শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়
হাদীস নং: ৩২০
অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি সহবাস করে; কিন্তু বীর্যপাত হয় না
৩২০। ইউনুস (রাহঃ).... জাবির ইবন আব্দুল্লাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমাকে উম্মু কুলসূম (রাযিঃ) আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছে, যে তার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করেছে, তারপর দুর্বল হয়ে গিয়েছে (বীর্যপাত হয়নি) তার উপর কি গোসল ফরয হবে? আয়েশা (রাযিঃ) ও তখন উপবিষ্ট ছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ আমি এবং ইনি (আয়েশা রা) এরূপ করি। তারপর আমরা গোসল করে থাকি।
ফকীহ আলিমগণ বলেছেন: বস্তুত এই সমস্ত হাদীস থেকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সম্পর্কে জানা যাচ্ছে যে, তিনি সহবাস করে গোসল করতেন। যদিও বীর্যপাত না ঘটত। তাঁদেরকে বলা হবে: এই সমস্ত হাদীস রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর আমল সম্পর্কে খবর দিচ্ছে। হতে পারে তিনি সেই আমল করেছেন যা তাঁর জন্য আবশ্যিক ছিল না। পক্ষান্তরে প্রথমোক্ত হাদীসমূহ ওয়াজিব এবং ওয়াজিব নয়- উভয় বিষয়েই খবর দিচ্ছে। সুতরাং এর উপর আমল করাই উত্তম বিবেচিত হবে। , দ্বিতীয় মত পোষণকারীগণ প্রথমোক্ত মত পোষণকারীদের বিরুদ্ধে নিম্নরূপ প্রমাণ পেশ করেনঃ
এই বিষয়ে আমরা এ অনুচ্ছেদের প্রথম অংশে যে সমস্ত রিওয়ায়াত উদ্ধৃত করে এসেছি, তা দু’ভাগে বিভক্তঃ প্রথম প্রকার হল الْمَاءُ مِنَ الْمَاءِ পানির (বীর্যের) কারণে পানি (গোসল)। অন্য কিছু নয়। অর্থাৎ শুধুমাত্র বীর্যপাতের অবস্থায় গোসল আবশ্যক হবে। দ্বিতীয় প্রকার হল রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, এর দ্বারা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি দুর্বল হয়ে যাবে তার উপর গোসল নেই, যতক্ষণ না বীর্যপাত হয়। আর এতে যে পানির কারণে পানির উল্লেখ রয়েছে, এ বিষয়ে ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, -এর উদ্দেশ্য তা নয়, যা প্রথমোক্ত মত পোষণকারীগণ ধারণা করেন।
ফকীহ আলিমগণ বলেছেন: বস্তুত এই সমস্ত হাদীস থেকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সম্পর্কে জানা যাচ্ছে যে, তিনি সহবাস করে গোসল করতেন। যদিও বীর্যপাত না ঘটত। তাঁদেরকে বলা হবে: এই সমস্ত হাদীস রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর আমল সম্পর্কে খবর দিচ্ছে। হতে পারে তিনি সেই আমল করেছেন যা তাঁর জন্য আবশ্যিক ছিল না। পক্ষান্তরে প্রথমোক্ত হাদীসমূহ ওয়াজিব এবং ওয়াজিব নয়- উভয় বিষয়েই খবর দিচ্ছে। সুতরাং এর উপর আমল করাই উত্তম বিবেচিত হবে। , দ্বিতীয় মত পোষণকারীগণ প্রথমোক্ত মত পোষণকারীদের বিরুদ্ধে নিম্নরূপ প্রমাণ পেশ করেনঃ
এই বিষয়ে আমরা এ অনুচ্ছেদের প্রথম অংশে যে সমস্ত রিওয়ায়াত উদ্ধৃত করে এসেছি, তা দু’ভাগে বিভক্তঃ প্রথম প্রকার হল الْمَاءُ مِنَ الْمَاءِ পানির (বীর্যের) কারণে পানি (গোসল)। অন্য কিছু নয়। অর্থাৎ শুধুমাত্র বীর্যপাতের অবস্থায় গোসল আবশ্যক হবে। দ্বিতীয় প্রকার হল রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, এর দ্বারা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি দুর্বল হয়ে যাবে তার উপর গোসল নেই, যতক্ষণ না বীর্যপাত হয়। আর এতে যে পানির কারণে পানির উল্লেখ রয়েছে, এ বিষয়ে ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, -এর উদ্দেশ্য তা নয়, যা প্রথমোক্ত মত পোষণকারীগণ ধারণা করেন।
باب الذي يجامع ولا ينزل
320 - حَدَّثَنَا يُونُسُ، قَالَ: ثنا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عِيَاضُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْقُرَشِيُّ، وَابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ الْمَكِّيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: أَخْبَرَتْنِي أُمُّ كُلْثُومٍ، عَنْ عَائِشَةَ، رَضِيَ اللهُ عَنْهَا , أَنَّ " رَجُلًا، سَأَلَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الرَّجُلِ يُجَامِعُ أَهْلَهُ ثُمَّ يَكْسَلُ: هَلْ عَلَيْهِ مِنْ غُسْلٍ؟ وَعَائِشَةُ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا جَالِسَةٌ. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي لَأَفْعَلُ ذَلِكَ أَنَا وَهَذِهِ , ثُمَّ نَغْتَسِلُ» قَالُوا: فَهَذِهِ الْآثَارُ تُخْبِرُ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ كَانَ يَغْتَسِلُ إِذَا جَامَعَ , وَإِنْ لَمْ يُنْزِلْ. فَقِيلَ لَهُمْ: هَذِهِ الْآثَارُ إِنَّمَا تُخْبِرُ عَنْ فِعْلِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , وَقَدْ يَجُوزُ أَنْ يَفْعَلَ مَا لَيْسَ عَلَيْهِ , وَالْآثَارُ الْأُوَلُ تُخْبِرُ عَمَّا يَجِبُ , وَمَا لَا يَجِبُ , فَهِيَ أَوْلَى. فَكَانَ مِنَ الْحُجَّةِ لِأَهْلِ الْمَقَالَةِ الثَّانِيَةِ , عَلَى أَهْلِ الْمَقَالَةِ الْأُولَى , أَنَّ الْآثَارَ الَّتِي رَوَيْنَاهَا فِي الْفَصْلِ الْأَوَّلِ مِنْ هَذَا الْبَابِ , عَلَى ضَرْبَيْنِ: فَضَرْبٌ مِنْهُمَا: «الْمَاءُ مِنَ الْمَاءِ» لَا غَيْرُ , وَضَرْبٌ مِنْهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا غُسْلَ عَلَى مَنْ أَكْسَلَ حَتَّى يُنْزِلَ» . فَأَمَّا مَا كَانَ مِنْ ذَلِكَ فِيهِ ذِكْرُ «الْمَاءُ مِنَ الْمَاءِ» فَإِنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَدْ رُوِيَ عَنْهُ فِي ذَلِكَ , أَنَّ مُرَادَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِهِ , قَدْ كَانَ غَيْرَ مَا حَمَلَهُ عَلَيْهِ أَهْلُ الْمَقَالَةِ الْأُولَى
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বীর্যপাতবিহীন স্ত্রী সহবাসেও গোসল ফরয হয়। মুসলিম শরীফে হযরত আবু মুসা আশআ’রী রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে আছে যে, বীর্যপাতবিহীন স্ত্রী সহবাসে গোসল ফরয হওয়া বা না হওয়ার বিষয়ে মুহাজির এবং আনসারদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলে তিনি হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট বিষয়টি জিজ্ঞেস করলেন। জবাবে তিনি বললেন যে, শুধু সহবাস হলেই গোসল ফরয হবে। (মুসলিম-৬৭৮) এ থেকে বুঝা যায় যে, এ বিষয়টি নিয়ে সাহাবায়ে কিরামের শুরু যুগে মতবিরোধ থাকলেও তাঁদের সর্বশেষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো গোসল করতে হবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/১৬১) সুতরাং হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যিনি এ বিষয়ে অন্য যে কারো চেয়ে ভালো জানতেন। সুতরাং কোন সাহাবার ভিন্ন মত থাকলেও হযরত আয়েশা রা.-এর মত ও বর্ণনা অগ্রাধিকারের জোর দাবী রাখে।
