আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৫৬- পানাহার সংক্রান্ত অধ্যায়
হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৫৪১৮
২৮৫৯. ‘সারীদ’ প্রসঙ্গে
৫০২৪। মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) ......... আবু মুসা আশ‘আরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (ﷺ) বলেছেনঃ পুরুষদের মধ্যে অনেকেই কামালিয়াত অর্জন করেছে। কিন্তু স্ত্রীলোকদের মধ্যে ‘ইমরান তনয়া মারইয়াম এবং ফির‘আওন পত্নী আসিয়া ব্যতীত অন্য কেউ কামালিয়াত অর্জন করতে পারেনি। স্ত্রী লোকদের মধ্যে ‘আয়িশার মর্যাদাও তেমন, খাদ্যের মধ্যে সারীদের মর্যাদা যেমন।
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ কথা সুস্পষ্ট যে, আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম যাদের সংখ্যা কোন কোন রেওয়ায়াত অনুযায়ী ১ লাখেরও বেশী, তাঁদের সবাই পরাকাষ্ঠা গুণের শীর্ষে পৌঁছেছিলেন। তেমনিভাবে তাঁদের সহচর ও খলীফাগণ- যাদের সংখ্যা আল্লাহ্ই জানেন, তাঁরাও সবাই কামেল ও মানবীয় গুণাবলীতে শীর্ষে উন্নীত ছিলেন। কিন্তু আল্লাহ্ তা'আলার সৃষ্টি নারীজাতির মধ্য থেকে এ হাদীসে কেবল হযরত ঈসা (আ.)-এর মা মারয়াম বিনতে ইমরান ও ফেরআউনের স্ত্রী আসিয়া সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, কেবল তাঁরাই জ্ঞান গরিমার শীর্ষে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছিলেন। এ দু'জনের এ অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে কুরআনে কারীমের সূরা তাহরীমের শেষ দিকে তাঁদের ঈমানী কর্মকাণ্ডকে সমস্ত মু'মিনদের জন্য অনুসরণ যোগ্য ও দৃষ্টান্ত হিসাবে পেশ করা হয়েছে।
কোন কোন হাদীস ব্যাখ্যাতা লিখেছেন যে, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ বক্তব্যের সম্পর্ক কেবল পূর্ববর্তী উম্মতের সাথে। তাই এ হাদীস থেকে ফলাফল বের করা যাবে না যে, তাঁর উম্মতের কোন নারী পরাকাষ্ঠা গুণে উত্তীর্ণ হয়নি।
একটু আগেই হযরত খাদীজা (রাযিঃ)-এর মর্যাদা ও ফযীলত বর্ণনায় এ হাদীসে অতিক্রান্ত হয়েছে:خير نسائها مريم بنت عمران وخير نسائها خديجة بنت خويلد (অর্থাৎ, পৃথিবীর সমস্ত নারীর মধ্যে উত্তম ছিলেন মরিয়াম বিনতে ইমরান ও খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ।) স্বয়ং ব্যাখ্যাধীন এ হাদীসের শেষ দিকে বলা হয়েছে :وفضل عائشة على النساء كفضل الثريد على سائر الطعام যার অর্থ এই যে, আল্লাহ্ তা'আলা হযরত আয়েশা (রাযিঃ)-কে নারীকূলের উপর এমন শ্রেষ্ঠত্ব ও ফযীলত দান করেছেন- যেমন সকল খাদ্য সামগ্রীর উপর সারীদের ফযীলত । বাস্তব কথা এই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে স্বাদ ও উপকারিতায় সকল খাবার সামগ্রীর উপর সারীদের শ্রেষ্ঠত্ব ছিল। সারীদের ব্যাপারে অভিধান ও হাদীস গ্রন্থসমূহে যা লিখা হয়েছে, এর দ্বারা এর প্রকৃত স্বরূপ বুঝে আসে না। এ অধম সংকলকের হযরত মাওলানা হুসাইন আহমাদ মাদানীর দস্তরখানে সারীদ খাওয়ার বার বার সুযোগ হয়েছে। এ অধমের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতিও এটাই যে, এটা স্বাদে, হজমে ও উপকারিতায় আমাদের যুগের ঐসব খাবারের চেয়ে শ্রেষ্ঠ ও উত্তম, যেগুলোকে সাধারণত উত্তম মনে করা হয়।
কেউ কেউ এ হাদীসের ভিত্তিতে এ মত প্রকাশ করেছেন যে, হযরত আয়েশা (রাযিঃ) এর পৃথিবীর সমস্ত নারীজাতির উপর অর্থাৎ, পূর্ববর্তী উম্মত ও উম্মতে মুহাম্মাদীর নারীদের উপরও মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। কিন্তু এসব হাদীস নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করলে- যেগুলোর মধ্যে এ জাতীয় কোন মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে- যুক্তিযুক্ত ও বিশুদ্ধ মত এটাই বুঝা যায় যে, এ মর্যাদা সামগ্রিক ক্ষেত্রে নয়; বরং কোন বিশেষ দিক বিবেচনায় হয়ে থাকে। যেমন, হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাযিঃ)-এর শরীঅতের আহকামে শরীঅতের এলম, ফেকাহ জ্ঞান ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের কারণে সমস্ত নারীকূলের উপর মর্যাদা ও প্রাধান্য অর্জিত রয়েছে। এ দিকে হযরত খাদীজা (রাযিঃ)-এর ঐসব বৈশিষ্ট্যের কারণে- যা তাঁর গুণাবলীর আলোচনায় উল্লেখ করা হয়েছে, এ দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি সকল নারীর উপর মর্যাদা রাখেন। তেমনিভাবে হযরত ফাতেমা (রাযিঃ) হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদরের দুলালী হওয়ার সাথে তাঁর ঐসবগুণ গরিমার কারণে যেগুলো একটু সামনে গিয়ে পাঠকগণ পড়বেন, এর কারণে তাঁর যে অনন্য মর্যাদা অর্জিত রয়েছে, নিঃসন্দেহে এটা কেবল তারই অংশ ।
কোন কোন হাদীস ব্যাখ্যাতা লিখেছেন যে, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ বক্তব্যের সম্পর্ক কেবল পূর্ববর্তী উম্মতের সাথে। তাই এ হাদীস থেকে ফলাফল বের করা যাবে না যে, তাঁর উম্মতের কোন নারী পরাকাষ্ঠা গুণে উত্তীর্ণ হয়নি।
একটু আগেই হযরত খাদীজা (রাযিঃ)-এর মর্যাদা ও ফযীলত বর্ণনায় এ হাদীসে অতিক্রান্ত হয়েছে:خير نسائها مريم بنت عمران وخير نسائها خديجة بنت خويلد (অর্থাৎ, পৃথিবীর সমস্ত নারীর মধ্যে উত্তম ছিলেন মরিয়াম বিনতে ইমরান ও খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ।) স্বয়ং ব্যাখ্যাধীন এ হাদীসের শেষ দিকে বলা হয়েছে :وفضل عائشة على النساء كفضل الثريد على سائر الطعام যার অর্থ এই যে, আল্লাহ্ তা'আলা হযরত আয়েশা (রাযিঃ)-কে নারীকূলের উপর এমন শ্রেষ্ঠত্ব ও ফযীলত দান করেছেন- যেমন সকল খাদ্য সামগ্রীর উপর সারীদের ফযীলত । বাস্তব কথা এই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে স্বাদ ও উপকারিতায় সকল খাবার সামগ্রীর উপর সারীদের শ্রেষ্ঠত্ব ছিল। সারীদের ব্যাপারে অভিধান ও হাদীস গ্রন্থসমূহে যা লিখা হয়েছে, এর দ্বারা এর প্রকৃত স্বরূপ বুঝে আসে না। এ অধম সংকলকের হযরত মাওলানা হুসাইন আহমাদ মাদানীর দস্তরখানে সারীদ খাওয়ার বার বার সুযোগ হয়েছে। এ অধমের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতিও এটাই যে, এটা স্বাদে, হজমে ও উপকারিতায় আমাদের যুগের ঐসব খাবারের চেয়ে শ্রেষ্ঠ ও উত্তম, যেগুলোকে সাধারণত উত্তম মনে করা হয়।
কেউ কেউ এ হাদীসের ভিত্তিতে এ মত প্রকাশ করেছেন যে, হযরত আয়েশা (রাযিঃ) এর পৃথিবীর সমস্ত নারীজাতির উপর অর্থাৎ, পূর্ববর্তী উম্মত ও উম্মতে মুহাম্মাদীর নারীদের উপরও মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। কিন্তু এসব হাদীস নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করলে- যেগুলোর মধ্যে এ জাতীয় কোন মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে- যুক্তিযুক্ত ও বিশুদ্ধ মত এটাই বুঝা যায় যে, এ মর্যাদা সামগ্রিক ক্ষেত্রে নয়; বরং কোন বিশেষ দিক বিবেচনায় হয়ে থাকে। যেমন, হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাযিঃ)-এর শরীঅতের আহকামে শরীঅতের এলম, ফেকাহ জ্ঞান ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের কারণে সমস্ত নারীকূলের উপর মর্যাদা ও প্রাধান্য অর্জিত রয়েছে। এ দিকে হযরত খাদীজা (রাযিঃ)-এর ঐসব বৈশিষ্ট্যের কারণে- যা তাঁর গুণাবলীর আলোচনায় উল্লেখ করা হয়েছে, এ দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি সকল নারীর উপর মর্যাদা রাখেন। তেমনিভাবে হযরত ফাতেমা (রাযিঃ) হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদরের দুলালী হওয়ার সাথে তাঁর ঐসবগুণ গরিমার কারণে যেগুলো একটু সামনে গিয়ে পাঠকগণ পড়বেন, এর কারণে তাঁর যে অনন্য মর্যাদা অর্জিত রয়েছে, নিঃসন্দেহে এটা কেবল তারই অংশ ।


বর্ণনাকারী: