আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৫২- কুরআনের ফাযাঈল অধ্যায়

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৪৯৮২
২৬১৬. ওহী কিভাবে নাযিল হয় এবং সর্বপ্রথম কোন আয়াত নাযিল হয়েছিল।
৪৬২১। আমর ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) ......... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা’ রাসূল (ﷺ) এর প্রতি ধারাবাহিকভাবে ওহী নাযিল করতে থাকেন এবংতাঁর ইন্‌তিকালের নিকটর্বতী সময়ে আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রতি সর্বাধিক পরিমাণ ওহী নাযিল করেন। এরপর তিনি ওফাত প্রাপ্ত হন।

হাদীসের ব্যাখ্যা:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাতের আগে তাঁর প্রতি ঘন ঘন ওহী নাযিল হওয়ার কারণ, এ সময় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তাঁর কাছে প্রতিনিধি দলসমূহের আগমন খুব বেশি বেশি হচ্ছিল। তারা তাঁর কাছে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করছিল, যার সমাধানকল্পে আল্লাহ তা'আলা একের পর এক ওহী নাযিল করতে থাকেন। সেইসঙ্গে তাঁর ওফাতের আগে যেহেতু দীন পরিপূর্ণ করে দেওয়ার প্রয়োজন ছিল, তাই এ সময় প্রয়োজনীয় বিধানাবলি সম্বলিত ওহী একের পর এক নাযিল করা হতে থাকে, যাতে ওফাতের পূর্বেই শরী'আত পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে।
উল্লেখ্য, এ হাদীছের প্রথমেই যেহেতু আল্লাহ তা'আলার নাম এসে গেছে, তাই পরে ব্যাকরণ অনুযায়ী رسول الله (আল্লাহর রাসূল)-এর স্থলে رسوله (তাঁর রাসূল) বললেই চলত। অর্থাৎ‍ দ্বিতীয়বার বিশেষ্যের পরিবর্তে সর্বনাম ব্যবহার করাই যথেষ্ট ছিল। তা সত্ত্বেও বিশেষ্য (الله) ব্যবহার করা হয়েছে বারবার উচ্চারণ দ্বারা আল্লাহ তা'আলার মহান নামের অধিকতর আস্বাদ লাভের জন্য। পরম প্রিয়ের নাম বারংবার উচ্চারণের মাধ্যমে অন্তরে প্রশান্তি যোগানোও ইশক ও মহব্বতের চিরন্তন রেওয়াজ। সেইসঙ্গে সর্বনামের বদলে মহান এ নামের সঙ্গে 'রাসূল'-এর সম্বন্ধ স্থাপন দ্বারা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা নিবেদনেও পূর্ণতা আসে বৈ কি।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. এ হাদীছ দ্বারাও জীবনের শেষপ্রান্তে বেশি বেশি কল্যাণকর কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার উৎসাহ পাওয়া যায়।

খ. এর দ্বারা আরও বোঝা যায়, জীবনের পরিসমাপ্তি যদি ঘটে 'ইলমে ওহীর খেদমতে ব্যতিব্যস্ত থাকা অবস্থায়, তবে তা অতি বড় সৌভাগ্য।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন