শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩১৪
যে ব্যক্তি সহবাস করে; কিন্তু বীর্যপাত হয় না
৩১৪। ইয়াযীদ (রাহঃ)...... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) জনৈক আনসারী ব্যক্তিকে ডেকে পাঠালেন। সে আসতে বিলম্ব করল । তিনি বললেন, কি তোমাকে আটকে রেখেছে? সে বলল, আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করছিলাম। যখন আপনার দূত এসেছে তখন আমি গোসল করেছি, (যদিও বীর্য দেখতে পাইনি) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বললেন পানির (বীর্যের) কারণে পানি (গোসল) আবশ্যক। আর গোসল করা সেই ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব, যার বীর্যপাত হয়।

ইমাম আবু জাফর তাহাবী বলেনঃ একদল আলিম এ মত গ্রহণ করেছেন যে, যে ব্যক্তি (নারীর) যৌনাঙ্গে সহবাস করে এবং তার বীর্যপাত না হয় তার উপর গোসল করা ওয়াজিব নয়। তাঁরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উল্লিখিত হাদীসসমূহ দ্বারা প্রমাণ পেশ করেন। পক্ষান্তরে অপরাপর আলিমগণ এই বিষয়ে তাঁদের বিরোধিতা করে বলেছেন ও তার উপর গোসল করা ওয়াজিব, যদিও তার বীর্যপাত না হয়। তাঁরা নিম্নোক্ত হাদীসসমূহ দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেনঃ
باب الذي يجامع ولا ينزل
314 - حَدَّثَنَا يَزِيدُ، قَالَ: ثنا الْعَلَاءُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ سِنَانٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ عَلْقَمَةَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: " بَعَثَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ فَأَبْطَأَ , فَقَالَ: مَا حَبَسَكَ؟ قَالَ: كُنْتُ أَصَبْتُ مِنْ أَهْلِي , فَلَمَّا جَاءَ رَسُولُكَ , اغْتَسَلْتُ , وَلَمْ أُحْدِثْ شَيْئًا. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمَاءُ مِنَ الْمَاءِ , وَالْغُسْلُ عَلَى مَنْ أَنْزَلَ» قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَذَهَبَ قَوْمٌ إِلَى أَنَّ مَنْ وَطِئَ فِي الْفَرْجِ , فَلَمْ يُنْزِلْ , فَلَيْسَ عَلَيْهِ غُسْلٌ , وَاحْتَجُّوا فِي ذَلِكَ بِهَذِهِ الْآثَارِ وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ , فَقَالُوا: عَلَيْهِ الْغُسْلُ , وَإِنْ لَمْ يُنْزِلْ وَاحْتَجُّوا فِي ذَلِكَ بِمَا

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বীর্যপাতবিহীন স্ত্রী সহবাসেও গোসল ফরয হয়। মুসলিম শরীফে হযরত আবু মুসা আশআ’রী রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে আছে যে, বীর্যপাতবিহীন স্ত্রী সহবাসে গোসল ফরয হওয়া বা না হওয়ার বিষয়ে মুহাজির এবং আনসারদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলে তিনি হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট বিষয়টি জিজ্ঞেস করলেন। জবাবে তিনি বললেন যে, শুধু সহবাস হলেই গোসল ফরয হবে। (মুসলিম-৬৭৮) এ থেকে বুঝা যায় যে, এ বিষয়টি নিয়ে সাহাবায়ে কিরামের শুরু যুগে মতবিরোধ থাকলেও তাঁদের সর্বশেষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো গোসল করতে হবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/১৬১) সুতরাং হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যিনি এ বিষয়ে অন্য যে কারো চেয়ে ভালো জানতেন। সুতরাং কোন সাহাবার ভিন্ন মত থাকলেও হযরত আয়েশা রা.-এর মত ও বর্ণনা অগ্রাধিকারের জোর দাবী রাখে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান