শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
২. নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ২১৬৬
জুমু'আর দিন ইমামের খুতবা দানকালে কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে সালাত পড়বে কিনা?
২১৬৬। ইবরাহীম ইবন মুনকিয (রাহঃ) ..... আব্দুল্লাহ্ ইবন আমর (রাযিঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমু'আর দিন গোসল করবে তারপর তার স্ত্রীর সুগন্ধি ব্যবহার করবে, সর্বোত্তম পোশাক পরিধান করবে এবং মানুষের গর্দান টপকাবে না,, (ইমামের) ওয়াজের সময় অনর্থক কথাবার্তা বা কাজ করবে না, তার এই আমল পূর্ববর্তী এক সপ্তাহের জন্য কাফফারা হবে।
2166 - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُنْقِذٍ، قَالَ: ثنا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ , ثُمَّ مَسَّ مِنْ طِيبِ امْرَأَتِهِ , وَلَبِسَ أَصْلَحَ ثِيَابِهِ , وَلَمْ يَتَخَطَّ رِقَابَ النَّاسِ , وَلَمْ يَلْغُ عِنْدَ الْمَوْعِظَةِ كَانَتْ كَفَّارَةً لِمَا بَيْنَهُمَا»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীস থেকে জুমআর দিনে গোসল করা এবং সুগন্ধি ব্যবহার করা ছুন্নাত ও ফযীলতপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়। আর এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (বাদায়েউস সানায়ে’: ১/২৬৯) জুমআর দিন গোসল করা জরুরী বলে যদিও কোন কোন ইমাম মত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, ইসলামের শুরু যুগে সাহাবায়ে কিরামের আর্থিক দৈন্যতা ছিল চরমে। নিজেরা ক্ষেতে খামারে কাজ করতেন, মোটা কাপড় পরিধান করতেন এবং ঘর্মাক্ত শরীরে জুমার নামাযে আসতেন। ঘামের দুর্গন্ধে মানুষের কষ্ট হতো। কিন্তু পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা তাঁদের অনটন দূর করে আর্থিক স্বচ্ছলতা দান করেছেন। তাঁরা উন্নতমানের পাতলা কাপড় পরিধান করেন। কাজের মানুষে তাঁদের কাজ করে। তখন গোসল করার ঐ প্রয়োজনীয়তা থাকেনি যা শুরু যুগে ছিলো। (তহাবী শরীফ-৭০৭) এ হাদীসের আলোকে বলা যেতে পারে যে, রসূল স.-এর বাণী الغُسْلُ يَوْمَ الجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ জুমআর দিনের গোসল করা সকল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ওয়াজিব’ (বুখারী-৮১৬) এটা ইসলামের শুরু দিকের কথা। এর আরো একটি প্রমাণ মেলে مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ، ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ، فَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ، وَزِيَادَة ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، যে ব্যক্তি সুন্দর রূপে অযু করে জুমআর নামাযে যায় এবং চুপ করে মনোযোগ সহকারে (ইমামের খুৎবা) শোনে তার এই জুমআ থেকে পরের জুমআ এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (মুসলিম-১৮৬১) এ হাদীসে জুমআর ফযীলত পাওয়ার জন্য তিনটি আমলের কথা বলা হয়েছে যার মধ্যে গোসলের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এ থেকেও বুঝা যায় যে, জুমআর জন্য গোসল করা জরুরী নয়। তবে বুখারী: ৮৬৪ নং হাদীস থেকে গোসলের ফযীলত প্রমাণিত হয়েছে। অতএব এটা ছুন্নাত।
