শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

৪. যাকাতের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩০০২
সুস্থ-সবল দরিদ্র ব্যক্তির জন্য সাদাকা হালাল কি-না।
৩০০২। ইউনুস (রাহঃ) ….. যিয়াদ ইবনুল হারিস মুদাঈ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাকে আমার সম্প্রদায়ের আমীর মনোনীত করলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে তাদের সাদাকা থেকে দান করুন। তিনি মঞ্জুর করে তাদের সাদাকা থেকে দিলেন এবং এ ব্যাপারে আমাকে লিপি লিখে দিলেন। তারপর তাঁর কাছে আরেক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে সাদাকা থেকে দান করুন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা সাদাকার ব্যাপারে কোন নবী (ﷺ) এবং অন্য ব্যক্তির বিধানে সন্তুষ্ট না হয়ে আকাশ থেকে এ বিষয়ে হুকুম (নাযিল করেছেন। তিনি সাদাকার খাতকে আট প্রকারে বিভক্ত করেছেন। সুতরাং তুমি যদি উক্ত (আট) প্রকারের অন্তর্ভুক্ত হও তাহলে তা থেকে আমি তোমাকে প্রদান করব।
আবু জা'ফর (তাহাবী র) বলেনঃ এই সূদাঈ (রাযিঃ)-কে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁর সম্প্রদায়ের আমীর নিযুক্ত করেছিলেন। আর এটি অসম্ভব ব্যাপার যে, তিনি তাঁকে পঙ্গু অবস্থায় আমীর নিযুক্ত করবেন। তারপর তিনি তাঁর নিকট নিজ কাওমের সাদাকা চেয়েছেন অথচ তা ছিল তাঁদের যাকাত। তারপর তিনি তা থেকে তাঁকে প্রদান করেন এবং তিনি তাঁর শরীরের সুস্থতার কারণে তা থেকে বঞ্চিত করেন নি। তারপর অপর এক ব্যক্তি তাঁর নিকট সওয়াল করল। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁকে বললেন, তুমি যদি সেই (আট) প্রকারের অন্তর্ভুক্ত হও যাদেরকে আল্লাহ্ তা'আলা সাদাকা দেয়ার জন্য বণ্টন করে দিয়েছেন, তাহলে তা থেকে আমি তোমাকে দিব। সুতরাং রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এভাবে সাদাকার বিধানকে সেই দিকে নিয়োজিত করেছেন যে দিকে আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর (নিম্মোক্ত) বাণী দ্বারা নির্ধারিত করে দিয়েছেনঃ إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ সাদাকা তো কেবল নিঃস্ব ও অভাবগ্রস্তদের জন্য। (৯ঃ৬০)
অতএব যে ব্যক্তিই উক্ত (আট) প্রকারের কোন এক প্রকারের অন্তর্ভুক্ত হবে সেই সাদাকা গ্রহণের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর কিতাবে তাঁর রাসূল তাঁর সুন্নায় যা তাদের জন্য সাব্যস্ত করেছেন, চাই তারা পঙ্গু হোক কিংবা সুস্থ। আর সেই সমস্ত হাদীসের ব্যাপারে যা আমারা এ অনুচ্ছেদের শুরু ভাগে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে রিওয়ায়াত করেছি যেমন, তাঁর উক্তি "সুস্থ-সবল ব্যক্তির জন্য সাদাকা হালাল নয়” আমাদের জন্য উত্তম হচ্ছে তাই যা আমরা সে সমস্ত হাদীসের থেকে গ্রহণ করেছি। যেন ওগুলোর অর্থ সেই সুস্পষ্ট আয়াতের আওতা বহির্ভূত না হয়ে যায়, যা আমরা উল্লেখ করেছি এবং এই সমস্ত অপরাপর হাদীসকে অতিক্রম করে না যায়, যা আমরা রিওয়ায়াত করেছি এবং যেন সকল বর্ণনায় অভিন্ন অর্থ হয়ে যায়; যা পরস্পরকে সত্যায়ন করবে। তারপর কাবীসা ইবন মুখারিক (রাযিঃ) ও নবী করীম (ﷺ) থেকে উক্ত বিষয়ের সমর্থনে হাদীস রিওয়ায়াত করেছেনঃ
3002- حَدَّثَنَا يُونُسُ , قَالَ: ثنا ابْنُ وَهْبٍ , قَالَ: أَخْبَرَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ زِيَادِ بْنِ أَنْعَمَ , عَنْ زِيَادِ بْنِ نُعَيْمٍ , أَنَّهُ سَمِعَ زِيَادَ بْنَ الْحَارِثِ الصُّدَائِيَّ يَقُولُ: أَمَّرَنِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى قَوْمِي , فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ , أَعْطِنِي مِنْ صَدَقَاتِهِمْ , فَفَعَلَ وَكَتَبَ لِي بِذَلِكَ كِتَابًا. فَأَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ، أَعْطِنِي مِنَ الصَّدَقَةِ. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ لَمْ يَرْضَ بِحُكْمِ نَبِيٍّ وَلَا غَيْرِهِ فِي الصَّدَقَاتِ , حَتَّى حَكَمَ فِيهَا هُوَ مِنَ السَّمَاءِ , فَجَزَّأَهَا ثَمَانِيَةَ أَجْزَاءٍ , فَإِنْ كُنْتَ مِنْ تِلْكَ الْأَجْزَاءِ أَعْطَيْتُكَ مِنْهَا» . قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَهَذَا الصُّدَائِيُّ قَدْ أَمَّرَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى قَوْمِهِ , وَمُحَالٌ أَنْ يَكُونَ أَمَّرَهُ وَبِهِ زَمَانَةٌ. ثُمَّ قَدْ سَأَلَهُ مِنْ صَدَقَةِ قَوْمِهِ , وَهِيَ زَكَاتُهُمْ فَأَعْطَاهُ مِنْهَا , وَلَمْ يَمْنَعْهُ مِنْهُ لِصِحَّةِ بَدَنِهِ. ثُمَّ سَأَلَهُ الرَّجُلُ الْآخَرُ بَعْدَ ذَلِكَ , فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنْ كُنْتَ مِنَ الْأَجْزَاءِ الَّذِينَ جَزَّأَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ الصَّدَقَةَ فِيهِمْ أَعْطَيْتُكَ مِنْهَا» . فَرَدَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِذَلِكَ حُكْمَ الصَّدَقَاتِ إِلَى مَا رَدَّهَا اللهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلَيْهِ بِقَوْلِهِ: { «إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ» } [التوبة: 60] الْآيَةَ. فَكُلُّ مَنْ وَقَعَ عَلَيْهِ اسْمُ صِنْفٍ مِنْ تِلْكَ الْأَصْنَافِ , فَهُوَ مِنْ أَهْلِ الصَّدَقَةِ الَّذِينَ جَعَلَهَا اللهُ عَزَّ وَجَلَّ لَهُمْ فِي كِتَابِهِ , وَرَسُولُهُ فِي سُنَّتِهِ , زَمِنًا كَانَ أَوْ صَحِيحًا. وَكَانَ أَوْلَى الْأَشْيَاءِ بِنَا فِي الْآثَارِ الَّتِي رَوَيْنَاهَا عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْفَصْلِ الْأَوَّلِ مِنْ قَوْلِهِ: «لَا تَحِلُّ الصَّدَقَةُ لِذِي مِرَّةٍ سَوِيٍّ» مَا حَمَلْنَاهَا عَلَيْهِ , لِئَلَّا يَخْرُجَ مَعْنَاهَا مِنَ الْآيَةِ الْمُحْكَمَةِ الَّتِي ذَكَرْنَا , وَلَا مِنْ هَذِهِ الْأَحَادِيثِ الْأُخَرِ الَّتِي رَوَيْنَا. وَيَكُونُ مَعْنَى ذَلِكَ كُلِّهِ مَعْنًى وَاحِدًا يُصَدِّقُ بَعْضُهُ بَعْضًا. ثُمَّ قَدْ رَوَى قَبِيصَةُ بْنُ الْمُخَارِقِ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا قَدْ دَلَّ عَلَى ذَلِكَ أَيْضًا
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ৩০০২ | মুসলিম বাংলা