শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

১১. শরীআত বিধিত দন্ডের অধ্যায়

হাদীস নং: ৪৯৮৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪৯৮৬
১০. কোন ব্যক্তি অলংকার ধার নেয়ার পর যদি ফেরত না দেয় তাহলে কি তার হাত কাটা যাবে?
৪৯৮৫-৮৬। ইউনুস (রাহঃ) ….. আয়েশা সিদ্দীকা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের সময় রাসূলুল্লাহ্(ﷺ)-এর যুগে একটি মহিলা চুরি করেছিল। রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) তার হাত কাটার জন্যে নির্দেশ প্রদান করেন। তখন ঐ মহিলা সম্পর্কে উসামা ইব্‌ন যায়দ (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর সাথে কথা বলেন। তাতে রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) -এর চেহারা মুবারক মলিন হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) বলেন, তােমরা কি মহান আল্লাহর শাস্তিসমূহ থেকে কোন একটি শাস্তি বা দণ্ডকে অকার্যকর করার জন্যে সুপারিশ করছ? উসামা (রাযিঃ) তখন রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) -কে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল(ﷺ)! আমাকে ক্ষমা করে দিন। অতঃপর যখন রাতের খাবারের সময় হল রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) দণ্ডায়মান হলেন, আল্লাহ্ তা'আলার যথাযথ প্রশংসা করলেন এবং বললেন, “অতঃপর তােমাদের জেনে রাখা প্রয়ােজন যে, তােমাদের পূর্বে যে সব লােকজন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, তাদের মধ্যে যখন কোন বংশমর্যাদার লােক চুরি করত তখন তারা তাকে শাস্তি দিতনা, বরং তাকে ছেড়ে দিত। আর যদি তাদের মধ্যে কোন দুর্বল ব্যক্তি চুরি করত তার প্রতি তারা শাস্তি প্রয়ােগ করত । যার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ করে বলছি, যদি ফাতিমা বিনত মুহাম্মাদ (রাযিঃ) চুরি করত তাহলে আমি অবশ্যই তার হাত কেটে দিতাম।” অতঃপর তিনি ঐ মহিলাটি সম্বন্ধে নির্দেশ জারী করেন, যে চুরি করেছিল। তারপর তার হাত কাটা হল ।


ইউনুস (রাহঃ) ..... আয়েশা সিদ্দীকা (রাযিঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, মাখযূমী মহিলার বিষয়টি কুরাইশদেরকে উদ্বিগ্ন করল। মহিলাটি চুরি করেছিল, তখন তারা বলাবলি করতে লাগল, কে সাহস করে রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) -এর সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে পারবে? অতঃপর তারাই আবার বলল, উসামা (রাযিঃ) ব্যতীত অন্য কেউ রাসূলুল্লাহ্(ﷺ)-এর কাছে কথা বলতে সাহস করবেনা। এরপর বর্ণনাকারী অনুরূপ বর্ণনা পেশ করেন।

এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, অস্বীকারকারী ধার গ্রহীতার বিরুদ্ধে হাত কাটার হুকুম রয়েছে। তবে রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) থেকে এমন কারণ বর্ণনা করা হয়েছে ,যার দরুন অর্থ আত্মসাতের বেলায় হাত কাটা রহিত হয়ে যায়ঃ
4985 - حَدَّثَنَا يُونُسُ قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي يُونُسُ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ أَخْبَرَهُ عَنْ عَائِشَةَ " أَنَّ امْرَأَةً سَرَقَتْ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَمَنَ الْفَتْحِ فَأَمَرَ بِهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ تُقْطَعَ. فَكَلَّمَهُ فِيهَا أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ فَتَلَوَّنَ أَيْ تَغَيَّرَ مِنَ الْغَضَبِ وَجْهُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ أَتَشْفَعُ فِي حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ؟ . فَقَالَ لَهُ أُسَامَةُ: اسْتَغْفِرْ لِي يَا رَسُولَ اللهِ. فَلَمَّا كَانَ الْعَشِيُّ قَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَثْنَى عَلَى اللهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّمَا أَهْلَكَ النَّاسَ مِنْ قَبْلِكُمْ أَنَّهُمْ كَانُوا إِذَا سَرَقَ فِيهِمِ الشَّرِيفُ تَرَكُوهُ وَإِذَا سَرَقَ فِيهِمِ الضَّعِيفُ أَقَامُوا عَلَيْهِ الْحَدَّ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ مُحَمَّدٍ سَرَقَتْ لَقَطَعْتُ يَدَهَا ثُمَّ أَمَرَ بِتِلْكَ الْمَرْأَةِ الَّتِي سَرَقَتْ فَقُطِعَتْ يَدُهَا "

4986 -. حَدَّثَنَا يُونُسُ , قَالَ: حَدَّثَنَا شُعَيْبُ بْنُ اللَّيْثِ , عَنْ أَبِيهِ , عَنِ ابْنِ شِهَابٍ , عَنْ عُرْوَةَ , عَنْ عَائِشَةَ , أَنَّ قُرَيْشًا , أَهَمَّهُمْ شَأْنُ الْمَرْأَةِ الْمَخْزُومِيَّةِ الَّتِي سَرَقَتْ فَقَالُوا: مَنْ يَجْتَرِئُ يُكَلِّمُ فِيهَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقَالُوا: وَمَنْ يَجْتَرِئُ عَلَيْهِ إِلَّا أُسَامَةُ؟ ثُمَّ ذَكَرَ مِثْلَ مَعْنَاهُ فَثَبَتَ بِهَذَا الْحَدِيثِ أَنَّ الْقَطْعَ كَانَ بِخِلَافِ الْمُسْتَعَارِ الْمَجْحُودِ. وَقَدْ رُوِيَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا يَدْفَعُ الْقَطْعَ فِي الْخِيَانَةِ مَا قَدْ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

মাখযূম গোত্র কুরায়শ বংশের একটি শাখা। এটি আরবের এক অভিজাত গোত্র হিসেবে গণ্য। এ গোত্রের এক মহিলার চুরি করার অভ্যাস ছিল। তার নাম ফাতিমা বিনত আবুল আসাদ। কেউ বলেছেন তার নাম উম্মু আমর। সে মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন জিনিস ধার করত। পরে যখন তার কাছ থেকে সেটি ফেরত চাওয়া হত, তখন ধার নেওয়ার কথা সাফ অস্বীকার করত। বলে দিত, আমি তো তোমার কাছ থেকে কিছুই নিইনি! এ মহিলাটি মক্কাবিজয়ের দিন চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। তাকে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নিয়ে আসা হল। খোঁজখবর নিয়ে দেখা গেল সে ঠিকই চুরি করেছে। কাজেই তাকে চুরির দায়ে অপরাধী সাব্যস্ত করা হল। হযরত বিলাল রাযি.-কে হুকুম দেওয়া হল তিনি যেন তার হাত কেটে দেন।

অভিজাত বংশীয় এক নারীর হাত কেটে দেওয়া হবে? কুরায়শ গোত্রের নেতৃবর্গ এ নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেল। এ শাস্তি থেকে তাকে বাঁচানো দরকার। কিন্তু বাঁচানোর উপায় কী? কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তার সম্পর্কে সুপারিশ করবে? সকলের জানা আছে, এ জাতীয় বিষয়ে তিনি কিছুতেই ছাড় দেন না। কাজেই কারও সুপারিশ করার হিম্মত হচ্ছিল না। শেষে হযরত উসামা ইবন যায়দ রাযি.-কে ধরা হল। তিনি ছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয়পাত্র। তাঁর পিতা যায়দ রাযি.-ও তাঁর প্রিয়পাত্র ছিলেন। প্রথমে তিনি গোলাম ছিলেন। হযরত খাদীজা রাযি. তাঁকে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেবায় উৎসর্গ করেন। তিনি তাঁকে গোলাম রাখেননি। আযাদ করে পুত্র বানিয়ে নেন। পরে অবশ্য এরূপ পুত্র বানানোর প্রথা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। যাহোক হযরত যায়দ রাযি. যেমন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অত্যন্ত প্রিয়পাত্র ছিলেন, তেমনি তাঁর পুত্র উসামা রাযি.-কেও তিনি খুবই আদর-স্নেহ করতেন। সুপারিশের জন্য এই উসামা রাযি.-কেই ধরা হল। কিন্তু যেই না তিনি তাঁর কাছে সুপারিশ করলেন, অমনি তিনি তাঁর প্রতি কঠিন অসন্তোষ প্রকাশ করলেন। বললেন-
أَتَشْفَعُ فِي حَدّ مِنْ حُدُوْدِ اللَّهِ تَعَالٰى؟! 'তুমি কি আল্লাহ তা'আলার নির্ধারিত হদ্দ (শর'ঈ শাস্তি)-সমূহের মধ্যকার এক হদ্দ সম্পর্কে সুপারিশ করছ? হদ্দ বলা হয় শরী'আতের নির্ধারিত শাস্তিকে। এর বহুবচন হুদূদ। যেমন চুরি করা, ব্যভিচার করা, অন্যের প্রতি ব্যভিচারের অপবাদ দেওয়া ও মদপান করা- এর প্রত্যেকটি অপরাধের বিপরীতেই শরী'আতের নির্ধারিত শাস্তি আছে। বিচারকের সমীপে কারও বিরুদ্ধে এরূপ কোনও অপরাধ সাব্যস্ত হয়ে গেলে তা ক্ষমার অযোগ্য হয়ে যায়। বিচারকসহ কোনও মানুষই তা ক্ষমা করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে শরী'আতের নির্ধারিত শাস্তি আরোপ করা ফরয। যেহেতু এটা ক্ষমার অযোগ্য, তাই এ সম্পর্কে সুপারিশও করা যায় না। এ কারণেই হযরত উসামা রাযি. সুপারিশ করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই বলে তাঁকে তিরস্কার করেন যে, তুমি কি আল্লাহ তা'আলার নির্ধারিত হদ্দ (শর'ঈ শান্তি)-সমূহের মধ্যকার এক হদ্দ সম্পর্কে সুপারিশ করছ?! তারপর তিনি এ বিষয়ে সকলকে সচেতন করার লক্ষ্যে একটি বক্তৃতা দেন। সে বক্তৃতায় তিনি ইরশাদ করেন- إِنَّمَا أَهْلَكَ مَنْ قَبْلَكُمْ أَنَّهُمْ كَانُوا إِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الشَّرِيفُ تَرَكُوهُ، وَإِذَا سَرَقَ فِيهِمُ في الضَّعِيفُ أَقَامُوا عَلَيْهِ الْحَدَّ (তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে তো কেবল এ বিষয়টিই ধ্বংস করেছে যে, তাদের মধ্যকার কোনও অভিজাত ব্যক্তি চুরি করলে তারা তাকে ছেড়ে দিত এবং কোনও দুর্বল ব্যক্তি চুরি করলে তার উপর হদ্দ কার্যকর করত)। এটা এক নগ্ন বৈষম্য। মানুষ হিসেবে সকলে সমান। সকলেরই জান-মাল ও ইজ্জত-সম্মানের সমান মূল্য। কাজেই কারও জান, মাল ও ইজ্জতের উপর আঘাত করা হলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে সে আঘাতকারী নারী হোক বা পুরুষ, মুসলিম হোক বা অমুসলিম, অভিজাত হোক বা সাধারণ, তাতে কোনও পার্থক্য হবে না। এমনিভাবে কার জান, মাল ও ইজ্জতের উপর আঘাত করা হয়েছে তাও বিবেচ্য নয়। বিবেচ্য কেবল কাজটি। কাজটি যদি অপরাধ বলে সাব্যস্ত হয়ে যায়, তবে তার ন্যায়বিচার হবেই। ব্যক্তিভেদে তাতে কোনও বৈষম্য করা হবে না। তাতে বৈষম্য করা হলে ব্যাপক বিপর্যয়ের পথ খুলে যায়। পরিণামে তা একটা জাতির ধ্বংসের কারণ হয়ে যায়। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাচ্ছেন যে, অতীতকালে অনেক জাতি বিচারের এ বৈষম্যের কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে যারা দুর্বল ছিল, তারা চুরি করলে তো শাস্তি পেত। কিন্তু যারা অভিজাত ছিল, তারা চুরি করলে তাদের আভিজাত্যবিবেচনায় ছাড় দেওয়া হত। ইসলাম ন্যায় ও ইনসাফের দীন। এ দীনে এরূপ বৈষম্যের কোনও অবকাশ নেই। কিন্তু আফসোস! আজ এ দীনের দাবিদারেরা ইসলামের ন্যায় ও ইনসাফসম্মত বিচারব্যবস্থা থেকে অনেক দূরে রয়েছে। তারা অন্যান্য মতাদর্শের বিচারব্যবস্থা গ্রহণ করে নিয়েছে, যা কিনা নানা বৈষম্য ও অবিচারে পূর্ণ। ফলে আজ মুসলিমসমাজ নানা অনাচার ও অপরাধকর্মে আচ্ছন্ন। দিন দিন অন্ধকার বাড়ছেই। এর থেকে মুক্তির উপায় একটিই- ইসলামের ইনসাফসম্মত বিচারব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিচার-নিষ্পত্তিতে ইনসাফ রক্ষার কী কঠোর গুরুত্ব আরোপ করতেন, তা তাঁর পরবর্তী উক্তি দ্বারা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি বলেন-
وَأَيْمُ الله ، لَوْ أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ مُحَمَّدٍ سَرَقَتْ لَقَطَعْتُ يدَهَا (আল্লাহর কসম! যদি মুহাম্মাদের কন্যা ফাতিমাও চুরি করত, আমি অবশ্যই তার হাত কেটে দিতাম)। বলাবাহুল্য, হযরত ফাতিমা রাযি. চুরি করবেন, এর প্রশ্নই আসে না। আল্লাহ তা'আলা তাঁকে সর্বপ্রকারে পূতঃপবিত্র বানিয়েছিলেন। আসলে যে মহিলা চুরি করেছিল তার নামও ছিল ফাতিমা। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ কন্যা ফাতিমা রাযি.-এর উদাহরণ দিয়ে বোঝাচ্ছিলেন যে, বিচারে কোনও পক্ষপাতিত্ব নেই। মাখযুম গোত্রের ফাতিমা অভিজাত নারী হওয়ায় তোমরা তার শাস্তি মওকুফের কথা বলছ! তা মওকুফ করার তো প্রশ্নই আসে না। মাখযুম গোত্রের ফাতিমা কেন, আমার মেয়ে ফাতিমাও যদি চুরি করত, তবে তার শাস্তিও তো আমি মওকুফ করতাম না। বোঝানো উদ্দেশ্য, এ ক্ষেত্রে সাধারণ ও অভিজাতের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই।

তারপর রায় কার্যকর করা হল। ফাতিমা মাখযূমিয়ার হাত কেটে দেওয়া হল। কোনও কোনও বর্ণনায় আছে, হাত কাটার পর সেই ফাতিমা নবী কারীম সাল্লাল্লায় আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার তাওবা কবুল হবে কি? তিনি বললেন, অবশ্যই কবুল হবে। তারপর তিনি তাওবা করে নিজেকে সংশোধন করে ফেলেন। পরে তাঁর বিবাহ হয়। তিনি ঘরসংসার করতেন। মাঝেমাঝে উন্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর কাছে আসতেন। তাঁর কোনওকিছুর প্রয়োজন হলে তা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানানো হত। তিনি তাঁর প্রতি বিশেষ মমতা দেখাতেন এবং তাঁকে সাহায্য-সহযোগিতা করতেন।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. ইসলামী বিচারব্যবস্থায় সাধারণ-বিশেষের কোনও বৈষম্য নেই।

খ. যে অপরাধের কারণে সুনির্দিষ্ট শাস্তি (হদ্দ)-এর ব্যবস্থা আছে, কারও ক্ষেত্রে আদালতে তা সাব্যস্ত হয়ে গেলে তার শাস্তি মওকুফ করার কোনও অবকাশ নেই।

গ. যে শাস্তি মওকুফের কোনও অবকাশ নেই, তাতে সুপারিশ করা জায়েয নয়।

ঘ. কারও দ্বারা আপত্তিকর কোনও কাজ হলে তার সঙ্গে রাগ করা জায়েয।

ঙ. যে ব্যক্তি আপত্তিকর কোনও কাজ করে, তাকে অবশ্যই সতর্ক করা উচিত।

চ. অতীত জাতিসমূহের পরিণতি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ৪৯৮৫ | মুসলিম বাংলা