শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
১. পবিত্রতা অর্জনের অধ্যায়
হাদীস নং: ১৪৯
উযূতে কানের বিধান
১৪৯.ইব্ন আবী দাউদ (রাহঃ)......... রুবায়্যি (রাযিঃ)-এর বরাতে নবী ﷺ থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত
করেছেন।
ইমাম আবু জাফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ এই সমস্ত হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হয় যে, কানের সম্মুখ ও পশ্চাৎ উভয় দিকের বিধান মাথার বিধানের অন্তর্ভুক্ত। এই বিষয়ে যেরূপ তাওয়াতুর (সন্দেহাতীতভাবে সূত্র পরম্পরা) এর সাথে রিওয়ায়াতসমূহ বর্ণিত আছে। এর পরিপন্থী রিওয়ায়াত এরূপ তাওয়াতুরের সাথে বর্ণিত নেই। হাদীসসমূহের বর্ণনার দিক থেকে এটিই হচ্ছে এই অনুচ্ছেদের বিশ্লেষণ।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিক্তিক প্রমাণ
অনুসন্ধানের দৃষ্টিতে আমরা লক্ষ্য করেছি যে, মুহরিমা নারীর পক্ষে ইহরাম বাঁধা অবস্থায় নিজের চেহারা আচ্ছাদিত করা জায়িয নয়। তবে সে নিজের মাথা আচ্ছাদিত করে রাখবে, এতে ফকীহ্গণের কোনরূপ মতবিরােধ নেই। আর সকলের ঐকমত্য রয়েছে যে, সে (মহিলা) কানের সম্মুখ ও পশ্চাৎ ভাগ আচ্ছাদিত করতে পারে। এতে প্রমাণ বহন করে যে, মাসেহের ব্যাপারে কানের বিধান হচ্ছে মাথার বিধান, চেহারার বিধান নয়।
দ্বিতীয় দলীলঃ আমরা ফকীহ্গণকে লক্ষ্য করেছি যে, তাঁরা এই বিষয়ে মতবিরােধ করেন না যে, মাথা মাসেহের সাথে কানের পশ্চাৎভাগও মাসেহ্ করবে। বস্তুত তাদের বিরােধ হচ্ছে সম্মুখ ভাগ নিয়ে যা আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি। যখন আমরা এই বিষয়ে গভীরভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি তখন আমরা সেই সমস্ত অঙ্গগুলােকে দেখছি, উযূতে যার ফরয হওয়ার ব্যাপারে ফকীহ্গণের ঐকমত্য রয়েছে। আর তা হচ্ছে চেহরা, দুই হাত, দুই পা ও মাথা । চেহারা পূর্ণ রূপে ধৌত করতে হয়। অনুরূপভাগে দুইহাত এবং দুই পা। এই সমস্ত অঙ্গগুলাের কোন একটি অংশের বিধান অবশিষ্ট অঙ্গের বিধানের পরিপন্থী নয়। বরং সমস্ত অঙ্গের বিধান এক ও অভিন্ন। হয় সমস্ত অঙ্গ ধৌত করা হবে অথবা পরিপূর্ণ অঙ্গের মাসেহ করতে হবে। ফকীহগণের এ ব্যাপারেও ঐকমত্য রয়েছে যে, কানের পশ্চাৎভাগের বিধান হচ্ছে মাসেহ। সুতরাং যুক্তির দাবি হচ্ছে এর সম্মুখভাগের বিধানও অনুরূপ হবে এবং অন্যান্য অঙ্গের মত পূর্ণ কানের একই বিধান হবে। এটিই হচ্ছে অনুচ্ছেদের যুক্তিনির্ভর দিক। এটিই হচ্ছে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত।
রাসূলুল্লাহ্ ﷺ -এর একদল সাহাবী অনুরূপ বক্তব্য প্রদান করেছেনঃ
করেছেন।
ইমাম আবু জাফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ এই সমস্ত হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হয় যে, কানের সম্মুখ ও পশ্চাৎ উভয় দিকের বিধান মাথার বিধানের অন্তর্ভুক্ত। এই বিষয়ে যেরূপ তাওয়াতুর (সন্দেহাতীতভাবে সূত্র পরম্পরা) এর সাথে রিওয়ায়াতসমূহ বর্ণিত আছে। এর পরিপন্থী রিওয়ায়াত এরূপ তাওয়াতুরের সাথে বর্ণিত নেই। হাদীসসমূহের বর্ণনার দিক থেকে এটিই হচ্ছে এই অনুচ্ছেদের বিশ্লেষণ।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিক্তিক প্রমাণ
অনুসন্ধানের দৃষ্টিতে আমরা লক্ষ্য করেছি যে, মুহরিমা নারীর পক্ষে ইহরাম বাঁধা অবস্থায় নিজের চেহারা আচ্ছাদিত করা জায়িয নয়। তবে সে নিজের মাথা আচ্ছাদিত করে রাখবে, এতে ফকীহ্গণের কোনরূপ মতবিরােধ নেই। আর সকলের ঐকমত্য রয়েছে যে, সে (মহিলা) কানের সম্মুখ ও পশ্চাৎ ভাগ আচ্ছাদিত করতে পারে। এতে প্রমাণ বহন করে যে, মাসেহের ব্যাপারে কানের বিধান হচ্ছে মাথার বিধান, চেহারার বিধান নয়।
দ্বিতীয় দলীলঃ আমরা ফকীহ্গণকে লক্ষ্য করেছি যে, তাঁরা এই বিষয়ে মতবিরােধ করেন না যে, মাথা মাসেহের সাথে কানের পশ্চাৎভাগও মাসেহ্ করবে। বস্তুত তাদের বিরােধ হচ্ছে সম্মুখ ভাগ নিয়ে যা আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি। যখন আমরা এই বিষয়ে গভীরভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি তখন আমরা সেই সমস্ত অঙ্গগুলােকে দেখছি, উযূতে যার ফরয হওয়ার ব্যাপারে ফকীহ্গণের ঐকমত্য রয়েছে। আর তা হচ্ছে চেহরা, দুই হাত, দুই পা ও মাথা । চেহারা পূর্ণ রূপে ধৌত করতে হয়। অনুরূপভাগে দুইহাত এবং দুই পা। এই সমস্ত অঙ্গগুলাের কোন একটি অংশের বিধান অবশিষ্ট অঙ্গের বিধানের পরিপন্থী নয়। বরং সমস্ত অঙ্গের বিধান এক ও অভিন্ন। হয় সমস্ত অঙ্গ ধৌত করা হবে অথবা পরিপূর্ণ অঙ্গের মাসেহ করতে হবে। ফকীহগণের এ ব্যাপারেও ঐকমত্য রয়েছে যে, কানের পশ্চাৎভাগের বিধান হচ্ছে মাসেহ। সুতরাং যুক্তির দাবি হচ্ছে এর সম্মুখভাগের বিধানও অনুরূপ হবে এবং অন্যান্য অঙ্গের মত পূর্ণ কানের একই বিধান হবে। এটিই হচ্ছে অনুচ্ছেদের যুক্তিনির্ভর দিক। এটিই হচ্ছে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত।
রাসূলুল্লাহ্ ﷺ -এর একদল সাহাবী অনুরূপ বক্তব্য প্রদান করেছেনঃ
باب حكم الأذنين في وضوء الصلاة
149 - حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ، قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ الْمِنْهَالِ، قَالَ: ثنا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، قَالَ: ثنا رَوْحُ بْنُ الْقَاسِمِ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنِ الرُّبَيِّعِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ. قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَفِي هَذِهِ الْآثَارِ أَنَّ حُكْمَ الْأُذُنَيْنِ مَا أَقْبَلَ مِنْهُمَا وَمَا أَدْبَرَ مِنَ الرَّأْسِ , وَقَدْ تَوَاتَرَتِ الْآثَارُ بِذَلِكَ مَا لَمْ تَتَوَاتَرْ بِمَا خَالَفَهُ. فَهَذَا وَجْهُ هَذَا الْبَابِ مِنْ طَرِيقِ الْآثَارِ. وَأَمَّا مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ , فَإِنَّا قَدْ رَأَيْنَاهُمْ لَا يَخْتَلِفُونَ أَنَّ الْمُحْرِمَةَ لَيْسَ لَهَا أَنْ تُغَطِّيَ وَجْهَهَا وَلَهَا أَنْ تُغَطِّيَ رَأْسَهَا، وَكُلٌّ قَدْ أَجْمَعَ أَنَّ لَهَا أَنْ تُغَطِّيَ أُذُنَيْهَا ظَاهِرَهُمَا وَبَاطِنَهُمَا , وَدَلَّ ذَلِكَ أَنَّ حُكْمَهُمَا حُكْمُ الرَّأْسِ فِي الْمَسْحِ لَا حُكْمُ الْوَجْهِ. وَحُجَّةٌ أُخْرَى أَنَّا قَدْ رَأَيْنَاهُمْ لَمْ يَخْتَلِفُوا أَنَّ مَا أَدْبَرَ مِنْهُمَا يُمْسَحُ مَعَ الرَّأْسِ، وَاخْتَلَفُوا فِيمَا أَقْبَلَ مِنْهُمَا عَلَى مَا ذَكَرْنَا. فَنَظَرْنَا فِي ذَلِكَ فَرَأَيْنَا الْأَعْضَاءَ الَّتِي قَدِ اتَّفَقُوا عَلَى فَرْضِيَّتِهَا فِي الْوُضُوءِ: الْوَجْهُ وَالْيَدَانِ وَالرِّجْلَانِ وَالرَّأْسُ. فَكَانَ الْوَجْهُ يُغْسَلُ كُلُّهُ , وَكَذَلِكَ الْيَدَانِ , وَكَذَلِكَ الرِّجْلَانِ , وَلَمْ يَكُنْ حُكْمُ شَيْءٍ مِنْ تِلْكَ الْأَعْضَاءِ خِلَافَ حُكْمِ بَقِيَّتِهِ. بَلْ جُعِلَ حُكْمُ كُلِّ عُضْوٍ مِنْهَا حُكْمًا وَاحِدًا , فَجُعِلَ مَغْسُولًا كُلُّهُ , أَوْ مَمْسُوحًا كُلُّهُ. وَاتَّفَقُوا أَنَّ مَا أَدْبَرَ مِنَ الْأُذُنَيْنِ فَحُكْمُهُ الْمَسْحُ , فَالنَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ أَنْ يَكُونَ مَا أَقْبَلَ مِنْهُمَا كَذَلِكَ , وَأَنْ يَكُونَ حُكْمُ الْأُذُنَيْنِ كُلُّهُ حُكْمًا وَاحِدًا كَمَا كَانَ حُكْمُ سَائِرِ الْأَعْضَاءِ الَّتِي ذَكَرْنَا. فَهَذَا وَجْهُ النَّظَرِ فِي هَذَا الْبَابِ , وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ وَأَبِي يُوسُفَ , وَمُحَمَّدٍ رَحِمَهُمُ اللهُ، وَقَدْ قَالَ بِذَلِكَ جَمَاعَةٌ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
