মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৯৪২
- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৯৪২। হযরত আসেম ইবনে কুলাইব (রঃ) তাঁহার পিতা হইতে, তিনি (কুলাইব) জনৈক আনসারী ব্যক্তি হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলিয়াছেন, একবার আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাথে এক ব্যক্তির জানাযায় গেলাম। পরে আমি দেখিলাম, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কবরের কাছে উপস্থিত হইয়া কবর খননকারীকে নির্দেশ দিয়া বলিতেছেন, পায়ের দিকে (কবরকে আরও প্রশস্ত কর। মাথার দিকে আরও প্রশস্ত কর। অতঃপর দাফন কাজ শেষ করিয়া হুযূর (ﷺ) বাড়ীতে ফিরিয়া আসিলে মৃত ব্যক্তির (বিধবা) স্ত্রীর পক্ষ হইতে এক লোক আসিয়া নবী (ﷺ)-কে খানার দাওয়াত দিল। হুযূর (ﷺ) দাওয়াত মঞ্জুর করিলেন এবং তাঁহার সঙ্গে আমরাও খাইতে গেলাম। তাঁহার সম্মুখে খাদ্য আনা হইলে তিনি উহাতে হাত রাখিলেন, অতঃপর লোকেরাও হাত বাড়াইয়া খাইতে শুরু করিল। এই সময় আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর দিকে তাকাইয়া দেখিলাম, তিনি গোশতের একটি গ্রাসকে মুখের ভিতরে রাখিয়া নাড়াচাড়া করিতেছেন। অতঃপর তিনি বলিলেনঃ আমি ইহাকে এমন একটি বকরীর গোশত বলিয়া অনুভব করিতেছি, যাহা উহার মালিকের অনুমতি ছাড়াই আনা হইয়াছে। তখন মহিলাটি (হুযুরের সন্দেহ জানিতে পারিয়া) একজন লোক পাঠাইয়া বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। বকরী খরিদ করিবার জন্য আমি এক ব্যক্তিকে নাকী' বাজারে পাঠাইয়াছিলাম। উহা এমন একটি জায়গা, যেখানে ভেড়া, বকরী ও দুম্বা ইত্যাদি বিক্রয় হয়; কিন্তু তথায় কোন ভেড়া-বকরী পাওয়া যায় নাই। অতঃপর আমার একজন প্রতিবেশীর নিকট পাঠাইলাম। সে নিজের জন্য একটি বকরী খরিদ করিয়াছিল। আমি এই বলিয়া লোক পাঠাইয়াছিলাম, সে যেই মূল্যে বকরীটি খরিদ করিয়াছে, ঠিক সেই মূল্যেই বকরীটি যেন আমার জন্য পাঠাইয়া দেয়, কিন্তু সেই ব্যক্তিকে পাওয়া যায় নাই। অতঃপর আমি তাহার স্ত্রীর কাছে লোক পাঠাইলাম। তখন তাহার স্ত্রী আমার জন্য বকরীটি পাঠাইয়া দিয়াছে (ইহা সেই বকরীরই গোশত)। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাহাকে বলিলেন, এই খাদ্যগুলি কয়েদীদিগকে খাওয়াইয়া দাও। –আবু দাউদ ও বায়হাকী দালায়েলুন নবুওত গ্রন্থে
كتاب الفضائل والشمائل
وَعَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي جَنَازَةٍ فَرَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ عَلَى الْقَبْرِ يُوصِي الْحَافِرَ يَقُولُ: «أَوْسِعْ مِنْ قِبَلِ رِجْلَيْهِ أَوْسِعْ مِنْ قِبَلِ رَأْسِهِ» فَلَمَّا رَجَعَ اسْتَقْبَلَهُ دَاعِيَ امْرَأَتِهِ فَأَجَابَ وَنَحْنُ مَعَه وَجِيء بِالطَّعَامِ فَوَضَعَ يَدَهُ ثُمَّ وَضَعَ الْقَوْمُ فَأَكَلُوا فَنَظَرْنَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يلوك لقْمَة فِي فَمه ثُمَّ قَالَ أَجِدُ لَحْمَ شَاةٍ أُخِذَتْ بِغَيْرِ إِذْنِ أَهْلِهَا فَأَرْسَلَتِ الْمَرْأَةُ تَقُولُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَرْسَلْتُ إِلَى النَّقِيعِ وَهُوَ مَوْضِعٌ يُبَاعُ فِيهِ الْغَنَمُ لِيُشْتَرَى لِي شَاةٌ فَلَمْ تُوجَدْ فَأَرْسَلْتُ إِلَى جَارٍ لِي قَدِ اشْتَرَى شَاة أَن أرسل إِلَيّ بهَا بِثَمَنِهَا فَلَمْ يُوجَدْ فَأَرْسَلْتُ إِلَى امْرَأَتِهِ فَأَرْسَلَتْ إِلَيَّ بِهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَطْعِمِي هَذَا الطَّعَامَ الْأَسْرَى» رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ والْبَيْهَقِيُّ فِي دَلَائِلِ النُّبُوَّةِ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
স্বামীর অনুমতি ব্যতীত স্ত্রী তাহার মাল তছরুপ করা বৈধ হয় নাই। ফলে উহা সন্দেহযুক্ত হইয়াছে। আর তখন মুসলমানদের হাতে কয়েদীরা ছিল মুশরিক ও কাফের। তাই উহা ফেলিয়া দেওয়া অপেক্ষা সংশ্লিষ্ট লোকদের জন্য বরাদ্দ করা ছিল শ্রেয়।