শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

৪. যাকাতের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩০২৮
আন্তর্জাতিক নং: ৩০২৯
নারীর জন্য তার সম্পদের যাকাত আপন স্বামীকে দেয়া বৈধ কি-না?
৩০২৮-২৯। ফাহাদ (রাহঃ) ….. আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, একবার রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ফজরের সালাত আদায় শেষে মসজিদে (যেদিকে মহিলারা ছিলেন) মহিলাদের নিকটে আসলেন এবং বললেন, “হে মহিলা সমাজ, আমি তােমাদের অপেক্ষা কাউকে জ্ঞান ও দ্বীনের দিক দিয়ে অসম্পূর্ণ দেখিনি। আমি নিশ্চয় দেখেছি যে, কিয়ামতের দিন তােমরা অধিক সংখ্যায় জাহান্নামী হবে। সুতরাং যথাসম্ভব তােমরা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন কর।” (তখন) মহিলাদের মধ্যে আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ (রাযিঃ)-এর স্ত্রী ছিলেন। তিনি আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ (রাযিঃ)-এর কাছে ফিরে গিয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে যা শুনেছেন তা তাঁকে বললেন এবং (সাদাকা দেয়ার জন্য) নিজ অলংকার খুলে নিয়ে যেতে লাগলেন। এতে ইব্‌ন মাসউদ (রাযিঃ) বললেন, এ অলংকার কোথায় নিয়ে যাচ্ছ ? তিনি বললেন, এর দ্বারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল-এর নৈকট্য অর্জন করব, সম্ভবত আল্লাহ তা'আলা আমাকে জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত করবেন না। তিনি বললেন, এটি নিয়ে এসাে, তােমার জন্য আফসােস! এ
দিয়ে আমার এবং আমার সন্তানদের জন্য সাদাকা কর। তিনি বললেন, না, আল্লাহর কসম, যতক্ষণ না আমি এ বিষয়ে (জিজ্ঞাসার জন্য) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট যাই। তারপর তিনি গেলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) নিকট অনুমতি চাইলেন। (উপস্থিত) লােকেরা বললেন, 'ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ) ! যায়নাব (রাযিঃ) অনুমতি প্রার্থনা করছে। তিনি বললেন, সে কোন্ যায়নাব ? তারা বললেন, আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ (রাযিঃ)-এর স্ত্রী। তারপর তিনি নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট গেলেন এবং বললেন, আমি আপনার বক্তব্য শুনেছি, তারপর ইব্‌ন মাসউদ
(রাযিঃ)-এর নিকট ফিরে গিয়ে তার নিকট তা বর্ণনা করেছি। আমি আমার অলংকার নিয়ে যেতে চেয়েছি, যেন এর দ্বারা আল্লাহ্ তা'য়ালা ও আপনার নৈকট্য অর্জন করতে পারি এ আশায় যে, আল্লাহ্ তা'আলা আমাকে জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত না করেন। ইব্‌ন মাসউদ (রাযিঃ) বললেন তুমি আমার এবং আমার সন্তানের জন্য তা সাদাকা কর। আমি এর উপযুক্ত স্থান। আমি তাকে বললাম, যতক্ষণ না আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আর কে জিজ্ঞাসা করি (তা করব না)। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তুমি তাঁর ও তার সন্তানের উপর তা সাদাকা কর- যেহেতু তাঁরা এর জন্য উপযুক্ত খাত হিসাবে বিবেচিত।

হুসাইন ইব্‌নুল হাকাম আল-হিবাবী (রাযিঃ)..... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।

আবু জা'ফর (তাহাবী র) বলেনঃ এই হাদীসে আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তার উক্তি 'সাদকা কর’ এর উদ্দেশ্য ছিল, নফল সাদাকা গুনাহের কাফ্ফারাস্বরূপ। তাঁর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে,তিনি বলেন, যায়নাব (রাযিঃ) তার অলংকার নিয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এটি গ্রহণ করুন, এর দ্বারা আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নৈকট্য অর্জন করব। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁকে বললেন, এর দ্বারা তুমি আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) ও তাঁর সন্তানদের উপরে সাদাকা কর, যেহেতু তারা এর জন্য উপযুক্ত খাত হিসাবে বিবেচিত। সমস্ত অলংকার দ্বারা সাদাকা প্রদান ছিল নফল (সাদাকা), যাকাত থেকে নয়। কেননা
যাকাত সমস্ত সম্পদ দারা সাদাকা করাকে জরুরী (ওয়াজিব) করে না বরং এর অংশ দ্বারা সাদকা করাকে
ওয়াজিব করে।
অতএব এটিও ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও তাঁর মতের অনুসারীদের প্রথমােক্ত হাদীসের ব্যাখ্যার অসারতার
প্রমাণ বহন করে। সুতরাং যায়নাব (রাযিঃ)-এর হাদীস দ্বারা এই কথা প্রমাণ করে যে, নারী তার সম্পদের
যাকাত তার স্বামীকে দিতে পারবে, যদি সে অভাবগ্রস্ত হয় এটি আমাদের উল্লিখিত বর্ণনা দ্বারা বাতিল হয়ে
গিয়েছে। বস্তুত আমরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিধান পরবর্তীতে যুক্তির নিরিখে ও নীতিমালার ভিত্তিতে খুঁজে নেয়ার প্রয়াস পাব।

ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীলঃ আমরা লক্ষ্য করে দেখেছি যে, আলিমগণ এই বিষয়ে ঐকমত্য
পােষণ করেছেন যে, স্ত্রীকে তার স্বামী তার মালের যাকাত দিবে না (দেয়া জায়িয নয়) যদিও স্ত্রী অভাবগ্রস্ত
হয়। আর এ ব্যাপারে সে অন্যের মত নয়। যেহেতু আমরা দেখছি যে, ভাই তার অভাবগ্রস্ত বােনকে তার
যাকাত দিচ্ছে (দেয়া জায়িয) যদিও ভাইয়ের উপরে তার ব্যয়ভার জরুরী হয়ে থাকে। এতে কিন্তু সে সেই
ব্যক্তির হুকুম থেকে বের হবে না যাকে কিনা যাকাত প্রদান করা হয়। এ থেকে প্রমাণিত হলাে যে, যে কারণে স্বামীর জন্য নিজ স্ত্রীকে নিজের সম্পদের যাকাত প্রদান করা নিষিদ্ধ তা কিন্তু এটি নয় যে, স্বামীর উপরে স্ত্রীর ব্যয়ভার ওয়াজিব বরং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যখানে যে কারণ (দাম্পত্য বন্ধন) বিদ্যমান রয়েছে তার কারণে এটি না জায়িয। বস্তুত এটি পিতা-মাতা সন্তানের মাঝখানে বংশগত সম্পর্কের ন্যায়, যে কারণে মাতা-পিতা ও সন্তানকে পরস্পরে যাকাত প্রদান করা নিষিদ্ধ। আমাদের উল্লিখিত বর্ণনার দ্বারা যখন সাব্যস্ত হলাে যে, স্ত্রীকে যে কারণে তার স্বামী নিজ মালের যাকাত প্রদান করা নিষিদ্ধ যদিও স্ত্রী অভাবগ্রস্ত হয়ে থাকে। এটি সেই কারণের অনুরূপ যা সন্তান এবং মাতা-পিতার মাঝখানে বিদ্যমান। যে কারণে সন্তানের জন্য নিষিদ্ধ নিজের মাতা-পিতাকে তার যাকাত প্রদান করা যদিও মাতা-পিতা অভাবগ্রস্ত হয়ে থাকে। অনুরূপভাবে মাতা-পিতাও নিজেদের সন্তানকে নিজেদের যাকাত প্রদান করবে না যদিও সে অভাবগ্রস্ত হয়ে থাকে। সুতরাং সন্তান ও মাতা-পিতার মাঝখানে বংশ সম্পর্কের কারণে সন্তান কর্তৃক মাতা-পিতাকে যাকাত প্রদান করা তার জন্য নিষিদ্ধ এবং মাতা-পিতা কর্তৃক তাকে যাকাত (সন্তানকে) যাকাত দেয়া নিষিদ্ধ।
অনুরূপভাবে স্বামী-স্ত্রীর মাঝখানে দাম্পত্য বন্ধনের কারণে স্বামীর জন্য নিষিদ্ধ স্ত্রীকে যাকাত প্রদান করা এবং স্ত্রীর জন্যও নিষিদ্ধ স্বামীকে যাকাত প্রদান করা।

আমরা লক্ষ্য করেছি যে, স্বামী-স্ত্রীর মাঝখানে এই দাম্পত্য বন্ধনের কারণে একজনের সাক্ষ্য অপর জনের
ব্যাপারে গ্রহণ করা নিষিদ্ধ। এ ব্যাপারে তাদের উভয়কে মাহরাম আত্মীয় (মাতা-পিতা ও সন্তান)-এর তুল্য
সাব্যস্ত করা হয়েছে, যাদের একজনের সাক্ষ্য অপর জনের ব্যাপারে বৈধ নয়। (গ্রহণযােগ্য নয়)। আরাে লক্ষ্য করেছি যে, তাদের প্রত্যেকেই একজন অপরজন থেকে হিবা (দান) এর পর তা ফিরিয়ে নেয়া জায়িয নয় সেই ব্যক্তির বক্তব্য অনুযায়ী যে কিনা দুই আত্মীয়ের মাঝে হিবা সংক্রান্ত বিষয়ে ফিরিয়ে নেয়াকে জায়িয বলে। স্বামী-স্ত্রীকে যখন সাক্ষ্য গ্রহণ করা ও হিবার পর ফিরিয়ে নেয়া নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে মাহরাম আত্মীয়ের ন্যায় সাব্যস্ত করা হয়েছে অতএব যুক্তির চাহিদা মতেও পরস্পরে যাকাত প্রদান করাও অনুরূপ (নিষিদ্ধ) হবে।
আর এটিই হচ্ছে, এ অনুচ্ছেদের যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ, আর এটি হচ্ছে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ)-এর অভিমত।
3028 - حَدَّثَنَا فَهْدٌ , قَالَ: ثنا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدٍ , قَالَ: ثنا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي كَثِيرٍ الْأَنْصَارِيُّ , عَنْ عُمَرَ بْنِ نُبَيْهٍ الْكَعْبِيِّ , عَنِ الْمَقْبُرِيِّ , عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ " أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ انْصَرَفَ مِنَ الصُّبْحِ يَوْمًا , فَأَتَى عَلَى النِّسَاءِ فِي الْمَسْجِدِ فَقَالَ: " يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ , مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِينٍ أَذْهَبَ بِعُقُولِ ذَوِي الْأَلْبَابِ مِنْكُنَّ , وَإِنِّي قَدْ رَأَيْتُ أَنَّكُنَّ أَكْثَرُ أَهْلِ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ , فَتَقْرَبْنَ إِلَى اللهِ بِمَا اسْتَطَعْتُنَّ. وَكَانَ فِي النِّسَاءِ امْرَأَةُ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا , فَانْقَلَبَتْ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَأَخْبَرَتْهُ بِمَا سَمِعَتْ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَخَذَتْ حُلِيًّا لَهَا. فَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَيْنَ تَذْهَبِينَ بِهَذَا الْحُلِيِّ؟ فَقَالَتْ: أَتَقَرَّبُ بِهِ إِلَى اللهِ وَإِلَى رَسُولِهِ , لَعَلَّ اللهَ أَنْ لَا يَجْعَلَنِي مِنْ أَهْلِ النَّارِ. قَالَ: هَلُمِّي بِذَلِكَ وَيْلَكَ تَصَدَّقِي بِهِ عَلَيَّ وَعَلَى وَلَدِي فَقَالَتْ: لَا وَاللهِ , حَتَّى أَذْهَبَ بِهِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَذَهَبَتْ تَسْتَأْذِنُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ؟ هَذِهِ زَيْنَبُ تَسْتَأْذِنُ , فَقَالَ أَيُّ الزَّيَانِبِ هِيَ؟ قَالُوا: امْرَأَةُ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ. فَدَخَلَتْ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ: إِنِّي سَمِعْتُ مِنْكَ مَقَالَةً , فَرَجَعْتُ إِلَى ابْنِ مَسْعُودٍ فَحَدَّثْتُهُ , فَأَخَذْتُ حُلِيِّي أَتَقَرَّبُ بِهِ إِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ , وَإِلَيْكَ , رَجَاءَ أَنْ لَا يَجْعَلَنِي اللهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ. فَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: تَصَدَّقِي بِهِ عَلَيَّ وَعَلَى بَنِيَّ , فَإِنَّا لَهُ مَوْضِعٌ , فَقُلْتُ لَهُ: حَتَّى أَسْتَأْذِنَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَصَدَّقِي بِهِ عَلَيْهِ وَعَلَى بَنِيهِ , فَإِنَّهُمْ لَهُ مَوْضِعٌ»

3029 - حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ الْحَكَمِ الْجِيزِيُّ , قَالَ: ثنا عَاصِمِ بْنِ عَلِيٍّ , قَالَ: ثنا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ , قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي عَمْرٍو , عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَبَيَّنَ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي هَذَا الْحَدِيثِ , أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا أَرَادَ بِقَوْلِهِ تَصَدَّقِي فِي الصَّدَقَةِ , التَّطَوُّعِ الَّتِي تُكَفِّرُ الذُّنُوبَ. وَفِي حَدِيثِهِ قَالَ " فَجَاءَتْ بِحُلِيٍّ لَهَا إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللهِ، خُذْ هَذَا، أَتَقَرَّبُ بِهِ إِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ وَإِلَى رَسُولِهِ. فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: تَصَدَّقِي بِهِ عَلَى عَبْدِ اللهِ، وَعَلَى بَنِيهِ , فَإِنَّهُمْ لَهُ مَوْضِعٌ " فَكَانَ ذَلِكَ عَلَى الصَّدَقَةِ بِكُلِّ الْحُلِيِّ , وَذَلِكَ مِنَ التَّطَوُّعِ , لَا مِنَ الزَّكَاةِ , لِأَنَّ الزَّكَاةَ لَا تُوجِبُ الصَّدَقَةَ بِكُلِّ الْمَالِ , وَإِنَّمَا تُوجِبُ الصَّدَقَةَ بِجُزْءٍ مِنْهُ. فَهَذَا أَيْضًا دَلِيلٌ عَلَى فَسَادِ تَأْوِيلِ أَبِي يُوسُفَ رَحِمَهُ اللهُ وَمَنْ ذَهَبَ إِلَى قَوْلِهِ لِلْحَدِيثِ الْأَوَّلِ. فَقَدْ بَطَلَ بِمَا ذَكَرْنَا , أَنْ يَكُونَ فِي حَدِيثِ زَيْنَبَ مَا يَدُلُّ أَنَّ الْمَرْأَةَ تُعْطِي زَوْجَهَا مِنْ زَكَاةِ مَالِهَا إِذَا كَانَ فَقِيرًا. وَإِنَّمَا نَلْتَمِسُ حُكْمَ ذَلِكَ بَعْدُ مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ وَشَوَاهِدِ الْأُصُولِ , فَاعْتَبَرْنَا ذَلِكَ , فَوَجَدْنَا الْمَرْأَةَ، بِاتِّفَاقِهِمْ، لَا يُعْطِيهَا زَوْجُهَا مِنْ زَكَاةِ مَالِهِ , وَإِنْ كَانَتْ فَقِيرَةً , وَلَمْ تَكُنْ فِي ذَلِكَ كَغَيْرِهَا , لِأَنَّا رَأَيْنَا الْأُخْتَ يُعْطِيهَا أَخُوهَا مِنْ زَكَاتِهِ إِذَا كَانَتْ فَقِيرَةً , وَإِنْ كَانَ عَلَى أَخِيهَا أَنْ يُنْفِقَ عَلَيْهَا , وَلَمْ تَخْرُجْ بِذَلِكَ مِنْ حُكْمِ مَنْ يُعْطَى مِنَ الزَّكَاةِ. فَثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّ الَّذِي يَمْنَعُ الزَّوْجَ مِنْ إِعْطَاءِ زَوْجَتِهِ مِنْ زَكَاةِ مَالِهِ , لَيْسَ هُوَ وُجُوبَ النَّفَقَةِ لَهَا عَلَيْهِ , وَلَكِنَّهُ السَّبَبُ الَّذِي بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا , فَصَارَ ذَلِكَ كَالنَّسَبِ الَّذِي بَيْنَهُ وَبَيْنَ وَالِدِيهِ فِي مَنْعِ ذَلِكَ إِيَّاهُ مِنْ إِعْطَائِهِمَا مِنَ الزَّكَاةِ. فَلَمَّا ثَبَتَ بِمَا ذَكَرْنَا أَنَّ سَبَبَ الْمَرْأَةِ الَّذِي مَنَعَ زَوْجَهَا أَنْ يُعْطِيَهَا مِنْ زَكَاةِ مَالِهِ وَإِنْ كَانَتْ فَقِيرَةً , هُوَ كَالسَّبَبِ الَّذِي بَيْنَهُ وَبَيْنَ وَالِدِيهِ الَّذِي يَمْنَعُهُ مِنْ إِعْطَائِهِمَا مِنْ زَكَاتِهِ , وَإِنْ كَانَا فَقِيرَيْنِ , وَرَأَيْنَا الْوَالِدَيْنِ لَا يُعْطِيَانِهِ أَيْضًا مِنْ زَكَاتِهِمَا , إِذَا كَانَ فَقِيرًا , فَكَانَ الَّذِي بَيْنَهُ وَبَيْنَ وَالِدِيهِ مِنَ النَّسَبِ يَمْنَعُهُ مِنْ إِعْطَائِهِمَا مِنَ الزَّكَاةِ , وَيَمْنَعُهُمَا مِنْ إِعْطَائِهِ مِنَ الزَّكَاةِ. فَكَذَلِكَ السَّبَبُ الَّذِي بَيْنَ الزَّوْجِ وَالْمَرْأَةِ , لَمَّا كَانَ يَمْنَعُهُ مِنْ إِعْطَائِهِمَا مِنَ الزَّكَاةِ , كَانَ أَيْضًا يَمْنَعُهَا مِنْ إِعْطَائِهِ مِنَ الزَّكَاةِ.وَقَدْ رَأَيْنَا هَذَا السَّبَبَ بَيْنَ الزَّوْجِ وَالْمَرْأَةِ يَمْنَعُ مِنْ قَبُولِ شَهَادَةِ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا لِصَاحِبِهِ , فَجُعِلَا فِي ذَلِكَ كَذَوِي الرَّحِمِ الْمَحْرَمِ , الَّذِي لَا يَجُوزُ شَهَادَةُ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا لِصَاحِبِهِ. وَرَأَيْنَا أَيْضًا كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا , لَا يَرْجِعُ فِيمَا وَهَبَ لِصَاحِبِهِ , فِي قَوْلِ مَنْ يُجِيزُ الرُّجُوعَ فِي الْهِبَةِ فِيمَا بَيْنَ الْقَرِيبِينَ. فَلَمَّا كَانَ الزَّوْجَانِ فِيمَا ذَكَرْنَا , قَدْ جُعِلَا كَذَوِي الرَّحِمِ الْمَحْرَمِ فِيمَا مُنِعَ فِيهِ مِنْ قَبُولِ الشَّهَادَةِ , وَمِنَ الرُّجُوعِ فِي الْهِبَةِ , كَانَا فِي النَّظَرِ أَيْضًا فِي إِعْطَاءِ كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا صَاحِبَهُ مِنَ الزَّكَاةِ كَذَلِكَ. فَهَذَا هُوَ النَّظَرُ فِي هَذَا الْبَابِ , وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالَى

হাদীসের ব্যাখ্যা:

ব্যাখ্যা দেখুন ৩০২৫ নং হাদীসে
.
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ৩০২৮ | মুসলিম বাংলা