শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
২. নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ১১৬৯
সালাতের শুরুতে কোন পর্যন্ত হাত উত্তোলন করবে
১১৬৯। ফাহাদ ইব্ন সুলায়মান (রাহঃ) ......ওয়াইল ইবন হুজর (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি একবার নবী (ﷺ)-এর দরবারে উপস্থিত হলাম এবং তাঁকে দেখলাম, তিনি যখন তাকবীর বলতেন, রুকূ করতেন ও সিজ্দা করতেন তখন দুই কান পর্যন্ত হাত উঠাতেন। আর আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি (ওয়াইল রা) আরো কিছু উল্লেখ করলেন। তারপর পরের বছর তাঁর নিকট এলাম এবং তাঁদের (সাহাবীগণের) পরণে ছিল চাদর ও টুপি। তাঁরা তার ভিতর থেকেই হাত উঠাতেন। বর্ণনাকারী শরীক (রাহঃ) নিজের বুকের দিকে ইশারা করেছেন।
ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
সুতরাং ওয়াইল ইব্ন হুজর (রাযিঃ) তাঁর এই হাদীসে বলছেন যে, তাঁরা নিজেদের হাত কাঁধ পর্যন্ত এ জন্য উঠাতেন যে, তখন তাঁদের হাত ঐ সমস্ত কাপড়ের (চাদরের) ভিতরে থাকত। আরো বলছেন, যখন তাদের হাত কাপড়ের ভিতরে না থাকত, তখন তা কান পর্যন্ত উঠাতেন। তাই আমরা তাঁর পূর্ণ রিওয়ায়াতের উপর আমল করেছি। আমাদের মতে যখন শীতের কারণে হাত কাপড়ের ভিতরে থাকত তখন যতটুকু সম্ভব হাত উঠাতেন আর তা হল দুই কাঁধ বরাবর। আর যখন হাত খোলা অবস্থায় থাকত তখন কান বরাবর উঠাতেন। যেমনটি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমল করেছেন।
বস্তুত ইব্ন উমার (রাযিঃ)-এর হাদীসমূহ অনুরূপ হাদীস যাতে কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠানোর বিষয় উল্লেখ রয়েছে, সেইগুলোকে হাত খোলা থাকা অবস্থার উপর প্রয়োগ করা জায়িয হবে না, যেহেতু সম্ভাবনা রয়েছে তা কাপড়ের ভিতরে ছিল। ফলে বিষয়টি ওয়াইল ইভন হুজর (রাযিঃ)-এর হাদীসের পরিপন্থী সাব্যস্ত হবে এবং উভয় হাদীসের মধ্যে পরস্পরে বৈপরিত্য সৃষ্টি হবে। বরং আমরা উভয় হাদীস ঐকমত্যের উপর প্রয়োগ করার প্রয়াস পাব। তাই আমরা ইবন উমার (রাযিঃ)-এর হাদীসকে সেই অবস্থার উপর প্রয়োগ করব যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর হাত কাপড়ের ভিতরে থাকত। যা ওয়াইল ইবন হুজর (রাযিঃ) তাঁর হাদীসে উদ্ধৃত করেছেন। পক্ষান্তরে ওয়াইল (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে যা কিছু রিওয়ায়াত করেছেন তা প্রয়োগ করব সেই অবস্থার উপর যে, তিনি তা করেছেন শীত না থাকার অবস্থায়, অর্থাৎ দুই কান বরাবর হাত উত্তোলন করেছেন। সুতরাং এই মত গ্রহণ করা এবং এর পরিপন্থীকে পরিত্যাগ করা মুস্তাহাব (উত্তম) হবে।
আর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলী (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে যা কিছু আমরা রিওয়ায়াত করেছি সেটা সঠিক নয়। তা আমরা শীঘ্রই 'রুকুতে হাত উঠানো' শীর্ষক অনুচ্ছেদে বর্ণনা করব ইন্শা আল্লাহ্। এই সমস্ত হাদীসের সঠিক মর্ম নির্ধারণের দ্বারা সব্যস্ত হল যে, ওয়াইল (রাযিঃ) নবী (ﷺ) থেকে যা রিওয়ায়াত করেছেন তা এটাই যা আমরা পৃথক পৃথক বিস্তারিত বর্ণনা করেছি অর্থাৎ তিনি (ﷺ) যা শীতের অবস্থায় ও শীত না থাকা অবস্থায় করেছেন। আর এটাই হল ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ)ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত।
ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
সুতরাং ওয়াইল ইব্ন হুজর (রাযিঃ) তাঁর এই হাদীসে বলছেন যে, তাঁরা নিজেদের হাত কাঁধ পর্যন্ত এ জন্য উঠাতেন যে, তখন তাঁদের হাত ঐ সমস্ত কাপড়ের (চাদরের) ভিতরে থাকত। আরো বলছেন, যখন তাদের হাত কাপড়ের ভিতরে না থাকত, তখন তা কান পর্যন্ত উঠাতেন। তাই আমরা তাঁর পূর্ণ রিওয়ায়াতের উপর আমল করেছি। আমাদের মতে যখন শীতের কারণে হাত কাপড়ের ভিতরে থাকত তখন যতটুকু সম্ভব হাত উঠাতেন আর তা হল দুই কাঁধ বরাবর। আর যখন হাত খোলা অবস্থায় থাকত তখন কান বরাবর উঠাতেন। যেমনটি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমল করেছেন।
বস্তুত ইব্ন উমার (রাযিঃ)-এর হাদীসমূহ অনুরূপ হাদীস যাতে কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠানোর বিষয় উল্লেখ রয়েছে, সেইগুলোকে হাত খোলা থাকা অবস্থার উপর প্রয়োগ করা জায়িয হবে না, যেহেতু সম্ভাবনা রয়েছে তা কাপড়ের ভিতরে ছিল। ফলে বিষয়টি ওয়াইল ইভন হুজর (রাযিঃ)-এর হাদীসের পরিপন্থী সাব্যস্ত হবে এবং উভয় হাদীসের মধ্যে পরস্পরে বৈপরিত্য সৃষ্টি হবে। বরং আমরা উভয় হাদীস ঐকমত্যের উপর প্রয়োগ করার প্রয়াস পাব। তাই আমরা ইবন উমার (রাযিঃ)-এর হাদীসকে সেই অবস্থার উপর প্রয়োগ করব যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর হাত কাপড়ের ভিতরে থাকত। যা ওয়াইল ইবন হুজর (রাযিঃ) তাঁর হাদীসে উদ্ধৃত করেছেন। পক্ষান্তরে ওয়াইল (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে যা কিছু রিওয়ায়াত করেছেন তা প্রয়োগ করব সেই অবস্থার উপর যে, তিনি তা করেছেন শীত না থাকার অবস্থায়, অর্থাৎ দুই কান বরাবর হাত উত্তোলন করেছেন। সুতরাং এই মত গ্রহণ করা এবং এর পরিপন্থীকে পরিত্যাগ করা মুস্তাহাব (উত্তম) হবে।
আর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলী (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে যা কিছু আমরা রিওয়ায়াত করেছি সেটা সঠিক নয়। তা আমরা শীঘ্রই 'রুকুতে হাত উঠানো' শীর্ষক অনুচ্ছেদে বর্ণনা করব ইন্শা আল্লাহ্। এই সমস্ত হাদীসের সঠিক মর্ম নির্ধারণের দ্বারা সব্যস্ত হল যে, ওয়াইল (রাযিঃ) নবী (ﷺ) থেকে যা রিওয়ায়াত করেছেন তা এটাই যা আমরা পৃথক পৃথক বিস্তারিত বর্ণনা করেছি অর্থাৎ তিনি (ﷺ) যা শীতের অবস্থায় ও শীত না থাকা অবস্থায় করেছেন। আর এটাই হল ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ)ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত।
1169 - فَإِذَا فَهْدُ بْنُ سُلَيْمَانَ , قَدْ حَدَّثَنَا قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ الْأَصْبَهَانِيِّ قَالَ: أنا شَرِيكٌ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ , عَنْ أَبِيهِ , عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ: " أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , فَرَأَيْتُهُ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حِذَاءَ أُذُنَيْهِ إِذَا كَبَّرَ , وَإِذَا رَفَعَ , وَإِذَا سَجَدَ , فَذَكَرَ مِنْ هَذَا مَا شَاءَ اللهُ. قَالَ: ثُمَّ أَتَيْتُهُ مِنَ الْعَامِ الْمُقْبِلِ , وَعَلَيْهِمُ الْأَكْسِيَةُ وَالْبَرَانِسُ فَكَانُوا يَرْفَعُونَ أَيْدِيَهُمْ فِيهَا , وَأَشَارَ شَرِيكٌ إِلَى صَدْرِهِ «فَأَخْبَرَ وَائِلُ بْنُ حُجْرٍ فِي حَدِيثِهِ هَذَا أَنَّ رَفْعَهُمْ إِلَى مَنَاكِبِهِمْ , إِنَّمَا كَانَ لِأَنَّ أَيْدِيَهُمْ كَانَتْ حِينَئِذٍ فِي ثِيَابِهِمْ , وَأَخْبَرَ أَنَّهُمْ كَانُوا يَرْفَعُونَ إِذَا كَانَتْ أَيْدِيهِمْ لَيْسَتْ فِي ثِيَابِهِمْ , إِلَى حَذْوِ آذَانِهِمْ. فَأَعْمَلْنَا رِوَايَتَهُ كُلَّهَا فَجَعَلْنَا الرَّفْعَ إِذَا كَانَتِ الْيَدَانِ فِي الثِّيَابِ لِعِلَّةِ الْبَرْدِ إِلَى مُنْتَهَى مَا يُسْتَطَاعُ الرَّفْعُ إِلَيْهِ , وَهُوَ الْمَنْكِبَانِ. وَإِذَا كَانَتَا بَادِيَتَيْنِ , رَفَعَهُمَا إِلَى الْأُذُنَيْنِ , كَمَا فَعَلَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَلَمْ يَجُزْ أَنْ يَجْعَلَ حَدِيثَ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا وَمَا أَشْبَهَهُ , الَّذِي فِيهِ ذِكْرُ رَفْعِ الْيَدَيْنِ إِلَى الْمَنْكِبَيْنِ كَانَ ذَلِكَ وَالْيَدَانِ بَادِيَتَانِ. إِذَا كَانَ قَدْ يَجُوزُ أَنْ تَكُونَا , كَانَتَا فِي الثِّيَابِ , فَيَكُونُ ذَلِكَ مُخَالِفًا , لِمَا رَوَى وَائِلُ بْنُ حُجْرٍ , فَيَتَضَادَّ الْحَدِيثَانِ. وَلَكِنَّا نَحْمِلُهُمَا عَلَى الِاتِّفَاقِ , فَنَجْعَلُ حَدِيثَ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا , عَلَى أَنَّ ذَلِكَ كَانَ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَدَاهُ فِي ثَوْبِهِ , عَلَى مَا حَكَاهُ وَائِلٌ فِي حَدِيثِهِ. وَنَجْعَلُ مَا رَوَى وَائِلٌ , عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ فَعَلَهُ , فِي غَيْرِ حَالِ الْبَرْدِ , مِنْ رَفْعِ يَدَيْهِ إِلَى أُذُنَيْهِ فَيُسْتَحَبُّ الْقَوْلُ بِهِ وَتَرْكُ خِلَافِهِ. وَأَمَّا مَا رَوَيْنَاهُ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ذَلِكَ , فَهُوَ خَطَأٌ , وَسَنُبَيِّنُ ذَلِكَ فِي» بَابِ رَفْعِ الْيَدَيْنِ فِي الرُّكُوعِ إِنْ شَاءَ اللهُ تَعَالَى. فَثَبَتَ بِتَصْحِيحِ هَذِهِ الْآثَارِ , مَا رَوَى وَائِلٌ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى مَا فَصَّلْنَا , مِمَّا فَعَلَ فِي حَالِ الْبَرْدِ , وَفِي غَيْرِ حَالِ الْبَرْدِ. وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ , رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى
