শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়

হাদীস নং: ৬১৮
জুতার উপর মাসাহ্‌ করা।
৬১৮। ইবন আবী দাউদ (রাহঃ)..... নাফি (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, ইবন উমার (রাযিঃ) যখন উযূ করতেন তখন তাঁর চপ্পল পায়েই থাকত এবং হাতের দ্বারা পায়ের উপরিভাগ মাসেহ করতেন। আর বলতেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এমনটি করতেন।

ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর বিশ্লেষণ

বস্তুত ইবন উমার (রাযিঃ) বলছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কখনও তাঁর চপ্পলে মাসেহ করতেন, কখনও পা মাসেহ করতেন। এতে সম্ভবত তিনি পায়ে যে মাসেহ করেছেন তা ছিল ফরয আর চপ্পলে মাসেহ ছিল অতিরিক্ত। অতএব আবু আউস (রাযিঃ) এর হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে চপ্পলের উপর মাসেহ করার বিষয় উল্লিখিত আছে, এতে আবু মুসা (রাযিঃ) ও মুগীরা (রাযিঃ) যা বর্ণনা করেছেন তারও সম্ভাবনা আছে এবং ইবন উমার (রাযিঃ) যা বলেছেন তারও সম্ভাবনা আছে। যদি সেই সম্ভাবনা হয় যেমনটি আবু মুসা (রাযিঃ) ও মুগীরা (রাযিঃ) বলেছেন, তাহলে আমাদের অভিমতও তা-ই। যেহেতু আমরা কাপড়ের মোজায় মাসেহ করাতে কোন অসুবিধা মনে করিনা, যদি তা মোটা হয়। ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত এটাই। ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ)-এর অভিমত কাপড়ের মোজায় মাসেহ্ জায়িয নয় যতক্ষণ না তা মোটা হয় এবং তাতে উপরে ও নীচে চামড়াযুক্ত হয়। তখন তা (চামড়ার) মোজার ন্যায় হবে। যদি ইবন উমার (রাযিঃ) যা বলেছেন তেমনটি হয় তাহলে তাতে তো পায়ে মাসেহ করার বিষয় সাব্যস্ত হয়। এ বিষয়ে এর বিরোধী রিওয়ায়াতের ভিত্তিতে এর রহিত হওয়ার বিষয় পা (ধৌত করা) ফরয হওয়ার বর্ণনা সাব্যস্ত হয়েছে। তো-আউস ইব্‌ন আবী আউস (রাযিঃ)-এর হাদীসের যে মর্মই হউক না কেন, আবু মুসা (রাযিঃ) ও মুগীরা (রাযিঃ) যে মর্ম বর্ণনা করেছেন তাই উদ্দেশ্য হউক অথবা ইবন উমার (রাযিঃ) কর্তৃক বর্ণিত সম্ভাবনাই উদ্দেশ্য হউক (উভয় অবস্থায়) চপ্পলের উপর মাসেহ করার বৈধতার কোন প্রমাণ নেই।

ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিত্তিক দলীল
যখন আউস (রাযিঃ)-এর হাদীসে সেই মর্মের সম্ভাবনা বিদ্যমান যা আমরা উল্লেখ করেছি। তাতে চপ্পলের উপর মাসেহ করার বৈধতার কোন প্রমাণ নেই। তাই আমরা বিষয়টি যুক্তির নিরিখে অনুসন্ধান করার প্রয়াস পাব, যেন আমরা এর বিধান সম্পর্কে অবহিত হতে পারি। আমরা কেউ মোজাকে দেখছি, যাতে মাসেহ্ করা জায়িয। যখন তা ছিঁড়ে যায় যাতে করে উভয় পা কিংবা উভয় পায়ের অধিকাংশ বেরিয়ে যায় তাহলে সমস্ত আলিমদের ঐকমত্য এই যে, তাতে মাসেহ করা যাবে না। সুতরাং মোজার উপর মাসেহ্ করা সেই অবস্থায় জায়িয যখন তাতে পা অদৃশ্য থাকবে। যদি পা অদৃশ্য না থাকে তাহলে মাসেহ বাতিল হয়ে যাবে। আর চপ্পল দ্বারা পা অদৃশ্য হয় না। সুতরাং সাব্যস্ত হল যে, তা (চপ্পল) সেই মোজার অনুরূপ যা পা-কে অদৃশ্য করে না।
618 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا أَحْمَدُ بْنُ الْحُسَيْنِ اللِّهْبِيُّ، قَالَ: ثنا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ نَافِعٍ: أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، كَانَ إِذَا تَوَضَّأَ وَنَعْلَاهُ فِي قَدَمَيْهِ , مَسَحَ عَلَى ظُهُورِ قَدَمَيْهِ بِيَدَيْهِ وَيَقُولُ: «كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصْنَعُ هَكَذَا» فَأَخْبَرَ ابْنُ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ كَانَ فِي وَقْتٍ مَا كَانَ يَمْسَحُ عَلَى نَعْلَيْهِ , يَمْسَحُ عَلَى قَدَمَيْهِ فَقَدْ يَحْتَمِلُ أَنْ يَكُونَ مَا مَسَحَ عَلَى قَدَمَيْهِ , هُوَ الْفَرْضُ , وَمَا مَسَحَ عَلَى نَعْلَيْهِ كَانَ فَضْلًا. فَحَدِيثُ أَبِي أَوْسٍ , يَحْتَمِلُ عِنْدَنَا مَا ذَكَرَ فِيهِ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ مَسْحِهِ عَلَى نَعْلَيْهِ , أَنْ يَكُونَ كَمَا قَالَ أَبُو مُوسَى , وَالْمُغِيرَةُ , أَوْ كَمَا قَالَ ابْنُ عُمَرَ. فَإِنْ كَانَ كَمَا قَالَ أَبُو مُوسَى وَالْمُغِيرَةُ , فَإِنَّا نَقُولُ بِذَلِكَ , لِأَنَّا لَا نَرَى بَأْسًا بِالْمَسْحِ عَلَى الْجَوْرَبَيْنِ , إِذَا كَانَا صَفِيقَيْنِ قَدْ قَالَ ذَلِكَ أَبُو يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٌ. وَأَمَّا أَبُو حَنِيفَةَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالَى , فَإِنَّهُ كَانَ لَا يَرَى ذَلِكَ حَتَّى يَكُونَا صَفِيقَيْنِ , وَيَكُونَا مُجَلَّدَيْنِ , فَيَكُونَانِ كَالْخُفَّيْنِ. وَإِنْ كَانَ كَمَا قَالَ ابْنُ عُمَرَ , فَإِنَّ فِي ذَلِكَ إِثْبَاتَ الْمَسْحِ عَلَى الْقَدَمَيْنِ , فَقَدْ ثَبَتَ ذَلِكَ , وَمَا عَارَضَهُ وَمَا نَسَخَهُ فِي بَابِ فَرْضِ الْقَدَمَيْنِ. فَعَلَى أَيِّ الْمَعْنَيَيْنِ كَانَ وَجْهُ حَدِيثِ أَوْسِ بْنِ أَبِي أَوْسٍ , مِنْ مَعْنَى حَدِيثِ أَبِي مُوسَى , وَالْمُغِيرَةِ , وَمِنْ مَعْنَى حَدِيثِ ابْنِ عُمَرَ , فَلَيْسَ فِي ذَلِكَ مَا يَدُلُّ عَلَى جَوَازِ الْمَسْحِ عَلَى النَّعْلَيْنِ. فَلَمَّا احْتَمَلَ حَدِيثُ أَوْسٍ مَا ذَكَرْنَا , وَلَمْ يَكُنْ فِيهِ حُجَّةٌ فِي جَوَازِ الْمَسْحِ عَلَى النَّعْلَيْنِ , الْتَمَسْنَا ذَلِكَ مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ , لِنَعْلَمَ كَيْفَ حُكْمُهُ؟ فَرَأَيْنَا الْخُفَّيْنِ اللَّذَيْنِ قَدْ جَوَّزَ الْمَسْحَ عَلَيْهِمَا إِذَا تَخَرَّقَا , حَتَّى بَدَتِ الْقَدَمَانِ مِنْهُمَا أَوْ أَكْثَرُ الْقَدَمَيْنِ , فَكُلٌّ قَدْ أَجْمَعَ أَنَّهُ لَا يُمْسَحُ عَلَيْهِمَا. فَلَمَّا كَانَ الْمَسْحُ عَلَى الْخُفَّيْنِ إِنَّمَا يَجُوزُ إِذَا غَيَّبَا الْقَدَمَيْنِ , وَيَبْطُلُ ذَلِكَ إِذَا لَمْ يُغَيِّبَا الْقَدَمَيْنِ , وَكَانَتِ النَّعْلَانِ غَيْرَ مُغَيَّبَيْنِ لِلْقَدَمَيْنِ , ثَبَتَ أَنَّهُمَا كَالْخُفَّيْنِ اللَّذَيْنِ لَا يُغَيِّبَانِ الْقَدَمَيْنِ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
ত্বহাবী শরীফ - হাদীস নং ৬১৮ | মুসলিম বাংলা