আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৫১- কুরআনের তাফসীর অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৪১৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪৭৭৪
সূরা আনকাবুত মুজাহিদ বলেছেন, وَكَانُوْا مُسْتَبْصِرِيْنَ অর্থাৎ পথভ্রষ্ট। অন্যরা বলেছেন, الْحَيَوَانُ এবং الْحَيُّ শব্দ দু’টি একই। فَلَيَعْلَمَنَّ اللهُ আল্লাহ্ আগে থেকেই তা জানতেন। এখানে ব্যবহৃত হয়েছে فَلِيَمِيْزَاللهُ (যেন আল্লাহ্ তাআলা চিহ্নিত করেন)-এর অর্থে। যেমন, আল্লাহ্ তাআলার বাণীঃ لِيَمِيْزَ اللهُ الْخَبِيْثَ مِنَ الطَّيِّبِ (যেন আল্লাহ্ তাআলা খবীছকে ভাল থেকে পৃথক করেন) أَثْقَالًا مَّعَ أَثْقَالِهِمْ অর্থাৎ তাদের অপরাধের সাথে আরো বোঝা।
সূরা রূম فَلَا يَرْبُوْ অর্থাৎ যে এ আশায় দান করে যে, এর চেয়ে উত্তম বিনিময় পাবে, এতে তার কোন সাওয়াব নেই। মুজাহিদ (রাহঃ) বলেন, يُحْبَرُوْنَ তারা নিয়ামত প্রাপ্ত হবে। يَمْهَدُوْنَ অর্থাৎ তাদের বিশ্রাম স্থল তৈরি করছে। الْوَدْقُ বৃষ্টি। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, هَلْ لَّكُمْ مِمَّا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ এ আয়াতটি আল্লাহ সম্পর্কে। تَخَافُوْنَهُمْ তোমরা কি পছন্দ কর যে, তোমাদের দাস-দাসী তোমাদের অংশীদার হোক, যেমন তোমরা পরস্পরের উত্তরাধিকার হও। يَصَّدَّعُوْنَ পৃথক পৃথক হয়ে যাবে। فَاصْدَعْ স্পষ্ট বর্ণনা কর। ইবনে আব্বাস ছাড়া অন্যে বলেন, ضُعْفٌ এবং ضَعْفٌ উভয়ের অর্থ একই। মুজাহিদ (রাহঃ) বলেন, السُّوأَى এবং الإساءة -এর অর্থ অপরাধীকে যথাযোগ্য শাস্তি দেয়া।
সূরা রূম فَلَا يَرْبُوْ অর্থাৎ যে এ আশায় দান করে যে, এর চেয়ে উত্তম বিনিময় পাবে, এতে তার কোন সাওয়াব নেই। মুজাহিদ (রাহঃ) বলেন, يُحْبَرُوْنَ তারা নিয়ামত প্রাপ্ত হবে। يَمْهَدُوْنَ অর্থাৎ তাদের বিশ্রাম স্থল তৈরি করছে। الْوَدْقُ বৃষ্টি। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, هَلْ لَّكُمْ مِمَّا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ এ আয়াতটি আল্লাহ সম্পর্কে। تَخَافُوْنَهُمْ তোমরা কি পছন্দ কর যে, তোমাদের দাস-দাসী তোমাদের অংশীদার হোক, যেমন তোমরা পরস্পরের উত্তরাধিকার হও। يَصَّدَّعُوْنَ পৃথক পৃথক হয়ে যাবে। فَاصْدَعْ স্পষ্ট বর্ণনা কর। ইবনে আব্বাস ছাড়া অন্যে বলেন, ضُعْفٌ এবং ضَعْفٌ উভয়ের অর্থ একই। মুজাহিদ (রাহঃ) বলেন, السُّوأَى এবং الإساءة -এর অর্থ অপরাধীকে যথাযোগ্য শাস্তি দেয়া।
৪৪১৬। মুহাম্মাদ ইবনে কাসীর (রাহঃ) ......... মাসরূক (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি কিন্দাবাসীদের সামনে বলছিল, কিয়ামতের দিন ধোঁয়া আসবে এবং মুনাফিকদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দেবে। মুমিনদের সর্দির মত হয়ে যাবে। এ কথা শুনে আমরা ভীত হয়ে পড়লাম। এরপর আমি ইবনে মাসউদ (রাযিঃ)-এর নিকট এলাম। তখন তিনি তাকিয়ায় ঠেস লাগিয়ে বসেছিলেন। (এ সব ঘটনা শুনে) তিনি রাগান্বিত হয়ে উঠে বসলেন এবং বললেন, যার জানা আছে সে যেন তা বলে, আর যে না জানে সে যেন বলে, আল্লাহ্ তাআলাই ভাল জানেন। জ্ঞানের মধ্যে এটাও একটা জ্ঞান যে, যার যে বিষয় জানা নেই সে বলবে “আমি এ বিষয়ে জানি না।”
আল্লাহ্ তাআলা নবী (ﷺ) কে বলেছেন, হে নবী! আপনি বলুন, “আমি আল্লাহর দ্বীনের দিকে আহবানের জন্য তোমাদের নিকট কোন বিনিময় চাই না এবং যারা মিথ্যা দাবি করে আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নই। কুরাইশগণ ইসলাম গ্রহণে দেরী করতে লাগল, সুতরাং রাসূল (ﷺ) তাদের জন্য বদদু'আ করেন। “হে আল্লাহ্! আপনি তাদের উপর ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর ন্যায় সাত বছর (দুর্ভিক্ষ) দিয়ে আমাকে সাহায্য করুন।” তারপর তারা এমন ভীষণ দুর্ভিক্ষের মধ্যে পতিত হল যে, তারা তাতে ধ্বংস হয়ে গেল এবং মৃত জন্তু ও তার হাড় খেতে বাধ্য হল। তারা (দুর্ভিক্ষের দরুন) আকাশ ও পৃথিবীর মাঝখানে ধোঁয়ার মত দেখতে পেল। তারপর আবু সুফিয়ান তাঁর কাছে এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! তুমি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার ও তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করার জন্য নির্দেশ দিচ্ছ; অথচ তোমার গোত্রের লোকেরা এখন ধ্বংস হয়ে গেল। সুতরাং আমাদের (এ দুর্ভিক্ষ থেকে) বাঁচার জন্য দু'আ কর। তখন তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ) إِلَى قَوْلِهِ (عَائِدُونَ “অতএব, তুমি অপেক্ষা কর সেদিনের, যেদিন স্পষ্ট ধূমরাচ্ছন্ন হবে আকাশ....।” তোমরা তো তোমাদের পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে। অবশেষে দুর্ভিক্ষের অবসান হল কিন্তু তারা কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করলো। তখন আল্লাহ্ তাআলা এদের উদ্দেশ্যেই নাযিল করলেন, যেদিন আমি তোমাদের প্রবলভাবে পাকড়াও করব। الْبَطْشَةَ এবং لِزَامًا দ্বারা বদরের যুদ্ধ বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ্ তাআলার বাণীঃ আলিফ, লাম, মীম। রোমকগণ পরাজিত হয়েছে।..... এবং পরাজয়ের পর শীঘ্রই বিজয়ী হবে। রোমকগণের ঘটনা অতিবাহিত হয়ে গেছে।
আল্লাহ্ তাআলা নবী (ﷺ) কে বলেছেন, হে নবী! আপনি বলুন, “আমি আল্লাহর দ্বীনের দিকে আহবানের জন্য তোমাদের নিকট কোন বিনিময় চাই না এবং যারা মিথ্যা দাবি করে আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নই। কুরাইশগণ ইসলাম গ্রহণে দেরী করতে লাগল, সুতরাং রাসূল (ﷺ) তাদের জন্য বদদু'আ করেন। “হে আল্লাহ্! আপনি তাদের উপর ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর ন্যায় সাত বছর (দুর্ভিক্ষ) দিয়ে আমাকে সাহায্য করুন।” তারপর তারা এমন ভীষণ দুর্ভিক্ষের মধ্যে পতিত হল যে, তারা তাতে ধ্বংস হয়ে গেল এবং মৃত জন্তু ও তার হাড় খেতে বাধ্য হল। তারা (দুর্ভিক্ষের দরুন) আকাশ ও পৃথিবীর মাঝখানে ধোঁয়ার মত দেখতে পেল। তারপর আবু সুফিয়ান তাঁর কাছে এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! তুমি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার ও তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করার জন্য নির্দেশ দিচ্ছ; অথচ তোমার গোত্রের লোকেরা এখন ধ্বংস হয়ে গেল। সুতরাং আমাদের (এ দুর্ভিক্ষ থেকে) বাঁচার জন্য দু'আ কর। তখন তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ) إِلَى قَوْلِهِ (عَائِدُونَ “অতএব, তুমি অপেক্ষা কর সেদিনের, যেদিন স্পষ্ট ধূমরাচ্ছন্ন হবে আকাশ....।” তোমরা তো তোমাদের পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে। অবশেষে দুর্ভিক্ষের অবসান হল কিন্তু তারা কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করলো। তখন আল্লাহ্ তাআলা এদের উদ্দেশ্যেই নাযিল করলেন, যেদিন আমি তোমাদের প্রবলভাবে পাকড়াও করব। الْبَطْشَةَ এবং لِزَامًا দ্বারা বদরের যুদ্ধ বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ্ তাআলার বাণীঃ আলিফ, লাম, মীম। রোমকগণ পরাজিত হয়েছে।..... এবং পরাজয়ের পর শীঘ্রই বিজয়ী হবে। রোমকগণের ঘটনা অতিবাহিত হয়ে গেছে।
سورة العنكبوت قال مجاهد: {وكانوا مستبصرين} [العنكبوت: 38]: «ضللة» وقال غيره: {الحيوان} [العنكبوت: 64]: «والحي واحد» {فليعلمن الله} [العنكبوت: 3]: «علم الله ذلك، إنما هي بمنزلة فليميز الله»، كقوله: {ليميز الله الخبيث من الطيب} [الأنفال: 37]، {أثقالا مع أثقالهم} [العنكبوت: 13]: «أوزارا مع أوزارهم»
باب سورة الروم {فلا يربو عند الله} [الروم: 39]: «من أعطى عطية يبتغي أفضل منه فلا أجر له فيها» قال مجاهد: {يحبرون} [الروم: 15]: «ينعمون»، {يمهدون} [الروم: 44]: «يسوون [ص:114] المضاجع» {الودق} [النور: 43]: «المطر» قال ابن عباس: {هل لكم مما ملكت أيمانكم}: " في الآلهة، وفيه {تخافونهم} [الروم: 28]: أن يرثوكم كما يرث بعضكم بعضا "، {يصدعون} [الروم: 43]: «يتفرقون»، {فاصدع} [الحجر: 94] وقال غيره: {ضعف} [الأعراف: 38]: «وضعف لغتان» وقال مجاهد: {السوأى} [الروم: 10]: «الإساءة جزاء المسيئين»
باب سورة الروم {فلا يربو عند الله} [الروم: 39]: «من أعطى عطية يبتغي أفضل منه فلا أجر له فيها» قال مجاهد: {يحبرون} [الروم: 15]: «ينعمون»، {يمهدون} [الروم: 44]: «يسوون [ص:114] المضاجع» {الودق} [النور: 43]: «المطر» قال ابن عباس: {هل لكم مما ملكت أيمانكم}: " في الآلهة، وفيه {تخافونهم} [الروم: 28]: أن يرثوكم كما يرث بعضكم بعضا "، {يصدعون} [الروم: 43]: «يتفرقون»، {فاصدع} [الحجر: 94] وقال غيره: {ضعف} [الأعراف: 38]: «وضعف لغتان» وقال مجاهد: {السوأى} [الروم: 10]: «الإساءة جزاء المسيئين»
4774 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا مَنْصُورٌ، وَالأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ: بَيْنَمَا رَجُلٌ يُحَدِّثُ فِي كِنْدَةَ، فَقَالَ: يَجِيءُ دُخَانٌ يَوْمَ القِيَامَةِ فَيَأْخُذُ بِأَسْمَاعِ المُنَافِقِينَ وَأَبْصَارِهِمْ، يَأْخُذُ المُؤْمِنَ كَهَيْئَةِ الزُّكَامِ، فَفَزِعْنَا، فَأَتَيْتُ ابْنَ مَسْعُودٍ، وَكَانَ مُتَّكِئًا فَغَضِبَ فَجَلَسَ، فَقَالَ: مَنْ عَلِمَ فَلْيَقُلْ، وَمَنْ لَمْ يَعْلَمْ فَلْيَقُلِ اللَّهُ أَعْلَمُ، فَإِنَّ مِنَ العِلْمِ أَنْ يَقُولَ لِمَا لاَ يَعْلَمُ: لاَ أَعْلَمُ، فَإِنَّ اللَّهَ قَالَ لِنَبِيِّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: {قُلْ مَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ وَمَا أَنَا مِنَ المُتَكَلِّفِينَ} [ص: 86] ، وَإِنَّ قُرَيْشًا أَبْطَئُوا عَنِ الإِسْلاَمِ، فَدَعَا عَلَيْهِمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَيْهِمْ بِسَبْعٍ كَسَبْعِ يُوسُفَ» فَأَخَذَتْهُمْ سَنَةٌ حَتَّى هَلَكُوا فِيهَا، وَأَكَلُوا المَيْتَةَ وَالعِظَامَ، وَيَرَى الرَّجُلُ مَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ، كَهَيْئَةِ الدُّخَانِ، فَجَاءَهُ أَبُو سُفْيَانَ فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ جِئْتَ تَأْمُرُنَا بِصِلَةِ الرَّحِمِ، وَإِنَّ قَوْمَكَ قَدْ هَلَكُوا فَادْعُ اللَّهَ، فَقَرَأَ: {فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ} [الدخان: 10] إِلَى قَوْلِهِ: {عَائِدُونَ} [الدخان: 15] أَفَيُكْشَفُ عَنْهُمْ عَذَابُ الآخِرَةِ إِذَا جَاءَ ثُمَّ عَادُوا إِلَى كُفْرِهِمْ، فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى: {يَوْمَ نَبْطِشُ البَطْشَةَ الكُبْرَى} [الدخان: 16] : يَوْمَ بَدْرٍ وَلِزَامًا: يَوْمَ بَدْرٍ {الم غُلِبَتِ الرُّومُ} [الروم: 2] إِلَى {سَيَغْلِبُونَ} [الروم: 3] : وَالرُّومُ قَدْ مَضَى
