আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৫১- কুরআনের তাফসীর অধ্যায়

হাদীস নং: ৪৩৭১
আন্তর্জাতিক নং: ৪৭২৬
২৪৪৯. আল্লাহর বাণীঃ “যখন তারা দু’জন দু’সমুদ্রের সঙ্গমস্থলে পৌঁছলেন , তারা তাদের মাছের কথা ভুলে গেলেন। আর মাছটি সুড়ঙ্গের মত পথ করে সমুদ্রে নেমে গেল। سربا চলার পথ يسرب সে চলছে। এর থেকেই বলা হয়েছে وَسَارِبٌ بِالنَّهَارِ দিনে পথ অতিক্রমকারী” ।
৪৩৭১। ইবরাহীম ইবনে মুসা (রাহঃ) ......... সাইদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) এর কাছে তার ঘরে ছিলাম। তখন তিনি বললেন, ইচ্ছা করলে আমার কাছে প্রশ্ন কর। আমি বললাম, হে আবু আব্বাস! আল্লাহ আমাকে আপনার উপর উৎসর্গ করুন। কুফায় নাওফ নামে একজন বক্তা আছে। সে বলছে যে, (খিযির (আলাইহিস সালাম) এর সাথে যে মুসার সাক্ষাত হয়েছিল তিনি বনী ইসরাইলের (প্রতি প্রেরিত) মুসা (আলাইহিস সালাম) নন। তবে, আমর ইবনে দিনার আমাকে বলেছেন যে, ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) এ কথা শুনে বললেন, আল্লাহর দুশমন মিথ্যা বলেছে। কিন্তু ইয়ালা (একজন বর্ণনাকারী) আমাকে বলেছেন যে, ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) একথা শুনে বললেন, উবাই ইবনে কা’ব আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহর রাসুল মুসা (আলাইহিস সালাম) একদিন লোকদের সামনে ওয়াজ করছিলেন। অবশেষে যখন তাদের চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগল এবং তাদের অন্তর বিগলিত হল, তখন তিনি (ওয়াজ সমাপ্ত করে) ফিরলেন।
এক ব্যক্তি তার কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! এ পৃথিবীতে আপনার চাইতে অধিক জ্ঞানী আর কেউ আছে? তিনি বললেন, না। এতে আল্লাহ তার উপর অসন্তুষ্ট হলেন। কেননা তিনি এ কথাটি আল্লাহর উপর হাওয়ালা করেন নি। তখন তাকে বলা হল, নিশ্চয়ই আছে। মুসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, হে রব! তিনি কোথায়? আল্লাহ বললেন, তিনি দু-সমুদ্রের সঙ্গমস্থলে। মুসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, হে রব! আপনি আমাকে এমন চিহ্ন বলুন, যার সাহায্যে আমি তার পরিচয় লাভ করতে পারি। বর্ণনাকারী ইবনে জুরাইজ বলেন, আমর আমাকে এভাবে বলেছেন যে, তাকে (সেখানে পাবে), যেখানে মাছটি তোমার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আর ইয়ালা আমাকে এভাবে বলেছেন, একটি মৃত মাছ নাও। যেখানে মাছটির মধ্যে প্রান দেওয়া হবে (সেখানেই তাকে পাবে)।
তারপর মুসা (আলাইহিস সালাম) একটি মাছ নিলেন এবং তা থলের মধ্যে রাখলেন। তিনি তার খাদেম কে বললেন, আমি তোমাকে শুধু এ দায়িত্ব দিচ্ছি যে, মাছটি যে স্থানে তোমার থেকে চলে যাবে সে স্থানটির কথা আমাকে বলবে। খাদেম বলল, এ তো বড় দায়িত্ব নয়। এরই বিবরন রয়েছে আল্লাহ তাআলার এ বাণীতেঃ “আর যখন মুসা বললেন, তার খাদেমকে অর্থাৎ ইউশা ইবনে নুনকে”। সাঈদ (বর্ণনাকারী) এর বর্ণনায় নামের উল্লেখ নেই। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, যখন তিনি একটি বড় পাথরের ছায়ায় ভিজা মাটির কাছে অবস্থান করছিলেন তখন মাছটি লাফিয়ে উঠল। মুসা (আলাইহিস সালাম) তখন নিদ্রায় ছিলেন। তার খাদেম (মনে মনে) বললেন, তাকে এখন জাগাব না। অবশেষে যখন তিনি জাগালেন, তখন তাকে মাছের খবর বলতে ভুলে গেল। আর মাছটি লাফিয়ে সমুদ্রে ঢুকে পড়ল। আল্লাহ তাআলা মাছটির চলার পথে পানি বন্ধ করে দিলেন। পরিণামে যেন পাথরের মধ্যে চিহ্ন পড়েছে।
বর্ণনাকারী বলেন, আমর আমাকে বলেছেন যে, যেন পাথরের মধ্যে চিহ্ন এরূপ হয়ে রইল, বলে তিনি তার দুটি বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তার পাশের আঙ্গুলগুলো একসাথে মিলিয়ে বৃত্তাকার বানিয়ে দেখালেন। (মুসা (আলাইহিস সালাম) বললেন) আমরা তো আমাদের এ সফরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি’। ইউশা বললেন, আল্লাহ আপনার থেকে ক্লান্তি দূর করে দিয়েছেন। সাঈদের বর্ণনায় এ কথার উল্লেখ নেই। খাদেম তাকে মাছের পালিয়ে যাবার সংবাদ দিলেন। তারপর তারা উভয়ে ফিরে এলেন এবং খিযির (আলাইহিস সালাম) কে পেলেন। বর্ণনাকারী ইবনে যুরাইজ বলেন, উসমান ইবনে আবু সুলাইমান আমাকে বলেছেন যে, মুসা (আলাইহিস সালাম) খিযির (আলাইহিস সালাম) কে পেলেন সমুদ্রের বুকে সবুজ বিছানার উপর। সাঈদ ইবনে জুবাইর (রাযিঃ) বলেন, তিনি চাঁদর মুড়ি দিয়েছিলেন। চাঁদরের এক পাশ ছিল তার দুপায়ের নীচে এবং অন্য পাশ ছিল তার মাথার উপর।
মুসা (আলাইহিস সালাম) তাকে সালাম দিলেন। তিনি তার চেহারা থেকে কাপড় সরিয়ে বললেন, আমার এ অঞ্চলেও কি সালাম আছে? তুমি কে? তিনি বললেন, আমি মুসা। খিযির (আলাইহিস সালাম) বললেন, বনী ইসরাইলের মুসা? উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তোমার ব্যাপার কি? মুসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, আমি এসেছি, “সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দান করা হয়েছে তা থেকে আমাকে শিক্ষা দিবেন” তিনি বললেন, তোমার কাছে যে তাওরাত রয়েছে তা কি তোমার জন্য যথেষ্ট নয়? তোমার কাছে তো ওহী আসে। হে মুসা! আমার কাছে যে জ্ঞান আছে তা তোমার জানা সমীচীন নয়। আর তোমার কাছে যে জ্ঞান আছে তা আমার জানা উচিত নয়। এ সময় একটি পাখি এসে তার ঠোঁট দিয়ে সমুদ্র থেকে পানি নিল। (এ দৃশ্য দেখে) খিযির (আলাইহিস সালাম) বললেন, আল্লাহর কসম, আল্লাহর জ্ঞানের কাছে আমার ও তোমার জ্ঞান এতটুকু। যতটুকু এ পাখিটি সমুদ্র হতে তার ঠোঁটে করে নিয়েছে।
অবশেষে তারা উভয়ে নৌকায় আরোহণ করলেন। তারা ছোট খেয়া নৌকা পেলেন, যা এ -পাড়ের লোকদের ও পাড়ে এবং ও পাড়ের লোকদের এ পাড়ে বহন করত। নৌকার লোকেরা খিযির কে চিনতে পারল। তারা বলল, আল্লাহর নেক বান্দা। ইয়ালা বলেন, আমরা সাঈদকে জিজ্ঞেস করলাম, তারা কি খিযির সম্পর্কে এ মন্তব্য করেছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। (তারা বলল) আমরা তাকে পারিশ্রমিক নিয়ে বহন করব না। এরপর খিযির (আলাইহিস সালাম) তাদের নৌকা (এর এক একস্থান) বিদীর্ণ করে দিলেন এবং একটি গোঁজ দিয়ে তা বন্ধ করে দিলেন। মুসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, আপনি কি আরোহীদের নিমজ্জিত করার জন্য নৌকাটি বিদীর্ণ করলেন? আপনি তো গুরুতর অন্যায় কাজ করলেন।
মুজাহিদ (রাহঃ) বলেন, اِمْرًا অর্থাৎ নিষিদ্ধ কাজ। তিনি (খিযির) বললেন, আমি কি বলিনি যে তুমি কিছুতেই আমার সঙ্গে ধৈর্য ধারণ করতে পারবেনা?’ প্রথমটি ছিল মুসা (আলাইহিস সালাম) এর পক্ষ থেকে ভুল। দ্বিতীয়টি শর্তস্বরূপ এবং তৃতীয় ইচ্ছাকৃত বলে গণ্য। মুসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবে না ও আমার ব্যাপারে অত্যধিক কঠোরতা অবলম্বন করবে না। (এরপর) তারা এক বালকের সাক্ষাত পেলেন, খিযির তাকে হত্যা করে ফেললেন। ইয়ালা বলেন, সাঈদ বলেছেন, খিযির (আলাইহিস সালাম) বালকদের খেলাধুলা করতে দেখতে পেলেন। তিনি একটি চটপটে কাফের বালককে ধরলেন এবং তাকে পাশে শুইয়ে যবেহ করে ফেললেন। মুসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, ’আপনি কি এক নিষ্পাপ জীবন নাশ করলেন অপরাধ ছাড়াই?’ সে তো কোন গুনাহের কাজ করেনি।
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) এখানে زَكِيَّةً পড়তেন। زَاكِيَّةً ভাল মুসলমান। যেমন তুমি পড় غُلَامً زَكِيَّا। তারপর তারা দুজন চলতে লাগল এবং একটি পতনোম্মুখ প্রাচীর পেল। খিযির (আলাইহিস সালাম) সেটাকে সোজা করে দিলেন। সাঈদ তার হাত দ্বারা ইশারা করে বললেন এরূপ, এবং তিনি তার হাত উঠিয়ে সোজা করলেন। ইয়ালা বলেন, আমার মনে হয় সাঈদ বলেছিলেন, খিযির (আলাইহিস সালাম) প্রাচীরের উপর দুহাতে স্পর্শ করলেন এবং প্রাচীর দাঁড়িয়ে গেল। মুসা (আলাইহিস সালাম) বললেন,لَوْ شِئْتَ لَاتَّخَذْتَ عَلَيْهِ أَجْرًا আপনি ইচ্ছা করলে এ জন্য পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে পারতেন। সাঈদ বলেন,أَجْرًا দ্বারা এখানে খাদ্য দ্রব্য বোঝানো হয়েছে। وَكَانَ وَرَآءَهُمْ এর অর্থ তাদের সামনে। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) এ আয়াতে أمامهم ملك (তাদের সামনে ছিল এক রাজা) পড়েন। সাঈদ ব্যতীত অন্য বর্ণনাকারীরা সে রাজার নাম বলেছেন “হুদাদ ইবনে বুদাদ” আর হত্যা কৃত বালকটির নাম ছিল জাইসুর।
সে রাজা প্রত্যেকটি (ভাল) নৌকা বল প্রয়োগে ছিনিয়ে নিত। খিযির (আলাইহিস সালাম) এর নৌকা বিদীর্ণ করার উদ্দেশ্য ছিল , (সে অত্যাচারী রাজা) ত্রুটি যুক্ত নৌকা দেখলে তা ছিনিয়ে নিবে না। তারপর যখন অতিক্রম করে গেল, তখন তাদের নৌকা মেরামত করে নিল এবং তা ব্যবহার যোগ্য করে তুলল। কেউ বলে নৌকার ছিদ্রটা মেরামত করেছিল সীসা গলিয়ে। আবার কেউ বলে, আলকাতরা মিলিয়ে নৌকা মেরামত করেছিল। “তার পিতা মাতা ছিল মুমিন”। আর সে বালকটি ছিল কাফের। আমি আশঙ্কা করলাম যে সে বিদ্রোহাচরণ ও কুফরির দ্বারা তাদের বিব্রত করবে। অর্থাৎ তার স্নেহ ভালবাসায় তাদের তার ধর্মের অনুসারী করে ফেলবে। এরপর আমি চাইলাম যে তাদের প্রতিপালক যেন তাদের ওর পরিবর্তে এক সন্তান দান করেন, যে হবে পবিত্রতায় মহত্তর ও ভক্তি ভালবাসায় ঘনিষ্টতর।
খিযির (আলাইহিস সালাম) যে বালকটিকে হত্যা করেছিলেন, সে বালকটির চেয়ে পরবর্তী বালকটির প্রতি তার পিতামাতা অধিক স্নেহশীল ও দয়াশীল হবেন। (ইবনে জুরাইয বলেন) সাঈদ ব্যতীত অন্য সকল বর্ণনাকারী বলেছেন যে, এর অর্থ হল, সে বালকটির পরিবর্তে আল্লাহ তাদের একটি কন্যা সন্তান দান করেন। দাউদ ইবনে আবু আসিম বলেন, এখানে কন্যা সন্তান বোঝানো হয়েছে।
بَابُ قَوْلِهِ: {فَلَمَّا بَلَغَا مَجْمَعَ بَيْنِهِمَا نَسِيَا حُوتَهُمَا فَاتَّخَذَ سَبِيلَهُ فِي البَحْرِ سَرَبًا} [الكهف: 61] «مَذْهَبًا، يَسْرُبُ يَسْلُكُ» ، وَمِنْهُ: {وَسَارِبٌ بِالنَّهَارِ} [الرعد: 10]
4726 - حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ، أَنَّ ابْنَ [ص:90] جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ، قَالَ: أَخْبَرَنِي يَعْلَى بْنُ مُسْلِمٍ، وَعَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، يَزِيدُ أَحَدُهُمَا عَلَى صَاحِبِهِ وَغَيْرُهُمَا قَدْ سَمِعْتُهُ يُحَدِّثُهُ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ: إِنَّا لَعِنْدَ ابْنِ عَبَّاسٍ فِي بَيْتِهِ، إِذْ قَالَ: سَلُونِي، قُلْتُ: أَيْ أَبَا عَبَّاسٍ، جَعَلَنِي اللَّهُ فِدَاءَكَ، بِالكُوفَةِ رَجُلٌ قَاصٌّ يُقَالُ لَهُ: نَوْفٌ يَزْعُمُ أَنَّهُ لَيْسَ بِمُوسَى بَنِي إِسْرَائِيلَ، أَمَّا عَمْرٌو فَقَالَ لِي: قَالَ: قَدْ كَذَبَ عَدُوُّ اللَّهِ، وَأَمَّا يَعْلَى فَقَالَ لِي: قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ، حَدَّثَنِي أُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " مُوسَى رَسُولُ اللَّهِ عَلَيْهِ السَّلاَمُ، قَالَ: ذَكَّرَ النَّاسَ يَوْمًا حَتَّى إِذَا فَاضَتِ العُيُونُ، وَرَقَّتِ القُلُوبُ، وَلَّى فَأَدْرَكَهُ رَجُلٌ فَقَالَ: أَيْ رَسُولَ اللَّهِ، هَلْ فِي الأَرْضِ أَحَدٌ أَعْلَمُ مِنْكَ؟ قَالَ: لاَ، فَعَتَبَ عَلَيْهِ إِذْ لَمْ يَرُدَّ العِلْمَ إِلَى اللَّهِ، قِيلَ: بَلَى، قَالَ: أَيْ رَبِّ، فَأَيْنَ؟ قَالَ: بِمَجْمَعِ البَحْرَيْنِ، قَالَ: أَيْ رَبِّ، اجْعَلْ لِي عَلَمًا أَعْلَمُ ذَلِكَ بِهِ - فَقَالَ لِي عَمْرٌو - قَالَ: حَيْثُ يُفَارِقُكَ الحُوتُ - وَقَالَ لِي يَعْلَى - قَالَ: خُذْ نُونًا مَيِّتًا، حَيْثُ يُنْفَخُ فِيهِ الرُّوحُ، فَأَخَذَ حُوتًا فَجَعَلَهُ فِي مِكْتَلٍ، فَقَالَ لِفَتَاهُ: لاَ أُكَلِّفُكَ إِلَّا أَنْ تُخْبِرَنِي بِحَيْثُ يُفَارِقُكَ الحُوتُ، قَالَ: مَا كَلَّفْتَ كَثِيرًا فَذَلِكَ قَوْلُهُ جَلَّ ذِكْرُهُ: {وَإِذْ قَالَ مُوسَى لِفَتَاهُ} [الكهف: 60] يُوشَعَ بْنِ نُونٍ - لَيْسَتْ عَنْ سَعِيدٍ - قَالَ: فَبَيْنَمَا هُوَ فِي ظِلِّ صَخْرَةٍ فِي مَكَانٍ ثَرْيَانَ، إِذْ تَضَرَّبَ الحُوتُ وَمُوسَى نَائِمٌ، فَقَالَ فَتَاهُ: لاَ أُوقِظُهُ حَتَّى إِذَا اسْتَيْقَظَ نَسِيَ أَنْ يُخْبِرَهُ، وَتَضَرَّبَ الحُوتُ حَتَّى دَخَلَ البَحْرَ، فَأَمْسَكَ اللَّهُ عَنْهُ جِرْيَةَ البَحْرِ، حَتَّى كَأَنَّ أَثَرَهُ فِي حَجَرٍ - قَالَ لِي عَمْرٌو: هَكَذَا كَأَنَّ أَثَرَهُ فِي حَجَرٍ، وَحَلَّقَ بَيْنَ إِبْهَامَيْهِ وَاللَّتَيْنِ تَلِيَانِهِمَا - {لَقَدْ لَقِينَا مِنْ سَفَرِنَا هَذَا نَصَبًا} [الكهف: 62] ، قَالَ: قَدْ قَطَعَ اللَّهُ عَنْكَ النَّصَبَ - لَيْسَتْ هَذِهِ عَنْ سَعِيدٍ أَخْبَرَهُ - فَرَجَعَا فَوَجَدَا خَضِرًا - قَالَ لِي عُثْمَانُ بْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ - عَلَى طِنْفِسَةٍ خَضْرَاءَ، عَلَى كَبِدِ البَحْرِ - قَالَ سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ - مُسَجًّى بِثَوْبِهِ قَدْ جَعَلَ طَرَفَهُ تَحْتَ رِجْلَيْهِ، وَطَرَفَهُ تَحْتَ رَأْسِهِ، فَسَلَّمَ عَلَيْهِ مُوسَى فَكَشَفَ عَنْ وَجْهِهِ، وَقَالَ: هَلْ بِأَرْضِي مِنْ سَلاَمٍ مَنْ أَنْتَ؟ قَالَ: أَنَا مُوسَى، قَالَ: مُوسَى بَنِي إِسْرَائِيلَ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: فَمَا شَأْنُكَ؟ قَالَ: جِئْتُ لِتُعَلِّمَنِي مِمَّا عُلِّمْتَ رَشَدًا، قَالَ: أَمَا يَكْفِيكَ أَنَّ التَّوْرَاةَ بِيَدَيْكَ، وَأَنَّ الوَحْيَ يَأْتِيكَ يَا مُوسَى، إِنَّ لِي عِلْمًا لاَ يَنْبَغِي لَكَ أَنْ تَعْلَمَهُ، وَإِنَّ لَكَ عِلْمًا لاَ يَنْبَغِي لِي أَنْ أَعْلَمَهُ، فَأَخَذَ طَائِرٌ بِمِنْقَارِهِ مِنَ البَحْرِ، وَقَالَ: وَاللَّهِ مَا عِلْمِي وَمَا عِلْمُكَ فِي جَنْبِ عِلْمِ اللَّهِ إِلَّا كَمَا أَخَذَ هَذَا الطَّائِرُ بِمِنْقَارِهِ مِنَ البَحْرِ، حَتَّى إِذَا رَكِبَا فِي السَّفِينَةِ وَجَدَا مَعَابِرَ صِغَارًا، تَحْمِلُ أَهْلَ هَذَا السَّاحِلِ إِلَى أَهْلِ هَذَا السَّاحِلِ الآخَرِ، عَرَفُوهُ فَقَالُوا: عَبْدُ اللَّهِ الصَّالِحُ - قَالَ: قُلْنَا لِسَعِيدٍ: خَضِرٌ؟ [ص:91] قَالَ: نَعَمْ - لاَ نَحْمِلُهُ بِأَجْرٍ، فَخَرَقَهَا وَوَتَدَ فِيهَا وَتِدًا، قَالَ مُوسَى: {أَخَرَقْتَهَا لِتُغْرِقَ أَهْلَهَا، لَقَدْ جِئْتَ شَيْئًا إِمْرًا} [الكهف: 71]- قَالَ مُجَاهِدٌ: مُنْكَرًا - (قَالَ أَلَمْ أَقُلْ إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيعَ مَعِي صَبْرًا) ، كَانَتِ الأُولَى نِسْيَانًا وَالوُسْطَى شَرْطًا، وَالثَّالِثَةُ عَمْدًا، {قَالَ: لاَ تُؤَاخِذْنِي بِمَا نَسِيتُ وَلاَ تُرْهِقْنِي مِنْ أَمْرِي عُسْرًا} [الكهف: 73] ، لَقِيَا غُلاَمًا فَقَتَلَهُ - قَالَ يَعْلَى: قَالَ سَعِيدٌ: وَجَدَ غِلْمَانًا يَلْعَبُونَ فَأَخَذَ غُلاَمًا كَافِرًا ظَرِيفًا فَأَضْجَعَهُ ثُمَّ ذَبَحَهُ بِالسِّكِّينِ - {قَالَ: أَقَتَلْتَ نَفْسًا زَكِيَّةً بِغَيْرِ نَفْسٍ} [الكهف: 74] لَمْ تَعْمَلْ بِالحِنْثِ - وَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ قَرَأَهَا زَكِيَّةً (زَاكِيَةً) : مُسْلِمَةً كَقَوْلِكَ غُلاَمًا زَكِيًّا - فَانْطَلَقَا فَوَجَدَا جِدَارًا يُرِيدُ أَنْ يَنْقَضَّ، فَأَقَامَهُ - قَالَ سَعِيدٌ بِيَدِهِ هَكَذَا، وَرَفَعَ يَدَهُ فَاسْتَقَامَ، قَالَ يَعْلَى: حَسِبْتُ أَنَّ سَعِيدًا قَالَ: فَمَسَحَهُ بِيَدِهِ فَاسْتَقَامَ - {لَوْ شِئْتَ لاَتَّخَذْتَ عَلَيْهِ أَجْرًا} [الكهف: 77]- قَالَ سَعِيدٌ: أَجْرًا نَأْكُلُهُ - {وَكَانَ وَرَاءَهُمْ} [الكهف: 79] وَكَانَ أَمَامَهُمْ - قَرَأَهَا ابْنُ عَبَّاسٍ: أَمَامَهُمْ مَلِكٌ، يَزْعُمُونَ عَنْ غَيْرِ سَعِيدٍ أَنَّهُ هُدَدُ بْنُ بُدَدَ، وَالغُلاَمُ المَقْتُولُ اسْمُهُ يَزْعُمُونَ جَيْسُورٌ - {مَلِكٌ يَأْخُذُ كُلَّ سَفِينَةٍ غَصْبًا} [الكهف: 79] ، فَأَرَدْتُ إِذَا هِيَ مَرَّتْ بِهِ أَنْ يَدَعَهَا لِعَيْبِهَا، فَإِذَا جَاوَزُوا أَصْلَحُوهَا فَانْتَفَعُوا بِهَا - وَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ: سَدُّوهَا بِقَارُورَةٍ، وَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ بِالقَارِ - {كَانَ أَبَوَاهُ مُؤْمِنَيْنِ} وَكَانَ كَافِرًا {فَخَشِينَا أَنْ يُرْهِقَهُمَا طُغْيَانًا، وَكُفْرًا} [الكهف: 80] أَنْ يَحْمِلَهُمَا حُبُّهُ عَلَى أَنْ يُتَابِعَاهُ عَلَى دِينِهِ، (فَأَرَدْنَا أَنْ يُبَدِّلَهُمَا رَبُّهُمَا خَيْرًا مِنْهُ زَكَاةً) لِقَوْلِهِ: {أَقَتَلْتَ نَفْسًا زَكِيَّةً} [الكهف: 74] {وَأَقْرَبَ رُحْمًا} [الكهف: 81] هُمَا بِهِ أَرْحَمُ مِنْهُمَا بِالأَوَّلِ، الَّذِي قَتَلَ خَضِرٌ - وَزَعَمَ غَيْرُ سَعِيدٍ: أَنَّهُمَا أُبْدِلاَ جَارِيَةً، وَأَمَّا دَاوُدُ بْنُ أَبِي عَاصِمٍ فَقَالَ: عَنْ غَيْرِ وَاحِدٍ: إِنَّهَا جَارِيَةٌ - "
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ বুখারী - হাদীস নং ৪৩৭১ | মুসলিম বাংলা