আল মুওয়াত্তা - ইমাম মালিক রহঃ
৯. সফরাবস্থায় নামায কসর পড়া
হাদীস নং: ৪০৯
২৪. নামায সম্পর্কিত বিবিধ আহকাম
রেওয়ায়ত ৯১. সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাযিঃ) বলেনঃ দুইজন লোক পরস্পর ভাই ভাই, (ঘটনাক্রমে) তাঁহাদের মধ্যে এক ভাই মৃত্যুবরণ করেন অপর ভাইয়ের চল্লিশ রাত্রি পূর্বে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সমীপে প্রথম (মৃত্যুবরণকারী) ভাইয়ের ফযীলত আলোচিত হয়। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলিলেনঃ দ্বিতীয় ভাই কি মুসলমান ছিলেন না? (উপস্থিত) সাহাবীগণ বলিলেনঃ হ্যা (তিনিও মুসলমান ছিলেন), ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আর তিনি মন্দলোক ছিলেন না। (ইহা শ্রবণ করার পর) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলিলেনঃ তোমরা জান না, তাহার নামায তাহাকে কোন স্তরে পৌছাইয়াছে। অবশ্য নামাযের দৃষ্টান্ত হইল তোমাদের একজনের দ্বারে অবস্থিত গভীর, পরিপূর্ণ সুমিষ্ট পানির নহরের মত। উক্ত নহরে দৈনিক পাঁচবার যে অবগাহন করে ইহাতে তোমার কি ধারণা, তাহার দেহে কোন ময়লা অবশিষ্ট থাকিবে? অবশ্য তোমরা জান না যে, তাহার নামায তাহাকে মর্যাদার কোন স্তরে নিয়া পৌছাইয়াছে।
بَاب جَامِعِ الصَّلَاةِ
وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِكٍ، أَنَّهُ بَلَغَهُ عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ قَالَ كَانَ رَجُلاَنِ أَخَوَانِ فَهَلَكَ أَحَدُهُمَا قَبْلَ صَاحِبِهِ بِأَرْبَعِينَ لَيْلَةً فَذُكِرَتْ فَضِيلَةُ الأَوَّلِ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " أَلَمْ يَكُنِ الآخَرُ مُسْلِمًا " . قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ وَكَانَ لاَ بَأْسَ بِهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَمَا يُدْرِيكُمْ مَا بَلَغَتْ بِهِ صَلاَتُهُ إِنَّمَا مَثَلُ الصَّلاَةِ كَمَثَلِ نَهْرٍ غَمْرٍ عَذْبٍ بِبَابِ أَحَدِكُمْ يَقْتَحِمُ فِيهِ كُلَّ يَوْمٍ خَمْسَ مَرَّاتٍ فَمَا تَرَوْنَ ذَلِكَ يُبْقِي مِنْ دَرَنِهِ فَإِنَّكُمْ لاَ تَدْرُونَ مَا بَلَغَتْ بِهِ صَلاَتُهُ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
নামাযকে বাড়ির সম্মুখে প্রবাহিত গভীর নদীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। নদী গভীর ও প্রবাহমান হলে তার পানি স্বচ্ছ হয়ে থাকে। পানি যত স্বচ্ছ হয়, তা দ্বারা ময়লাও ততবেশি দূর হয়। কর্মব্যস্ততায় ধুলোমলিন লোক পরিষ্কার পানি দ্বারা রোজ পাঁচবার গোসল করলে তার শরীরে আদৌ ময়লা থাকতে পারে না। ঠিক তেমনি নামায দ্বারাও পাপের মলিনতা দূর হয়। যে ব্যক্তি রোজ পাঁচবার বাড়ি থেকে বের হয়ে সামনের মসজিদে নামায পড়বে, তার সেদিনের সমস্ত সগীরা গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
الصَّلَوَاتُ الْخَمْسُ وَالْجُمُعَةُ إِلَى الْجُمُعَةِ، كَفَّارَاتٌ لِمَا بَيْنَهُنَّ، مَا لَمْ تُغْشَ الْكَبَائِرُ .
'পাঁচ নামায এবং জুমু'আ হতে অপর জুমু'আ তার মধ্যবর্তী সমস্ত গুনাহের জন্য কাফ্ফারা, যাবৎ না কবীরা গুনাহ করা হয়।
অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের প্রতি দুই ওয়াক্ত দ্বারা তার মাঝখানের সগীরা গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যায়। এমনিভাবে এক জুমু'আ থেকে অপর জুমু'আ দ্বারা মধ্যবর্তী সমস্ত সগীরা গুনাহ মাফ হয়ে যায়। আল্লাহু আকবার। কতইনা মেহেরবান আমাদের মাওলা। নামায পড়া তাঁর আদেশ। মনিব কোনও আদেশ করলে গোলাম তা মানতে বাধ্য। তাতে আবার পুরস্কার কিসের? অথচ দয়াময় আল্লাহ নামাযের বিনিময়ে আখিরাতে বিশাল পুরস্কারও দান করবেন। তদুপরি এর মধ্যে তিনি এই বাড়তি কল্যাণও নিহিত রেখেছেন যে, এর দ্বারা পাপের পঙ্কিলতাও দূর হয়। বান্দা নিজ অবহেলা ও অসতর্কতায় পাপ করে, অথচ সেজন্য সহজে যাতে সে শাস্তির সম্মুখীন না হয় সেজন্য তিনি দয়াপরবশ হয়ে অতি সহজে তার ক্ষমালাভেরও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এতসব মেহেরবানীর কী শোকর আমার আদায় করতে পারি? নামায দ্বারা গুনাহ মাফ হওয়া সম্পর্কে কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَأَقِمِ الصَّلَاةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَلِكَ ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ
এবং (হে নবী!) দিনের উভয় প্রান্তে এবং রাতের কিছু অংশে নামায কায়েম কর। নিশ্চয়ই পুণ্যরাজি পাপরাশিকে মিটিয়ে দেয়। যারা উপদেশ মানে তাদের জন্য এটা এক উপদেশ।
প্রকাশ থাকে যে, নামায দ্বারা মাফ হয় শুধু সগীরা গুনাহ, কবীরা গুনাহ নয়। কবীরা শুনাহ মাফ হওয়ার জন্য তাওবা জরুরি।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা আল্লাহ তা'আলার অশেষ দয়ামায়ার পরিচয় পাওয়া যায়।
খ. এ হাদীছ আমাদের অন্তরে ক্ষমাপ্রাপ্তির আশা যোগায়।
গ. এ হাদীছ আমাদেরকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ের প্রতি উৎসাহ দান করে। আমরা অবশ্যই এর উপর আমল করতে থাকব। আল্লাহ তা'আলা তাওফীক দান করুন।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
الصَّلَوَاتُ الْخَمْسُ وَالْجُمُعَةُ إِلَى الْجُمُعَةِ، كَفَّارَاتٌ لِمَا بَيْنَهُنَّ، مَا لَمْ تُغْشَ الْكَبَائِرُ .
'পাঁচ নামায এবং জুমু'আ হতে অপর জুমু'আ তার মধ্যবর্তী সমস্ত গুনাহের জন্য কাফ্ফারা, যাবৎ না কবীরা গুনাহ করা হয়।
অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের প্রতি দুই ওয়াক্ত দ্বারা তার মাঝখানের সগীরা গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যায়। এমনিভাবে এক জুমু'আ থেকে অপর জুমু'আ দ্বারা মধ্যবর্তী সমস্ত সগীরা গুনাহ মাফ হয়ে যায়। আল্লাহু আকবার। কতইনা মেহেরবান আমাদের মাওলা। নামায পড়া তাঁর আদেশ। মনিব কোনও আদেশ করলে গোলাম তা মানতে বাধ্য। তাতে আবার পুরস্কার কিসের? অথচ দয়াময় আল্লাহ নামাযের বিনিময়ে আখিরাতে বিশাল পুরস্কারও দান করবেন। তদুপরি এর মধ্যে তিনি এই বাড়তি কল্যাণও নিহিত রেখেছেন যে, এর দ্বারা পাপের পঙ্কিলতাও দূর হয়। বান্দা নিজ অবহেলা ও অসতর্কতায় পাপ করে, অথচ সেজন্য সহজে যাতে সে শাস্তির সম্মুখীন না হয় সেজন্য তিনি দয়াপরবশ হয়ে অতি সহজে তার ক্ষমালাভেরও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এতসব মেহেরবানীর কী শোকর আমার আদায় করতে পারি? নামায দ্বারা গুনাহ মাফ হওয়া সম্পর্কে কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَأَقِمِ الصَّلَاةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَلِكَ ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ
এবং (হে নবী!) দিনের উভয় প্রান্তে এবং রাতের কিছু অংশে নামায কায়েম কর। নিশ্চয়ই পুণ্যরাজি পাপরাশিকে মিটিয়ে দেয়। যারা উপদেশ মানে তাদের জন্য এটা এক উপদেশ।
প্রকাশ থাকে যে, নামায দ্বারা মাফ হয় শুধু সগীরা গুনাহ, কবীরা গুনাহ নয়। কবীরা শুনাহ মাফ হওয়ার জন্য তাওবা জরুরি।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা আল্লাহ তা'আলার অশেষ দয়ামায়ার পরিচয় পাওয়া যায়।
খ. এ হাদীছ আমাদের অন্তরে ক্ষমাপ্রাপ্তির আশা যোগায়।
গ. এ হাদীছ আমাদেরকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ের প্রতি উৎসাহ দান করে। আমরা অবশ্যই এর উপর আমল করতে থাকব। আল্লাহ তা'আলা তাওফীক দান করুন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
