শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
২. নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ১২৭৪
মাগরিবের সালাতে কিরাআত
১২৭৪। আবু বাকরা (রাযিঃ) ..... জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, মু'আয ইবন জাবাল (রাযিঃ) নবী (ﷺ) -এর সঙ্গে সালাত (নফল) আদায় করতেন। তারপর ফিরে এসে আমাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করতেন। একদিন নবী (ﷺ) ইশার সালাত বিলম্বে আদায় করেন। মু'আয ইন জাবাল (রাযিঃ) তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করে এলেন, যেন আমাদের (সালাতের) ইমামতি করেন। তিনি সূরা বাকারা শুরু করে দিলেন। লোকদের থেকে জনৈক ব্যক্তি যখন এ অবস্থা দেখল তখন সে এক কোণে পৃথক হয়ে গিয়ে একাকি সালাত আদায় করে নিল। আমরা বললাম! হে অমুক! কি ব্যাপার, তুমি কি মুনাফিক হয়ে গিয়েছে? সে বলল, আমি মুনাফিক হইনি; আমি অবশ্যই রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর নিকট গিয়ে তাঁকে এ বিষয় অবহিত করব। পরে সে নবী (ﷺ) -এর নিকট এসে বলল! হে আল্লাহর রাসূল! মু'আয (রাযিঃ) আপনার সঙ্গে সালাত আদায় করেন। এরপর ফিরে এসে আমাদেরকে ইমামতি করেন। গতরাতে আপনি ইশার সালাত বিলম্বে আদায় করেছেন। তিনি আপনার সঙ্গে সালাত আদায় করে এসে আমাদের ইমামতির জন্য সম্মুখে অগ্রসর হন এবং সূরা বাকারা শুরু করে দেন। আমি যখন এ অবস্থা দেখলাম তখন সরে পড়লাম এবং একাকি সালাত আদায় করে নিলাম। হে আল্লাহর রাসূল! আমরা উটের উপর পানি বহন করি, আমরা কায়িক পরিশ্রম করি। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন, হে মু'আয! তুমি কি ফিৎনায় ঠেলে দিচ্ছ? এ কথাটি দুইবার বললেন। অমুক, অমুক সূরা তিলাওয়াত কর। 'কিসার মুফাসসাল' সূরাগুলো থেকে তিলাওয়াত কর, অন্য গোটা সূরা তিলাওয়াত করবে না।
সুফইয়ান (রাহঃ) বলেন, আমরা আমর [ইবন দীনার (রাহঃ)]-কে বললাম যে, আবু যুবায়র (রাহঃ) আমাদেরকে জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁকে বলেছেন وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى وَالشَّمْسِ وَضُحَاهَا , وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الْبُرُوجِ এবং وَالسَّمَاءِ وَالطَّارِقِ তিলাওয়াত কর। আর ইবন দীনার (রাহঃ) বললেন, তা এরূপই।
হাদীসের মূল্যায়ন ও বিশ্লেষণ
বস্তুত রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মু'আয (রাযিঃ) কর্তৃক সূরা বাকারা তিলাওয়াত করার মাধ্যমে লোকদের উপর বোঝা চাপিয়ে দেয়ার প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছেন এবং তাঁকে বলেছেন, হে মু'আয! তুমি কি ফিৎনায় ঠেলে দিচ্ছ? তিনি তাঁকে 'কিসার মুফাসসাল' থেকে সেই সমস্ত সূরাগুলো তিলাওয়াত করার নির্দেশ দিয়েছেন যা আমরা উল্লেখ করেছি। যদি ঐ সালাত মাগরিবের সালাত-ই হয়ে থাকে তাহলে এই হাদীস যায়দ ইবন সাবিত (রাযিঃ)-এর হাদীসসহ সেই সমস্ত হাদীসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে যা আমরা এই অনুচ্ছেদের শুরুভাগে উল্লেখ করেছি। আর যদি তা ইশার সালাত হয়ে থাকে তাহলে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর ওয়াক্তে প্রশস্ততা থাকা সত্ত্বেও সেই সমস্ত সূরাগুলো তিলাওয়াত করা অপছন্দ করেছেন যা আমরা উল্লেখ করেছি। মাগরিবের ওয়াক্ত সংকীর্ণ হওয়ার কারণে তাতে সেই কিরাআত মাকরূহ হওয়াটা অধিক সংগত। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর ইশার সালাতে কিরাআত বিষয়েও অনুরূপ বর্ণিত আছে :
সুফইয়ান (রাহঃ) বলেন, আমরা আমর [ইবন দীনার (রাহঃ)]-কে বললাম যে, আবু যুবায়র (রাহঃ) আমাদেরকে জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাঁকে বলেছেন وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى وَالشَّمْسِ وَضُحَاهَا , وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الْبُرُوجِ এবং وَالسَّمَاءِ وَالطَّارِقِ তিলাওয়াত কর। আর ইবন দীনার (রাহঃ) বললেন, তা এরূপই।
হাদীসের মূল্যায়ন ও বিশ্লেষণ
বস্তুত রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মু'আয (রাযিঃ) কর্তৃক সূরা বাকারা তিলাওয়াত করার মাধ্যমে লোকদের উপর বোঝা চাপিয়ে দেয়ার প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছেন এবং তাঁকে বলেছেন, হে মু'আয! তুমি কি ফিৎনায় ঠেলে দিচ্ছ? তিনি তাঁকে 'কিসার মুফাসসাল' থেকে সেই সমস্ত সূরাগুলো তিলাওয়াত করার নির্দেশ দিয়েছেন যা আমরা উল্লেখ করেছি। যদি ঐ সালাত মাগরিবের সালাত-ই হয়ে থাকে তাহলে এই হাদীস যায়দ ইবন সাবিত (রাযিঃ)-এর হাদীসসহ সেই সমস্ত হাদীসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে যা আমরা এই অনুচ্ছেদের শুরুভাগে উল্লেখ করেছি। আর যদি তা ইশার সালাত হয়ে থাকে তাহলে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর ওয়াক্তে প্রশস্ততা থাকা সত্ত্বেও সেই সমস্ত সূরাগুলো তিলাওয়াত করা অপছন্দ করেছেন যা আমরা উল্লেখ করেছি। মাগরিবের ওয়াক্ত সংকীর্ণ হওয়ার কারণে তাতে সেই কিরাআত মাকরূহ হওয়াটা অধিক সংগত। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর ইশার সালাতে কিরাআত বিষয়েও অনুরূপ বর্ণিত আছে :
1274 - حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرَةَ، قَالَ: ثنا إِبْرَاهِيمُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ: ثنا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ جَابِرٍ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: " كَانَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ يُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , ثُمَّ يَرْجِعُ فَيَؤُمُّنَا فَأَخَّرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْعِشَاءَ ذَاتَ لَيْلَةٍ , فَصَلَّى مَعَهُ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ ثُمَّ جَاءَ لِيَؤُمَّنَا فَافْتَتَحَ سُورَةَ الْبَقَرَةِ فَلَمَّا رَأَى ذَلِكَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ تَنَحَّى نَاحِيَةً فَصَلَّى وَحْدَهُ. فَقُلْنَا: مَا لَكَ يَا فُلَانُ أَنَافَقْتَ؟ قَالَ: مَا نَافَقْتُ وَلَآتِيَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَأُخْبِرَنَّهُ. فَأَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ: إِنَّ مُعَاذًا يُصَلِّي مَعَكَ ثُمَّ يَرْجِعُ فَيَؤُمُّنَا , وَإِنَّكَ أَخَّرْتَ الْعِشَاءَ الْبَارِحَةَ فَصَلَّى مَعَكَ , ثُمَّ جَاءَ فَتَقَدَّمَ لِيَؤُمَّنَا فَافْتَتَحَ سُورَةَ الْبَقَرَةِ فَلَمَّا رَأَيْتُ ذَلِكَ تَنَحَّيْتُ فَصَلَّيْتُ وَحْدِي يَا رَسُولَ اللهِ , إِنَّمَا نَحْنُ أَصْحَابُ نَوَاضِحَ إِنَّمَا نَعْمَلُ بِأَجْزَائِنَا أَيْ بِأَعْضَائِنَا. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَفَتَّانٌ أَنْتَ يَا مُعَاذُ» مَرَّتَيْنِ «اقْرَأْ سُورَةَ كَذَا , اقْرَأْ سُورَةَ كَذَا , السُّوَرُ قِصَارٌ مِنَ الْمُفَصَّلِ لَا أَحَدَهَا» فَقُلْنَا لِعَمْرٍو: إِنَّ أَبَا الزُّبَيْرِ ثنا عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَهُ: «اقْرَأْ بِسُورَةِ وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى وَالشَّمْسِ وَضُحَاهَا , وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الْبُرُوجِ , وَالسَّمَاءِ وَالطَّارِقِ» فَقَالَ عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ وَهُوَ نَحْوُ هَذَا فَقَدْ أَنْكَرَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى مُعَاذٍ , تَثْقِيلَ قِرَاءَتِهِ بِهِمْ , سُورَةَ الْبَقَرَةِ , فَقَالَ لَهُ «أَفَتَّانٌ أَنْتَ يَا مُعَاذُ» وَأَمَرَهُ بِالسُّوَرِ الَّتِي ذَكَرْنَا مِنَ الْمُفَصَّلِ فَإِنْ كَانَتْ تِلْكَ الصَّلَاةُ هِيَ صَلَاةُ الْمَغْرِبِ فَقَدْ ضَادَّ هَذَا الْحَدِيثُ حَدِيثَ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَمَا ذَكَرْنَا مَعَهُ فِي أَوَّلِ هَذَا الْبَابِ. وَإِنْ كَانَتْ هِيَ صَلَاةُ الْعِشَاءِ الْآخِرَةِ فَكَرِهَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَقْرَأَ فِيهَا بِمَا ذَكَرْنَا مَعَ سِعَةِ وَقْتِهَا , فَإِنَّ صَلَاةَ الْمَغْرِبِ، مَعَ ضِيقِ وَقْتِهَا، أَحْرَى أَنْ يَكُونَ تِلْكَ الْقِرَاءَةُ فِيهَا مَكْرُوهَةً. وَقَدْ رُوِيَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيمَا كَانَ يَقْرَأُ بِهِ فِي صَلَاةِ الْعِشَاءِ الْآخِرَةِ , نَحْوٌ مِنْ هَذَا
