শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
২. নামাযের অধ্যায়
হাদীস নং: ৮৭৮
আযান শুনে যা বলা মুস্তাহাব।
৮৭৮। রবী' আল-জীবী (রাহঃ) .....আব্দুল্লাহ্ ইবন আমর ইবন 'আস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সা:)কে বলতে শুনেছেন : “তোমরা যখন মুয়াযযিন কে (আযান দিতে) শুনবে, তখন সে যা বলবে তোমরাও তা বলবে। তারপর আমার প্রতি দরূদ প্রেরণ করবে। কেননা যে ব্যক্তি আমার উপর (একবার) দরূদ পাঠ করে, আল্লাহ্ তা'আলা এজন্য তার উপর দশবার রহমত অবতীর্ণ করেন। এরপর আল্লাহ তা'আলার নিকট আমার জন্য ওয়াসীলা'র প্রার্থনা করবে, আর তা হচ্ছে জান্নাতের একটি মঞ্জিল (স্থান), যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে একজন ব্যতীত আর কেউ এর যোগ্য হবে না। আমি আশা পোষণ করছি, সে বান্দা আমি-ই হব। সুতরাং যে ব্যক্তি আমার জন্য আল্লাহর নিকট ‘ওয়াসীলা'র প্রার্থনা করবে তার জন্য (আমার) শাফায়াত বৈধ হয়ে যাবে।
878 - حَدَّثَنَا رَبِيعٌ الْجِيزِيُّ، قَالَ: ثنا أَبُو زُرْعَةَ، قَالَ: أنا حَيْوَةُ، قَالَ: أنا كَعْبُ بْنُ عَلْقَمَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ جُبَيْرٍ، مَوْلَى نَافِعِ بْنِ عَمْرٍو الْقُرَشِيِّ يَقُولُ إِنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، يَقُولُ: إِنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ , ثُمَّ صَلُّوا عَلَيَّ فَإِنَّهُ مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلَاةً صَلَّى الله عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا , ثُمَّ سَلُوا اللهَ تَعَالَى لِي الْوَسِيلَةَ , فَإِنَّهَا مَنْزِلٌ فِي الْجَنَّةِ لَا يَنْبَغِي لِأَحَدٍ إِلَّا لِعَبْدٍ مِنْ عِبَادِ اللهِ , وَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَنَا هُوَ , فَمَنْ سَأَلَ اللهَ لِي الْوَسِيلَةَ , حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, মুআজ্জিন আযানের মধ্যে যে সকল শব্দ বলে থাকে আযানের জবাবেও সে সকল শব্দ বলে জবাব দেয়া সুন্নাত। অবশ্য মুসলিম শরীফের ৭৩৬ নং হাদীসে বর্ণিত আছে যে, হযরত উমার রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, মুআজ্জিন যখন حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ এবং حَىَّ عَلى الْفَلَاحِ বলেছেন তার জবাবে তিনি لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِالله বলেছেন। সুতরাং এ হাদীসে বর্ণিত শব্দ দ্বারাও আযানের জবাব দেয়া যেতে পারে। আবার পূর্ববর্ণিত হাদীস এবং ঐ অর্থে বর্ণিত আবু দাউদ: ৫২৪ নং হাদীস অনুযায়ী حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ এবং حَىَّ عَلى الْفَلَاحِ এর জবাবে উক্ত শব্দ দুটিও ব্যবহার করা যেতে পারে। মুসতাদরাকে হাকেম-২০০৪, আদ-দুআ লিততবারানী-৪৫৮ এবং ইবনুছ্ছুন্নী সংকলিত আমালুল ইয়াওমি ওয়াল্লাইলা কিতাবের-৯৮ নং হাদীসে স্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে যে, মুআজ্জিন حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ এবং حَىَّ عَلى الْفَلَاحِ বললে তার জবাবে তোমরা حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ এবং حَىَّ عَلى الْفَلَاحِ বলবে। এসকল হাদীস থেকে যে দুই প্রকার জবাব প্রমাণিত হয় হানাফী মাযহাবেও সে আমল গ্রহণ করা হয়েছে। (শামী: ১/৩৯৭)
এ হাদীসের আলোকে আরো বলা যেতে পারে যে, মুআজ্জিন যখন الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ বলবে তখন শ্রোতারাও অনুরূপ বলবে। অবশ্য বিজ্ঞ উলামায়ে কিরাম এ ক্ষেত্রে ভিন্ন জবাবের কথাও বলেছেন। ইমাম নববী রহ. বলেন قَالَ سَامِعُهُ صَدَقْتَ وَبَرَرْتَ অর্থাৎ মুআজ্জিন যখন خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلَاةُ বলবে তখন শ্রোতা صَدَقْتَ وَبَرَرْتَ বলবে। (আল্ মিনহাজ-৪/৮৮, দারম্ন এহইয়াইত তুরাস, বৈরম্নত থেকে প্রকাশিত) خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلَاةُ এর জবাবে صَدَقْتَ وَبَرَرْتَ বলাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৩৯৭)
এ হাদীসের আলোকে আরো বলা যেতে পারে যে, মুআজ্জিন যখন الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ বলবে তখন শ্রোতারাও অনুরূপ বলবে। অবশ্য বিজ্ঞ উলামায়ে কিরাম এ ক্ষেত্রে ভিন্ন জবাবের কথাও বলেছেন। ইমাম নববী রহ. বলেন قَالَ سَامِعُهُ صَدَقْتَ وَبَرَرْتَ অর্থাৎ মুআজ্জিন যখন خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلَاةُ বলবে তখন শ্রোতা صَدَقْتَ وَبَرَرْتَ বলবে। (আল্ মিনহাজ-৪/৮৮, দারম্ন এহইয়াইত তুরাস, বৈরম্নত থেকে প্রকাশিত) خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلَاةُ এর জবাবে صَدَقْتَ وَبَرَرْتَ বলাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৩৯৭)
