শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

২. নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ৮৩৭
ইকামতের পদ্ধতি
৮৩৭। মুহাম্মাদ ইব্ন খুযায়মা (রাহঃ)..... হাম্মাদ ইব্ন ইবরাহীম (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, ছাওবান (রাযিঃ) আযান (এর বাক্যগুলো) দুই দুইবার করে এবং ইকামত (এর বাক্যগুলো) দুই দুইবার করে বলতেন।
837 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ، قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ، قَالَ: ثنا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: «كَانَ ثَوْبَانُ يُؤَذِّنُ مَثْنَى , وَيُقِيمُ مَثْنَى»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

ইকামত আযানের মতই। কেবল মোট বাক্য সংখ্যায় কিছু পার্থক্য আছে। ইকামতের মোটবাক্য হল ১৭টি। আযানে উচ্চারিত ১৫ বাক্যের সঙ্গে অতিরিক্ত দুই বার 'কাদ কামাতিস সালাহ' বলতে হবে। এই অতিরিক্ত বাক্য 'হাইয়া আলাল ফালাহ' বলার পর বলা হবে এটিই ইমাম আবূ হানীফার অভিমত। ইমাম শাফিঈর মতে মোট বাক্য ১১টি আর ইমাম মালিকের মতে মোটকথা ১০টি। তাঁরা বলেন, ইকামত আযানেরই অনুরূপ। তবে ইকামতের মধ্যে প্রথমে ও শেষে অবস্থিত তাকবীর (আল্লাহু আকবর) দুই বার করে বলা হবে। আর অন্যান্য বাক্য একবার করে বলা হবে। 'কাদ কামাতিস সালাহ' বাক্য ইমাম শাফিঈর মতে বলা হবে দুই বার। তাই মোট সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১১টি আর ইমাম মালিকের মতে বলা হবে একবার। তাই তাঁর কাছে মোট সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১০টি "

এ ক্ষেত্রে হাদীসের বক্তব্য নিম্নরূপ :

عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى قَالَ حَدَّثَنَا أَصْحَابُ رَسُول الله ﷺ أن عبد الله بن زيد الأَنْصَارِي جَاءَ إِلى النَّبِي ﷺ فَقَالَ يَا رَسُولَ الله رَأَيْتُ في المنام كَأَنَّ رَجُلاً قَامَ وَعَلَيْهِ بُرْدَانِ أَخضرَانِ عَلَى حَدِيةٍ حَائِط فَاذن مثنى وأقام مثنى وقعد قعدة قال فسمع ذلكَ بِلال فَاذَان مثنى مثنى وأقام مثنى مثنى وقعد قعدة . أخرجه الامام ابن أبي شيبه في مصنفه تحت باب ما جاء في الاذان والاقامة كيف هو ، وصححه ابن دقيق العيد وقال ابن حزم هذا اسناد في غاية الصحة ، وصححه ابن الجوزي

হযরত আবদুর রহমান ইবন আবু লাইলা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদেরকে ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সাহাবীগণ বর্ণনা করেছেন যে, আনসারী সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবন যায়দ ইবন আবদ রাব্বিহী (রা) মহানবী (সা)-এর দরবারে এসে বললেন, আমি স্বপ্নে দেখেছি যেন এক ব্যক্তি এক জোড়া সবুজ পোশাক পরিহিত দেওয়ালের ছাদে দাঁড়িয়ে আছে অতঃপর সে আযান দিল বাক্যগুলো দুই বার দুই বার করে। তারপর ইকামত দিল দুই বার দুই বার করে এবং সামান্য বসল। তিনি বলেন, অতঃপর হযরত বিলাল কথাটি শুনলেন । তিনি সে অনুসারে আযান দিলেন দুই বার, দুই বার করে। অতঃপর ইকামত দিলেন দুই বার দুই বার করে এবং সামান্য বসলেন ।

এই হাদীস ইমাম ইবন আবু শায়বা উদ্ধৃত করেছেন। আল্লামা হাকিম জামালুদ্দীন যায়লাঈ বলেন, আল্লামা তাকী উদ্দীন ইবন দাকীকুল ঈদ হাদীসটিকে বিশুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন। আল্লামা ইবন হাযাম যাহেরীও এটিকে উচ্চমানের বিশুদ্ধ বলেছেন। আল্লামা ইবনুল জাওযী হাদীসখানার বিশুদ্ধতা দেখে অবাক হয়ে যান এবং ‘আত তাহকীক' গ্রন্থে এ হাদীসের কারণে ইকামত জোড়া জোড়া হওয়ার প্রতি নিজের অভিমত প্রকাশ করেন। কাজেই হাদীসখানার গ্রহণযোগ্যতা সকল প্রশ্নের উর্ধে। এটি প্রমাণ করছে যে, ইকামতের বাক্যগুলো আযানের ন্যায় জোড়া জোড়া হবে। প্রতিটি বাক্য দুই বার দুই বার করে বলা হবে।

من أبي محذورة رضي الله عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ عَلَمَنِي رَسُولَ الله ﷺ الإقامة سبع عشَرَةً كَلِمَةٍ وَجَاءَ تَفْضِيلاً في رواية اللهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهَ أَكْبَرُ ، أَشْهَدُ أَنْ لا إِلَهَ إِلَّا اللَّهَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهَ ، أَشْهَدُ أَنَّ محَمَّدًا رَسُولُ اللَّهَ أَشْهَدُ َأنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ الله ، حَيَّ عَلَى الصَّلوة حَى على الصلوةِ ، حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ حَى عَلَى الْفَلَاحِ ، قَدْ قَامَتِ الصَّلوة قَدْ قَامَتِ الصَّلوةِ اللَّهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لا اله الا الله أخرجه الامام الطحاوى فى كتابه ، تحت باب الاقامة كيف هي الحديث صحيح

হযরত আবূ মাহযূরা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) আমাকে ইকামত শিখিয়েছেন সতের বাক্য । অন্য বর্ণনায় তিনি তা বিস্তারিত আকারে এভাবে বলেন, আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর, আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, হাইয়া আলাস সালাহ হাইয়া আলাস সালাহ; হাইয়া আলাল ফালাহ হাইয়াত আলাল ফালাহ, কাদ কামাতিস সালাহ কাদ কামাতিস সালাহ, আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবার,লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ।

عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ زَيْدٍ أَنَّ بِلاَلاً كَانَ يُثْنَى الْأَذانَ وَيُثْنَى الْإِقَامَةَ حَتَّى مَات وَعَنِ عَلَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ الْآذَانُ مَثْنَى مَثْنَى وَالْإِقَامَةُ مثنی مثنی رواه البيهقى ، وروى الطحاوي عن مَعْلَمةَ ابْنِ الْأَكُوْعِ أَنَّهُ كَانَ يُثْنَى الْآذَانَ وَالْاقَامَةَ

হযরত আসওয়াদ ইবন যায়দ থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলতেন, আযান হবে দুই দুই বাক্য সম্বলিত এবং ইকামতও হবে দুই দুই বাক্য সম্বলিত। ইমাম তাহাভী হযরত সালমা ইবনুল আয়া (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আযান ও ইকামত দুই দুই বাক্য উচ্চারণ করে দিতেন।

উপরোক্ত হাদীসগুলো থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইকামতের বাক্য অবিকল আযানেরই মত হবে এবং এগুলো হবে জোড়া জোড়া। পার্থক্য কেবল একটু যে, ইকামতের মধ্যে অতিরিক্ত দুইবার “কাদ কামাতিস সালাহ' বলতে হয়। সাহাবী হযরত আবূ মাহফূরা ইকামতকে যেরূপ বিশুদ্ধভাবে বর্ণনা করেছেন। তাতে আর কোন অস্পষ্টতা বাকি নেই। বাক্যগুলো হিসাব করলে দেখা যায় এগুলোর সংখ্যা ১৭টি। এই নিরিখেই ইমাম আযম আবূ হানীফা (র) ইকামতের বাক্য ১৭টি বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন । অবশ্য কয়েকটি হাদীসে কিছু ব্যতিক্রম বক্তব্যও পাওয়া যায়। যেমন,

عن أنس بن مالك رضي الله عنه قال أمر بلال أن يشفع الأذان ويوتر الإقامة، أخرجه الامام الترمذي وقال حديث انس حديث حسن صحيح

হযরত আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত বিলাল (রা)-কে আদেশ করা হয়েছে তিনি যেন আযান দেন জোড় সংখ্যক আর ইকামত দেন বেজোড় সংখ্যক

এ হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, আযান হবে জোড়া জোড়া বাক্যে অর্থাৎ প্রতিটি বাক্য দুই বার দুই বার করে। আর ইকামত হবে বেজোড় বাক্যে অর্থাৎ প্রতিটি হবে এক বার এক বার করে। এমন কি 'কাদ কামাতিস্ সালাত' বাক্যটিও বলা হবে মাত্র একবার। এ হিসাব মতে ইকামতের মোট বাক্য দাঁড়ায় ১০টি। এই নিরিখেই ইমাম মালিক ইকামতের বাক্য ১০টি বলে অভিমত প্রকাশ করেন।

আরো কিছু ব্যতিক্রম বক্তব্য পাওয়া যায় নিম্নোক্ত হাদীসে । যেমনঃ

عن أنس رضي الله عَنْهُ قَالَ أمر بلال أن يُشفَع الآذَانَ وَيُوتِرَ الإقامة زاد يحي في حَدِيثِهِ عَنِ ابْنِ عَلِيَّة فَحَدَّثَتُ بِهِ أَيُّوبَ فَقَالَ إِلا الإقامة أخرجه الامام مسلم في صحيحه تحت باب الامر يشفع الاذان وايتاء الاقامة رقمه ٨٤٨. و أيضا أخرجه أبو داود في سننه

হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত বিলাল (রা) দেন বেজোড় বাক্যে। রাবী ইয়াহইয়া তার বর্ণনায় ইবন আলিয়া সূত্রে বলেন, অতঃপর আমি হাদীসটি আইয়ুবকে বর্ণনা করলে তিনি বলেন, তবে ইকামত অর্থাৎ 'কাদ কামাতিস সালাহ' বাক্যটি ব্যতীত।

عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ إِنَّمَا كَانَ الْأَذَانُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ الله مرتين والاقامة مرة مرة غير أَنَّهُ يَقُولُ قَدْ قَامَتِ الصَّلوة قد قامت الصلوة رواه أحمد أبو داؤد والنسائى واسناده صحيح كما في اثار السنن ص : 51 ، تحت باب في افراد الاقامة

হযরত ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা)-এর যুগে আযান ছিল দুই বার করে আর ইকামত ছিল এক বার একবার। তবে তিনি বলতেন যে, ইকামতে 'কাদ কামাতিস সালাত' দুই বার বলা হবে।"

উপরোক্ত হাদীসদ্বয় থেকে বুঝা যায় যে, ইকামতের বাক্যগুলো একটি করে হবে। তবে 'কাদ কামাতিস সালাত' বাক্য হবে দুইটি। এই হিসাব মতে মোট বাক্য সংখ্যা দাঁড়ায় ১১টি। এই নিরিখেই ইমাম শাফিঈ ইকামতের বাক্য ১১টি বলে অভিমত দেন।

বিশেষজ্ঞ আলিমগণ বলেন, উপরোক্ত হাদীসগুলো আযান ও ইকামত প্রসঙ্গে বর্ণিত হাদীসের স্বাভাবিক ধারা থেকে ব্যতিক্রম। কাজেই এগুলোর ভিন্ন ব্যাখ্যা রয়েছে। যেমন হাদীসগুলোতে বলা আছে আযানে شفع কর আর ইকামতে ايتار কর । এখানে شفع অর্থ দুই বাক্য বলা নয় অনুরূপ ايتار অর্থ এক বাক্য বলা নয়। বরং অর্থ হল বলার সময়ে ধ্বনির মধ্যে এমন অবস্থা সৃষ্টি হওয়া যে দু'টি বাক্যকে এক শ্বাসে একত্রে বলা হলে হবে شفع এর পৃথক পৃথক শ্বাসে পৃথত পৃথক বলা হলে হবে ايتار। ইকামতে এভাবে দুই বাক্য এক শ্বাসে একত্রে বলাকে হদর বল হয়। হৃদর ইকামতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যেভাবে আযানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হল ارسل এই দুই বাক্য এক শ্বাসে বলা হচ্ছে বলে এটিকে এক ধরা হচ্ছে। যেমন ইমাম শাফিঈও ইকামতে প্রথমে আল্লাহু আকবার বাক্যটি দুইবার একত্রে এক শ্বাসে বলাকে ইতার তথা এক বার গণ্য করেছেন। অনুরূপ দেখা যায় যে, হাদীসের বাক্যাংশ الا الاقامة এর ব্যাখ্যায় ইমাম শাফিঈ (র) বলেছেন যে, 'কাদকামাতিস সালাহ' দুই বার পৃথক শ্বাসে বলা হবে। বুঝা গেল আযান ইকামতে شفع এর অর্থ হল শ্বাস বিষয় নয়। তদ্রূপ ايتار অর্থ হল শ্বাস একটি ব্যবহার করা। ব্যতিক্রমী হাদীসগুলোকে এ ব্যাখ্যার আওতায় আনা হলে সবগুলির মধ্যে সুন্দর সমন্বয় স্থাপিত হয়ে যায়।

আরো ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, যে সব হাদীসে ইকামতের বাক্য এক বার এক বার বলার কথা উল্লেখ আছে সেগুলো মূলত لبيان الجواز অর্থাৎ এই পদ্ধতির জায়িয আছে এটা নির্দেশ করা উদ্দেশ্য মাত্র। কিংবা কাউকে তালীম দেওয়ার উদ্দেশ্য এক বার এক বার বলে শুধু চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। কাজেই এটি ইকামতের মূল হাদীসের বিপরীতে বিবেচনা করা হবে না।

হযরত ইবন উমর (রা) বর্ণিত হাদীসে আছে, হযরত বিলালকে ইকামত এক এক বাক্যে দেওয়ার আদেশ করা হয়েছে। অথচ হযরত বিলাল (রা) থেকে ইকামতের যেই তাফসীল বর্ণিত আছে তাতে দেখা বাক্যগুলো দুই বার দুইবার। উসূলে হাদীসের নিয়ম অনুসারে ইজমাল ও তাফসীলের মধ্যে যখন বিরোধ দেখা দেয় তখন তাফসীল প্রাধান্য পায়। এ হিসাবে দুই বাক্যের অভিমতই প্রাধান্য পাবে।
ইমাম আবূ জাফর তাহাড়ী (র) বলেন, হাদীসে ইকামত একবার করে দেওয়ার কথা আছে। তবে এ হুকুম হল পূর্বেকার । পরবর্তী সময়ে সেটি রহিত হয়ে যায় এবং চূড়ান্তভাবে যা স্থির হয় তা হলো দুইবার করে বলা। এ কারণেই হযরত বিলাল (রা) মহানবী (সা)-এর ওফাতের পরেও যে ইকামত দিতেন তাতে প্রতিটি বাক্য ছিল দুইবার করে। আল্লামা শাব্বীর আহমদ উসমানী (র) স্পষ্ট লিখেছেন,

ان اقامة بلال كانت مثنى مثنى فى أخر الامر فالاقرب ان يقال ان عادة الافراد كانت في الابتداء حين امر به دعادة التثنية بعد ذلك

মাওলানা আবুল হাসান চাটগামী লিখেছেন,

و حاصل الخلاف في بحث الاذان والاقامة ان مالكًا أخذ بما رأى عليه أهل المدينة أى الاقتصار على التكبير مرتين وعلى الكلمة الاقامة مرة واحدة، والشافعي أخذ باذان أبي محذورة واقامة بلال ، وأبو حنيفة باذان بلال واقامة أبي محذورة كلهم اجتهدوا فى متابعة السنة بقدر وسعهم نور الله مرقدهم ، كما في البذل ج ١ ، ص ٢٨٤ وفتح الملهم ج ٢ ص ٣ وغير ذلك

বস্তুত হাদীসের মধ্যে ইকামতের - تشفيع ও ايتار উভয় প্রমাণিত আছে। এ জন্য উভয় পদ্ধতি জায়িয তা নিশ্চিত। তবে বিবেচনা করতে হবে যে, পদ্ধতিদ্বয়ের কোনটি অগ্রাধিকার যোগ্য? তাতে হানাফী ফকীহগণ ১৭ বাক্যের রিওয়ায়াতের প্রাধান্য দিয়েছেন। কারণ এটি হযরত আবদুল্লাহ ইবন যায়দের হাদীসে আছে। আর আযান ইকামতের তাঁর হাদীসই মূল সূত্র। দ্বিতীয়ত, আল্লাহ্ রাসূলের প্রধান মু’আনি হযরত বিলাল (রা)-এর ইকামত শেষ পর্যন্তও ছিল ১৭ বাক্য বিশিষ্ট—যা হযরত সুওয়াইদ ইবন গাফালা (রা) বর্ণিত হাদীস প্রমাণ করছে। তৃতীয়ত, হযরত বিলালের ইকামত বিষয়ে রিওয়ায়াতের বিপরীমুখী বক্তব্য থাকায় বিষয়টি অপর বিশিষ্ট মু'আযযিন হযরত আবু মাহযূরার ইকামতের সাথে মিলিয়ে দেখলে ১৭ বাক্যের প্রাধান্যই ফুটে উঠে। উল্লেখ্য হযরত আবূ মাহযূরা (রা) থেকে ইকামত এক বাক্যে প্রদানের যে রিওয়ায়াত পাওয়া যায় সেটি নেহায়েত দুর্বল। তাই এটি বিবেচনায় আনা হবে না। হযরত বিলাল (রা) থেকে ইকামতের বাক্য ১৭টি বিধায় এটিকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে । এটাই হানাফী ফুকাহা ও ইমাম আযম আবূ হানীফার অভিমত।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান