিরাতের প্রভূত কল্যাণ নিহিত থাকে।
খ. বিপদ-আপদ দেখা দিলে সবরের পাশাপাশি এই ভাবনায় আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা চাই যে, এর মাধ্যমে তিনি তার কল্যাণ সাধন করতে চাচ্ছেন।
গ. অন্যের বিপদ দেখে তাকে অভিশপ্ত গণ্য না করে তাকে আল্লাহর প্রিয়পাত্র মনে করা চাই।
«إن العبد إذا سبقت له من الله منزلة، لم يبلغها بعمله ابتلاه الله في جسده، أو في ماله، أو في ولده» قال أبو داود: زاد ابن نفيل: «ثم صبره على ذلك - ثم اتفقا - حتى يبلغه المنزلة التي سبقت له من الله تعالى»
‘আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে বান্দার জন্য যখন কোনও মর্যাদা স্থিরীকৃত থাকে আর বান্দা নিজ আমল দ্বারা সেখানে পৌঁছতে সক্ষম না হয়, তখন আল্লাহ তা'আলা তাকে তার দেহ, তার সন্তান বা তার মালের দ্বারা কোনও মসিবতে ফেলেন। তারপর তাতে তাকে ধৈর্যধারণের শক্তি দেন, যাতে সে সেই মর্যাদায় পৌঁছতে পারে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. বিপদ-আপদকে অমঙ্গলজনক মনে করতে নেই। কেননা তার ভেতর দুনিয়া ও আখিরাতের প্রভূত কল্যাণ নিহিত থাকে।
খ. বিপদ-আপদ দেখা দিলে সবরের পাশাপাশি এই ভাবনায় আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা চাই যে, এর মাধ্যমে তিনি তার কল্যাণ সাধন করতে চাচ্ছেন।
গ. অন্যের বিপদ দেখে তাকে অভিশপ্ত গণ্য না করে তাকে আল্লাহর প্রিয়পাত্র মনে করা চাই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
