শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
১৮. আদালত-বিচার-সাক্ষ্য-শুনানির বিধান
হাদীস নং: ৬১৩৭
কোন ব্যক্তির নিকট অন্য কোন ব্যক্তির জন্য সাক্ষ্য থাকলে তাকে জানানাে কি তার ওপর ওয়াজিব; এবং স্বেচ্ছায় সাক্ষ্য প্রদান করলে হাকিম কি তা গ্রহণ করবেন ।
৬১৩৭। ইব্ন আবু দাউদ ..... বিলাল ইবন সা'দ তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, একবার আমরা জানতে চাইলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার কোন্ উম্মত সর্বাধিক উত্তম? তিনি বললেন আমি ও আমার ক্বারনের উম্মত । রাবী বলেন, আমরা বললাম, তারপর কারা? তিনি বললেন, তারপর দ্বিতীয় ক্বারনের লােক। রাবী বলেন আমরা জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কারা? তিনি বললেন, তৃতীয় ক্বারনের লােক। তারপর এমন সব লােকের আগমন ঘটবে যারা সাক্ষ্য দেবে, অথচ তাদের থেকে সাক্ষ্য চাওয়া হবে না। তারা হলফ করবে, অথচ তাদেরকে হলফ করতে বলা হবে না। তারা আমানতের মাল রাখবে কিন্তু তারা তা আদায় করবে না।
আবু জা’ফর (রাহঃ) বলেন, এ হাদীসের ব্যাখ্যায়ও আমাদের ঐ একই বক্তব্য যা আমরা পূর্বে হাদীসের ব্যাখ্যায় পেশ করেছি। তারা এ হাদীস দ্বারাও দলীল পেশ করেন :
আবু জা’ফর (রাহঃ) বলেন, এ হাদীসের ব্যাখ্যায়ও আমাদের ঐ একই বক্তব্য যা আমরা পূর্বে হাদীসের ব্যাখ্যায় পেশ করেছি। তারা এ হাদীস দ্বারাও দলীল পেশ করেন :
6137 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا أَبُو مُسْهِرٍ، قَالَ: ثنا صَدَقَةُ بْنُ خَالِدٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ شُرَحْبِيلَ، عَنْ بِلَالِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللهِ أَيُّ أُمَّتُكَ خَيْرٌ؟ قَالَ: «أَنَا وَقَرْنِي» . قَالَ: قُلْنَا ثُمَّ مَاذَا؟ قَالَ: «ثُمَّ الْقَرْنُ الثَّانِي» قَالَ: قُلْنَا ثُمَّ مَاذَا؟ قَالَ: «الْقَرْنُ الثَّالِثُ» . قَالَ: قُلْنَا: ثُمَّ مَاذَا؟ قَالَ: «ثُمَّ يَأْتِي قَوْمٌ يَشْهَدُونَ وَلَا يُسْتَشْهَدُونَ وَيَحْلِفُونَ وَلَا يُسْتَحْلَفُونَ وَيُؤْتَمَنُونَ وَلَا يُؤَدُّونَ» قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَالْكَلَامُ فِي تَأْوِيلِ هَذَا هُوَ الْكَلَامُ الَّذِي ذَكَرْنَا فِي تَأْوِيلِ الْآثَارِ الَّتِي فِي الْفَصْلِ الَّذِي قَبْلَ هَذَا. وَاحْتَجُّوا فِي ذَلِكَ أَيْضًا
হাদীসের ব্যাখ্যা:
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- (সর্বোত্তম হল আমার যুগের মানুষ)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগ বলতে তাঁর নবুওয়াতপ্রাপ্তি থেকে যে তারিখে সর্বশেষ সাহাবী ইন্তিকাল করেছেন, সেই পর্যন্ত সময়কালকে বোঝায়। সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে সবশেষে ইন্তিকাল করেছেন হযরত আবুত তুফায়ল আমের ইবন ওয়াছিলা রাযি। তিনি ১১০ হিজরী সনে ইন্তিকাল করেন। তারপর ইরশাদ করেন-
ثم الذين يلونهم (তারপর যারা তাদের পরবর্তী যুগে আসবে)। অর্থাৎ তাবি'ঈদের যুগ। যারা ঈমানের সঙ্গে কোনও সাহাবীকে দেখেছেন। এই যুগ আনুমানিক হিজরী ১৫০ সন পর্যন্ত। ইমাম আবূ হানীফা রহ. হিজরী ১৫০ সনে ইন্তিকাল করেছেন। বিশুদ্ধমত অনুযায়ী তিনি একজন তাবিঈ ছিলেন।
ثم الذين يلونهم (তারপর যারা তাদের পরবর্তী যুগে আসবে)। এ যুগ ছিল আনুমানিক ২২০ সন পর্যন্ত। এটা তাবে-তাবি'ঈনের যুগ। যারা তাবি‘ঈদের দেখেছেন। এর পর থেকেই দীনের মধ্যে নানা ফিতনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
প্রকাশ থাকে যে, কোনও একটি যুগের মানুষকে শ্রেষ্ঠ বলার অর্থ এ নয় যে, সে যুগের প্রত্যেকেই পরবর্তী যুগের সকলের চেয়ে উৎকৃষ্ট। এটা বলা হয়েছে সাধারণ অবস্থার বিচারে। সুতরাং এর মধ্যে ব্যতিক্রম পাওয়া যেতেই পারে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীদের যুগের মানুষকে শ্রেষ্ঠতম মানুষ বলা হয়েছে। তার মানে এ নয় যে, সাহাবীগণ আগের নবী-রাসূলগণের চেয়েও শ্রেষ্ঠ ছিলেন। হাঁ, তাঁরা আগের যুগের সাধারণ মুমিনদের চেয়ে অবশ্যই উৎকৃষ্ট ছিলেন। এমনিভাবে তাবে-তাবি'ঈদের মধ্যে অনেকে এমন ছিলেন, যারা ঈমান, ইলম, আমল ও আখলাকের দিক থেকে তাবিঈদের যুগের অনেকের তুলনায় অগ্রগামী ছিলেন। তবে সামগ্রিক দৃষ্টিতে অবশ্যই তাবি'ঈগণ তাবে-তাবি'ঈদের তুলনায় উত্তম ছিলেন। এমনিভাবে আরও পরে জন্ম নেওয়া এমন অনেকেই আছেন, যারা ইবাদত-বন্দেগী, দীনের খেদমত, জিহাদ প্রভৃতি দিক থেকে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন। বহু পরের হওয়া সত্ত্বেও তারা পূর্ববর্তী অনেককে টপকে গিয়েছেন। এটা এ যুগেও সম্ভব। তাই পরবর্তীকালীন হওয়ায় হতাশার কোনও কারণ নেই। নিজ ঈমান ও আমলে যত্নবান থাকলে পূর্ববর্তীকালীন আল্লাহওয়ালাদের কাতারে শামিল হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকেও তাওফীক দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. প্রথম তিন কালের মুসলিমগণ শ্রেষ্ঠ। তাদের মর্যাদা স্বীকার করতে হবে। তাদের ভালো ভালো কাজকে আদর্শরূপে গ্রহণ করতে হবে। তাদের দ্বারা ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে গেলে তার সমালোচনা হতে বিরত থাকতে হবে।
ثم الذين يلونهم (তারপর যারা তাদের পরবর্তী যুগে আসবে)। অর্থাৎ তাবি'ঈদের যুগ। যারা ঈমানের সঙ্গে কোনও সাহাবীকে দেখেছেন। এই যুগ আনুমানিক হিজরী ১৫০ সন পর্যন্ত। ইমাম আবূ হানীফা রহ. হিজরী ১৫০ সনে ইন্তিকাল করেছেন। বিশুদ্ধমত অনুযায়ী তিনি একজন তাবিঈ ছিলেন।
ثم الذين يلونهم (তারপর যারা তাদের পরবর্তী যুগে আসবে)। এ যুগ ছিল আনুমানিক ২২০ সন পর্যন্ত। এটা তাবে-তাবি'ঈনের যুগ। যারা তাবি‘ঈদের দেখেছেন। এর পর থেকেই দীনের মধ্যে নানা ফিতনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
প্রকাশ থাকে যে, কোনও একটি যুগের মানুষকে শ্রেষ্ঠ বলার অর্থ এ নয় যে, সে যুগের প্রত্যেকেই পরবর্তী যুগের সকলের চেয়ে উৎকৃষ্ট। এটা বলা হয়েছে সাধারণ অবস্থার বিচারে। সুতরাং এর মধ্যে ব্যতিক্রম পাওয়া যেতেই পারে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীদের যুগের মানুষকে শ্রেষ্ঠতম মানুষ বলা হয়েছে। তার মানে এ নয় যে, সাহাবীগণ আগের নবী-রাসূলগণের চেয়েও শ্রেষ্ঠ ছিলেন। হাঁ, তাঁরা আগের যুগের সাধারণ মুমিনদের চেয়ে অবশ্যই উৎকৃষ্ট ছিলেন। এমনিভাবে তাবে-তাবি'ঈদের মধ্যে অনেকে এমন ছিলেন, যারা ঈমান, ইলম, আমল ও আখলাকের দিক থেকে তাবিঈদের যুগের অনেকের তুলনায় অগ্রগামী ছিলেন। তবে সামগ্রিক দৃষ্টিতে অবশ্যই তাবি'ঈগণ তাবে-তাবি'ঈদের তুলনায় উত্তম ছিলেন। এমনিভাবে আরও পরে জন্ম নেওয়া এমন অনেকেই আছেন, যারা ইবাদত-বন্দেগী, দীনের খেদমত, জিহাদ প্রভৃতি দিক থেকে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন। বহু পরের হওয়া সত্ত্বেও তারা পূর্ববর্তী অনেককে টপকে গিয়েছেন। এটা এ যুগেও সম্ভব। তাই পরবর্তীকালীন হওয়ায় হতাশার কোনও কারণ নেই। নিজ ঈমান ও আমলে যত্নবান থাকলে পূর্ববর্তীকালীন আল্লাহওয়ালাদের কাতারে শামিল হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকেও তাওফীক দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. প্রথম তিন কালের মুসলিমগণ শ্রেষ্ঠ। তাদের মর্যাদা স্বীকার করতে হবে। তাদের ভালো ভালো কাজকে আদর্শরূপে গ্রহণ করতে হবে। তাদের দ্বারা ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে গেলে তার সমালোচনা হতে বিরত থাকতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
