মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৯৪৪
- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
প্রথম অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা
৫৯৪৪। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, একদা হযরত উসাইদ ইবনে হুযায়র ও আব্বাদ ইবনে বিশর (রাঃ) তাহাদের কোন এক প্রয়োজনে দীর্ঘ রাত্র পর্যন্ত নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহিত কথাবার্তা বলিতে থাকেন। রাত্রটি ছিল ঘোর অন্ধকার। অতঃপর যখন তাহারা (বাড়ীর উদ্দেশ্যে) রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হইতে রওয়ানা হইলেন, এই সময় তাহাদের প্রত্যেকের হাতে ছোট এক একটি লাঠি ছিল। পথে বাহির হওয়ার পর তাহাদের একজনের লাঠিটি প্রদীপের ন্যায় আলো দিতে লাগিল। আর তাহারা সেই লাঠির আলোয় পথ চলিতে থাকেন। অতঃপর যখন তাহাদের উভয়ের পথ পৃথক পৃথক হইল, তখন অপরজনের লাঠিটিও আলোকিত হইয়া উঠিল। অবশেষে তাহারা প্রত্যেকে আপন আপন লাঠির আলোয় নিজেদের বাড়ীতে পৌঁছিয়া গেলেন। বুখারী
كتاب الفضائل والشمائل
بَاب الكرامات: الْفَصْل الأول
عَن أَنس أَنَّ أُسَيْدَ بْنَ حُضَيْرٍ وَعَبَّادَ بْنَ بِشْرٍ تَحَدَّثَا عِنْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَاجَةٍ لَهُمَا حَتَّى ذَهَبَ مِنَ اللَّيْلِ سَاعَةٌ فِي لَيْلَةٍ شَدِيدَةِ الظُّلْمَةِ ثُمَّ خَرَجَا مِنْ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ينقلبان وبيد كل مِنْهُمَا عُصَيَّةٌ فَأَضَاءَتْ عصى أَحَدِهِمَا لَهُمَا حَتَّى مَشَيَا فِي ضَوْئِهَا حَتَّى إِذَا افْتَرَقَتْ بِهِمَا الطَّرِيقُ أَضَاءَتْ لِلْآخَرِ عَصَاهُ فَمَشَى كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا فِي ضَوْءِ عَصَاهُ حَتَّى بلغ أَهله رَوَاهُ البُخَارِيّ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

كرامات ইহা বহুবচন। একবচনে كرامة অর্থ, মর্যাদা ও সম্মান। উহা অলৌকিক ও ব্যতিক্রমধর্মী কার্যকে বলা হয়, যাহা নেককার মু'মিনের দ্বারা প্রকাশ পায়। মু'জেযা ও কারামতের মধ্যে পার্থক্য হইল, মু'জেযা নবীদের বৈশিষ্ট্য, সুতরাং মু'জেযা প্রকাশের সাথে নবুওতের দাবী হওয়া শর্ত। পক্ষান্তরে কারামত প্রকাশিত হয় ওলীদের মাধ্যমে। সেখানে নিজেকে ওলী হিসাবে দাবী করা শর্ত নহে। আহলে সুন্নত ওয়াল জমাআত বলেন, কোন ব্যক্তি হইতে কারামত প্রকাশ হওয়া সত্য এবং কোরআনেও ইহার বহু প্রমাণ বিদ্যমান আছে। যেমন— কোন পুরুষের স্পর্শ ছাড়াই মারইয়ামের গর্ভধারণ করা, আসহাবে কাহফ দৈহিক কোন পরিবর্তন ব্যতিরেকে একই অবস্থায় নিদ্রায় পড়িয়া থাকা, বে-মওসূমে মারইয়ামের কাছে ফলফলারি আসা, চক্ষুর পলকে সুলাইমান (আঃ)-এর সম্মুখে বিলকীসের সিংহাসন লইয়া আসা ইত্যাদি। অবশ্য মু'তাযেলা সম্প্রদায় কারামতকে অস্বীকার করে। বস্তুত ইহা তাহাদের গোমরাহী ও ভ্রান্ত ধারণা। কেননা, ইহা নির্ভরযোগ্য বহু হাদীস ও বর্ণনার দ্বারা প্রমাণিত। বহু হাযারাতে সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, তাবয়ে তাবেয়ীন, সলফে সালেহীন বুযুর্গ ব্যক্তিগণ হইতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকারের কারামত ও অলৌকিক ঘটনাবলী প্রকাশ পাইয়াছে। আগামীতেও হইতে পারে। আর আল্লাহর দুশমন তথা ইবলীস, ফেরআউন ও দাজ্জাল প্রভৃতি হইতে যেইসমস্ত অলৌকিক ঘটনাবলী প্রকাশ পাইয়াছে কিংবা আগামীতে হইবে, উহাকে استدراج এসতেদরাজ বলা হয়। যেমন—আল্লাহর বাণীঃ سَنَسْتَدْرِجُهُم مِّنْ حَيْثُ لَا يَعْلَمُونَ — অনুবাদক
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান