আল মুওয়াত্তা-ইমাম মুহাম্মাদ রহঃ

২- নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৮৭
কেউ কাতার থেকে দূরে রুকূতে শামিল হলে এবং রুকূতে কিরাআত পাঠ করলে।
২৮৭। আলী ইবনে আবু তালিব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ কাচ্ছি ও মুআসফার (রেশমী কাপড় বিশেষ) এবং সোনার আংটি পরিধান করতে এবং রুকূতে কুরআনের আয়াত পড়তে নিষেধ করেছে।
ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) বলেন, আমরা এই নীতি গ্রহণ করেছি। রুকূ ও সিজদারত অবস্থায় কুরআনের আয়াত পাঠ করা মাকরূহ। ইমাম আবু হানীফারও এই মত ।
أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، أَخْبَرَنَا نَافِعٌ مَوْلَى ابْنِ عُمَرَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حُنَيْنٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حُنَيْنٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «نَهَى عَنْ لُبْسِ الْقَسِّيِّ، وَعَنْ لُبْسِ الْمُعَصْفَرِ، وَعَنْ تَخَتُّمِ الذَّهَبِ، وَعَنْ قِرَاءَةِ الْقُرْآنِ فِي الرُّكُوعِ» ، قَالَ مُحَمَّدٌ: وَبِهَذَا نَأْخُذُ، تُكْرَهُ الْقِرَاءَةُ فِي الرُّكُوعِ، وَالسُّجُودِ وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ، رَحِمَهُ اللَّهُ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

পুরুষের জন্য স্বর্ণালঙ্কার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা

হযরত বারা ইব্ন আযিব রাযি. বলেন- (নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে সোনার আংটি ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন)। এ নিষেধাজ্ঞা পুরুষের জন্য, নারীর জন্য নয়। পুরুষের জন্য কোনওরূপ স্বর্ণালংকার ব্যবহার করা জায়েয নয়, তার পরিমাণ যত অল্পই হোক না কেন। স্বর্ণালংকার ব্যবহার করা জায়েয কেবল নারীর জন্য, তাও যদি অহংকার ও প্রদর্শনের জন্য না হয়। অন্যান্য হাদীছ দ্বারা জানা যায়, পুরুষের জন্য জান্নাতে স্বর্ণালঙ্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কাজেই যেসকল পুরুষ দুনিয়ায় স্বর্ণালঙ্কার ব্যবহার করবে, জান্নাতে তারা তা পাবে না। এটা তাদের জন্য জান্নাত থেকে বঞ্চিত হওয়ার সতর্কবাণী। কাজেই জান্নাতকামী পুরুষদের কর্তব্য দুনিয়ায় স্বর্ণালঙ্কার ব্যবহার থেকে বিরত থাকা। তা থাকতে পারলে পুরস্কারস্বরূপ জান্নাতে তাদেরকে নানারকম স্বর্ণালঙ্কার ও সাজসজ্জায় ভূষিত করা হবে। যেমন কুরআন মাজীদে ইরশাদঃ- يُحَلَّوْنَ فِيهَا مِنْ أَسَاوِرَ مِنْ ذَهَبٍ وَيَلْبَسُونَ ثِيَابًا خُضْرًا مِنْ سُنْدُسٍ وَإِسْتَبْرَقٍ مُتَّكِئِينَ فِيهَا عَلَى الْأَرَائِكِ نِعْمَ الثَّوَابُ وَحَسُنَتْ مُرْتَفَقًا “তাদেরকে সেখানে স্বর্ণকঙ্কনে অলংকৃত করা হবে। আর তারা উচ্চ আসনে হেলান দেওয়া অবস্থায় মিহি ও পুরু রেশমী কাপড় পরিহিত থাকবে। কতইনা উৎকৃষ্ট প্রতিদান এবং কত সুন্দর বিশ্রামস্থল।
অপর এক আয়াতে ইরশাদঃ- يُحَلَّوْنَ فِيهَا مِنْ أَسَاوِرَ مِنْ ذَهَبٍ وَلُؤْلُؤًا وَلِبَاسُهُمْ فِيهَا حَرِيرٌ ‘সেখানে তাদেরকে সজ্জিত করা হবে সোনার কাঁকন ও মণি-মুক্তা দ্বারা। আর সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের।

রেশমী পোশাকের নিষেধাজ্ঞা

وعن القسي এবং (নিষেধ করেছেন) কাস্সী ব্যবহার করতে'। ইমাম নববী রহ. বলেন, এটা রেশম ও তুলার সুতায় বোনা একরকম কাপড়। এরূপ কাপড়ও ব্যবহার করা নাজায়েয, যদি রেশমের পরিমাণ সুতা অপেক্ষা বেশি হয়। 'কাস্স' মিসরের একটি জায়গার নাম। এ কাপড় বেশিরভাগ সেখানে তৈরি হত। তাই একে 'কাস্সী' বলা হয়। কেউ বলেছেন, قس (কাস্‌স) মূলত قز (কাযয)-এর পরিবর্তিত রূপ। কাযয মানে নিম্নমানের রেশম।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. কোনও মুসলিম পুরুষের স্বর্ণালঙ্কার পরা জায়েয নয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন