আল মুওয়াত্তা-ইমাম মুহাম্মাদ রহঃ
১২- শরীআতে যিনা ব্যভিচারের দন্ড বিধি
হাদীস নং: ৭০০
যেনার স্বীকারোক্তি।
৭০০। যায়েদ ইবনে আসলাম (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর যুগে নিজের বিরুদ্ধে যেনার স্বীকারোক্তি করে। তিনি একটি চাবুক নিয়ে ডাকলেন। একটি ভাঙ্গা চাবুক আনা হলো। তিনি বলেনঃ “এর চেয়ে ভালো চাবুক লও”। অতএব একটি নতুন চাবুক নিয়ে আসা হলো যা তখনো ব্যবহার করা হয়নি। তিনি বলেনঃ “এই দু'টির মাঝামাঝি ধরনের চাবুক নিয়ে এসো।” অতএব একটি চাবুক নিয়ে আসা হলো যা কোন ব্যক্তি ব্যবহার করেছে। তিনি তাকে মারার নির্দেশ দিলেন। অতএব তাকে চাবুক মারা হলো। অতঃপর তিনি বলেনঃ “হে জনগণ! তোমাদের জন্য সেই সময় এসে গেছে যে, তোমরা আল্লাহর নির্ধারিত হদ্দ (পাপ) থেকে বিরত থাকো। যে ব্যক্তি এ ধরনের পাপকাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে সে যেন তা আল্লাহর পর্দার অন্তরালে গোপন রাখে। আর যে ব্যক্তি নিজের অপকর্মের কথা আমাদের কাছে প্রকাশ করবে, আমরা তার উপর মহান আল্লাহর বিধান কার্যকর করবো”।
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ، أَنَّ رَجُلا اعْتَرَفَ عَلَى نَفْسِهِ بِالزِّنَاءِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِسَوْطٍ، فَأُتِيَ بِسَوْطٍ مَكْسُورٍ، فَقَالَ: «فَوْقَ هَذَا» ، فَأُتِيَ بِسَوْطٍ جَدِيدٍ لَمْ تُقْطَعْ ثَمَرَتُهُ، فَقَالَ: «بَيْنَ هَذَيْنِ» ، فَأُتِيَ بِسَوْطٍ قَدْ رُكِّبَ بِهِ فَلَانَ، «فَأَمَرَ بِهِ فَجُلِدَ» ، ثُمَّ قَالَ: «أَيُّهَا النَّاسُ، قَدْ آنَ لَكُمْ أَنْ تَنْتَهُوا عَنْ حُدُودِ اللَّهِ، فَمَنْ أَصَابَهُ مِنْ هَذِهِ الْقَاذُورَاتِ شَيْءٌ فَلْيَسْتَتِرْ بِسِتْرِ اللَّهِ، فَإِنَّهُ مَنْ يُبْدِ لَنَا صَفْحَتَهُ نُقِمْ عَلَيْهِ كِتَابَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন اجتنبوا هذه القاذورة التي نهى الله عنها، فمن ألم بشيء منها، فليستتر بستر الله 'আল্লাহ তাআলা যা নিষেধ করেছেন, সেই (পাপ) পঙ্কিলতা পরিহার কর। কেউ তাতে লিপ্ত হয়ে পড়লে সে যেন আল্লাহর পর্দায় নিজেকে আড়াল করে রাখে।[১]
আল্লাহর পর্দায় নিজেকে আড়াল করার অর্থ নিজের থেকে গুনাহের কথা প্রকাশ না করা। বান্দা যতক্ষণ সীমালঙ্ঘন না করে, ততক্ষণ আল্লাহ তাআলা তার দোষ গোপন রাখেন। তিনি সাত্তারুল উয়ুব বান্দার দোষত্রুটি গোপনকারী। তাঁর পক্ষ থেকে গোপন রাখাটাই তাঁর পর্দা। সুতরাং যে ব্যক্তি তাঁর সে পর্দার মর্যাদা রক্ষা করবে অর্থাৎ নিজের পক্ষ থেকে পাপ প্রকাশ করবে না, আল্লাহ তাআলাও তার প্রতি রহমতের আচরণ করবেন। তাঁর রহমত তাঁর ক্রোধের উপর প্রবল। তিনি দুনিয়ায় যার দোষ গোপন রাখবেন, আখেরাতে তাকে কিছুতেই লাঞ্ছিত করবেন না।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা বান্দার প্রতি আল্লাহর অসীম দয়ার পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি নিজ দয়ায় সহজে বান্দার দোষ প্রকাশ করেন না। নিজ দয়ার পর্দা দিয়ে তা ঢেকে রাখেন। তাই বান্দারও কর্তব্য নিজের থেকে তা প্রকাশ না করা।
খ. কিছুতেই যাতে গুনাহ না হয়ে যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। তারপরও যে গুনাহ গোপনে হয়ে যায়, তা প্রকাশ না করা।
গ. গোপনে গুনাহ করার পর নিজের পক্ষ থেকে তা প্রকাশ করা একরকম ধৃষ্টতা, আল্লাহর পর্দার প্রতি অশ্রদ্ধা ও একরকম নির্লজ্জতার বহিঃপ্রকাশ। এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত।
[১] মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক, হাদীছ নং ১৩৩৪২; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার, হাদীছ নং ৯১; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৭৬০১; আস্ সুনানুস্ সগীর, হাদীছ নং ২৭২৯; ফাতহুল বারী, ১০ খণ্ড, ৫৯৮ পৃষ্ঠা (হাকিম, আল-মুস্তাদরাক-এর বরাতে)
আল্লাহর পর্দায় নিজেকে আড়াল করার অর্থ নিজের থেকে গুনাহের কথা প্রকাশ না করা। বান্দা যতক্ষণ সীমালঙ্ঘন না করে, ততক্ষণ আল্লাহ তাআলা তার দোষ গোপন রাখেন। তিনি সাত্তারুল উয়ুব বান্দার দোষত্রুটি গোপনকারী। তাঁর পক্ষ থেকে গোপন রাখাটাই তাঁর পর্দা। সুতরাং যে ব্যক্তি তাঁর সে পর্দার মর্যাদা রক্ষা করবে অর্থাৎ নিজের পক্ষ থেকে পাপ প্রকাশ করবে না, আল্লাহ তাআলাও তার প্রতি রহমতের আচরণ করবেন। তাঁর রহমত তাঁর ক্রোধের উপর প্রবল। তিনি দুনিয়ায় যার দোষ গোপন রাখবেন, আখেরাতে তাকে কিছুতেই লাঞ্ছিত করবেন না।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা বান্দার প্রতি আল্লাহর অসীম দয়ার পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি নিজ দয়ায় সহজে বান্দার দোষ প্রকাশ করেন না। নিজ দয়ার পর্দা দিয়ে তা ঢেকে রাখেন। তাই বান্দারও কর্তব্য নিজের থেকে তা প্রকাশ না করা।
খ. কিছুতেই যাতে গুনাহ না হয়ে যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। তারপরও যে গুনাহ গোপনে হয়ে যায়, তা প্রকাশ না করা।
গ. গোপনে গুনাহ করার পর নিজের পক্ষ থেকে তা প্রকাশ করা একরকম ধৃষ্টতা, আল্লাহর পর্দার প্রতি অশ্রদ্ধা ও একরকম নির্লজ্জতার বহিঃপ্রকাশ। এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত।
[১] মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক, হাদীছ নং ১৩৩৪২; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার, হাদীছ নং ৯১; বায়হাকী, আস্ সুনানুল কুবরা, হাদীছ নং ১৭৬০১; আস্ সুনানুস্ সগীর, হাদীছ নং ২৭২৯; ফাতহুল বারী, ১০ খণ্ড, ৫৯৮ পৃষ্ঠা (হাকিম, আল-মুস্তাদরাক-এর বরাতে)
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
