শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ১৫২৯
সিজদায় যেতে প্রথমে উভয় হাত না উভয় হাঁটু রাখবে
১৫২৯। আবু বাকরা (রাহঃ).....ইবরাহীম নাখঈ (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন আব্দুল্লাহ
ইবন মাসউদ (রাযিঃ)-এর উভয় হাঁটু উভয় হাতের পূর্বে ভূমিতে স্থাপিত হতাে।
1529 - حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرَةَ، قَالَ: ثنا أَبُو عُمَرَ الضَّرِيرُ، قَالَ: أنا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، أَنَّ الْحَجَّاجَ بْنَ أَرْطَاةَ، أَخْبَرَهُمْ قَالَ: قَالَ إِبْرَاهِيمُ النَّخَعِيُّ حُفِظَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: «أَنَّ رُكْبَتَيْهِ، كَانَتَا تَقَعَانِ إِلَى الْأَرْضِ قَبْلَ يَدَيْهِ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

রসূলুল্লাহ স.-এর আমল ছিলো সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাঁটু এবং পরে হাত রাখা। আর সিজদা থেকে উঠার সময় এর বিপরীত করা। ইমাম তিরমিযী রহ. এ হাদীসের আলোচনায় আরো মনত্মব্য করেছেন যে, অধিকাংশ উলামায়ে কিরামের আমলও এ হাদীস অনুযায়ী।
حَدَّثَنَا يَعْلَى عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ إبْرَاهِيمَ عَنِ الأَسْوَدِ أَنَّ عُمَرَ كَانَ يَقَعُ عَلَى رُكْبَتَيْهِ
হযরত উমার রা. হাঁটুর উপর ভর করে (সিজদার জন্য) নীচু হতেন (ইবনে আবী শাইবা: ২৭১৯)
এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, হযরত উমার রা.-এর আমল ছিলো সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাঁটু রাখা।
حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ مُغِيرَةَ، عَنْ إبْرَاهِيمَ؛ أَنَّهُ سُئِلَ عَنِ الرَّجُلِ يَضَعُ يَدَيْهِ قَبْلَ رُكْبَتَيْهِ ؟ فَكَرِهَ ذَلِكَ، وَقَالَ: هَلْ يَفْعَلُهُ إِلاَّ مَجْنُونٌ ؟!.
হযরত ইবরাহীম নাখাঈ রহ.কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, সিজদার সময় হাঁটুর আগে হাত রাখে। তিনি এটাকে অপছন্দ করলেন এবং বললেন: পাগল ছাড়া কেউ এমন করে? (ইবনে আবী শাইবা: ২৭২২)
উপরিউক্ত সকল হাদীস এবং সাহাবা ও তাবিঈগণের আমল থেকে প্রমাণিত হলো যে, সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাঁটু এবং পরে হাত রাখতে হয়। আর এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৪৯৭)
উল্লিখিত পদ্ধতির বিপরীতে সিজদা করার সময় আগে হাত এবং পরে হাঁটু রাখা, আর উঠার সময় আগে হাঁটু এবং পরে হাত উঠানোর আমলও হাদীসে বর্ণিত আছে। তবে আমরা এ হাদীসকে আমলের জন্য বেশী উপযোগী মনে করি। কারণ ইমাম তিরমিযী রহ. এ হাদীসটিকে হাসান বলার সাথে সাথে এ হাদীসের উপর অধিকাংশ আহলে ইলম-এর আমল রয়েছে বলেও উলেস্নখ করেছেন। আমীরুল মুমিনীন হযরত উমার রা.-এর আমলও এটাই। ইবনে খুযাইমা রহ. হযরত সা’দ বিন আবী ওয়াক্কাস রা. থেকে এ বিষয়ক একটি হাদীস উল্লেখ করেছেন: كنا نضع اليدين قبل الركبتين فأمرنا بالركبتين قبل اليدين “আমরা হাঁটুর পূর্বে হাত রাখতাম। অতঃপর আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হলো হাতের পূর্বে হাঁটু রাখতে”। (সহীহ ইবনে খুযাইমা: ৬২৮) এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাত রাখার হাদীসটি রহিত। অবশ্য সহীহ ইবনে খুযাইমার এ হাদীসটি সহীহ নয়। সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাত রাখার ব্যাপারে হযরত ওয়ায়েল বিন হুজর রা. থেকে বর্ণিত তিরমিযী-২৬৮ নং হাদীসটি মিশকাত শরীফের ৮৯৮ নাম্বারেও বর্ণিত হয়েছে। এরপর হযরত আবু হুরায়রা রা. অপর একটি হাদীসে এর বিপরীতে সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাত ও পরে হাটু রাখার আমল বর্ণনা করার পর মাসাবীহুছ্ছুন্নাহর লেখক ইমাম ইমাম খত্তাবী রহ.-এর বরাত দিয়ে বলেন যে, তিনি হাদীসটিকে রহিত বলেছেন। অর্থাৎ সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাত ও পরে হাটু রাখার আমল বহাল নয়; বরং রহিত।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান