শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়
হাদীস নং: ৪২৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪২৭
আগুনে পাকানো খাদ্যে ওযু ওয়াজীব হয় কিনা ?
৪২৬.মুহাম্মাদ ইব্ন খুযায়মা (র.) .... জা'ফর (র.)-এর পিতামহ জাবির ইব্ন সামুরা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন যে, একবার জনৈক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহ্ রাসূল! আমি কি বকরীর গোশ্ত (আহারের কারণে) উযূ করব? তিনি বললেনঃ তোমার ইচ্ছা হলে কর, আর ইচ্ছা না হলে, কর না। রাবী বলেন, সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! উটের গোশ্ত (আহারের কারণে) উযূ করব? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
৪২৭. মুহাম্মাদ ইব্ন খুযায়মা (র.) ......... জাবির ইব্ন সামুরা (রা.) সূত্রে নবী থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
প্রতিপক্ষের দলীল
পক্ষান্তরে অপরাপর আলিমগণ এ বিষয়ে তাঁদের বিরোধিতা করে বলেছেনঃ এর কোনটি আহারের কারণে সালাতের উযূ করা ওয়াজিব হবে না। এ বিষয়ে তাঁদের দলীল হলঃ সম্ভবত উযূর দ্বারা নবী -এর উদ্দেশ্য হচ্ছে হাত ধৌত করা। কিছু সংখ্যক আলিম যে উটের গোশ্ত এবং বকরীর গোশতের মাঝে পার্থক্য করেছেন তা এজন্য যে, উটের গোশ্ত মোটা এবং বেশী চর্বিযুক্ত হয়। সুতরাং আহারকারীর হাতে এর চর্বির আধিক্যের কারণে তা হাতে বহাল রাখার অনুমতি দেয়া হয়নি। পক্ষান্তরে যেহেতু বকরীর ক্ষেত্রে এটা বিদ্যমান থাকে না তাই এর জন্য উযূ না করা (হাত না ধৌত করা) মুবাহ তথা বৈধ রেখেছেন। আমরা প্রথম অনুচ্ছেদে জাবির (রা.)-এর হাদীসে বর্ণনা করেছি যে, আগুনে পাকানো বস্তুর ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ -এর শেষ আমল ছিল উযূ না করা। পক্ষান্তরে আগুনে পাকানো বস্তুর ব্যাপারে তাঁর প্রথম আমল ছিল উযূ করা। আর এতে উটের গোশত ইত্যাদির বিধান অভিন্ন ছিল। তাহলে আগুনে পাকানো বস্তুর ব্যাপারে উযূ ছেড়ে দেয়ার দ্বারা উটের গোশতের কারণে উযূ ছেড়ে দেয়াও প্রমাণিত হল। হাদীস সমূহের বর্ণনার দিক থেকে এটা হচ্ছে এই অনুচ্ছেদের সঠিক বিশ্লেষণ। ইমাম তাহাবী (র.) এর যুক্তিভিত্তিক দলীল আমরা লক্ষ্য করেছি যে, উট এবং বকরী উভয়ের বেচা-কেনা, দুধ পান করা ও গোশত পাক হওয়ার ব্যাপার এক ও অভিন্ন। এগুলোর মধ্যে বিধানগত কোনরূপ পার্থক্য নেই। সুতরাং যুক্তির দাবি হচ্ছে যে, এগুলোর গোশত আহারের ব্যাপারে অভিন্ন বিধান হবে। সুতরাং যেমনিভাবে বকরীর গোশত আহারের কারণে উযূ আবশ্যিক হয় না, অনুরূপভাবে উটের গোশত আহারের কারণেও উযূ আবশ্যিক হবে না। এটা হচ্ছে ইমাম আবু হানীফা (র.), ইমাম আবু ইউসুফ (র.) ও ইমাম মুহাম্মাদ ইব্নুল হাসান (র.)-এর অভিমত ।
৪২৭. মুহাম্মাদ ইব্ন খুযায়মা (র.) ......... জাবির ইব্ন সামুরা (রা.) সূত্রে নবী থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
প্রতিপক্ষের দলীল
পক্ষান্তরে অপরাপর আলিমগণ এ বিষয়ে তাঁদের বিরোধিতা করে বলেছেনঃ এর কোনটি আহারের কারণে সালাতের উযূ করা ওয়াজিব হবে না। এ বিষয়ে তাঁদের দলীল হলঃ সম্ভবত উযূর দ্বারা নবী -এর উদ্দেশ্য হচ্ছে হাত ধৌত করা। কিছু সংখ্যক আলিম যে উটের গোশ্ত এবং বকরীর গোশতের মাঝে পার্থক্য করেছেন তা এজন্য যে, উটের গোশ্ত মোটা এবং বেশী চর্বিযুক্ত হয়। সুতরাং আহারকারীর হাতে এর চর্বির আধিক্যের কারণে তা হাতে বহাল রাখার অনুমতি দেয়া হয়নি। পক্ষান্তরে যেহেতু বকরীর ক্ষেত্রে এটা বিদ্যমান থাকে না তাই এর জন্য উযূ না করা (হাত না ধৌত করা) মুবাহ তথা বৈধ রেখেছেন। আমরা প্রথম অনুচ্ছেদে জাবির (রা.)-এর হাদীসে বর্ণনা করেছি যে, আগুনে পাকানো বস্তুর ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ -এর শেষ আমল ছিল উযূ না করা। পক্ষান্তরে আগুনে পাকানো বস্তুর ব্যাপারে তাঁর প্রথম আমল ছিল উযূ করা। আর এতে উটের গোশত ইত্যাদির বিধান অভিন্ন ছিল। তাহলে আগুনে পাকানো বস্তুর ব্যাপারে উযূ ছেড়ে দেয়ার দ্বারা উটের গোশতের কারণে উযূ ছেড়ে দেয়াও প্রমাণিত হল। হাদীস সমূহের বর্ণনার দিক থেকে এটা হচ্ছে এই অনুচ্ছেদের সঠিক বিশ্লেষণ। ইমাম তাহাবী (র.) এর যুক্তিভিত্তিক দলীল আমরা লক্ষ্য করেছি যে, উট এবং বকরী উভয়ের বেচা-কেনা, দুধ পান করা ও গোশত পাক হওয়ার ব্যাপার এক ও অভিন্ন। এগুলোর মধ্যে বিধানগত কোনরূপ পার্থক্য নেই। সুতরাং যুক্তির দাবি হচ্ছে যে, এগুলোর গোশত আহারের ব্যাপারে অভিন্ন বিধান হবে। সুতরাং যেমনিভাবে বকরীর গোশত আহারের কারণে উযূ আবশ্যিক হয় না, অনুরূপভাবে উটের গোশত আহারের কারণেও উযূ আবশ্যিক হবে না। এটা হচ্ছে ইমাম আবু হানীফা (র.), ইমাম আবু ইউসুফ (র.) ও ইমাম মুহাম্মাদ ইব্নুল হাসান (র.)-এর অভিমত ।
باب أكل ما غيرت النار , هل يوجب الوضوء أم لا
426 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ، ثنا الْحَجَّاجُ، ثنا حَمَّادٌ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ جَعْفَرٍ، عَنْ جَدِّهِ، جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ , أَنَّ رَجُلًا قَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ أَتَوَضَّأُ مِنْ لُحُومِ الْغَنَمِ؟ قَالَ: «إِنْ شِئْتَ فَعَلْتَ , وَإِنْ شِئْتَ لَمْ تَفْعَلْ» قَالَ: قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ: أَتَوَضَّأُ مِنْ لُحُومِ الْإِبِلِ؟ قَالَ: «نَعَمْ»
427 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ، قَالَ: ثنا حَجَّاجٌ، قَالَ: ثنا , أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَوْهَبٍ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ أَبِي ثَوْرٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ , فَقَالُوا: لَا يَجِبُ الْوُضُوءُ لِلصَّلَاةِ بِأَكْلِ شَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ. وَكَانَ مِنَ الْحُجَّةِ لَهُمْ فِي ذَلِكَ أَنَّهُ قَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ الْوُضُوءُ الَّذِي أَرَادَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , هُوَ غَسْلُ الْيَدِ. وَفَرَّقَ قَوْمٌ بَيْنَ لُحُومِ الْإِبِلِ , وَلُحُومِ الْغَنَمِ فِي ذَلِكَ , لِمَا فِي لُحُومِ الْإِبِلِ مِنَ الْغِلَظِ , وَمِنْ غَلَبَةِ وَدَكِهَا عَلَى يَدِ آكِلِهَا فَلَمْ يُرَخِّصْ فِي تَرْكِهِ عَلَى الْيَدِ وَأَبَاحَ أَنْ لَا يَتَوَضَّأَ مِنْ لُحُومِ الْغَنَمِ لِعَدَمِ ذَلِكَ مِنْهَا. وَقَدْ رَوَيْنَا فِي الْبَابِ الْأَوَّلِ فِي حَدِيثِ جَابِرٍ أَنَّ آخِرَ الْأَمْرَيْنِ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , «تَرْكُ الْوُضُوءِ مِمَّا غَيَّرَتِ النَّارُ» , فَإِذَا كَانَ مَا تَقَدَّمَ مِنْهُ هُوَ الْوُضُوءُ مِمَّا مَسَّتِ النَّارُ , وَفِي ذَلِكَ لُحُومُ الْإِبِلِ وَغَيْرِهَا , كَانَ فِي تَرْكِهِ ذَلِكَ تَرْكُ الْوُضُوءِ مِنْ لُحُومِ الْإِبِلِ. فَهَذَا حُكْمُ هَذَا الْبَابِ مِنْ طَرِيقِ الْآثَارِ. وَأَمَّا مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ , فَإِنَّا قَدْ رَأَيْنَا الْإِبِلَ وَالْغَنَمَ , سَوَاءً فِي حِلِّ بَيْعِهِمَا وَشُرْبِ لَبَنِهِمَا , وَطَهَارَةِ لُحُومِهِمَا , وَأَنَّهُ لَا تَفْتَرِقُ أَحْكَامُهُمَا فِي شَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ. فَالنَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ , أَنَّهُمَا , فِي أَكْلِ لُحُومِهِمَا سَوَاءٌ. فَكَمَا كَانَ لَا وُضُوءَ فِي أَكْلِ لُحُومِ الْغَنَمِ , فَكَذَلِكَ لَا وُضُوءَ فِي أَكْلِ لُحُومِ الْإِبِلِ , وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدِ بْنِ الْحَسَنِ رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى
427 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ، قَالَ: ثنا حَجَّاجٌ، قَالَ: ثنا , أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَوْهَبٍ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ أَبِي ثَوْرٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ , فَقَالُوا: لَا يَجِبُ الْوُضُوءُ لِلصَّلَاةِ بِأَكْلِ شَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ. وَكَانَ مِنَ الْحُجَّةِ لَهُمْ فِي ذَلِكَ أَنَّهُ قَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ الْوُضُوءُ الَّذِي أَرَادَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , هُوَ غَسْلُ الْيَدِ. وَفَرَّقَ قَوْمٌ بَيْنَ لُحُومِ الْإِبِلِ , وَلُحُومِ الْغَنَمِ فِي ذَلِكَ , لِمَا فِي لُحُومِ الْإِبِلِ مِنَ الْغِلَظِ , وَمِنْ غَلَبَةِ وَدَكِهَا عَلَى يَدِ آكِلِهَا فَلَمْ يُرَخِّصْ فِي تَرْكِهِ عَلَى الْيَدِ وَأَبَاحَ أَنْ لَا يَتَوَضَّأَ مِنْ لُحُومِ الْغَنَمِ لِعَدَمِ ذَلِكَ مِنْهَا. وَقَدْ رَوَيْنَا فِي الْبَابِ الْأَوَّلِ فِي حَدِيثِ جَابِرٍ أَنَّ آخِرَ الْأَمْرَيْنِ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , «تَرْكُ الْوُضُوءِ مِمَّا غَيَّرَتِ النَّارُ» , فَإِذَا كَانَ مَا تَقَدَّمَ مِنْهُ هُوَ الْوُضُوءُ مِمَّا مَسَّتِ النَّارُ , وَفِي ذَلِكَ لُحُومُ الْإِبِلِ وَغَيْرِهَا , كَانَ فِي تَرْكِهِ ذَلِكَ تَرْكُ الْوُضُوءِ مِنْ لُحُومِ الْإِبِلِ. فَهَذَا حُكْمُ هَذَا الْبَابِ مِنْ طَرِيقِ الْآثَارِ. وَأَمَّا مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ , فَإِنَّا قَدْ رَأَيْنَا الْإِبِلَ وَالْغَنَمَ , سَوَاءً فِي حِلِّ بَيْعِهِمَا وَشُرْبِ لَبَنِهِمَا , وَطَهَارَةِ لُحُومِهِمَا , وَأَنَّهُ لَا تَفْتَرِقُ أَحْكَامُهُمَا فِي شَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ. فَالنَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ , أَنَّهُمَا , فِي أَكْلِ لُحُومِهِمَا سَوَاءٌ. فَكَمَا كَانَ لَا وُضُوءَ فِي أَكْلِ لُحُومِ الْغَنَمِ , فَكَذَلِكَ لَا وُضُوءَ فِي أَكْلِ لُحُومِ الْإِبِلِ , وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ , وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدِ بْنِ الْحَسَنِ رَحِمَهُمُ اللهُ تَعَالَى
হাদীসের ব্যাখ্যা:
উটের গোশত খাওয়া দ্বারা উযু ভাঙ্গে না। এটাই জমহুর ফুকাহায়ে কেরাম ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক, ইমাম শাফে'ঈ রহিমাহুল্লাহ গণের মাযহাব। আর যে হাদিসে উটের গোশত খাওয়ার পর ওযু করার কথা এসেছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আভিধানিক উযু অর্থাৎ মুখ,হাত ধোয়া; কারণ উটের গোশতে তৈলাক্ততা এবং এক ধরনের দুর্গন্ধ রয়েছে। এ কারণে হাদিসে হাত,মুখ ধোয়ার কথা এসেছে।
এ বিষয়ে সহীহ মুসলিমের বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার ইমাম নববী রহিমাহুল্লাহ বলেন,
[شرح مسلم - النووي - ج ٤ - الصفحة ٤٨]
فاختلف العلماء في أكل لحوم الجزور وذهب الاكثرون إلى أنه لاينقض الْوُضُوءَ مِمَّنْ ذَهَبَ إِلَيْهِ الْخُلَفَاءُ الْأَرْبَعَةُ الرَّاشِدُونَ أبو بكر وعمر وعثمان وعلي وبن مسعود وابي بن كعب وبن عَبَّاسٍ وَأَبُو الدَّرْدَاءِ وَأَبُو طَلْحَةَ وَعَامِرُ بْنُ رَبِيعَةَ وَأَبُو أُمَامَةَ وَجَمَاهِيرُ التَّابِعِينَ وَمَالِكٌ وَأَبُو حَنِيفَةَ وَالشَّافِعِيُّ وَأَصْحَابُهُمْ وَذَهَبَ إِلَى انْتِقَاضِ الْوُضُوءِ بِهِ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ وَإِسْحَاقُ بْنُ رَاهَوَيْهِ وَيَحْيَى بْنُ يَحْيَى وَأَبُو بَكْرِ بْنُ الْمُنْذِرِ وبن خُزَيْمَةَ وَاخْتَارَهُ الْحَافِظُ أَبُو بَكْرٍ الْبَيْهَقِيُّ وَحُكِيَ عَنِ أَصْحَابِ الْحَدِيثِ مُطْلَقًا وَحُكِيَ عَنْ جَمَاعَةٍ مِنَ الصَّحَابَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ أَجْمَعِينَ
উটের গোস্ত খেলে ওজু ভাঙ্গবে কি না এ বিষয়ে ওলামায়ে কেরামের মাঝে মতভেদ রয়েছে। অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে এতে করে অজু ভঙ্গ হয় না। এ মতই পোষণ করেছেন চার খলীফায়ে রাশেদীন তথা হযরত আবু বকর রা. হযরত উমর রা. হযরত উসমান রা.হযরত আলী রা. হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রা. হযরত উবাই বিন কা’ব রা.হযরত ইবনে আব্বাস রা. হযরত আবু তালহা রা.হযরত আমের বিন রাবীয়া রা. হযরত উমামা রা.এবং জমহুর তাবেয়ীগণ এবং ইমাম মালেক রহ. ইমাম আবু হানিফা রহ.ইমাম শাফে'ঈ রহ.এবং তাদের ছাত্রবৃন্দ।
আর অজু ভঙ্গ হয়ে যাবে বলে মতামত পোষন করেছেন ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহ.হযরত ইসহাক বিন রাহাওয়াই রহ.হযরত ইয়াহইয়া বিন ইয়াহইয়া রহ.আবু বকর বিন মুনজির রহ.ইবনে খুজাইমা রহ.ইমাম বায়হাকী রহ. প্রমুখ। [শরহে সহীহ মুসলিম, ইমাম নববীকৃত-৪/৪৮-৪৯]
তিরমিযী শরীফের বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ "মা'রেফুস সুনান শরহে সুনানুত তিরমিযীতে রয়েছে,
معارف السنن شرح سنن الترمذی''
'' وقال جمهور الفقهاء مالك و أبوحنيفة و الشافعي و غيرهم: لاينقض الوضوء بحال، و المراد بالوضوء غسل اليد و الفم عندهم، و ذلك ؛ لأن للحم الإبل دسماً و زهومةً و زفراً بخلاف لحم الغنم، و من أجل ذلك جاء ت الشريعة بالفرق بينهما''. [باب الوضوء من لحم الابل، ١/ ٣٥٣، ط: مجلس الدعوة والتحقيق الإسلامي]
জমহুর ফুকাহা ইমাম মালেক রহ.ইমাম আবু হানিফা রহ.ইমাম শাফে'ঈ রহ.সহ আরো অনেকের মতে "উটের গোশত খাওয়া দ্বারা কোনো অবস্থাতেই ওযু ভাঙ্গে না।
আর যে হাদিসে উটের গোশত খাওয়ার পর ওযু করার কথা এসেছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আভিধানিক ওযু অর্থাৎ মুখ,হাত ধোয়া; কারণ উটের গোশতে তৈলাক্ততা এবং এক ধরনের দুর্গন্ধ রয়েছে।
যেসব হাদীসে উটের গোস্ত খেলে অজু করার কথা এসেছে। এর জবাব দু’টি। যথা-
১.এসব হাদীস ইসলামে প্রথম যুগের। পরবর্তীতে এ বিধান রহিত হয়ে গেছে। [শরহে মুসলিম,ইমাম নববীকৃত-৪/৪৩,ইলাউস সুনান-১/১৭২,]
২.দ্বিতীয় জবাব হল,অজু করার দ্বারা উদ্দেশ্য হল,মুখ ও উভয় হাত ধৌত করা। [শরহে মুসলিম,ইমাম নববীকৃত-৪/৪৩,ইলাউস সুনান-১/১৭২]
আরো কিছু হাদিস ও আসার বর্ণিত হয়েছে যা দ্বারা বুঝা যায় উটের গোশত খাওয়ার পর ওজু করতে হবে না।
عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنِ الثَّوْرِيِّ، عَنْ جَابِرٍ، عَنْ أَبِي سَبْرَةَ: أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، «أَكَلَ مِنْ لُحُومِ الْإِبِلِ ثُمَّ صَلَّى، وَلمْ يَتَوَضَّأْ» [عبد الرزاق 1598]
হযরত আবু সাবরাহ রহ.থেকে বর্ণিত। হযরত উমর রা. উটের গোস্ত খেয়ে নামায পড়লেন। কিন্তু অজু করেননি। [মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১৫৯৮, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৫১৭]
حَدَّثَنَا عَائِذُ بْنُ حَبِيبٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ قَيْسٍ، قَالَ: «رَأَيْتُ ابْنَ عُمَرَ، أَكَلَ لَحْمَ جَزُورٍ، وَشَرِبَ لَبَنَ الْإِبِلِ، وَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ»
হযরত ইয়াহইয়া বিন কায়েস রহ. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত ইবনে উমর রা.কে দেখেছি, তিনি উটের গোস্ত খেলেন, এবং উটের দুধ খেলেন তারপর অজু করা ছাড়াই নামায পড়েছেন। [মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৫১৫]
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ رِفَاعَةَ بْنِ سَلْمٍ، قَالَ: «رَأَيْتُ سُوَيْدَ بْنَ غَفَلَةَ، أَكَلَ لَحْمَ جَزُورٍ، ثُمَّ صَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ»
হযরত রিফাআ বিন সালাম রহ.বলেন, আমি হযরত সুআইদ বিন গাফালা রা. কে দেখেছি, তিনি উটের গোস্ত খেয়ে নতুন করে অজু না করেই নামায পড়েছেন। [মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৫১৯
حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: «أَكَلْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمَعَ أَبِي بَكْرٍ، وَعُمَرَ، وَعُثْمَانَ خُبْزًا وَلَحْمَا، فَصَلَّوْا وَلَمْ يَتَوَضَّأُوا»
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রা.থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, এবং আবু বকর রা.হযরত উমর রা.হযরত উসমান রা. এর সাথে রুটি ও গোস্ত খেয়েছি। তারা খাবার পরে নতুন অজু না করেই নামায পড়েছেন। [মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৫২]
তাহাভী শরীফে এসেছে
عن جابربن سمرة؛ ان رجلا قال: یا رسول الله: اتتوضأ من لحوم الغنم؟ قال”إن شٸت فعلت.وإن شٸت لم تفعل“ قال قال: یا رسول الله: اتتوضأ من لحوم الابل؟ قال نعم..
হযরত জাবির ইবনে সামুরা রা.থেকে বর্ণিত, একবার জনৈক ব্যক্তি বলল,হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি বকরির গোশত [আহারের কারণে] উযু করবো? তিনি বললেন,তোমার ইচ্ছা হলে করো,আর ইচ্ছা না হলে করো না। [বর্ণানাকারী বলেন] পুনরাই সে বলল হে আল্লাহর রাসূল! উটের গোশত [আহারের কারণে] উযু করবো? তিনি বললেন,হ্যাঁ।[তাহাভী শরীফ হাদিস ৪০৪]
ইমাম তাহাভী রহিমাহুল্লাহ'র যুক্তিভিত্তিক দলীল
তিনি বলেন,আমরা লক্ষ্য করেছি যে,উট ও বকরি উভয়ের বেচা-কেনা, দুধ পান করা ও গোশত পবিত্র হওয়ার বিধান এক ও অভিন্ন। এগুলোর মধ্যে বিধানগত কোনরূপ পার্থক্য নেই। সুতারাং যুক্তির দাবি হচ্ছে যে,এগুলোর গোশত আহারের ব্যাপারে অভিন্ন বিধান হবে।
সুতারাং যেমনিভাবে বকরির গোশত আহারের কারণে উযু আবশ্যক হয় না, অনুরূপভাবে উটের গোশত আহারের কারণেও উযু আবশ্যক হবে না। এটাই জমহুর ফুকাহায়ে কেরাম সহ ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মুহাম্মদ,ইমাম আবু ইউসুফ রহিমাহুল্লাহ গণের মাযহাব।
[শরহে মা'আনিল আসার ১/১৩৬]
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, খোলাফায়ে রাশেদীনসহ অধিকাংশ সাহাবা, তাবেঈসহ ফুকাহায়ে কেরামের মত হল,উটের গোস্ত খেলে অজু ভঙ্গ হয় না।
#সংগৃহীত
এ বিষয়ে সহীহ মুসলিমের বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার ইমাম নববী রহিমাহুল্লাহ বলেন,
[شرح مسلم - النووي - ج ٤ - الصفحة ٤٨]
فاختلف العلماء في أكل لحوم الجزور وذهب الاكثرون إلى أنه لاينقض الْوُضُوءَ مِمَّنْ ذَهَبَ إِلَيْهِ الْخُلَفَاءُ الْأَرْبَعَةُ الرَّاشِدُونَ أبو بكر وعمر وعثمان وعلي وبن مسعود وابي بن كعب وبن عَبَّاسٍ وَأَبُو الدَّرْدَاءِ وَأَبُو طَلْحَةَ وَعَامِرُ بْنُ رَبِيعَةَ وَأَبُو أُمَامَةَ وَجَمَاهِيرُ التَّابِعِينَ وَمَالِكٌ وَأَبُو حَنِيفَةَ وَالشَّافِعِيُّ وَأَصْحَابُهُمْ وَذَهَبَ إِلَى انْتِقَاضِ الْوُضُوءِ بِهِ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ وَإِسْحَاقُ بْنُ رَاهَوَيْهِ وَيَحْيَى بْنُ يَحْيَى وَأَبُو بَكْرِ بْنُ الْمُنْذِرِ وبن خُزَيْمَةَ وَاخْتَارَهُ الْحَافِظُ أَبُو بَكْرٍ الْبَيْهَقِيُّ وَحُكِيَ عَنِ أَصْحَابِ الْحَدِيثِ مُطْلَقًا وَحُكِيَ عَنْ جَمَاعَةٍ مِنَ الصَّحَابَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ أَجْمَعِينَ
উটের গোস্ত খেলে ওজু ভাঙ্গবে কি না এ বিষয়ে ওলামায়ে কেরামের মাঝে মতভেদ রয়েছে। অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে এতে করে অজু ভঙ্গ হয় না। এ মতই পোষণ করেছেন চার খলীফায়ে রাশেদীন তথা হযরত আবু বকর রা. হযরত উমর রা. হযরত উসমান রা.হযরত আলী রা. হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রা. হযরত উবাই বিন কা’ব রা.হযরত ইবনে আব্বাস রা. হযরত আবু তালহা রা.হযরত আমের বিন রাবীয়া রা. হযরত উমামা রা.এবং জমহুর তাবেয়ীগণ এবং ইমাম মালেক রহ. ইমাম আবু হানিফা রহ.ইমাম শাফে'ঈ রহ.এবং তাদের ছাত্রবৃন্দ।
আর অজু ভঙ্গ হয়ে যাবে বলে মতামত পোষন করেছেন ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহ.হযরত ইসহাক বিন রাহাওয়াই রহ.হযরত ইয়াহইয়া বিন ইয়াহইয়া রহ.আবু বকর বিন মুনজির রহ.ইবনে খুজাইমা রহ.ইমাম বায়হাকী রহ. প্রমুখ। [শরহে সহীহ মুসলিম, ইমাম নববীকৃত-৪/৪৮-৪৯]
তিরমিযী শরীফের বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ "মা'রেফুস সুনান শরহে সুনানুত তিরমিযীতে রয়েছে,
معارف السنن شرح سنن الترمذی''
'' وقال جمهور الفقهاء مالك و أبوحنيفة و الشافعي و غيرهم: لاينقض الوضوء بحال، و المراد بالوضوء غسل اليد و الفم عندهم، و ذلك ؛ لأن للحم الإبل دسماً و زهومةً و زفراً بخلاف لحم الغنم، و من أجل ذلك جاء ت الشريعة بالفرق بينهما''. [باب الوضوء من لحم الابل، ١/ ٣٥٣، ط: مجلس الدعوة والتحقيق الإسلامي]
জমহুর ফুকাহা ইমাম মালেক রহ.ইমাম আবু হানিফা রহ.ইমাম শাফে'ঈ রহ.সহ আরো অনেকের মতে "উটের গোশত খাওয়া দ্বারা কোনো অবস্থাতেই ওযু ভাঙ্গে না।
আর যে হাদিসে উটের গোশত খাওয়ার পর ওযু করার কথা এসেছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আভিধানিক ওযু অর্থাৎ মুখ,হাত ধোয়া; কারণ উটের গোশতে তৈলাক্ততা এবং এক ধরনের দুর্গন্ধ রয়েছে।
যেসব হাদীসে উটের গোস্ত খেলে অজু করার কথা এসেছে। এর জবাব দু’টি। যথা-
১.এসব হাদীস ইসলামে প্রথম যুগের। পরবর্তীতে এ বিধান রহিত হয়ে গেছে। [শরহে মুসলিম,ইমাম নববীকৃত-৪/৪৩,ইলাউস সুনান-১/১৭২,]
২.দ্বিতীয় জবাব হল,অজু করার দ্বারা উদ্দেশ্য হল,মুখ ও উভয় হাত ধৌত করা। [শরহে মুসলিম,ইমাম নববীকৃত-৪/৪৩,ইলাউস সুনান-১/১৭২]
আরো কিছু হাদিস ও আসার বর্ণিত হয়েছে যা দ্বারা বুঝা যায় উটের গোশত খাওয়ার পর ওজু করতে হবে না।
عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنِ الثَّوْرِيِّ، عَنْ جَابِرٍ، عَنْ أَبِي سَبْرَةَ: أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، «أَكَلَ مِنْ لُحُومِ الْإِبِلِ ثُمَّ صَلَّى، وَلمْ يَتَوَضَّأْ» [عبد الرزاق 1598]
হযরত আবু সাবরাহ রহ.থেকে বর্ণিত। হযরত উমর রা. উটের গোস্ত খেয়ে নামায পড়লেন। কিন্তু অজু করেননি। [মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১৫৯৮, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৫১৭]
حَدَّثَنَا عَائِذُ بْنُ حَبِيبٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ قَيْسٍ، قَالَ: «رَأَيْتُ ابْنَ عُمَرَ، أَكَلَ لَحْمَ جَزُورٍ، وَشَرِبَ لَبَنَ الْإِبِلِ، وَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ»
হযরত ইয়াহইয়া বিন কায়েস রহ. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত ইবনে উমর রা.কে দেখেছি, তিনি উটের গোস্ত খেলেন, এবং উটের দুধ খেলেন তারপর অজু করা ছাড়াই নামায পড়েছেন। [মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৫১৫]
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ رِفَاعَةَ بْنِ سَلْمٍ، قَالَ: «رَأَيْتُ سُوَيْدَ بْنَ غَفَلَةَ، أَكَلَ لَحْمَ جَزُورٍ، ثُمَّ صَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ»
হযরত রিফাআ বিন সালাম রহ.বলেন, আমি হযরত সুআইদ বিন গাফালা রা. কে দেখেছি, তিনি উটের গোস্ত খেয়ে নতুন করে অজু না করেই নামায পড়েছেন। [মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৫১৯
حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: «أَكَلْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمَعَ أَبِي بَكْرٍ، وَعُمَرَ، وَعُثْمَانَ خُبْزًا وَلَحْمَا، فَصَلَّوْا وَلَمْ يَتَوَضَّأُوا»
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রা.থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, এবং আবু বকর রা.হযরত উমর রা.হযরত উসমান রা. এর সাথে রুটি ও গোস্ত খেয়েছি। তারা খাবার পরে নতুন অজু না করেই নামায পড়েছেন। [মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৫২]
তাহাভী শরীফে এসেছে
عن جابربن سمرة؛ ان رجلا قال: یا رسول الله: اتتوضأ من لحوم الغنم؟ قال”إن شٸت فعلت.وإن شٸت لم تفعل“ قال قال: یا رسول الله: اتتوضأ من لحوم الابل؟ قال نعم..
হযরত জাবির ইবনে সামুরা রা.থেকে বর্ণিত, একবার জনৈক ব্যক্তি বলল,হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি বকরির গোশত [আহারের কারণে] উযু করবো? তিনি বললেন,তোমার ইচ্ছা হলে করো,আর ইচ্ছা না হলে করো না। [বর্ণানাকারী বলেন] পুনরাই সে বলল হে আল্লাহর রাসূল! উটের গোশত [আহারের কারণে] উযু করবো? তিনি বললেন,হ্যাঁ।[তাহাভী শরীফ হাদিস ৪০৪]
ইমাম তাহাভী রহিমাহুল্লাহ'র যুক্তিভিত্তিক দলীল
তিনি বলেন,আমরা লক্ষ্য করেছি যে,উট ও বকরি উভয়ের বেচা-কেনা, দুধ পান করা ও গোশত পবিত্র হওয়ার বিধান এক ও অভিন্ন। এগুলোর মধ্যে বিধানগত কোনরূপ পার্থক্য নেই। সুতারাং যুক্তির দাবি হচ্ছে যে,এগুলোর গোশত আহারের ব্যাপারে অভিন্ন বিধান হবে।
সুতারাং যেমনিভাবে বকরির গোশত আহারের কারণে উযু আবশ্যক হয় না, অনুরূপভাবে উটের গোশত আহারের কারণেও উযু আবশ্যক হবে না। এটাই জমহুর ফুকাহায়ে কেরাম সহ ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মুহাম্মদ,ইমাম আবু ইউসুফ রহিমাহুল্লাহ গণের মাযহাব।
[শরহে মা'আনিল আসার ১/১৩৬]
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, খোলাফায়ে রাশেদীনসহ অধিকাংশ সাহাবা, তাবেঈসহ ফুকাহায়ে কেরামের মত হল,উটের গোস্ত খেলে অজু ভঙ্গ হয় না।
#সংগৃহীত
