শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ২৫২৮
নামাযের অধ্যায়
সালাতে কেউ তিন রাক’আত না চার রাক’আত আদায় করেছে, এ বিষয়ে যদি সন্দিহান হয়
২৫২৮। মুহাম্মাদ ইবনুল আব্বাস (রাহঃ) ..... ইব্‌ন উমর (রাযিঃ) থেকে সালাতে সন্দেহ হলে ‘তাহাররী’ (চিন্তা-ভাবনা) বিষয়ে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন, যা ইব্‌ন ওয়াহব (রাহঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে বিদ্যমান আছে, যা তিনি মালিক (রাহঃ) থেকে, তিনি উমর ইব্‌ন মুহাম্মাদ (রাহঃ) থেকে এবং ইব্‌ন ওয়াহব থেকে এবং তিনি স্বয়ং উমর (রাযিঃ) থেকেও বর্ণনা করেছেন ।
দ্বিতীয় মত পোষণকারী আলিমদের পক্ষে ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীল
বস্তুত এ বিষয়ের (কমের উপরে ভিত্তি করা) যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ হলো নিম্নরূপঃ
আমরা লক্ষ্য করেছি যে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সর্ববাদিসম্মত নীতি হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সালাত শুরু করার পূর্বে তার উপরে চার রাক’আত সালাত আদায় করা ফরয ছিল। আর সালাতে শুরু করার পরেও চার রাক’আত ফরয। যখন তার সালাতের কিছু অংশ আদায় করার বিষয়ে সন্দেহ হয়, তাহলে এ ব্যাপারে এর বিধান কি হবে জ্ঞাত হওয়ার জন্য চিন্তা-ভাবনা করা জরুরী। আমরা লক্ষ্য করেছি যে, কারো যদি আদৌ সালাত আদায় করেছে কি-না, সে ব্যাপারে সন্দেহ হয়, তাহলে তাকে সালাত পুনর্বার পড়তে হবে, যাতে সালাত আদায় করার বিষয়ে সে নিশ্চিতরূপে জ্ঞাত হয়ে যায় এবং এ ব্যাপারে ‘তাহাররী’র (চিন্তা-ভাবনা) উপর আমল করবে না। অতএব যুক্তির দাবি মতে সালাতের প্রত্যেক অংশের ব্যাপারেও অনুরূপ বিধান প্রযোজ্য হবে; যা তার উপরে, ফরয ছিল এবং তা তার জন্য আদায় করা জরুরী ছিল, যাতে নিশ্চিত রূপে জানতে পারে যে, সে তা আদায় করেছে।
কেউ যদি প্রশ্ন উত্থাপন করে বলে যে, তার উপরে তো (সালাত) ফরয হওয়ার (ইল্‌ম তথা জ্ঞান) ওয়াজিব নয়, যাতে সে নিশ্চিতরূপে জ্ঞাত হতে পারে যে, তা তার উপরে ওয়াজিব। (অতএব ‘তাহাররী’ জায়িয হওয়া উচিত)।
উত্তরে তাঁকে বলা হবে যে, সমগ্র ইবাদাত আমরা এমনটি পাইনি। (অর্থাৎ ইবাদাত ফরয হওয়ার জ্ঞান সমগ্র ইবাদাতে জরুরী নয়) বরং বন্দেগী প্রকাশ করা আমাদের উপরে জরুরী। (তবে কতেক ইবাদাতে নিশ্চিত জ্ঞান জরুরী, যেমন চাঁদ দেখার বিষয়) যদি শা’বান মাসের ত্রিশ তারিখ (২৯ তারিখে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার ফলে) আমাদের দৃষ্টির আড়াল হয়ে যায়, যা রামাযানের হওয়ারও সম্ভাবনা আছে, যাতে আমাদের জন্য এর সিয়াম পালন করা ওয়াজিব, আবার শা’বানের হওয়ারও সম্ভাবনা আছে, যাতে আমাদের জন্য এর সিয়াম পালন করা জরুরী নয়। তাই যতক্ষণ এটা রামাযানের চাঁদ বলে নিশ্চিত না হবে, ততক্ষণ আমাদের উপর সিয়াম পালন জরুরী নয়। নিশ্চিতরূপে জানার পর আমরা এর সিয়াম পালন করব। অনুরূপভাবে আমরা রামাযান মাসের শেষ (তারিখ) লক্ষ্য করেছি, যদি (২৯ তারিখ মেঘের কারণে) ত্রিশ তারিখ আমাদের দৃষ্টির আড়াল থেকে যায় যা রামাযানের হওয়ারও সম্ভাবনা আছে, যাতে আমাদের জন্য সিয়াম পালন করা ওয়াজিব, আবার এটি শাওয়ালের হওয়ারও সম্ভাবনা আছে, যার সিয়াম পালন করা আমাদের জন্য জরুরী নয় ।
বস্তুত এর সিয়াম পালনের জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যতক্ষণ আমরা নিশ্চিতরূপে জানতে না পারব যে, এর সিয়াম পালন আমাদের উপরে জরুরী নয়। অতএব প্রমাণিত হলো যে, কেউ যদি কোন কিছুতে নিশ্চিতরূপে প্রবেশ করে, তাহলে তার থেকে নিশ্চিত কোন কিছুর জ্ঞান ব্যতীত বের হওয়া যায়না।
সুতরাং এর ভিত্তিতে যুক্তির দাবি হচ্ছে যে, অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি সালাতে নিশ্চিতরূপে প্রবেশ করেছে এবং নিশ্চিতভাবে সে জানে যে, এই সালাত তার উপরে জরুরী, তাহলে এই সালাত থেকে বের হওয়া বৈধ, এরূপ নিশ্চিত জ্ঞান ব্যতীত তার জন্য বের হওয়া বৈধ হবে না।
শাবান এবং রামাযান মাসে (আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার ফলে) চাঁদ দৃষ্টির আড়াল হওয়ার বিধান সম্পর্কিত সেই সমস্ত হাদীস, যা আমরা প্রমাণ রূপে গ্রহণ করেছি, এগুলো রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে মুতাওয়াতির রূপে বর্ণিত আছে, যা আমরা উল্লেখ করেছি।
এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে বর্ণিত কিছু হাদীসঃ
كتاب الصلاة
2528 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَبَّاسِ بْنُ الرَّبِيعِ، قَالَ: ثنا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدٍ، قَالَ: ثنا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا فِي التَّحَرِّي فِي الشَّكِّ فِي الصَّلَاةِ بِمِثْلِ مَا فِي حَدِيثِ ابْنِ وَهْبٍ , عَنْ مَالِكٍ , عَنْ عُمَرَ بْنِ مُحَمَّدٍ وَعَنِ ابْنِ وَهْبٍ , عَنْ عُمَرَ نَفْسِهِ وَأَمَّا وَجْهُ ذَلِكَ مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ , فَإِنَّا قَدْ رَأَيْنَا الْأَصْلَ الْمُتَّفَقَ عَلَيْهِ فِي ذَلِكَ , أَنَّ هَذَا الرَّجُلَ قَبْلَ دُخُولِهِ فِي الصَّلَاةِ , قَدْ كَانَ عَلَيْهِ أَنْ يَأْتِيَ بِأَرْبَعِ رَكَعَاتٍ , فَلَمَّا شَكَّ فِي أَنْ يَكُونَ جَاءَ بِبَعْضِهَا , وَجَبَ النَّظَرُ فِي ذَلِكَ , لِيُعْلَمَ كَيْفَ كَانَ حُكْمُهُ. فَرَأَيْنَاهُ لَوْ شَكَّ فِي أَنْ يَكُونَ قَدْ صَلَّى , لَكَانَ عَلَيْهِ أَنْ يُصَلِّي حَتَّى يَعْلَمَ يَقِينًا أَنَّهُ قَدْ صَلَّى , وَلَا يَعْمَلُ فِي ذَلِكَ بِالتَّحَرِّي. فَكَانَ النَّظَرُ عَلَى هَذَا أَنْ يَكُونَ كَذَلِكَ هُوَ فِي كُلِّ شَيْءٍ مِنْ صَلَاتِهِ كَانَ ذَلِكَ عَلَيْهِ فَرْضًا , وَعَلَيْهِ أَنْ يَأْتِيَ بِهِ حَتَّى يَعْلَمَ يَقِينًا أَنَّهُ قَدْ جَاءَ بِهِ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: إِنَّ الْفَرْضَ عَلَيْهِ غَيْرُ وَاجِبٍ , حَتَّى يَعْلَمَ يَقِينًا أَنَّهُ وَاجِبٌ عَلَيْهِ. قِيلَ لَهُ: لَيْسَ هَكَذَا وَجَدْنَا الْعِبَادَاتِ كُلَّهَا , لِأَنَّا قَدْ تَعَبَّدْنَا أَنَّهُ إِذَا أُغْمِيَ عَلَيْنَا فِي يَوْمِ ثَلَاثِينَ مِنْ شَعْبَانَ , فَاحْتَمَلَ أَنْ يَكُونَ مِنْ رَمَضَانَ , فَيَجِبُ عَلَيْنَا صَوْمُهُ , وَاحْتَمَلَ أَنْ يَكُونَ مِنْ شَعْبَانَ , فَلَا يَكُونُ عَلَيْنَا صَوْمُهُ , أَنَّهُ لَيْسَ عَلَيْنَا صَوْمُهُ , حَتَّى نَعْلَمَ يَقِينًا أَنَّهُ مِنْ شَهْرِ رَمَضَانَ فَنَصُومُهُ. وَكَذَلِكَ رَأَيْنَا آخِرَ شَهْرِ رَمَضَانَ إِذَا أُغْمِيَ عَلَيْنَا فِي يَوْمِ الثَّلَاثِينَ , فَاحْتَمَلَ أَنْ يَكُونَ مِنْ شَهْرِ رَمَضَانَ , فَيَكُونَ عَلَيْنَا صَوْمُهُ. وَاحْتَمَلَ أَنْ يَكُونَ مِنْ شَوَّالٍ فَلَا يَكُونُ عَلَيْنَا صَوْمُهُ , أُمِرْنَا بِأَنْ نَصُومَهُ , حَتَّى نَعْلَمَ يَقِينًا أَنَّهُ لَيْسَ عَلَيْنَا صَوْمُهُ. فَكَانَ مَنْ دَخَلَ فِي شَيْءٍ بِيَقِينٍ لَمْ يَخْرُجْ مِنْهُ إِلَّا بِيَقِينٍ. فَالنَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ أَنْ يَكُونَ كَذَلِكَ مَنْ دَخَلَ فِي صَلَاةٍ بِيَقِينٍ , أَنَّهَا عَلَيْهِ لَمْ يَحِلَّ لَهُ الْخُرُوجُ مِنْهَا إِلَّا بِيَقِينٍ أَنَّهُ قَدْ حَلَّ لَهُ الْخُرُوجُ مِنْهَا. وَقَدْ جَاءَ مَا اسْتَشْهَدْنَا بِهِ مِنْ حُكْمِ الْإِغْمَاءِ فِي شَعْبَانَ , وَشَهْرِ رَمَضَانَ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُتَوَاتِرًا كَمَا ذَكَرْنَاهُ
فَمِمَّا رُوِيَ عَنْهُ فِي ذَلِكَ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ২৫২৮ | মুসলিম বাংলা